নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিয়া হাসান

এইটা আমার ব্লগ।

ম্যঙ্গোপিপল

সেলফ এক্সপ্রেশান আমার জন্যে খুব ইম্পরট্যান্ট। www.facebook.com/zia.hassan.rupu

ম্যঙ্গোপিপল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের বাম রাজনীতি নিয়া একটা ফাও পেচাল

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:০৯

বাসদ ভাংতাছে। এইটা ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে খুবই অনুল্লেখযোগ্য ঘটনা নয়। বাম ধারার রাজনীতি সমাজ পরিবর্তনের অন্যতম একটা হাতিয়ার। তাই বামধারার অনৈক্য সমাজের বঞ্চিত অংশের হিস্যা অর্জনে বাধা সৃষ্টি করে। যদিও আমাদের দেশের বাম পন্থী দের নিয়ে আমি অনেক অনেক হতাস। বিশেষ করে, নতুন প্রজন্মের বাম দের ধারণা গুলোর সাথে যখন পরিচিত হই তখন তাদের নতুন ধারার বাম আন্দোলন সম্পর্কে অজ্ঞানতা, চিন্তা করা ও নতুন আইডিয়া কে গ্রহণ করার ভয় এবং রিজিড অর্থডক্সী খুব হতাশ করে। তবুও বাম রাজনৈতিক স্পেস টাতেই কিছু মানুষ দেখা যায় যারা ব্যক্তিগত সততা ধরে রাখছে ।



সমস্যা হইলো , বিগত ২৫ বছরে সারা বিশ্বে অনেক বিপ্লব এবং পরিবর্তনের পরেও আমাদের বাম ধারায় শ্রেণী মুক্তির ধারনা এখনো কৈশোরের রোমান্টিকতার স্টেজ পার হয়নি। এত বছরের চর্চার পরেও বাংলাদেশের বাম রাজনীতি কেন মানুষের মূলধারায় ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি করতে বার্থ এবং শুধু মাত্র কিছু প্রগতিশীল দের স্বপ্নের মধ্যেই সেই স্বপ্ন আটকে রয়েছে তা নিয়ে মুক্ত আলোচনার প্রয়োজন।



আধুনিক বিশ্বের বাম এর ধারনা যোজন যোজন পথ পার হয়ে গেছে কিন্তু আমাদের বামপন্থিরা এখনও পিকিং পন্থি আর মস্কো পন্থিদের আদর্শ নিয়ে তর্ক করেন, যেখানে পিকিং আর মস্কোর লোকজন সেই পন্থা গুলো বিসর্জন দিয়ে এসেছেন বিশ বছর আগে।

একজন বামপন্থির আল্টিমেট গোল হলো শ্রেণী শোষণ থেকে মুক্তি ও সম্পদের সুসম বণ্টন নিশ্চিত করা।এই স্বপ্নকে মাথায় রেখে আজকের পৃথিবীতে বামেরা এখনো আদর্শিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে দেশে দেশে। বড় বড় মাল্টি ন্যাশনালদের বৃহৎ পুঁজির কর্পোরেট আগ্রাসন আর আই এম এফ , ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এর সাম্রাজ্যবাদী ঋণ পলিটিক্স এর মুখে মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে বাম এর ধারণা এখনো বহাল।

পার্থক্য হচ্ছে অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছানোর জন্যে আমাদের বামপন্থিরা এখনো কমিউনিজম এর মতো বিশ্বের প্রায় ৫০ টি দেশে পরীক্ষিত ভাবে ব্যর্থ একটা সিস্টেমের স্বপ্ন দেখেন আর বিশ্বের অন্যান্য দেশের বামেরা , বাজার অর্থনীতির বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে , ওই সিস্টেমটাকে বিভিন্ন ভাবে পরিবর্তন করে, বঞ্চিতদের অধিকার আদায় এর জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পার্থক্যটা আমাদের দেশের সব সেক্টর এর মতো, আমাদের বামদের বুদ্ধি-ভিত্তিক দ্বীনতা প্রকাশ করে।কমিউনিউজম কেন ফেইল করছে, এই বিতর্ক বিশ বছর আগে শেষ।

