![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেলফ এক্সপ্রেশান আমার জন্যে খুব ইম্পরট্যান্ট। www.facebook.com/zia.hassan.rupu
প্রশাসনিক সংস্কার এর এত বেসিক লেভেল এ আমরা পরে আছি যে তাতে এ ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনাল এর ইনডিকেটরে আমাদের প্রশাসনিক দুর্নীতি কোন ধাপে আছে তা নিয়েই আমাদের দেশের আলোচনার শুরু এবং আলোচনার শেষ |
কিন্তু আজকের বিশ্বে ম্যানেজমেন্ট স্টাডি এত ব্যাপক পেয়েছে এবং একটা অর্গেনায়জেশান এর গোল অর্জন এর প্রতিটি বিষয় যেমন একটা ওয়ার্ক স্টেশন এর সাইজ এবং উচ্চতা থেকে শুরু করে, সিইও কি ভাবে ডিসিশন নিবেন তার প্রতিটি বিষয় নিয়ে এত রিসার্চ হচ্ছে এবং নিত্য নতুন আবিস্কার নিয়ে নিয়ত কত ধরনের সংস্কার যে হচ্ছে সেই সব ব্যাপারে আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র এবং প্রশাসনের সামান্যতম আইডিয়া নাই বললেই চলে |
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তত্কালীন ব্রিটিশ মডেল এর যে প্রশাসন রেখে গেছিল, তার দুইশ বছর পরে এখনো সেম সিস্টেমে চলছে বাংলাদেশের প্রশাসন |
ইন্টেরেস্টিংলি এই কথা টা বলছিলেন , বাংলাদেশ বংশউদ্ভুত আলোচিত ব্রিটিশ কূটনীতিবিদ আনোয়ার চৌধুরী| আমি তার একটা সাক্ষাতকারে পড়েছিলাম যেখানে উনি বলছেন, বাংলাদেশের প্রশাসন চলছে ১০০ বছর আগের ব্রিটিশ সিস্টেমে | তার মুখ থেকে আমার কথাটা ইন্টেরেস্টিং লেগেছে কারণ, আনোয়ার চৌধুরী ব্রিটিশ প্রশাসন থেকে উঠে আসা একজন কর্মকর্তা | এবং একজন ব্রিট বাংলাদেশের প্রশাসন কে এনালাইজ করে দেখতে পেয়েছেন , ব্রিটেনের ফেলে যাওয়া সিস্টেমে বাংলাদেশ চলছে ম যেই সিস্টেমে ব্রিটেন আর চলে না|
আমরা কেও এক্সপেক্ট করিনা বাংলাদেশ ব্রিটেন হয়ে যাবে কিন্তু দুক্ষজনক বাস্তবতা হলো বিগত পাচ বছরে এই প্রশাসন কে সংস্কার করার কোনো চেষ্টা ছিলনা |
আজকে ২০১৩ সালে এসে ব্রিটিশদের ফেলে যাওয়া প্রশাসন কে সংস্কার না করার এই প্রবণতাটা অত্যন্ত হতাশাজনক| কারণ আমরা যে উন্নতির কথা বলি কিন্তু সেই উন্নতি করতে হলে প্রথম কাজ হচ্ছে জনপ্রশাসনের সংস্কার |
বিগত ২১ অক্টোবার প্রথম আলোতে অরুণ কর্মকার সুশাসন এর বিষয় টা এনালাইজ করছেন, আওয়ামী লিগ এর নির্বাচনী অঙ্গীকার বই ধরে ধরে | সেই লেখা থেকেই এই লেখার প্রেরণা |
Click This Link.
