![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু অসমাপ্ত ভাঙা গল্পের পার্শ্বচরিত্র হতে চাই
অনেকদিন ধরে কিছু লেখা হচ্ছে না। ইদানীং আসলে মাথায়
কিছু আসে না কি লিখব। তাছাড়া আমার কল্পনা শক্তি অতটা
প্রবলও নয়। বাস্তব জীবনে কোন কিছু না ঘটলে আমার
লেখালিখির খাতাটাও কেমন যেন ফাঁকা পড়ে থাকে।
কোন এক বন্ধু ওদিন বলল, "কিরে! পাগলের লেখা পাই না কেন
এখন?"
যাকগে, আজ অনেকদিন পর লিখতে বসেছিলাম। সময়টা
সন্ধ্যের একটু আগে। আকাশে মেঘ। মাঝে মাঝে ঝিরঝির
বাতাস এসে দোলা দিচ্ছে জানালায়। লেখা অবশ্য কিছুই
হচ্ছিল না। শুধুই কলমটা কামড়াচ্ছিলাম। মাথাটা কেমন যেন
ফাঁকা। সাধারণত আমি গান তেমন একটা শুনি না। কিন্তু আজ
কি মনে করে যেন কানে হেডফোন গুঁজে বসে আছি। বাইরের
অন্ধকারাচ্ছন সাঁঝের মেঘলা আকাশ, কানে সফট মিউজিক,
হাতে কলম সব মিলিয়ে অন্যরকম এক অনুভূতি। ঠিক যেন...
ভাবনায় ছেদ পড়ল। ফোনের ভাইব্রেশনে একটু কেঁপে উঠল
টেবিলটা। হাতে নিতেই দেখলাম মেসেজ এসেছে। দুই শব্দের
ছোট্ট একটা মেসেজ। তবে ভেতরটা নাড়া দিতে যথেষ্ট।
"ভালো আছিস?"
কতদিন হবে? চার বছর? না না। তিন বছর আট মাস। হুম। একদম।
শিমুর সাথে যোগাযোগ নেই প্রায় এক বছর আট মাস যাবত। হুট
করে আজ তার মেসেজ কেন?
শিমুর সাথে পরিচয় হয় কলেজে। দশ বছর বয়েজ স্কুলে পড়ার পর
প্রথম যখন কম্বাইন্ড কলেজে ভর্তি হই তখন ভেতর ভেতর একরকম
জড়তা কাজ করত। মেয়েদের সাথে ঠিক মত কথা বলতে পারতাম
না। কেমন যেন ভয় ভয় লাগত। কিছুটা লজ্জাও। ঠিক সেই
সময়টাতেই পরিচয় শিমুর সঙ্গে। খুব বন্ধুত্বসুলভ একটা মেয়ে। খুব
সহজেই সবার সাথে মিশতে পারত। সবাইকে নানাভাবে হেল্প
করত। বিশেষ করে বায়োলজি প্র্যাক্টিকেল ল্যাবে আমি তার
কাছ থেকে বরাবরই হেল্প পেতাম। আমি আবার মাছ-
তেলাপোকা কাটায় একটু দুর্বল ছিলেম কিনা।
ধীরে ধীরে তার সাথে একরকম ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। প্রায়ই
কলেজ ফাঁকি দিয়ে এখানে-সেখানে যাওয়া হত তার সাথে।
কখনও ফুচকা খেতে, কখনও বা যেতাম কলেজের পাশের ছোট্ট
সেই ফাস্টফুডের দোকানটাতে। না না। তখন মুভি দেখা বা বড়
কোন রেস্টুরেন্টে যাবার মত টাকা হত না। বাসা থেকে কোন
বিশেষদিন ছাড়া অত টাকা পেতাম না। একে অন্যের এতটাই
কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করতাম আমরা যে ফ্রেন্ড
সার্কেলের অন্য বন্ধুরাও বিষয়টা নিয়ে নানা কথা বলত, মজা
করত। আমরা অবশ্য নিজেদেরকে খুব ভাল বন্ধু হিসেবে পরিচয়
দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম।
যাই হোক, বেশ আনন্দেরই ছিল দিনগুলো। এরপর এইচএসসি
পরীক্ষা এসে পড়ল। মূলত সে সময়টা থেকেই দূরত্ব বাড়তে
থাকে। এরপর একে একে রেজাল্ট, ভর্তি পরীক্ষা।
সে রাজশাহী মেডিক্যালে চান্স পেয়ে যায়। আর আমি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। দুদজনের মাঝের দূরত্বটা যেন এক
ঝটকায় আরো বেড়ে গেল। কিন্তু নতুন জায়গা, নতুন বন্ধু, নতুন
পরিবেশ এসব কিছুর উত্তেজনায় তার কথা একরকম ভুলেই