কিন্তু আমাদের বামেরা এখনো এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে, এমন একটা ইলজিকাল জগতে বাস করছেন, যে জগত থেকে কোনও কার্যকর রেজাল্ট আশা করা বাংলাদেশের নৌ-বাহিনীর পারমানবিক সাবমেরিন দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দখল করার স্বপ্ন দেখার মতই অলৌকিক এবং অবাস্তব।

কমিউনিজম ছিল একটা মহান স্বপ্ন। যে কোনও প্রগতিশীল মানুষ ঐ স্বপ্নে উজ্জীবিত হতে বাধ্য।

সমাজে কোন শোষণ থাকবেনা। কারো নিজস্ব সম্পদ থাকবেনা। কোনও ধনি বা গরিব থাকবেনা। রাষ্ট্র হবে সকল সম্পদের মালিক আর রাষ্ট্রের সকল সম্পদ, সকল নাগরিক সমভাবে শেয়ার করবে। এমন-ভাবনা যে কোনও প্রগতিশীল মানুষ কে উজ্জীবিত করবে।

মার্কস এর সম্পদের সমবণ্টন এর অন্যদিকে ছিল, মানুষের অসীম কর্মস্প্রীহার উপর আস্থায় তৈরি করা বাজার ভিত্তিক অর্থনীতির ধারণা ।

এডাম স্মিথ এর ধারনায়, যে বাজার অর্থনীতির মুল শক্তি হলো,মানুষের নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অদম্য স্পৃহা। যে স্প্রিহার কারণে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে থেকে মানুষ আপন কর্ম উদ্দীপনায় সম্পদ সৃষ্টির মাধমে নিজের এবং চাকুরী সৃষ্টির মাধ্যমে অন্যের অর্থনৈতিক উত্তরণ ঘটাবে, রাষ্ট্রর হস্তক্ষেপ এর বাহিরে থেকে।

এক পক্ষে রাষ্ট্র ,আরেক পক্ষে ব্যক্তি। উনবিংশ শতক এর ইতিহাস এই সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী এর দুটি দর্শন এর সংঘর্ষের ইতিহাস।

কিন্তু যতই দিন যেতে লাগল, ততই এটা ক্লিয়ার হলো, প্রতিটি কম্যুনিস্ট রাষ্ট্র নাগরিকদের ব্যক্তিসত্তাকে শোষণ করে, এক নায়ক বা একটা এলিট গ্রুপ পরিচালিত পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণীত হচ্ছে । এবং বিশ্বের যে দেশ গুলো ভালো রাষ্ট্র নায়কের আন্ডারে পরিচালিত হয়েছে তারা, সেই সব রাষ্ট্রের জনগণ রাষ্ট্রের বন্ধন এর বাহিরে থেকে আপন কর্ম উদ্দীপনায় এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সম্পদ সৃষ্টি করে পরিপূর্ণ জীবন উপভোগ করছে।

এই উদাহরণ টা সব চেয়ে বেশি পরিস্ফুট হয় উত্তর এবং দক্ষিন কোরিয়া তে। একই জাতীয়তার একটি রাষ্ট্র, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর ভিন্ন পথে গিয়ে কি ভিন্ন রেজাল্ট দিচ্ছে তা এই চিত্র টিতে বোঝা যায়।

কম্যুনিস্ট দেশ গুলোর জনগণ তাই নিজেরাই তাদের শাসকদের বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘটায় এবং নাটকীয় ঘটনা প্রবাহে নব্বই এর দশকে বিশ্বজুড়ে কমিউনিজম এর পতন ঘটে।এবং দুই একটা ব্যতিক্রম বাদে, সাড়া বিশ্বে বাজার অর্থনীতির প্রচলন হয়।

কমিউনিজম এর পতন আর বাজার অর্থনীতির বিজয় হয়েছে বলে বামপন্থার প্রয়োজনীয়তা এবং দর্শন হারিয়ে গেছে -তা কিন্তু নয়।

বরং এই পুজিবাদী সমাজে, ব্যপক বৈষম্য এবং শোষনের মুখে দরিদ্র এবং বঞ্চিত দের জন্যে প্রটেকশন সৃষ্টি করার জন্যে বাম এর ধারণা গুলো আরো অনেক বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে নতুন রূপে বরণ করেন নিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রগতিশীলেরা।