আমি নির্বাচনী অঙ্গীকার বই ধরে একটা দল এর পারফরমেন্স মাপাটা অসম্পূর্ণ বলে মনে করি | কারণ, বাংলাদেশের কোনো দলকে জনগণ, নির্বাচনী অঙ্গীকার পড়ে ভোট দেয় না | আগামী নির্বাচনে যেইটা হবে, ঠিক তার মতই ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লিগ পেয়েছিল রিভেঞ্জ ভোট | তত্কালীন বিএনপি সরকার এর দুর্নীতি এবং একই রকম ব্যর্থতার কারণে, মানুষ হাসিনার সরকার কে ক্ষমতায় আনে, তারা পরিবর্তন আনবে এই এই প্রতিশ্রুতি দেয়ার কারণে |
আমি তাই আজকের বিশ্বের মেনেজমেন্ট এর যেই সব বেসিক স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে সেই সব ধরে, আওয়ামী লিগ এর গত পাচ বছরের সাফল্য ব্যর্থতার একটা খতিয়ান করবো | আমি আবার বলছি এইটা কোনো অ্যাডভান্সড লেভেল এর এক্সপেকটেশন না এবং এই গুলো করতে কোনো ম্যানেজমেন্ট গুরু হতে হয়না | একটা প্রশাসন কেমনে চলে তার সিম্পল আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর ভিত্তিতে এই চেঞ্জ গুলো আনা সম্ভব ছিল |
প্রশাসনের ডিজিটাইজেসন –টেন্ডার
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর যত গুলো প্রতারণা হইছে, আওয়মী লিগ এর ২০০৮ এর নির্বাচনে ডিজিটাল বাংলাদেশ কেম্পেইন ছিল তার প্রথম দশটার মধ্যে একটা |
কিসের ডিজিটাইজেসন হয়েছে গত পাচ বছর ?
বাংলাদেশের মত দুর্নীতিমগ্ন দেশে প্রশাসনের ডিজিটাইজেসানের প্রথম ধাপ হইলো, টেন্ডার প্রসেসটা ডিজিটাইজ করা | এই জিনিষটা ইন্ডিয়ার মত দেশ , পাকিস্তান এর মত দেশ, মালদীপ এর মত দেশ আরো ১০ বছর আগে করে ফেলছে সরকার| এই বিষয়ে বিশ্ব ব্যান্ক থেকে ফান্ড থেকে ইতিমধ্যেই কয় একশ কোটি টাকার প্রজেক্ট হয়েছে ? তাতে কিছু ওয়েবসাইট হয়েছে যাতে টেন্ডার ইনফরমেশন পাওয়া যায় | মূল ইস্যু টাকে এড্রেস না করে এইটা একটা ব্যাপক ভাওতাবাজি যার উদ্দেশ্য ছিল দুর্নীতির সিস্টেম টা চালু রাখা |
এখনো টেন্ডার ড্রপ করতে হয়, নিরিদিষ্ট জায়গায় এবং টেন্ডার বাক্স দখল করে টেন্ডার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করা যায় | এই ২০১৩ সালে এসে এক মাত্র বাংলাদেশেই এই সিস্টেম চালু আছে |
এই জন্যে রেগুলার টেন্ডার নিয়ে মারামারি হয়| কিছু দিন আগে, যুব লিগ নেতাদের গোলাগুলিতে, টেন্ডার ছিনতাই এর ঘটনায় চিটাগাং এ একটা বাচ্চা ছেলে মারা গেল | সড়ক ভবনে টেন্ডার ছিনতাই নিয়ে মারামারি নিত্য ঘটনা |
Click This Link.
এই কাজটা করতে কি লাগে ?
