![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাসআলা ১: যে ব্যাক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব সেই ব্যক্তি কুরবানীর দিনগুলোতে যদি কুরবানী না করতে পারে তাহলে তাকে কুরবানীর উপযুক্ত একটি পশুর মুল্য সদকা করে দিতে হবে। - বাদায়েউস সানায়ে ৮/২০৩, কাযীখান ৩/৩৪৫, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০।
মাসআলা ২: কুরবানীর পশুর বয়সঃ উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবেভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয় অথচ এমন হৃষ্ট পুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মত মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানী জায়েজ। অবশ্য এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস বয়সের হতে হবে। উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স ১ বছরের কম হলে কোন অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানি জায়েজ হবে না।- কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫-২০৬।
মাসআলা ৩: কোন পশুর শিং যদি একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে যায় এবং মস্তিস্ক খতিগ্রস্থ হয়ে যায় তাহলে সে পশুর কুরবানী করা জায়েজ নেই। পক্ষান্তরে যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু অংশ ফেটে বা ভেঙ্গে গেছে বা শিং একেবারেই উঠেনি সে পশু কুরবানী করা জায়েজ।- সুনানে আবু দাউদ ৩৮৮, বাদায়েউস সানায়ে ৮/২১৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৪।
মাসআলা ৪: কুরবানীর পশুর দুধ পান করা যাবে না। দুধ না দোহালে যদি পশুর কষ্ট হয় তাহলে পশুর ওলানে ঠাণ্ডা পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। তাহলে দুধের চাপ কমে যাবে। আর যদি দুধ দোহন করে ফেলে তাহলে তা সদকা করে দিতে হবে। নিজে পান করলে তার মুল্য সদকা করে দিতে হবে। - রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৯, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১।
শরীকানা কুরবানী মাসআলা ৫:
বক্রী, ভেড়া, দুম্বাতে একভাগে এবং উট, গরু, মহিষে সর্বোচ্চ সাতভাগে এবং সাতের কমে যে কোন সংখ্যায় (যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে) কুরবানী করা জায়েজ। - সহিহ মুসলিম ১৩১৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭।
মাসআলা ৬: ভেড়া, বক্রী ও দুম্বাতে একাধিক ব্যক্তি আর উট, গরু ও মহিষে সাতের অধিক ব্যক্তি শরীক হলে কারো কুরবানী সহীহ্ হবে না। তেমনি উট, গরু ও মহিষে কারো অংশ পূর্ণ এক অংশ থেকে কম হলে যেমন, কারো আধা ভাগ, কারো দের ভাগ, তাহলে সকলের কুরবানী নষ্ট হয়ে যাবে। অবশ্য উট, গরু ও মহিষে একই ব্যক্তি একাধিক পূর্ণ অংশে শরীক হতে পারবে। যেমন, কারো দুই ভাগ কারো এক ভাগ। - বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭
মাসআলা ৭: যদি কেউ আল্লাহ তা’লার হুকুম পালন ও তার সন্তষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশ্ত খাওয়া বা লোক দেখানোর নিয়তে কূরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ্ হবে না। এমন ব্যক্তিকে শরীক বানালে কারো কুরবানী শুদ্ধ হবেনা। তাই অত্যন্ত সতরকতার সাথে শরীক নির্বাচন করা জরুরী। - বাদায়েউস সানায়ে ৪-২০-২০৯, কাযীখান ৩/৩৪৯
মাসআলা ৮: যার সমস্ত উপার্জন বা অধিকাংশ উপার্জন হারাম তাকে শরীক করে কুরবানী করলেও অন্য সকল শরীকদের কুরবানী শুদ্ধ হবে না। -কিফায়াতুল মুফতী ৮/১৯০