আর এটাও দিনে দিনে স্পষ্ট হয়েছে যে, সফল হয়েছে বলেই রাষ্ট্রের হস্তখেপহীন ঢালাও পুঁজিবাদ কোনও ভাল সমাধান নয়। এডাম স্মিথ এর মার্কেট নিয়ন্ত্রণকারী গোপন হাত বঞ্চিতদের জন্য চিন্তিত নয়। এবং এটা দেখা গেছে, বাজার অর্থনীতিতে সুযোগ পেলে সম্পদ স্রস্টি কারি ধনীক শ্রেণি কর্মী দের উপর ইচ্ছে মত শোষণ করতে থাকে।

তাই এই পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে বাম পন্থিদের প্রয়োজন আর বেশি করে অনুভূত হচ্ছে এখন দেশে দেশে ।

কারণ, কমুনিস্ট নন কমুনিস্ট সকল রাষ্ট্রেই বাম এর মূল ধারণা, শ্রেণী শোষণ থেকে মুক্তি এবং এমন একটা সম্পদের বন্টন যাতে সব বেশি বঞ্চিত যে, সেও যেন তার পরিব্বার এর জন্যে,খাদ্য , বাস স্থান, চিকিত্সা, শিক্ষার মত সকল বেসিক নিড পুরো করতে পারে।

কমুনিস্ট দের সাথে আজকের বাম এর প্রধান পার্থক্য এখানেই। আধুনিক বিশ্বে বাম এর ধারণা তে, রাষ্ট্রের কাছে সকল ক্ষমতা আর কেন্দ্রীভূত করা হয়না। বরং বেক্তি কে উত্সাহ দিয়ে, তাকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করে সম্পদ সৃষ্টিতে উত্সাহ দেয়া হয়। অন্য দিকে রাষ্ট্র তাকে ট্যাক্স প্রদান এর মাধ্যমে তার হিস্যা প্রদান করতে বলে। তার শ্রমিক দের জন্যে সম্মান জনক মজুরি, চিকিত্সা, পেনশন এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য করে।

রাষ্ট্র যে, সম বন্টন করতে গেলে নাগরিকের সৃষ্টিশীলতা হত্যা করে এবং একটা এক নায়ক তন্ত্রে পরিনত হয় এবং একটা ম্যানেজমেন্ট ক্রাইসিস এ পরে সেটা আজ পরীক্ষিত সত্য।

সম্পদ সৃষ্টি করা টা এইখানে সব চেয়ে ক্রিটিকাল ইসু। আপনার যদি ১ লক্ষ টাকা থাকে সেই টা যদি আপনি ১০ জন কে দেন, সবাই পাবে ১০ হাজার টাকা। কিন্তু এই ১ লক্ষ টাকা কে যদি সৃষ্টিশীলতা এবং উদ্ভাবনশক্তির মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকায় পরিনত করা যায়, তখন সবাই পায় ১ লক্ষ টাকা। এবং রাষ্ট্র চাইলে এই ১০ লক্ষ টাকা থেকে, ৫ লক্ষ টাকা ট্যাক্স এর মাধমে কেড়ে নিয়ে, দরিদ্র দের জন্যে সোশ্যাল সিকিউরিটি সৃষ্টি করতে পারে। এবং ১০ জন দরিদ্র কে ৫০,০০০ টাকা করে দিতে পারে।

এইখানে, সম বন্টন এবং সুষম বন্টন এর পার্থক্য। সম্পদ সৃষ্টি না করে সম বন্টন করলে সবাই পায় অল্প অল্প। কিন্তু সম্পদ সৃষ্টি করে সুষম বন্টন করতে পারলে, রাষ্ট্র তার সব চেয়ে উপেক্ষিত মানুষ টার জন্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পারে।



বিশেষত আমাদের দেশের মত অল্প সম্পদের দেশে সম্পদ সৃষ্টিতে ফোকাস না করে, সম্পদ বন্টনে ফোকাস করার যে ধান্দা তাতে ৫৫০০০ মাইল বন্টন করার পর ১৬ কোটি মানুষের দুই বেলা ভাত বাদে কারো কিছু জুটবেনা। কিন্তু আমরা আজ এমন এক সময় পৌছেছি যাতে দুই বেলা অন্য সংস্থান আমাদের জন্যে পর্যাপ্ত না। আমরা আরো অনেক কিছু চাই।