শুধু একটু সদিচ্ছা | দাটস ইট |
একটা ডিস্ট্রিবিউটেড সফটওয়্যার বানাতে ১০ কোটি টাকাও লাগার কথা না | দেশী সফটওয়ার কোম্পানি গুলোরে অর্ডার দিলেও এইটা ছয় মাসে বানায় দিতে পারবে | বিদেশী সফটওয়্যার কিনতে পাওয়া যায় | আওয়ামী লিগ পাচ বছরে এইটা পারে নাই কিন্তু মিনিমাম কয় একশ কোটি টাকা লুটপাট হইছে টেন্ডার ডিজিটাইজেসন প্রজেক্ট খাতে |
ডিজিটাইজেসন -ওয়ার্ক প্রসেস
কিছু বিদেশী কোম্পানির কাজ করার অভিজ্ঞতায় নতুন জয়েন করার পর আমার হটাত হটাত টাসকি লেগে গেছিল | কি সফটওয়্যার !! কোনো কাগজ পত্র লাগে না | সফটওয়্যার এর মাধ্যমেই এপ্রুভাল হয়ে যায়, কাজ এর ট্রাক থাকে, ফাইল মুভমেন্ট হয়, ডিসিশন এর মুভমেন্ট হয়, রেকর্ড কিপিং হয় যেইটা কেও মেনিপুলেট করতে পারবেনা |
একটা সরকার এর যেই ধরনের প্রসেস, পিপল আর প্লাটফর্ম আছে তার সব কিছুর জন্যে এই ধরনের সফটওয়্যার এখন পৃথিবীর সব দেশে ব্যবহার হয় | এই সফটওয়ার গুলো যাকে ইআরপি বা এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্লানিং বলে - এই গুলো এখন কিনতে পাওয়া যায় | ওরাকল, এসএপি বা আরো বড় বড় কোম্পানি এই গুলো বিভিন্য দেশের সরকার এর জন্যে বানাইছে | ওদের রেডিমেড মডিউল পাওয়া যায় | আপনি জাস্ট কিনবেন আর ইনস্টল করবেন (এত সহজ না, তবুও আমি বোঝার সুবিধার জন্যে একটু সিম্পলিফাই করে বললাম) | এই গুলো ডিস্ট্রিবিউটেড মডিউল | ফেসবুকের মত অনলাইন প্লাটফর্ম | পিসিতে পিসিতে সফটওয়্যার ইনস্টল করতে হবেনা | ক্লাউড থেকেই কাজ হবে | এই গুলো চাইলে কাস্টমাইজ করে নেয়া যায় |
ফলে অটোমেটিক দুর্নীতি কমে যায়, অটোমেটিক প্রশাসন থেকে বুরক্রেসী কমে যায় , অটোমেটিক
ইনএফিশিয়েন্সি কমে যায় , প্রসেস স্ট্যান্ডার্র্ডায়জ হয়, ডিসিশান মেকিং এ গতিশীলতা আসে |
সরকার যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছিল তখন আমরা ধরে নিয়েছিলাম এই ধরনের কিছু বোধ হয় হবে| কিন্তু সেই কেম্পেইনটা ছিল শতাব্দীর শ্রেষ্ট প্রতারণা গুলোর মধ্যে একটা |
প্রশাসনে ডিজিটাইজেসন- বেসিক আইটি লিটারেসি
এই প্রথিবীতে বিজনেস এবং প্রশাসনে কমিউনিকেশানের এখন একটা মাত্র স্ট্যান্ডার্ড - ইমেল | আপনি দেখবেন, আমাদের দেশে এখনো পেপারে এই রকম আসে যে কোনো একটা মন্ত্রনালয় একটা আদেশ দিয়েছে যা পেপারে আসছে | কিন্তু ৩০ দিন পরেও , ওই কাজ এর সহযোগী মন্ত্রনালয় বলছে , আমরা এখনো চিঠি পাই নাই |
এই ২০১৩ সালে এই ধরনের কথা উনারা বলতে পারে কারণ এখনো সচিবেরা মেইল করতে পারেনা, তাদের বেসিক আই টি লিটারেসি নাই | এখনো প্রতিটা সরকারী প্রতিষ্ঠানে কম্পুটার অপারেটাররা চিঠি ড্রাফট করে |
বাংলাদেশের প্রশাসনে গতিশীলতার প্রথম ধাপ হইল সবাইকে মেইলিং এড্রেস দেয়া | এবং নিয়ম করে দেয়া যে সব কম্পুটার অপারেটার এর পদ বিলুপ্ত |