গেলাম। এরই মধ্যে পরিচয় হয় মুনার সাথে। অসাধারণ একটা
মেয়ে। খুব সুন্দর করে কথা বলত, দুষ্টুমি করত, এক কথায় আমাদের
গ্রুপটার প্রাণ ছিল সে। সবাইকে খুব দ্রুতই কথা দ্বারা আকৃষ্ট
করার একরকম ক্ষমতা ছিল তার। এজন্যে বোধহয় আমিও কিছুটা
দুর্বল হয়ে পড়ি তার প্রতি। দেখতে দেখতে তার সাথে বন্ধুত্ব,
ভালোলাগা, কাছে আসা থেকে নতুন এক সম্পর্কে জড়িয়ে
পড়ি।
হঠাত একদিন শিমুর ফোন আসে। প্রায় দেড়-দুবছর পর। তখন সবে
থার্ড ইয়ারে উঠেছি। অঝোরে কাঁদছিল সে। কি হয়েছে
জিজ্ঞেস করতেই জানতে পারলাম পারিবারিকভাবে বিয়ে
ঠিক হয়েছে তার। তার পরিবার কিছুটা রক্ষণশীল। তাই দ্রুতই
মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলাটা খুব একটা বেখাপ্পা মনে
হবার কিছু নেই।
যদিও বিষয়টা আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হওয়ার কথা তবু
কেন যেন মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল কোথাও কিছু
একটা হারিয়ে ফেলেছি। যতই চেষ্টা করি না কেন তা আর
ফেরত পাব না।
আমি বরাবরই একটু বাউণ্ডুলে প্রকৃতির ছেলে। পুরনো বাঁধন
আকড়ে ধরে রাখার মানুষ আমি নই। তাছাড়া ওর সাথে তো
আমার তেমন কোন বাঁধনও ছিল না। খুব ভাল বন্ধু ছিলাম আমরা।
এই ব্যস। তবে?
এমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে কেন নিজেকে? সেই বা এভাবে
কাঁদছে কেন? জানি না। অতশত জানতেও চাইনি তখন।
ফর্মালিটি করে একটা কংগ্রাচুলেশনস জানিয়েই ক্ষান্ত
দেই। ফোন কেটে দেয়া পর্যন্ত কাঁদছিল শিমু।
এরপর কি যেন হয়ে যায় আমার। আগের মত বন্ধুদের সাথে
আড্ডাবাজি করতাম না। মুনাকেও আগের মত সময় দিতাম না।
এড়িয়ে যেতাম। সারাক্ষণ বইয়ে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতাম।
কখনওবা বারান্দায় একা একা বসে বাইরের বৃষ্টি দেখতাম।
মাঝে মাঝে আবার মেস থেকে বেড়িয়ে যেতাম,
উদ্দেশহীনভাবে ঘুরাঘুরি করতাম। কারো সাথে ঠিকমতো কথা
হত না।
মুনা বেশ চেষ্টা করেছিল। কিন্তু একটা সময় সেও হাল ছেড়ে
দেয়। আর আগায়নি সে। আর আমি? আমিতো...
যাকগে, আজ আবার অনেকদিন পর শিমুর মেসেজ পেয়ে কিছুটা
চমকে উঠলাম। ছোট্ট এটুকু মেসেজ, কিন্তু কি উত্তর দেব, কি
উত্তর দেব ভাবতে ভাবতে আর রিপ্লাই দেয়া হয়নি। কিংবা
হয়ত ইচ্ছে করেই দেইনি।
চলুক না জীবনটা। যেভাবে চলছে।
০৬ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:১৩
যান্ত্রিক পাগল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। শেষটা আমারও মনপছন্দ হয়নি। পরেরবার ভাল কিছু চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্।
২| ০৬ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৫১
বিজন রয় বলেছেন: লিখুন, লিখুন, কিছু একটি লিখুন।
০৬ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫
যান্ত্রিক পাগল বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জুলাই, ২০১৬ ভোর ৬:৪১
কালনী নদী বলেছেন: ভালো লিখেছেন। তবে লিখাটা সরু হয়ে আসছে।