এই খানেই, আজকের বিশ্বের বাম এর মূল বিতর্ক। কত টুকু রাষ্ট্র নেবে উদ্যোক্তার কাছ থেকে। কত টুকু নেয়া সমীচীন। কত টুকু রাষ্ট্র বাধ্য করবে উদ্যোক্তাকে, তার কর্মচারীদের দেখ ভাল করার বেপারে। প্রশ্ন এখন আর সম্পদ এর সম বন্টনের নয়। আজ তাই বামদের প্রশ্ন , রাষ্ট্র কি চিকিত্সা এবং শিক্ষা ফ্রি রাখবে ? নাকি সেটাও প্রাইভেট কোম্পানি কে দিয়ে দিবে ? রাষ্ট্র কত টুকু সোশ্যাল সিকিউরিটি দিবে।

আজ তাই বাম রা লড়ছে দেশে দেশে, সর্ব নিন্ম মজুরি, চাকরি এর সুরক্ষা, ট্রেড ইউনিয়ন এর অধিকার, রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সার্বজনীন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বেবস্থা, ব্যাঙ্ক এবং বিশাল কর্পোরেট দের উপর অমব্যাডসম্যন এর মাধ্যমে রাস্ট্রের নিয়ন্ত্রন, অতি ধনী দের উপর উচ্চ ট্যাক্স সহ নানা বিষয়ে বঞ্চিত জন গোষ্ঠির স্বার্থ রক্ষার জন্যে।

আমাদের দেশে স্বাধীনতা এর পর থেকে পুঁজিবাদ সিস্টেম এর মধ্যে থেকে শ্রেণী বিপ্লব রাজনীতি চল্লিশ বছর ধরে জনসমপ্রিক্ততা সৃষ্টির ব্যর্থতা সত্ত্বেও আমাদের বাম পন্থিরা নিজেদের পথের দর্শন এর উৎকৃষ্টতা নিয়ে চরম আত্মতৃপ্তিতে ভুগেন।

শ্রেণী বৈষম্য দূর করার লক্ষে একটা বাস্তবায়ন যোগ্য নতুন দর্শন খুঁজে পাওয়ার বদলে সকাল বিকাল পুঁজিবাদকে গালি দেয়াই যেন আমাদের বামপন্থিদের মূল ইনটেলেক্টচূয়াল ডিস-কোর্স হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কিন্তু পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে কিভাবে দরিদ্রদের জন্য সেফটি-নেট করা যায়,কিংবা কিভাবে সর্বনিম্ন মজুরিকে সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে শ্রমিকদের মুক্তি দিয়া সম্ভব, কম্পিটিশন কমিশনের মাধ্যমে রাষ্ট্র কিভাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে পারে, বা অমব্যাডসম্যন সৃষ্টির মাধ্যমে আজকে ব্যাংকিং সিস্টেম এর অন্যায় গুলো থেকে নাগরিককে মুক্তি দিতে পারে, কিভাবে আজ চিকিত্সা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা কে পুজির খপ্পর থেকে বের করে, সার্বজনীন চিকিত্সা এবং শিক্ষা চালু করতে পারে সেই সব যুক্তি আমাদের বাম পন্থিদের কোন আলোচনার মধ্যেই নেই।



সি.বি.এ নেতাদের হাতে কিভাবে আমাদের রাষ্টীয় অসাধারণ অসাধারণ বৃহৎ কল কারখানা এবং প্রতিষ্ঠান গুলো একে একে ধংস হয়ে গেল তা নিয়ে কোনো আত্বসমালোচনা এবং বিশ্লেষণ ও দেখা যায়নি কোনো বামপন্থির লেখায়। মার্কস বা মাও এর বই হতে মন্ত্রের মত কিছু স্লোক জপ করে যাওয়াটাই ফ্যাশন। যে যত বেশি শ্লোক জানে সে তত বড় বাম পন্থী। এর চেয়ে বেশি লেজি বামপন্থি সাড়া দুনিয়াতে নাই।

অথচ তাদের ধারণা নাই, ফ্রান্স কেউ সোসালিষ্ট দেশ বলা হয়, কারণ ফ্রান্স এর কর্পোরেট ট্যাক্স ৭৫%.

