নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আধ্যাত্মিক পুরুষ, ধর্মগুরু; খানকা থেকে বলছি।

মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস

জেড মাহদিন

আমি এতিম, দরিদ্র, মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত এক গন্তব্যের উদ্দেশে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি একটি রাজ্যের মালিক, রাজা। রাজ্য পুনরুদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জনে চেষ্টিত। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।

জেড মাহদিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাফর ইকবালদের কলমের শৈল্পিক আঘাত

২৫ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:১১

সেদিন ব্লগে একটা লেখা দেখলাম যা জনাব জাফর ইকবালের প্রবাসী মেয়ের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং তার একটি লেখার সূত্র ধরে লেখা। জাফর ইকবাল সাহেবের লেখায় যদিও মৌলবাদসহ অনেক বিষয়ই এসেছে। কিন্তু ব্লগের লেখাটি কেবল মৌলবাদকেই লাইট করেছে। আর এমন নগ্ন আক্রমণ! আমাকে দারূণভাবে আহত করেছে। লেখাটি পড়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে আমার কাজ-কর্ম বন্ধ হয়ে যায়। জাফর ইকবালের লেখার চেয়ে ব্লগের লেখাটির আক্রমণের ঝাঁঝ অনেক বেশি। মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশিই থাকতে হয়। অবশ্য আজকের 'মা'দের দরদও কম নয়। লেখার পরতে পরতে সুনিপুণ কলমের শৈল্পিক আক্রমণ- 'মৌলবাদ', 'ধর্মান্ধ', 'ধর্মব্যবসায়ী', 'কুকুর', 'শূকুর', 'জানোয়ার' আরও কতো কি? এ না হলে সুশীল বা প্রগতিশীল হওয়া যায়? এস্টাব্লিস্ট হওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।

আর পুরস্কার- সে তো অনেক দূরে। গত এক যুগ ধরে আমাদের দেশে ধর্মকে নতুন নতুন কৌশলে আক্রমণ করার ব্যবসাটাও ভালোই বিকশিত হয়েছে। যে কেউ এক্ষেত্রে স্বপ্ন দেখতে পারেন। সবার জন্য দরজা খোলা।



বুকের পাটা শক্ত থাকলে আন্তর্জাতিক মার্কেটে প্রবেশ সময়ের ব্যাপার মাত্র।

আমি আজ এখানে ধর্ম নিয়ে বলতে চাই না, জনাব ইকবালের প্রবাসী মেয়ের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়েও নয়। নয় মৌলবাদ প্রসঙ্গ। শুধু জিজ্ঞাসা, কত চলবে আর এই নগ্ন আক্রমণ!! তথাকথিত শিল্প-সাহিত্য-কবিতার আড়ালে ইসলামকে, ধর্মকে, মৌলবাদ ও আজকের বাংলাদেশের লাখ লাখ মাদ্রাসা শিক্ষিত নিরপরাধ তরুণ প্রজন্মকে এইসব নগ্ন আক্রমণ কোথায় নিক্ষেপ করবে? কলমের এই আঘাত কলমের মাধ্যমে মোকাবেলা করার যোগ্যতা লাখেও একজনের নেই। তাহলে কি এরা বসে থাকবে? না, বরং নিশ্চয় অস্ত্র হাতে নেবে। আর এখানেই আমরা বুঝতে পারি, আজকের জঙ্গিবাদ বিকাশে উস্কানী দাতা কারা এবং কারা এজন্য দায়ী।

এই লাখ লাখ নিরপরাধ মাদ্রাসা শিক্ষিত কি ভিনগ্রহ থেকে এসেছে? এরা কি এদেশের নাগরিক নয়?? এরা কি আমাদেরই ভাই-ভাতিজা-পুত্র নয়??? তাহলে এদের এভাবে আক্রমণ করার লাইসেন্স এই তথাকথিত প্রগতিবাদী শিক্ষিত-মূর্খদের কে দিয়েছে? কে শিখিয়েছে এদের যে এভাবেই সমাজে পরিবর্তন আসবে? এর নাম যদি বাক-স্বাধীনতা হয়, তাহলে সরকার হাত-স্বাধীনতা দিলে তো ''মোল্লা'' একটাও আস্ত থাকবে না।



শতকরা নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ এই বাংলাদেশ তা সত্য। মুসলমানদের ধর্ম ইসলামের ধারক-বাহক মাদ্রাসা-শিক্ষিতরা তাও সত্য। তারচেয়ে বড় সত্য- এরাই এদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী; সংখ্যার বিচারে, সুযোগ-সুবিধার বিচারে, সব বিচারেই। টুপি-দাঁড়িঅলাদের জন্য বাংলাদেশ আজ এক বধ্যভূমি। কোথাও এরা নিরাপদ নয়। মনে হয় এদের খতম করলেই বাংলাদেশ স্বর্গে পরিণত হবে।

ধর্ম নিয়ে, নারী নিয়ে, বোরখা নিয়ে এখন কিছু বলছি না। এই আক্রমণের ফলশ্রুতি নিয়ে কিছু বলা প্রয়োজন। এর দ্বারা বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ নব প্রজন্ম আহত হচ্ছে, নিরাশ হচ্ছে, উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে। এভাবে পরিবর্তন আসে না, আসবে না, আসতে পারে না। আমাদের সবার প্রতি সবার সহনশীল হতে হবে। জ্ঞানের আলো বিতরণের মাধ্যমে পরিবর্তন আসে। আইন করে, আঘাত করে, ধরপাকড় করে সমাজ সুস্থ করা যায় না। আর সমাজের মৌলিক পরিবর্তন সরকারের দায়িত্ব নয়। যেহেতু সরকার জ্ঞানগত ও আদর্শিক বিপ্লব বা মেনুফেস্টোর মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। পরিবর্তন আপনার-আমারই আনতে হবে। হয়তো মাদ্রাসাশিক্ষিতদের কিছু বুঝার ভুল আছে। তাই বলে ''ধর্ম'', ''পর্দা'' ইত্যাদি বিষয়গুলো মিথ্যা ও কুসংস্কার হয়ে যায় না। যদি হতোই তাহলে এসব এতদিন টিকত না।

জ্ঞানগত বিপ্লব ও আদর্শিক বিজয়ই সবার কাম্য। সত্য, শহনশীলতা, ধর্ম, আদর্শ, ন্যায়পরায়ণতা, মনুষ্যত্ব, সহমর্মিতা, জাতীয়তাবোধ, চিকিৎসাধর্মী মনোভাব- এসবই একটা অসুস্থ সমাজকে সুস্থ করতে পারে। আর মাদ্রাসাঅলাদের বলব, আপনারা আরও যৌক্তিক হোন। ধর্ম, পর্দা, বোরখা এসব সঠিকভাবে, নিরপেক্ষ ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করুন। সত্যের বিজয় অনিবার্য। কিন্তু সত্য আশ্রয় করে মিথ্যার প্রতিপালন ধ্বংসাত্মক।

রচনা : ২০১১ সাল

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.