প্রশাসন এর রিস্ট্রাকচার
আপনারা কি জানেন বাংলাদেশে এখনো রেশম অধিদপ্তর আছে যেই অধিদপ্তরে মিনিমাম ৫০০ লোক চাকরি করে , বেতন নেয় কোনো কাজ করেনা ? আপনারা কি জানেন, সরকারে এখনো পোশাক শিল্পের জন্যে একটা গার্মেন্টস অধিদপ্তর খুলে নাই ? সরকার গার্মেন্টস রিলেটেড সব কাজ করে দেয় বিজিএমইএ |দেশের প্রধান এই সেক্টর এর উপর সরকার কোনো ওভার সাইট নাই এবং অতিব প্রয়োজনীয় এই ন্যুনতম সংস্কার বিগত পাচ বছরে সরকার করতে পারে নাই |
বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রীর প্রথম কাজ হওয়া উচিত, সংস্হাপন মন্ত্রনালয়, অর্থ মন্ত্রনালয় আর পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় এর সাথে সরকার এর অর্গানোগ্রাম নিয়ে বসা এবং এর পর সরকার এর একটা একটা ডিপার্টমেন্ট এর কত খরচ , কি তাদের আউটপুট কি তাদের জনবল সব যাচাই করে, অপ্রয়োজনীয় ডিপার্টমেন্ট গুলো ছাটাই করা বা অন্য দিকে নিয়া যাওয়া |
আমি বাজেট এনালাইসিস এর সময় দেখছি সরকার এর প্রশাসন এর খরচ পাচ বছরে প্রায় ডবল করে ফেলছে | পুরো বিশ্বে এখন চলতাছে সরকারী ব্যয় সংকোচন করে, রাষ্ট্রের খরচ কমানোর একটা জোয়ার কিন্তু বাংলাদেশে চলছে উল্টো ধারা |
কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, আউটপুট কি ? সরকার জনগণ এর জন্যে বাত্সরিক ৮১০০০ কোটি টাকা বাজেটে তিন হতে চার হাজার কোটি টাকার ভিজীবল কিছু প্রজেক্ট ছাড়া কি কি এচিভ করছে ?
এবং এই মাথা ভারী প্রশাসন কে ঢেলে সাজানোর কাজ টা কে করবে ?
কোয়ানটেটিভ পারফরমেন্স মেনেজমেন্ট
খুব ভারী কথা মনে হইলেও এইটা খুব বেসিক জিনিস | পৃথিবীর প্রতিটা দেশে প্রতিটা সরকার এইটা করে |
সরকারী কর্মচারী দের পারফরমান্স যাচাই করা বা একটা ডিপার্টমেন্ট জনগণকে কি সাপোর্ট দিচ্ছে তা যাচাই করা খুব কঠিন কাজ | মুখে মুখে যে কোনো ডিপার্টমেন্ট দাবি করতে পারে , আমরা অনেক কাজ করি | এই করি , সেই করি | কিন্তু যতক্ষণ না তার টোটাল আউটপুট টাকে যদি আপনি একটা সংখ্যায় নিয়ে আসবেন ততক্ষণ পর্যন্ত এই দাবি গুলোর সত্যতা যাচাই করা অসম্ভব | সরকার কোনো প্রফিট মেকিং প্রতিষ্ঠান না | ফলে, লাভ ক্ষতি দিয়ে তার পারফরমেন্স যাচাই করা যায় না | তাই এখন সারা বিশ্বে, সরকারী প্রতিষ্ঠান এবং কর্মকর্তার পারফরমেন্স যাচাই এর জন্যে, কোয়ানটেটিভ এনালাইসিস করা হয় | প্রতিটা ডিপার্টমেন্ট এর জন্যে, প্রয়োজনীয় বেঞ্চমার্ক সেট করা হয় |