মাসআলা ৯: কুরবানীর পশুতে আকিকার নিয়তে শরীক হওয়া বৈধ। আকিকার গোশতও কুরবানীর ন্যায় সকলে খেতে পারবে। - রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬
কুরবানীর মাসনূন পদ্ধতি মাসআলা ১০:
জবাইকারী ব্যক্তির জন্য কেবলামুখী হয়ে জবাই করা সুন্নাত। কুরবানীর পশুকেও যথাসাধ্য কেবলামুখী রাখা মুস্তাহাব। - বাদায়েউস সানায়ে ৪/১১৯।
মাসআলা ১১: অনেক সময় জবাইকারীর হাতে জবাই সম্পন্ন হয় না, তখন কসাই বা অন্য কেউ জপবাই সম্পন্ন করে থাকে। এক্ষেত্রে যদি প্রথম ব্যক্তির জবাই সম্পন্ন না হয় অর্থাৎ চারটি রগের কমপক্ষে তিনটি কাটা না হয় তাহলে দ্বিতীয় জঙ্কে অবশ্যই “বিসমিল্লাহ” বলতে হবে। যদি দ্বিতীয় ব্যক্তি না বলে তবে ওই কুরবানী সহীহ্ হবে না এবং জবাইকৃত পশুও হালাল হবে না।- রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩৪
কুরবানীর গোশত সংক্রান্ত মাসায়েলমাসআলা ১২:
কুরবানীদাতার জন্য নিজ কুরবানীর গোশত খাওয়া মুস্তাহাব। - মুস্নাদে আহ্মদ, হাদীস ৯০৭৮, ইলাউস সুনান ১৭/২৬৭।
মাসআলা ১৩: কুরনানীর গোশত তিন ভাগে ভাগ করা মুস্তাহাব। একভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয় – স্বজনদের জন্য, আরেকভাগ গরীবদের জন্য। কোন ব্যক্তি প্রয়োজনে পূর্ণ গোশত নিজের জন্য রেখে দিলেও তাতে কোন অসুবিধা নেই। - ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০, বাদ্যেউস সানায়ে ৪/২২৪।
মাসআলা ১৪: কুরবানীর গোশত শুকিয়ে বা ফ্রিজে রেখে দীর্ঘদিন খাওয়াতে কোন অসুবিধা নেই। - বাদায়েউস সানায়ে ৮/২২৪, ইলাউস সুনান ১৭/২৭০।
মাসআলা ১৫: শরীকানা কুরবানীর গোশত, হাড্ডি, চর্বি, ভুড়ি, মগজ, কলিজা ইত্যাদি মোটকথা প্রাণীর প্রতিটি অংশকে ওজন করে সমানভাগে ভাগ করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করলে তা যথেষ্ট হবে না। যদিও সমস্ত ষরীকগ্ণ এতে রাজী থাকে। - আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮, কাযিখান ৩/৩৫৪।
চামড়া সংক্রান্ত মাসায়েলমাসআলা ১৬:
জবাইকারী, কসাই, কাজে সহযোগিতাকারী ইত্যাদি কাউকেই কুরবানীর পশুর চামড়া, গোশত বা অন্য কোন অংশ বিনিময় হিসেবে দেওয়া জায়েজ হবে না। তাদের পারিশ্রমিক ভিন্নভাবে দিতে হবে। - আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮, জাওয়াহিরুল ফিকহ্ ১/৪৫২।
মাসআলা ১৭: পশুর দেহ থেকে চামড়া পৃথক করার পূর্বে তা বিক্রি করা নাজায়েয। - ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১২৮।
মাসআলা ১৮: জবেহ্ করার পর পশু নিস্তেজ হোয়ার পূর্বে চামড়া খসানো বা অন্য কোন অঙ্গ কাটা মাকরূহে তাহরীমী। - বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩
মাসআলা ১৯: কূরবানীর পশুর রশি, মালা ইত্যাদি সদকা করে দেওয়া মুস্তাহাব। - ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০, ফাতাওয়া মাহ্মুদিয়া ১৭/৪৮৯
তাকবীরে তাশরীকের মাসায়েলমাসআলা ২০: প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর সাথে সাথে তাকবীর বলা উচিৎ। যদি কেউ ভুলে যায় এবং মসজিদ থেকে বের হয়ে জায় কিংবা ওযু নষ্ট হয়ে জায় বা কথা বলে ফেলে তাহলে এ ওয়াজিব ছুটে যাবে। এ অয়াজিবের কাযা নেই। এ কারনে সে গুনাহগার হবে। এজন্য তাকে তওবা করতে হবে। তবে উপরোক্ত কাজের পূর্বে স্মরন হলে তা পড়ে নিতে হবে।- রদ্দুল মুহতার ২/১৭, আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৮।
©somewhere in net ltd.