![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেলফ এক্সপ্রেশান আমার জন্যে খুব ইম্পরট্যান্ট। www.facebook.com/zia.hassan.rupu
বাংলাদেশ নাম এর রাষ্ট্রের সব চেয়ে বড় হুমকি এখন, ধর্মীয় মৌলবাদ এর উত্থান নয়, ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন নয়, মিয়ানমার এর রোহিঙ্গা সমসা নয়, টিকফা চুক্তি নয়- রাজনৈতিক শক্তির হাতে আমাদের সকল ইন্সটিটিউশান এর নিয়মতান্ত্রিকতার পতন এবং মন্টেস্কুর বর্ণিত রাষ্ট্রের তিন টি পিলার এর সেপারেশান এর সীমানা বিলীন হয়ে যাওয়া।
এইটা একটা ভয়ঙ্কর সিনারিও যার প্রতি নাগরিক এর উদাসীন্য, আমাদের কে নারকীয় পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিটা দিন।
একটা রাষ্ট্রের তিনটা পিলার আছে। বিচার ব্যবস্থা, সরকারি প্রশাসন, এবং আইন প্রনেতা বা সংসদ। এই তিন টা পিলার এর সেপারেশান, আধুনিক রাষ্ট্রের একটা মৌলিক প্রয়োজন । মন্টেস্কু এইটা বলে গেছিলেন ফ্রেঞ্চ রেভিলিউশান এর পর। তার পর থেকে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রে, রাষ্ট্রের তিন টা পিলার এর সেপারেশান এর এই মডেল টাকে, ধর্ম গ্রন্থের পবিত্র বাণীর মত অলঙ্ঘনীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
এই নীতির প্রধান শর্ত হলো, রাষ্ট্রের একটা পিলার কোন মতেই আরেকটা পিলার কে ইনফ্লুয়েনসে করতে পারবেনা, সবাই তার নিজের নিয়ম মত চলবে।
পৃথিবীর সকল দেশে, এমন কী পাকিস্তান এর মত নাখাস্তা দেশেও, একটা পিলার যদি আরেকটা পিলার কে ইনফ্লুয়েনসে করে, তো সাধারণ মানুষ এবং মিডিয়া গেল গেল বলে হই হই করে উঠে। মানুষ রাস্তায় নেমে যায়। কারণ, মানুষ জানে একমাত্র এই তিন টা সংস্থার ইন্টেগ্রিটি এবং সেপারেশান -জনগণ এর অধিকার রক্ষা করতে পারে।
একটা সময় ছিল যখন টেনডারবাযেরা টেনডার পেতে রাজনীতিবিদদের ইনফ্লুয়েনসে করতো, প্রশাসন কে ঘুষ দিতো। কিন্তূ, এখন রাজনীতিবিদ আর আমলারা মিলে এক একটা কন্ট্রাক্ট ঠিক করে। তারপর, সেই কন্ট্রাক্ট এর কে কত মারবে, তার হিস্যা করে টাকাটা ভাগ করে নেয়। তারপর একটা সাব কন্ট্রাক্টরকে ডেকে বলে, তুমি কত হলে কাজ টা করতে পারবা। তখন তারা একটা নিজস্ব বিডিং করে এবং যে কম বিড করে তাকে কাজ টা দেয়। এই জন্যে দেখবেন, সব কন্ট্রাক্ট এ এখন কন্ট্রাক্ট পায় কোন রাজনীতিবিদ এর কোম্পানি কিন্তু কাজ টা করে সাবকন্ট্রাক্টর। এর সাথে অনেক সময় রিট করে অংশ নেয়, বিচারপতি। এবং কাজটা করার সময় পুলিশ টেন্ডারবাজ থেকে কিছু মেরে নেয়। পুলিশ এর মারার জায়গা অবশ্যা আলাদা- প্রশাসন নয়, মানুষ।
রাষ্ট্রের তিন টা পিলার এর সম্মিলনে এ এক অভূতপূর্ব সিস্টেমেটিক লুটপাট যন্ত্র।
আর আরেকটা সুন্দর এক্সাম্পল হলো, সরকার এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাটক। প্রথমে সুপ্রীম কোর্ট এর বিচারক সরকার এর খায়েশ মত একটা আইন করে দিল যে, তত্ত্বাবধায়ক বাতিল। এরপর, সেই সাপোর্ট নিয়া ব্রুট মেজরিটির সরকার সংসদে সৃষ্টি করলো আইন, যে তত্ত্বাবধায়ক বাতিল। এবং এরপর যখন বিএনপি আন্দলনে নামলো আওয়ামী লীগ বিএনপির আন্দোলনরে ঠেকানোর জন্যে, বি এন পির নেতা দের, এটা সেটা কেস দেখায়া কাতারে কাতারে পুলিশ দিয়া গ্রেপ্তার করাইল। পুলিশ এর ইন্টেগ্রিটির কোন প্রশ্ন এই সব গ্রেপ্তারে নাই। সরকার বলছে গ্রেপ্তার করছে, সরকার ছাড়তে বলা মাত্র ছেড়ে দিবে। অথছ পুলিশ হচ্ছে রাষ্ট্রের সব চেয়ে সেক্রেড একটা প্রতিষ্ঠান। এরপর, সরকার আবার কোর্ট চালান দিয়ে, যারে যখন দরকার ঢুকাইতাছে যারে দরকার জামিন দিয়া বাহির করতাছে। ইচ্ছা মত। এখন বিচার ব্যবস্থার নিরেপেক্ষতার জন্যে সামান্য লোক লজ্জা আর দেখানোর দরকার নাই। কি অসভ্য দেশ।
