নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\'আমাদের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝখানে একটা দেয়াল আছে, এর একদিকে থাকে চাওয়া,আর একদিকে পাওয়া। মুখ্য সমস্যা হল দেয়ালটা স্বচ্ছ কাঁচের\'

যাযাবর জোনাকি

‘আমাদের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝখানে একটা দেয়াল আছে, এর একদিকে থাকে চাওয়া,আর একদিকে পাওয়া। মুখ্য সমস্যা হল দেয়ালটা স্বচ্ছ কাঁচের’

যাযাবর জোনাকি › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গ কাঠাম চলন্ত মাইক্রোবাস এবং বিচ্ছিন্ন কিছু প্রসঙ্গ

২৬ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫২

ছদ্মনাম নেয়ার পরও নিজের কথা লেখা ধৃষ্টতা। যদিও আগেও লিখেছি বহুবার ,তবে আমার লেখার মাঝে কাল,স্থান,পাত্র উল্লেখ করিনি,এটা আমার ভাল লাগেনা। আজকের লেখার প্রসঙ্গ একটু ভিন্ন, এখানে প্রসঙ্গ কাঠামের গুরুত্ব অপরিসীম।
বেশ কিছু দিন ধরে লেখালেখি আসছেনা , কারণটা নেহাতই 'অন্যদিকে মনের হাল ঘোরান', জোড় করে যা লিখেছি তা নিজেরই পড়তে ইচ্ছে করে না । তবে আজকে ট্রেনে বাড়ি ফেরার পথে কাঁচের জানালায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখে অনেক কথা মনে জমা হল। কিছু বর্তমান প্রসঙ্গ ,কিছু অভিজ্ঞতা,কিছু নিজেস্ব ধারনা, কিছু খোলামেলা-হাল্কা কথা।

শুরুতেই বলে রাখি আমি এই লেখার মাধ্যমে আমি কিছু প্রমান করতে চাইছি না,বা আমি কোন কিছু বিচার করতে চাইছি না,আমার কথাগুলি অ্যাবসেলুট ধরে নেয়া ঠিক হবে না ।*অনেক কিছু আমি ভাসা ভাসা স্মৃতি বা ধারনা থেকে লিখি এবং সেই সব ১০০% সঠিক কিনা তা সুত্র মিলিয়ে দেখিনা(অলসতার কারনে)।আমার লেখার প্রসঙ্গ এবং প্রসঙ্গ কাঠাম 'ঢাকা' তবে ঘটনা বর্ননা করার জন্য আমি কিছু কাল্পনিক চরিত্রের সৃষ্টি করতেই পারি।আরও বলে রাখা ভাল যে আমি দুধে ধোয়া কোন তুলসি পাতা না।

প্রসঙ্গের সুত্রপাত ফেসবুক। কিছু বন্ধু একটি লেখা বারবার শেয়ার দিয়েছে যার শিরোনাম "নেমেছি পুরুষাঙ্গ কর্তনে" বা এই জাতীয় কিছু*, যেকোন লেখা আমি পড়ব কিনা তা আমার মন বা মস্তিস্ক নির্ধারণ করে এর শিরোনাম দেখে (বইও) , এই শিরোনামটা বেশ আকর্ষনীয় মনে হলেও পড়তে ইচ্ছা করল না, কারন ঘটনাটা পত্রিকাতে পড়েছি, খুবই দূঃখ্যজনক ঘটনা, চলন্ত মাইক্রোবাসে আদিবাসী তরুণীকে গনধর্ষন করা হয়েছে,পড়তে পড়তে গা গুলায়। তবে উপরের শিরোনামের জন্য একটু চোখবুলিয়ে নিলাম, এই শিরোনাম পড়ে চোখে শুধুই ‘মা কালী’ ছবি ভেসে উঠছিল। *আমার ধারনা লেখক একজন নারীবাদী , তার লেখার স্টাইল আমার কাছে অনেকটা 'তসলিমা নাসরিন'এর মত লাগলো,খুবই একপেশে ,তসলিমা নাসরিনের লেখা পড়তে ভাল লাগে,তবে *আমার ধারনা 'তসলিমা নাসরিন' এর লেখার অধিকাংশ পাঠক পুরুষ আর তারা উনার বই পড়ে কেবল মাত্র যৌন সুড়সুড়ি পাবার জন্য।যাইহোক লেখক তার লেখার মাধ্যমে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছেন , আসলে আমার *ধারনা বন্দুক হাতে এলোপাথাড়ি গুলি করা সহজ ,লক্ষভেদ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