যেমন স্বাস্থ্য বিভাগ যদি একটা হাসপাতাল এর পারফরমেন্স মনিটর করে, তবে ওই হাসপাতালকে টার্গেট দিবে, দৈনিক কয় জন রোগীর সেবা করতে হবে মিনিমাম | বা কতজন রোগী আরোগ্য হয়ে ফিরে গেল | পার রোগী হাসপাতাল এর খরচ কত হলো | বা পাসপোর্ট অফিস দিনে কয় টা পাসপোর্ট প্রসেস করবে বা রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি দিনে কয়টা লাইসেন্স দিবে , একজন ওসি কে টার্গেট দিতে হবে প্রতি মাসে ম্যাক্সিমাম কয়টা অপরাধ ওই এলাকায় একসেপটেবল | এবং সেই অনুসারে তার প্রমোশন হবে বা পারফরমেন্স বোনাস হবে |ভালো কথা, আমাদের প্রশাসনে পারফরমেন্স বোনাস বলে কিছু নাই | এইটা কেও এখনো ভাবতে পারে নাই |
এ কোয়ানটেটিভ পারফরমেন্স হতে হবে ভিজিবল যা জনগণ সব সময় মনিটর করবে |এই ভাবে সরকার এর প্রতিটা ডিপার্টমেন্টকে জনগণ এর সামনে নিয়ে আসলে লজ্জায় তারা অটোমেটিক তাদের কাজ ঠিক করবে |
স্বচ্ছতা- ছি ছি ছি
ইউকে তে ডেভিড কেমেরন ক্ষমতায় আসার পর একটা নিয়ম করেছিল -১০,০০০ পাউন্ড এর উপর ডিপার্টমেন্ট এর সব ব্যয় প্রতি দিন ডিপার্টমেন্ট এর ওয়েব সাইটে দিতে হবে যাতে জনগণ সেই গুলো দেখতে পারে |
অথচ আমাদের দেশের সরকার , গত পাচ বছরে কোটি কোটি টাকার ডিল করছে মানুষ কে জানায় নাই | রাশিয়ায় গিয়া ১০০ কোটি ডলার এর অস্ত্র কিনছে, বেলারুশ থেকে ১০০ কোটি ডলার এর অস্ত্র কিনছে আমরা জানছি চুক্তি সাক্ষর এর পর | এ ছাড়া প্রতিটা ডিপার্টমেন্ট তাদের কি খরচ হইছে, তা কখনো বলে না |
৮১০০০ কোটি টাকা, আবার বলছি ৮১০০০ কোটি টাকা এখন সরকার এর বাজেট | এইটা অনেক বড় একটা বাজেট |৫০ কোটি টাকা দিয়ে একটা প্রপার ইউনিভার্সিটি করা যায় | কিন্তু এই ৮১০০০ কোটি টাকা সরকার কেমনে খরচ করে, তার একটা খাতওয়ারী বিবরণ ছাড়া আমরা কিচ্ছু জানিনা |
কিন্তু দেশের ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার এর অবস্থা এবং পাচ বছরে একজন সরকারী কর্মচারীর দুর্নীতির কারণে বিচার না হওয়ার ডাটা দিয়ে বোঝা যাচ্ছে এই টাকা দিয়ে কি হরির লুট হচ্ছে এবং এই অসচ্চ্ছতার মূল কারণ কি |
জামাত খোজার নাম দিয়ে প্রশাসনে উইচ হান্টিং এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম দিয়ে প্রশাসনে আওয়ামী লিগারদের একচ্ছত্র প্রাধান্য দেয়া
আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে শোনা | একটা একটা উত্পাদনকারী আধাসরকারী প্রতিষ্ঠান এর সাথে টেন্ডার পার্টিসিপেট করে রেগুলার সরকারী জিনিস কিনতো | সেই খানে একজন জিএম ছিল অসম্ভব সৎ | ওই প্রতিষ্ঠানের সব জায়গাতেই ছিল দুর্নীতি কিন্তু ওই জিএম এর কাছে গেলেই লোকটা সব প্রবলেম সলভ করে দিত | টেন্ডার প্রসেস এর সব দুর্নীতি লোক টা বন্ধ করে রাখছিল |
সরকার পরিবর্তন এর মাত্র তিন মাসের মাথায় লোক টাকে জামাত ট্যাগ দিয়ে পাঠায় দেয়া হইলো রিমোট একটা জায়গায় | এবং তারপর থেকে সরকার এর এই পুরো প্রতিষ্ঠানটা লস এর মধ্যে পড়ছে | এই লোক টা দাড়িও রাখত না এবং খুব যে ধার্মিক ছিল তাও না |
জাস্ট দুর্নীতির রাস্তা খোলার জন্যে লোকটারে জামাতি ট্যাগ দেয়া হইছে এবং এর প্রতিষ্ঠানকে আওয়ামী কেডারদের লুটপাট সুযোগ করার জন্যে লোক টাকে বের দেয়া হইছে |