Click This Link

এইটাও যে এক ধরনের সোশ্যালিজম সেইটা তাদের কে বলতে গেলে, তারা আপনাকে পাথর ছুড়ে মারবে, বা সাম্রাজ্যবাদের দালাল বলে গালি দিবে।

তারা এখনো মনে করেন, সব জমি নিয়ে সবাই কে ভাগ করে দিলেই আমাদের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। অথবা সরকার এর হাতে সব প্রতিষ্ঠান তুলে দিলে , দেশের দারিদ্র দূর হয়ে যাবে। অথচ বিগত ৩০ বছরে রাষ্ট্রের ওনারশিপ এর ধারনা পৃথিবীর প্রতিটা দেশে একই।

৮০ এর দশকে কমুনিস্ট, অকমুনিস্ট সকল দেশেই সরকার ব্যবসা করত। প্রতিটা দেশেই সরকার ব্যবসা করে লস খেয়ে প্রাইভেতায়জেশান করছে ৮০ এর দশকে। ৯০ এর দশকে সরকার সকল ব্যবসা সম্পূর্ণ ভাবে ছেড়ে দিসে,প্রাইভেট কোম্পানি কে। তখন মন্ত্র ছিল কম রেগুলেশন। কিন্তু বিংশ শতকের প্রথম দশকে এসে সরকার গুলো আবার দেখছে, বড় কোম্পানি গুলো, বা ব্যাঙ্ক গুলো তাদের সীমাহীন লোভ এর কারণে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি ভেঙ্গে দিয়ে ক্রাইসিস সৃষ্টি করছে। আমেরিকার সাব প্রাইম ক্রাইসিস, গ্রিস এর ইবন এবং লেটেস্ট সাইপ্রাস এর বিপর্যয় সব হইছে এই ধারায়। এই দশকে এসে সরকার গুলো আবার কড়া নিয়ন্ত্রণ জারি করছে।

এই প্রতি টা স্টেজ এ বামপন্থীরা তাদের ভুমিকা রাখছে রাষ্ট্রের বঞ্চিত দের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে।

এন্টারপ্রেণারশিপকে ঘৃণা করা আমাদের বামপন্থিদের একটা ফ্যাশন।অথচ বাজার অর্থনীতির ভিত্তি হলো এই এন্টারপ্রেণারশিপ।এন্টারপ্রেণাররাই চাকুরী সৃষ্টির মাধ্যমে রাষ্ট্রে দরিদ্রতা দূর করে। । এই ধরনের অনেক বেসিক ভুল আমাদের বামপন্থিদের হল মার্ক।



এই বাস্তবতা গুলো সম্পর্কে আমাদের বামপন্থীরা এত উদাসীন সেটা বিস্মিত হওয়ার মত। এমন কি শত্রুর মাইন্ড কে যাচাই করতেও যে এই গুলো সম্পর্কে এইকটু জানতে হবে তাও কখনো তাদের মাথায় আসেনি। ফলে, সকাল বিকাল পুজিবাদ কে গলি দেয়া তাই হইসে তাদের এক মাত্র ডিসকোর্স।

এই খানেই আমার বিস্ময় লাগে। চাই কি না চাই, বাংলাদেশ একটা মুক্ত বাজার দেশ। এই খানে পুজিবাদের যত খারাপ খারাপ কু প্রভাব আছে, তার সব গুলো দেখা গেসে।

কিন্তু বাজার অর্থনীতির দুর্বলতা গুলো বুঝে নিয়ে, একে ইনক্রিমেন্টাল পরিবর্তন এর মাধ্যমেও যে, কিছু কিছু ইসু তে দরিদ্র এবং বঞ্চিত দের জন্যে কিছু করা যায় তার জন্যও বামপন্থী দের সংগঠিত হতে দেখিনা। যদি হত, আমাদের দেশে এখনো গার্মেন্ট গুলো তে ট্রেড ইউনিয়ন থাকত, বা দেশের ইনফরমাল সেক্টর এ সর্ব নিম্ন মজুরি নিয়ে সরকার এর উপরে প্রেসার সৃষ্টি হত।