তত্তাবধায়ক নিয়ে আমার চাই আনাও মাথা ব্যাথা নাই। আমি আমাদের দেশ কে, দুই টা নেড়ি কুকুর এর কামড়া কামড়ির হাড্ডি মনে করি না, যে হয় আমাদের হয় হিটলাছিনা নয় খাম্বা চোররে দাসখত দিয়া দিন কাটাইতে হবে। কিন্তূ রাষ্ট্রের সকল ইন্সটিটিউশান ভেঙ্গে পরার এবং রাষ্ট্রের পিলার গুলোর সেপারেশান বিলুপ্ত হওয়ার এইটা একটা ক্লাসিক উদাহরণ।
বলে রাখা ভাল, রাষ্ট্রের এই পিলার গুলোর সেপারেশান ভেঙ্গে পড়ের সুত্রপাত হয়, ১৯৯৬ এর জনতার মঞ্চে, এই আমাদের ভুমিকম্প মন্ত্রী মখার হাত ধরে। সেই আনুগত্যে মখা এখন ফারমারস ৪০০ কোটি টাকা দিয়া ফারমারস ব্যাঙ্ক দিছে। কিন্তু,১৯৯৬ সালে জনতার মঞ্ছে মখার হাত ধরে, প্রশাসনের সেপারেশান এর ভিত্তি ভেঙ্গে পরার পর থেকে, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, তত্ত্বাবধায়ক সবাই মিলে এই প্রশাসনের এই তিনোটা পার্ট কে এক করে বানিয়েছে একটা ভয়াবহ নস্ট যন্ত্র।
দুর্নীতি পৃথিবীর সব দেশে আছে। দুর্নীতি থাকা সত্ত্বেও মালেয়সিয়া আর ইন্দোনেশিয়ার উন্নতির উদাহারণ আছে। কিন্তূ, এই ভাবে, রাষ্ট্রের তিনটা সংস্থারে সিস্টেমেটিক ভাবে ভেঙ্গে ফেলার এবং সম্মিলিত ভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ দখলে এক হওয়ার উদাহরণ আর দুইটা নাই।
এবং এই সিস্টেম টা এমন একটা সিস্টেম হয়ে দাঁড়িয়েছে, যাকে পরিবর্তন করা খুবই দুরূহ। কারণ, এরা সবাই মজা পেয়ে গেছে। এ যে কি মজা, খাইত খাইতে লাল, নীল হয়ে গেছে এরা। কোনো কোর্ট নাই, পুলিশ নাই। কোটি কোটি টাকা। খাই, খাই, খাই। যেমনে পারি খাই, কেও দেখার নাই। কোনো ভয় নাই, কোন বাধা নাই।
আজ তাই, শুধু মাত্র দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে হবেনা। দুর্নীতি এখন আমার কাছে সেকেন্ড ইস্যু বলে মনে হয়। কিন্তু এই সিস্টেমটা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পরাটাই আজ প্রধান ইস্যু। তাই, এই সিস্টেম ভেঙ্গে পড়ে নিয়ে আমাদের উচ্চকিত হতে হবে। এই সিস্টেম কে ভেঙ্গে নতুন করে না সাজালে, বাংলাদেশ রাষ্ট্র ১৬ কোটি হাভাতে মানুষ থাকবে মাত্র। কিন্তু দারিদ্র মুক্ত এবং সমতা ভিত্তিক বাংলাদেশ আরও ৫০০ বছরেও সৃষ্টি করে যাবেনা।
২| ২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
provat বলেছেন: নিজ পরিবারকে যারা সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারে না, তাদের হাতে দেশ চালানোর দায়িত্ব ! এর চেয়ে ভাল আর কি আশা করা যায় তাদের কাছ থেকে ?
৩| ২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:১৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কিন্তু এই সিস্টেমটা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পরাটাই আজ প্রধান ইস্যু। তাই, এই সিস্টেম ভেঙ্গে পড়ে নিয়ে আমাদের উচ্চকিত হতে হবে। এই সিস্টেম কে ভেঙ্গে নতুন করে না সাজালে, বাংলাদেশ রাষ্ট্র ১৬ কোটি হাভাতে মানুষ থাকবে মাত্র। কিন্তু দারিদ্র মুক্ত এবং সমতা ভিত্তিক বাংলাদেশ আরও ৫০০ বছরেও সৃষ্টি করে যাবেনা।
++++
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৩২
অলিভার বলেছেন: আপ্নার পর্যবেক্ষন ভাল। কিন্তু আমাদের দেশের গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভেংগে পরার যে টাইম লাইন দিলেন সেটা বোধ হয় ঠিক নয়। আমার মনে হয় এই দুষণটি শুরু হয়েছিল সেনা শাসনের সময় এবং আমাদের ৯০ পরবর্তি সরকারগুলো সেই ধারাটি ইনহেরিট করেছে মাত্র। যেহেতু একই প্রশাসন কাজ করেছে এবং মখার মত লোক জিয়ার পাশেও ছিলো আবার এখন হাসিনার সাথেও আছে। এখানে ব্যার্থতা সম্ভবত নেতৃত্বের। সিস্টেমটিকে সারিয়ে তোলার জন্য নেতৃত্বের দুরদর্শিতাই সবচেয়ে প্রয়োজন।