আমি এই রকম প্রচুর গল্প শুনছি | এবং বিগত পাচ বছরে, প্রশাসনের প্রতিটা স্টেপে প্রমোশন পাওয়ার একমাত্র মাপ কাঠি ছিল আওয়ামী লিগ এর নেতাদের সাথে ঘনিষ্টতা |
এইটার ফলে একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটছে
রাষ্ট্রের চারটা স্তম্ভের মধ্যে যে সেপারেশন তার মধ্যে রাজনীতিবিদ এবং প্রশাসনের সেপারেশন সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে | এই ব্যাপারে আমার একটা ডিটেল লেখা আছে |
তার থেকে কোট করতাছি
Click This Link
একটা সময় ছিল। সরকার কর্মচারী এবং রাজনীতিবিদেরা এক জন আরেক জনকে ভয় পেত এবং নিরাপদ দূরত্ব মেইনটেইন করতো। এই দূরত্ব ধীরে ধীরে কমে এসে এবং রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ি ও সরকারী কর্মচারী এই তিন পক্ষ সম্মিলিত হয়ে, এখন এক অপূর্ব সম্প্রীতি এস্টাবলিশ হইছে।
আমি কোন মতেই মিন করিনাই যে তার আগের বছর গুলোতে বি এন পি বা তত্ত্বাবধায়কের আমলে দুর্নীতি কম হইছে। আমার পয়েন্টটা হইলো, গত পাঁচ বছরে দুর্নীতির ইনস্টিটিউশনালাইজেশন হইছে। দুর্নীতি কমা বাড়া বা দুর্নীতির ইন্সটিটিউশানালাইজ হওয়া আলাদা জিনিষ|
আগে সরকারি দুর্নীতিতে কনট্রেকটাররা, কন্ট্রাক্ট পাওয়ার বিনিময়ে একটা পার্সেন্টেজ আমলা বা রাজনীতিবিদদের দিতো। এখন যেটা হয়, তা হলো, আমলা এবং রাজনীতিবিদেরা মিলে পুরো কনট্রাকটর একটা ভ্যালু ঠিক করে এবং এই ভ্যালুটা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে,কনট্রেকটারকে ডাক দিয়ে বলে, আপনি এই কাজটা মিনিমাম কত টাকায় করবেন।
তারপর তারা কন্ট্রাক্টরের সাথে নেগোশিয়েট করে। ফলে দেখবেন, এখন সরকারি সব কন্ট্রাক্ট এ, কন্ট্রাক্ট নিছে কোন রাজনীতিবিদ এর কোম্পানি এবং কাজ টা করছে কোন প্রফেশনাল কোম্পানি। চট্টগ্রামে বহদ্দার হাটে, যে ফ্লাইওভারটা পড়লো, তার কাজ ছিলো চট্টগ্রামে এর এক কালের প্রখ্যাত ছাত্রনেতা প্রয়াত জাহাঙ্গীর সাত্তার টুকুর কন্ট্রাক্ট। কাজটা এক্সিকিউট করছিলো একটা প্রফেশনাল ডেভেলপার।
একটা সংস্কার হইছে , ২ কোটি টাকার নিচে সরকারী কাজে মিনিমাম দুই বছরের অভিজ্ঞতার নিয়ম টা বাতিল করা হইছে
এই সংস্কার টা করা হইছে, আওয়ামী লিগ এর নিচের লেভেল এর কেডার দের সরকারী দুর্নীতিতে পার্টিসিপেট করে দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্যে | এর ফলে, দেশের বিভিন্য অঞ্চলে সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোতে এলাকার যুবলীগ, ছাত্র লিগ এর কেডাররা টেন্ডার গুলো টে পার্টিসিপেট করার সুযোগ পাইছে | এবং বিগত ৫ বছরে বাংলাদেশের ৯৫% টেন্ডার এবং কন্ট্রাক্ট হইছে সরকারী ক্যডার দের ছত্র ছায়ায় |
দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয়