এবার প্রসঙ্গে ফিরে আসি, আমি তখন ঢাকাতে দেশি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরী করছি, বহুদেশের কনসালটেন্টদের সাথে দীর্ঘক্ষন 'ফীল্ড ওয়ার্ক' করতে হয়,কাজের ফাঁকে ফাঁকে তাদের সাথে আড্ডাও চলে,একথা সেকথা। অভিজ্ঞতার আদান প্রদান।

এই প্রসঙ্গের মুল নায়ক হল "রেন্টেকার" মাইক্রোবাসের ড্রাইভার, ধরে নেয়া যাক তার নাম "হারামী-রতন",সে ভিনদেশী কনসালটেন্টদের ডিউটি করে, এই হারামী রতন ভিনদেশী কনসাল্টেন্ট কুলে খুব পপুলার, তো একবার এক সন্ধ্যাকালীন আড্ডায় এক তরুন ভিনদেশী কনসালটেন্ট ঢাকাতে তার বাংলাদেশি বান্ধবীর ঘটনা খুলে বলল,একদিন তরুন ভিনদেশী কনসালটেন্ট হারামী রতন কে ধরল যে তার একজন বান্ধবী চাই , বাংলাদেশি বান্ধবী! হারামী রতন কি আর করবে কিছু কাঁচা ডলার ইনকামের ধান্দায়, তরুন ভিনদেশী কনসালটেন্ট কে নিয়ে যায় ২১শে ফেব্রুয়ারীর দিনে শহীদ মীনারে , সেখানে সে তরুন ভিনদেশী কনসালটেন্ট কে পরিচয় করিয়ে দেয় এক তরুনীর সাথে , যার সাথে ছিল তার অনেক বান্ধবী । তারা সবায় মিলে তরুন ভিনদেশী কনসালটেন্ট কে নিয়ে যায় শপিং মলে সেখানে সব বান্ধবীসহ তরুণী প্রায় ৫০০০ ডলারের বাজার করে,খাওয়া-দাওয়া করে,সিনেমা দেখে,ইত্যাদি। তারপর বিদায় বেলায় তরুণী মোবাইল নং দিয়ে যায় তরুন ভিনদেশী কনসালটেন্ট কে,কথা দেয় যে সে আবার দেখা করবে। পরে সেই তরুণী আর এই তরুন ভিনদেশী কনসালটেন্টকে ফোনে ধরা দেয়নি।

কিছুদিন পরে আরেকবার তাদেরই(কনসালটেন্ট) সাথে কথায় কথায় গুলশানের এক নামী ক্লাবের কথা উঠলো যেখানে তারা প্রায়ই যায়, আমাদের দেশের একজন বলল যে, সেখানে যে কেউ ধুকতে পারেনা, তাই আমাদের কাউরি যাওয়া হয়নি,।এই কথা শুনে কনসালটেন্টরা আমাদের সবাইকে সেখানে ইনভাইট করলো,উদ্দেশ্য তাদের মাধ্যমে ঐ ক্লাবটি দেখা। আমরা যথারীতি গেলাম সেখানে,তারপর ভরপেট দামী খাওয়া-দাওয়া হল। বের হয়ে আসার সময় দেখি একটা বন্ধ হল ঘর থেকে মিষ্টি গান ভেসে আসছে, আমাদের সেই তরুন ভিনদেশী কনসালটেন্ট আগ্রহ নিয়ে হল ঘরের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে গেল , পেছন থেকে দেখলাম , একটি কৃশকায় কিশোরী ,ঝলমলে শাড়ী পরে , হাতে মাইক্রোফোন ধরে গান গাইছে, একদল যুবক(দেশি) তার দিকে ১০০০/৫০০ টাকার নোট ছুঁড়ে ছুঁড়ে দিচ্ছে, কিশোরী সেগুলি সালাম করে কুড়িয়ে নিচ্ছে, হঠাৎ একজন ওয়েটার এসে আবার দরজা বন্ধ করে দিয়ে বলল "প্রাইভেট পার্টি স্যার"।

