নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন দেখে আমি প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হই

জিরো ডাইমেনশন

আমি এক স্বপ্নবাজ তরুন। স্বপ্ন দেখে চলি নিরন্তর। অনেকের কাছে যা দিবাস্বপ্ন আমার কাছে তাই বাস্তবতা।

জিরো ডাইমেনশন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভার্সিটি লাইফঃ দ্বিতীয় সেমিস্টারে আমি এবং আমার অবস্থা

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪০

দেখতে দেখতে অনেকগুলা দিন কেটে গেল। প্রায় বছর দুয়েক। এইতো সেদিন ভর্তি পরীহ্মাকে কেন্দ্র করে সারাদেশ চক্কর দিচ্ছিলাম আর আর আজকে ভার্সিটি লাইফের প্রথম বছরটিকে বিদায় জানাচ্ছি। ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর থেকেই নানা ঘটনা-অঘটনা আমাদের লাইফ থেকে বেশ কিছুটা সময় কেড়ে নিয়েছে। ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরু করতে করতেই মোটামুটি মাস তিনেক এর সেশন জটে পরে গিয়েছিলাম। তারপর আরো প্রায় ৬ মাস মোট ৯ মাসের মত একটা জটে আটকে আছি। একটা সময় মনে হত প্রথম বছরটা মনে হয় আর শেষ হবেই না। সারাজীবন প্রথম বর্ষেই পড়তে হবে। কিন্তু সময়ের টানে শেষ হয়ে গেল প্রথম বছরটা। আমাদের সেমিস্টার পদ্ধতিতে পড়াশুনা হয়। বছরে দুইটা সেমিস্টার। প্রথম সেমিস্টার এর কথা আর নাই বললাম। দ্বিতীয় সেমিস্টার এর কিছু গল্প করি।

এলাকায় মোটামুটি ভালো ছাত্র হিসেবে আমার সামান্য নাম ডাক আছে। খুবই ইমারজেন্সি না হলে আমি কখনো ক্লাস ফাকি দিতাম না। ভার্সিটিতে উঠার পরে প্রথম সেমিস্টারেও মোটামুটি ভালোই নিয়মিত ছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় সেমিস্টারে উঠে কি যে ভুতে ধরল ক্লাস করতে একটুও ভালো লাগে না। একটা ক্লাস করি তো পরের দুইটা করি না। ক্লাস ফাকি দিয়া কি করি? কিছুই করি না। বইসা থাকি। ঘুমাই। সব করতে ভালো লাগে কিন্তু ক্লাস করতে চরম অনীহা। আমাদের আবার এটেনডেন্সের খুবই কড়া নিয়ম। ৭০% এর কম উপস্থিতি হলে পরীহ্মা দেওয়া যাবে না। জরিমানা দিয়েও পরীহ্মা দেওয়া যাবে না। এদিকে আমার তো অবস্থা খারাপ। যাই হোক শেষ পর্যন্ত পরীহ্মা দিবার অনুমতি পাইলাম।

দেখতে দেখতে পরীহ্মার সময় চলে আসল। ক্লাস শেষ হয়ে পি-এল শুরু হয়ে গেল। সেমিস্টার এর দীর্ঘ কোর্সওয়ার্ক এর পর পরীহ্মার প্রস্তুতি নিবার জন্য ১৫ দিনের ছুটি দেওয়া হয়। যদিও আমার মত স্টুডেন্ট দের জন্য এটা হল শুধুই বিশ্রামের সময়। সময় নিয়ে যদি বিলাসিতা করতে ইচ্ছে করে তাহলে পি-এল হল পারফেক্ট সময়। ঘুমের পরিমান আরো বৃদ্ধি পাইল। কিন্তু খুব বেশি বাড়তে পারল না একটা বন্ধুর জন্য। এই মেয়েটার জন্য মাঝে মাঝে বই খুলে বসতে হত। ক্লাস করতাম না। লেকচার কিছুই তুলি নাই। সংগ্রহ করার ইচ্ছেও ছিল না। এই মেয়েটা নিজের সম্পুর্ন নোট আমাকে দিয়েছে। শুধু দিয়েই হ্মান্ত হয় নাই। আমাকে সেইসব অখাদ্য অনেকটা জোড় করে পড়তে বাধ্য করেছে। এখন মনে হচ্ছে শুধু এই মেয়েটার জন্যই এই সেমিস্টারটা ভালোভাবেই উতরে যেতে পারব।

