নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিয়া হকের প্রধান পরিচয় তিনি একজন কবি। একাডেমিক রেকর্ড অনুযায়ী ১৯৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বরে তাঁর জন্ম মাদারীপুরের শিবচর থানার মিরজারচর গ্রামে।

জিয়া হক

জিয়া হক এমএ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেখালেখি শুরু ২০০৫ থেকে পেশা: সাংবাদিকতা

জিয়া হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নষ্ট সমাজের কাঙ্ক্ষিত সন্ধান

০১ লা মার্চ, ২০২২ রাত ৮:৩৬

"আপনি কখনও আপনার কথার ব্যাপারে ভেবেছেন? কথা তো দরজার মতো। হৃদয়ে যা থাকে তাইতো মুখ দিয়ে বের হয়। আর মিথ্যা কথা সুন্দর ফুলের মতো কিন্তু তাতে যে ফল দেয় তা সাময়িক। সত্য তিতা আর কাঁটার মতো তবু তার ফল উত্তম।

স্বভাবতই আমরা আনন্দ, হাস্যরসের গল্প শুনতে বেশি ভালোবাসি। জীবনমুখী লেখাগুলো কেন যেন আমরা এড়িয়ে যেতে চাই। আমরা সত্যকে ভালোবাসি কিন্তু সত্যকে গ্রহণ করতে বড্ড ভয় পাই। আমরা জীবনে কিছু অংশ মানি, আর কিছু অংশ মানতে পারি না। প্রকৃত অর্থে আমরা জানি না, আমরা আসলে কী চাই! এই না জানার কারণে ছুটতে ছুটতে ঠিক কোথায় থামতে হবে তাও আমরা জানি না। যে সম্পর্ক সামান্য ক্ষমার মধ্য দিয়ে ইতি টানা সম্ভব ছিল; সেটাকে টানতে টানতে শেষপর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলাতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

আমার কাছে সাফল্য এবং খ্যাতি ভোরের শিশিরের মতো। আসে আবার মিলিয়ে যায়। তাই এ নিয়ে অধিক ভাবি না কখনো। আর সম্পদ ও সম্মান শুধু অস্থায়ী মেঘের মতো আসে। কখনো তা দীর্ঘ সময় সাথী হয় আবার কখনো তার স্থায়িত্ব খুব কম। জীবন এক স্বপ্নের ন্যায়, যা আমরা সবাই অতিক্রম করি অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে।"

কবি ও কথাসাহিত্যিক রুবাইদা গুলশানের ‘তিতা কথা’র ভূমিকায় পেলাম বাণী চিরন্তনীর মতো অসাধারণ এইসব কথা। সমসাময়িক বিষয়ের ওপর ছোট-বড় ৬৫টি জীবনমুখী মুক্তগদ্য দিয়ে সাজানো বইটি। প্রতিটা লেখার মধ্যে ঝিনুকের মুক্তার মতো মূল্যবান সৌরভ ছড়ানো। কিছু লেখার কিছু লাইন পড়ে মনে হচ্ছিল মহান কোনো মনিষীর স্বর্গীয় আলো ঝলমল পথে হাঁটছি।

খুব সত্য, খুব জরুরি, খুব না বলা, খুব খুবই সুস্পষ্ট কথা বলতে বুকের পাটা লাগে। মেরুদণ্ডহীন, নির্লজ্জ জি হুজুরদের কাছে কেবল স্বপ্নই মনে হবে এসব। আমরা যা ভাবি না, ভাবতে চাই না; বলি না, বলতে চাই না; তাই ‘তিতা কথা’য় ভেংচি কাটছে সামান্য কোনো ভণিতা ছাড়াই।

'ছড়ার বই তো চলে না'র মতো 'সত্য কেউ তো বলে না'র সময়ও লেখক বলে গেছেন মানুষের ভেতরের মাকাল ফলটার চরিত্র। অবলীলায় করে গেছেন গোলাপের 'গোলাপ-রানি' হয়ে ওঠার সাহসী উচ্চারণ।

কোরআন-হাদিছ ও ইসলামী মূল্যবোধের অনেক জ্বলজ্বলে গল্পই খুব সহজ-সরল ও দারুণ আকর্ষণীয় কণ্ঠে তুলে ধরেছেন সব্যসাচী রুবাইদা গুলশান। সাবলীল ছন্দ, বেশ মায়াবী এবং ঈর্ষণীয় আধ্যাত্মিকতার কোমল ছোঁয়া আছে বইটিতে। বইটিতে আছে বহমান নষ্ট সমাজের আলোকিত মঞ্জিলের কাঙ্ক্ষিত সন্ধান।

‘তিতা কথা' পড়লে দুদিনের দুনিয়ার আলেয়ার পিছে পাগল হয়ে 'মোটিভেশনাল' স্পিকারদের মতো ছুটতে চাইবেন না। সবাই মিলে অপার শান্তি ও দম নেয়া স্বস্তির একটা জীবন কাটানোর স্বপ্ন দেখতে পাবেন অস্থির হৃদয়ে।

"জীবন নিয়ে আপনার ধারণা হওয়া উচিত স্বচ্ছ। পুঁথিগত কিছু মুখস্থ কথা নয় বরং প্রকৃত অর্থে আপনি খুঁজে বের করুন জীবনকে কেমন করে দেখছেন?" মায়া তুলতুলে এমন অনেক ভাবনার দুয়ার খুলে দিবে এই বইটি।

তিতা কথা’ ও তিতা কথা’র মিষ্টি স্রস্টা রুবাইদা গুলশান আপার সর্বোচ্চ সাফল্য কামনা করি।

বইটি প্রকাশ করেছে চিরদিন প্রকাশনী, স্টল ৬৮। প্রচ্ছদ মোস্তাফিজ কারিগর।

#তিতাকথা #রুবাইদা #গুলশান #বইমেলা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.