দিন যেতে থাকে ,ভিনদেশী কনসালটেন্টদের সাথে আমাদের ঘনিষ্ঠতা বারতে থাকে, এক নাইট ডিউটিতে অন্য আরেক জন মাঝ বয়সী ভিনদেশী কনসালটেন্ট দেখি কথায় কথায় হারামী-রতনের প্রশংসায় গলে গলে পড়তে লাগল,কি ব্যাপার জানতে চাইলে সে হাসতে -হাসতে লাজুক মুখে আমার দিকে তার মোবাইফোনে একটি ভিডিও প্লে করে এগিয়ে দেয়,ভিডিও টি দেখে আমার গা গুলিয়ে ওঠে,তারপরও আমি দেখি, একটি চলন্ত মাইক্রোবাস,৪ জন অর্ধনগ্ন ভিনদেশি হাসাহাসি করছে,একজন নগ্ন দেশি তরুণী,একজন ভিনদেশি তার সাথে সঙ্গমরত,আর একজনের হাতে ভিডিও ক্যামেরা ধরা। ক্যামেরা হাতবদল হচ্ছে,তরুণী হাতবদল হচ্ছে,তরুণী বারবার অভিযোগ করছে হারামী রতন কে ,কেন সে একজনের কথা বলে ৬ জনের হাতে তাকে তুলে দিল,হারামী রতন হাসছে।

এর আরও পরের প্রসঙ্গ ,ততদিনে একই কোম্পানিতে আমার প্রোমোশন হয়েছে , ফীল্ডোয়ার্ক শেষ, অফিসে নতুন ভিনদেশি ম্যানেজার এসেছেন, কাজের প্রেসারে ত্রাহি অবস্থা, আমি আপ্রান চেষ্টা করছি সব সামলানোর, কিন্তু ম্যানেজার কিছুতেই যেন আমাকে পছন্দ করছেন না, তার সবসময় আমার বিরুদ্ধে কোননা কোন অভিযোগ থাকছেই, আমার তখনকার ধারনা* আমার বেতন তার মূল সমস্যা।
একদিন রাতে অফিস থেকে ফিরছি , সাথে এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (স্যার!) ,সিনিয়ার সিটিজেন, ইনি বরাবরই খুব ডিপ্লোম্যাট, তাই উনার সাথে আলোচনা করছি ব্যাপারটা নিয়ে ,কেন ভিনদেশি ম্যানেজার আমার ওপর খ্যাপা ,কি করা যায় এখন ?
তখন বেশ রাত, কথা বলতে বলতে গাড়ি এসে থামল রূপসী বাংলার সামনের সিগ্ন্যালের জ্যামে , এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার ফিচেল হেসে,একবার ডানদিকে ,একবার বামদিকে তাকিয়ে,ইশারা করে আমাকে বললে “ আপনি এডাল্ট লোক সবই তো বোঝেন,উনাদের খুশি করার জন্য কাজের বাইরেও আরকিছু জিনিষের ব্যাবস্থা করে দিতে হয়,আপনি বেতন তো কম পান না,নাকি? ”
আমি দেখলাম, আমার বামদিকে “সাকুরা” বার আর ডানদিকে “রুপসী বাংলা” হটেলের পাঁচিল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে এক আদিবাসী তরুণী,পরনে লাল টকটকে শাড়ী,কপালে লাল টীপ, মাঝে মাঝে বড় গাড়ী গুলির দিকে কি যেন খুঁজছে,অনিদির্ষ্ট কারুর জন্য যেন অপেক্ষায় আছে সে,তাকে দেখাচ্ছে টকটকে লাল রক্ত জবার মত।
আমি মূখফস্কে বলে ফেললাম “স্যার,আপনি আমার বাবার বয়েসী!”।
পরে চাকরীটা আর করা হয়নি।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪

তানভীরএফওয়ান বলেছেন: বাহ বাহ বাহ আমরা শিক্ষিত !!!!!!!

২| ২৭ শে মে, ২০১৫ রাত ২:০৯

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: কি আশ্চর্য। এমনও কিন্তু ঘটছে চারিদিকেই, তবে লাস্টের তরুণীটি আদিবাসী কিনা এটা বলা নিষ্প্রয়োজন ছিল। এই রকম ক্ষেপ ধরার কাজ বাঙালী নারীরাও তো করে।

২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩৬

যাযাবর জোনাকি বলেছেন: দিদিভাই, এটা কোন বানোয়াট গপ্ল নয় , নিজের জীবন থেকে নেয়া,তাই যা দেখেছি তাই বললাম। আর *আমার ধারনা সারা বিশ্বেই এইধরনের ঘটনা ঘটে থাকে ,নারীরা কেঊই শখ করে এই পেশা বেছে নেয়না, সমাজের একশ্রেনীর বিকৃত রুচির মানুষের শখের জন্য তারা এই পেশার সাথে যুক্ত হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.