এবার কোর্সগুলোর কিছু বিবরন দিতে চাইঃ

১। ইলেক্ট্রনিক্সঃ এই কোর্সের নাম শুনলেই আমার পেটের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠে। এর প্রধান কারন আমি এর আগামাথা কিছুই বুঝি না এবং আমার মাথায় ঢুকেও না। তার উপর এমন সব সার্কিট এনালাইসিস করতে হয় যে সব আমার মাথার উপর দিয়ে যায়। খুবই চিন্তায় ছিলাম। এখনো আছি। পরীহ্মা খুব একটা ভালো হয় নাই। ভালোই চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ওই যে বললাম, মাথায় ঢুকে না। কি আর করা।

২। ডাটা-স্ট্রাকচারঃ খুবই মজার একটা কোর্স। প্রোগ্রামিং রিলেটেড হওয়ায় এটা আমার প্রিয় কোর্সের তালিকায় নাম্বার ওয়ানে ছিল। একই কারনে অনেকের কাছে আবার খুবই ভীতিকর কোর্স। এই কোর্সে সি ল্যাংগুয়েজকে ইচ্ছেমত ব্যবহার করার একটা সুযোগ পাইছিলাম। অনেক অনেক কোড করছি। ক্লাসে স্যারও চমৎকার পড়িয়েছেন। পরীহ্মাও খুবই ভালো হইছে।

৩। সি++ প্রোগ্রামিং(অবজেক্ট অরিয়েনটেড)ঃ এটাও অনেক সুন্দর কোর্স। অবজেক্ট অরিয়েনটেশন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারছি। ল্যাংগুয়েজ হিসেবেও খুবই মজার। সি সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকার সুবাদে খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় নাই। তবে শিখতে পারছি অনেক কিছুই।

৪। লিনিয়ার এলজেব্রা এন্ড জিওমেট্রিঃ পুরাই উড়াধুরা কোর্স। ম্যাট্রিক্স নিয়া যে কত কি করা যায় সেটা এই কোর্স না থাকলে জানতাম না। এর পাশাপাশি টু ডাইমেনশন এবং থ্রি-ডাইমেনশন এর প্যারার কথা তো না বললেই না। তবে কোর্স যতটা কঠিন প্রশ্ন হইছিল ততটাই সহজ। নাহলে আমার মত ছাত্র এরকম কঠিন কোর্সে ৭০ এর মধ্যে ৬০ এর মত উত্তর দিতে পারে!!! একটাই কষ্ট থ্রি ডাইমেনশন এর এত্তো এত্তো প্রবলেম সলভ কইরাও পরীহ্মার সময় একটাও কমন পরে নাই।

৫। ফিজিক্সঃ কিছুই বলার নাই। শুধু বলতে চাই ফিজিক্স ইজ ফিজিক্স। কোন তুলনাই চলে না। ফেল করাও সহজ এ+ পাওয়াও সহজ। এখন আমি যে কি করব জানি না।

৬। কেমিস্ট্রিঃ একদমই রসকষহীন সাবজেক্ট। স্পেকট্রোস্কোপি টপিকটা একদম মাথার উপ্রে দিয়া গেছে। কঠিনের উপর কঠিন।পড়ি আর ভুলি। কিছুই মাথায় লাস্টিং করে না। শেষ পর্যন্ত পরীহ্মাটাও খুব একটা সুবিধার দিতে পারি নাই।

এই হইল আমার অবস্থা। অনেক অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর সবকিছুই কেমন জানি আগের মত ফিল করি না। এটা হয়তো আমার দোষ। আমিও এটাই ভাবি। কিন্তু এসব নিয়েই আমার সময়গুলো কেটে যাচ্ছে। ২ টা সেমিস্টার শেষে আমার প্রাপ্তির খাতাটা অনেকটাই শুন্য। কিন্তু চিরদিন শুন্য হয়ে থাকুক সেটাও আমি চাই না। কাল থেকে নতুন সেমিস্টার শুরু। আবার ক্লাস,ল্যাব,কুইজ, ভাইবা ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে বিশাল একটা প্যারা শুরু হবে। কিন্তু এর মধ্যেই আমি অনেক কিছু ফিরে পেতে চাই। কিছু স্বপ্ন যা বহুদিন আগে দেখেছিলাম সেটা তো পুর্ন করতে হবে। ভালো থাকবেন সবাই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.