নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিয়া হাসান

এইটা আমার ব্লগ।

ম্যঙ্গোপিপল

সেলফ এক্সপ্রেশান আমার জন্যে খুব ইম্পরট্যান্ট। www.facebook.com/zia.hassan.rupu

ম্যঙ্গোপিপল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাঈদীর রায়ের পর দেশব্যপী সংঘর্ষে ৩ জন পুলিশ সহ প্রায় ৪১ জনের মৃত্যুকে আমি ইনস্টিটিউশন ফেইলর হিসেবে দেখি।

০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:২৭

গতকাল সাঈদীর রায়ের পর দেশব্যপী সংঘর্ষে ৩ জন পুলিশ সহ প্রায় ৪১ জনের মৃত্যুকে আমি ইনস্টিটিউশন ফেইলর হিসেবে দেখি। আমি ডিটেইলস ‍জানি না, কেও জানে বলে মনে হয়না । কয় জন জামাত শিবির এর কোপাকুপিতে মরছে, কয় জন পুলিশ এর গুলিতে মরছে, কিন্তু পত্রিকা মতে অধিকাংশ নিহত হয়েছে পুলিশের গুলিতে এবং ৩ জন পুলিশ ও নিহত হয়েছে সন্ত্রাসীদের আক্রমণে। যারা পুলিশের উপর হামলা করেছে, তারা প্রচণ্ড ঘৃণ্য একটা কাজ করেছে, যেটার জন্যে অবশ্যই অপরাধীদের খুঁজে বের করে চরম শাস্তি দেয়া উচিত।



অন্যদিকে পুলিশের হাতে অধিকাংশ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর ঘটনাটা আমাকে শঙ্কিত করেছে এর বেশী। পুলিশ রাষ্ট্রের একটা ইনস্টিটিউশন। পুলিশ কিন্তু কোনো ডিবেট এবং কোনো ঘটনায় পক্ষ বা প্রতিপক্ষ না। তার কাজ আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা। তাই পুলিশকে যদি গুলি ছুড়তে হয়, তাকে ১০০% নিশ্চিত হতে হবে যে, এইটাই লাস্ট লাস্ট লাস্ট লাস্ট রিজোর্ট। এইটা না করলে, অন্য প্রাণ এর হানি হবে বা তার নিজের জীবন বিপন্ন হবে। ওই জন্যে তাকে আমার জানা মতে গুলি করার আগে সর্বোচচ সংযম প্রদর্শন করতে হয়। কারণ, আই রিপিট পুলিশ রাষ্ট্রের একটা ইনস্টিটিউশন । ৩ জন পুলিশের নিহত হওয়ার ঘটনাতে বোঝা যায় , বেশ কিছু জায়গায় এতো কঠিন সন্ত্রাস হয়েছে যে পুলিশের জীবন বিপন্ন হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে,। ফলে ওই ধরণের কোনো ঘটনায় যদি ৪১ জন না ৪১০০০ মারাও যায় আমার তাতে কোনো প্রশ্ন নাই।



কিচু জায়গায় মন্দির ভাংচুর হয়েছে। এই ধরনের ঘটনায় যদি আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্যে পালিশ কে বাধ্য হয়ে গুলি ছুড়তে হয় এবং তাতে যদি প্রাণ হানি হয় সেটা নিয়েও তেমন কিছু বলার নাই। একটা নিরপেক্ষ ইনকোয়ারী করে সেটা জাস্টিফাই করে নিলেই চলবে।



কিন্তু টিভিতে বেশ কিছু ছবি দেখা যাচ্ছে, ওপেন মিছিলের উপর পুলিশ গুলি ছুঁড়ছে।আরমার্ড টেনক এর ভেতর থেকে পুলিশ গুলি ছুড়তে ছুড়তে যাচ্ছে। খোলা মাঠে পুলিশ, পিছু হটা জনতার উপর পিস্তল দিয়ে গুলি করছে। এই সিন গুলো কিন্তু ভয়ঙ্কর এবং দেখা যাচ্ছে , পুলিশ প্রোভোকড হলেই গুলি ছোড়াটা জাস্টিফাইড মনে করেছে। আমার একটা ধারনা ছিলো, গুলি ছুড়তে পুলিশকে ম্যাজিস্ট্রেটের পারমিশন নিতে হয়। আমি নিশ্চিত পুলিশের স্টান্ডিং ওর্ডার প্রসিডিউর আছে। কখনো কোন অবস্থাই, কিসের পরিপ্রেক্ষিতে গুলি ছুড়তে পারবে।



আমি যখন দেখি, সাদা পোশাকের পুলিশ গুলি ছুঁড়ছে, আমার আশংকা - একি পুলিশ নাকি ছাত্র লীগ? বেশ কিছু ছবিতে দেখলাম, সাদা পোশাকের কিছু লোক গুলি করছে পুলিশের মধ্যে থেকে। ওরা কারা ? দাঙ্গা হাঙ্গামার দিন কেন সাদা পোষাক পড়ে পুলিশ গুলি ছুড়বে ? এইটা কি এ্যালাউড হওয়া উচিত ?