হয়, কমুনিজম, নয় স্বপ্ন। এই নিয়েই তারা ছিলেন। ফলে মানুষের মুক্তির জন্যে তাদের প্রাপ্তি শুন্যের কোঠায়।



মানুষ কিন্তু এইটা দেখছে। মানুষ দেখসে একটা ইউটোপিয়ার স্বপ্ন বাদে কমুনিস্ট রা কিছু দেয় নাই। মানুষ দেখেছে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে, তাদের অধিকার রক্ষায় কমুনিস্ট দের প্রাকটিক্যাল কন্ট্রিবিউশান নাই । মানুষ কিন্তু জানে, তার কি চাওয়া।সে দেখছে ,কমুনিস্ট রা শুধু কমুনিজম চায় ,তার বাস্তব সমস্যা গুলো তারা বুঝেও না, সমাধান করার আন্দোলন তো দুরের কথা।

আজ তাই বামপন্থি প্রগতিশীলদের কমিউনিজম এর রোমান্টিসিজম থেকে বেরিয়ে এসে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক সিস্টেম টাকে অনেক গভীর থেকে পর্যালোচনা করতে হবে।

সারা বিশ্বে বামপন্থিরা এগিয়েছে ব্যাপক গবেষণা এবং বিতর্কের মধ্যে দিয়ে। এবং তাদের বুদ্ধি ভিত্তিক আলোচনায় বাজার অর্থনীতিকে মেনে নিয়ে শ্রেণী বৈষম্যকে নির্মূল করার পথ খুজছেন তারা। কিভাবে বাজার অর্থনীতির ভিতরেই শোষিতদেরকে প্রোটেক্ট করা যায় তার রাস্তা খুঁজছেন তারা। দেশে দেশে তাই আজ বামপন্থিরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে পেরেছে তাদের ধারনা এর বাস্তবতা এবং জন্ সম্পৃক্ততার কারণে।

বারাক ওবামা বা ফ্রান্স এর অলিন্দ এই ধরনের বাম রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন।

কিন্তু এখনো বালখিল্য পিকিং এর মস্কো পন্থা এর তর্ক আর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ কে গালি দেয়ার আবর্তে ঘুরছে আমাদের বামপন্থিদের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ।

তাই শুধু মাত্র তেল গ্যাস এর আন্দোলন বাদে আর তেমন কোথাও জন মানুষ কে সম্পৃক্ত করতে পারছেননা আমাদের বামপন্থিরা, আওয়ামি আর বি এন পির এর খুল্লাম খুল্লা দুর্নীতি আর শোষণে সাধারণ মানুশের নাভিশ্বাস ওঠা সত্তেও।



নতুন প্রগতিশীল একটিভিস্টরা যত তাড়াতাড়ি এই বিষয় গুলো বুঝে নিয়ে সঠিক বিতর্কে এর আবহ সৃষ্টি করতে পারবেন তত তাড়াতাড়ি আমাদের বামপন্থি প্রগতিশীল রাজনীতি জন্য মানুষের জন্য সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে পারবেন এবং দুই মনশার লেজুর বৃত্তি না করেই ক্ষমতার ধারে কাছে যেতে পারবেন ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

দন্ডিত বলেছেন: ইটা রাইখা গেলাম। কিছু কথা বলার আছে।

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:১৩

আহমেদ রিজভী বলেছেন: যদিও কমিউনিজম আমার আদর্শ নয় আর কখনও হবেও না তথাপি আপনার লেখাট পড়ে খুব ভাল লেগেছে । তবে কষ্ট হচ্ছে এই ভেবে যে লেখাটি আমদের কম্যু মহাজনদের কানে = মাথায় ঢুকবে কিনা এই ভেবে । কেননা একসময়ের তুখুর কম্যুরা আজ এতটা নীচে নেমেছে যে তাদের কাছে কমিউনিজম এখন এক ব্যবসা মাত্র । আদতে তারা এখন হালুয়া রুটির ভাগ নিয়া কামড়া কামড়িতে ব্যস্ত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.