কেউ প্রশ্ন করছেনা, ওই প্রসেসগুলো, ইন ইচ এন্ড এভরি কেইস ফলো করে হইছে কিনা। কারণ, আই রিপিট পুলিশ একটা ইনস্টিটিউশন।ওই ইনস্টিটিউশনকে তার উপর নির্ধারিত নিয়ম ১০০% মেনে চলার দায় রয়েছে। এইটা একটা কার্যকর রাষ্ট্রের কাঠামো ধরে রাখার জন্যে খুব ইম্পর্টেন্ট। অথচ দুই দিন আগে দেখলাম, চার্ পাঁচ জন পুলিশ একটা ছেলেকে একটা রুমে নিয়ে পয়েন্ট ব্লাঙ্ক এ গুলি করলো। (যেইটা অনেক সুশীল বন্ধু রাবার বুলেট বলে জাস্টিফাই করেছেন ) .



একটা ডাকাত ডাকাতি করতে পারে, একটা খুনী খুন করতে পারে, একটা শিবির রগ কাটতে পারে-তার জন্যে ডিউ কোর্স অফ লিগাল একশন আছে। কিন্তু একটা পুলিশ, বিক্ষুব্ধ জনতার উপর নিজের এস ও পি মোতাবেক দুই ডিলিজেন্স না করার আগে গুলি শুরুতে পারেনা। । এবং যদি পুলিশ এই ধরনের ঘটনায় অভ্যস্ত হয়ে যায়, আগামী কাল পুলিশ যে কোন লোক কে মেরে রেব এর মত বলবে ক্রস ফায়ারে মারা গেছে। যারা রাব এর ক্রস ফায়ারে শঙ্কিত তাদের উচিত গতকালকের ঘটনায় উচ্চকিত হওয়া, নইলে তাদের মরাল আর্গুমেন্ট টা থাকেনা । কারণ, পুলিশ যদি ইনস্টিটিউশনালি ফেইল করে, পুলিশ যদি কোনো সিস্টেম ফলো না করে, পাখির মত গুলি করার অধিকার পেয়ে যায়, তো একটা ইনস্টিটিউশন ভেঙ্গে পড়ে।



আমার মনে হয়েছে, এইটা আওয়ামী লীগের হাতে ব্যাপক দলীয়করণের মাধমে পুলিশের মত একটা সেক্রেড ইনস্টিটিউশনের সম্পূর্ণ ভাবে অকার্যকর এবং নিরপেক্ষ চরিত্র হারিয়ে ফেলার প্রথম উদাহরণ। কোথায় যেন পড়েছিলাম, গত চার বছরে পুলিশ এ প্রায় ১০,০০০ নাকি ১৩০০০রিক্রুইট হইছে। এর মধ্যে ৮০% ছিলো গোপালগঞ্জ আর কিশোরগঞ্জ। এবং ছাত্রলীগের বিভিন্ন কলেজ,ইউনিভার্সিটির নেতাদেরকে গণহারে পুলিশে ঢোকানো হইছে। আজকের ওই গোপালগঞ্জের ছাত্রলীগের নেতারা তাদের প্রতি সরকারের দয়ার প্রতিদান দিচ্ছে নাতো ?



আই রিপিট গতকাল যেইটা হইছে, সেইটা ইনস্টিটিউশনাল ফেইলর। একটা ইনস্টিটিউশন যদি ভেঙ্গে পড়ে, রাষ্ট্রের কাঠামো ভেঙ্গে পড়ে। একটা ইনস্টিটিউশনকে, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকতে হয়। রাষ্ট্রের একটা মানুষ,সে জামাত হোক, শিবির হোক, ছাত্রলীগ হোক, ধনী হোক, দরিদ্র হক, নাস্তিক হক, হিন্দু হক, মুসলমান হক- তার সাথে ইকুয়াল ট্রিটমেন্ট করার দায় রয়েছে রাষ্ট্রের প্রতি ইনস্টিটিউশনের। কিন্তু সাঈদীর রায়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে যারা বিক্ষোভ করবে , ভাঙচুর করবে, তাদেরকে গুলি করে প্রতিহত করাটা ইকুয়াল ট্রিটমেন্ট নয়।



এখন গুলিগুলো লাগছে গ্রাম বা মফস্বলের থার্ড ক্লাস, নিম্ন প্রজাতির, ধর্মান্ধ কিছু সাঈদী ভক্তদের, যাদের জীবনের একটা মূল্য নাই। কিন্তু কয় দিন পর, হাই ক্লাস,হাই সুশীল, ধর্ম নিরপেক্ষ, উচ্চ মুল্যের জীবনেও পুলিশ আঘাত করবে। যদিও প্রবাবিলিটি হিসেব করলে, আমাদের মত মানুষেরা যাদের বাসায় নেট এক্সেস আছে কমফোর্টেবল মিডল ক্লাস জীবন আছে তাদের এই ধরণের ঘটনার মুখে পড়ার সম্ভাবনা কম-কিন্তু আসবে। লিখে রাখুন, ওরা একদিন আপনার না হলে আপনার সন্তানের দিকে আসবে। তাই আপনি যদি ইফেক্টেদ নাও হন, ওই কমফোর্ট লেভেলের ভেতরে থেকেও, আপনাকে ইনস্টিটিউশনের পক্ষে দাঁড়াতে হবে।



কারণ, ইনস্টিটিউশন ভেঙ্গে পড়লে রাষ্ট্র অকার্যকর হয়ে পড়ে। এই ধরণের ঘটনায় রাষ্ট্রের নিজের নৈতিকতার ভিত্তি ভেঙ্গে পড়ে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৩৭

মো: ইলিয়াস বলেছেন: কি লিখলেন ভাই, স্বাধিনভাবে মত প্রকাশের পরিবেশ এখন এই দেশে নাই, একটু পরেই আপনাকে হয় দেশদ্রোহী নয় রাজাকার বলবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.