এই টার্ম এ, শেখ হাসিনার সরকারের একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে, আমলা এবং দুর্নীতিবাজদের অপেনলি প্রশ্রয় দেয়া হইছে।তার আগে প্রশ্রয়টা ছিল ইমপ্লিসিট এবং গোপন। এইটা প্রকাশ পেলে হই চই পরে যেত। কিন্তু, আওয়ামী লীগ এর এই টার্ম এ বিষয় টা ছিল প্রকাশ্য। তত্ত্বাবধায়কের আমলে যেসব সরকারি আমলারে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হইছিল, তাদেরকে সরকার প্রধান ডাইরেক্টলি ওপেন মিটিং এ বলছে, আপনাদের উপর অত্যাচার হইছে, আপনারা নির্ভয়ে কাজ করেন। তাদের প্রমোশন ও দেয়া হইছে। সরকার ডাইরেক্টলি তাদের ফিলিং দিছে, আমরা আপনাদের প্রটেক্ট করবো আনলিশ ইয়োর গ্রিড।
এবং দেখেন, আমার জানা মতে আজকে পাচ বছরে আমার জানা মতে একজন সরকারী কর্মকর্তার শাস্তি হয় নাই | জাস্ট ওয়ান |এই একটা ডাটা যথেষ্ট বোঝার জন্যে আওয়ামী লিগ এর দুর্নীতির ব্যাপারে মনোভাব কি ছিল |
বিচার বিভাগ সংস্কার - কিছু বলার নাই
এই দেশ এর দুর্নীতি কে রক্ষা করে বিচার বিভাগ | যে কোনো ইস্যুতে কোর্ট এর যান কোর্ট আপনাকে সারা জীবনের জন্যে ঝুলিয়ে দিবে | মামলা জট চলতেই আছে, চলতেই আছে | এই দেশের কত লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন নষ্ট হয় যাচ্ছে কোর্ট এর দরজায় ঘুরতে ঘুরতে- বিচার শেষ হয় না |
সুবিচার একটা সভ্য দেশের প্রধান একটা উপাদান | কিন্তু, সেই বিচার হীনতার দেশে আমরা দিনে দিনে অসভ্য হয়ে যাচ্ছি |
বিশেষ করে , জমি জমা নিয়ে বিচার হীনতা এই দেশটাকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে | এর একটা অর্থনৈতিক মূল্য আছে | দেশের মানুষের জন্যে জমির মালিকা এমন একটা এসেট যার মাধ্যমে ব্যান্ক এর মর্টগেজ দিয়ে দেশে ইন্ডাস্ট্রি হয় | কিন্তু এই দেশের ২০% জমির ওনারশিপ নিয়ে কোর্ট এর প্রবলেম আছে | থাকতেই পারে | কিন্তু কোর্ট সেটা সলভ করেনা | বছর বছর ধরে টেনে যায় | ফলে দেশের অর্থনীতির যে কি অপরিমেয় ক্ষতি হচ্ছে, তার কথা কেও বলেনা |
এই বিচার বিভাগ এর সংস্কার বলতে আওয়ামী বুঝছে তার নিজের দল এর লোক দের জজ বানানো,বিচারক বানানো যাতে তারা বিচার বিভাগ কে ব্যবহার করে তাদের লুটপাট হালাল করতে পারে | এবং বিচার বিভাগ হয়েছে এই লুটপাট এর সাথী |আজ অসংখ্য মানুষের কাছে শুনি, পয়সা দিয়ে বিচার নিজের পক্ষে আনা যায় |
এইবিচার বিভাগ এর প্রধান ইস্যু মামলা জট | একটা উদ্যেগ নিয়ে, এই মামলা জট কে, দুই বছরে কমিয়ে আনা সম্ভব | কিন্তু তার কোনো উদ্যোগ আমরা দেখি নাই |
এই গুলো কোনোটা নতুন কথা নয় | আমরা সবাই জানি | মেনে নিয়েছি আমরা | এইটাই এই সরকার এর সব চেয়ে বড় সাফল্য | এই সরকার মানুষকে কনভিন্স করতে পেরেছে, এই দুর্নীতি তন্ত্র এবং লুটপাট আমাদের জীবন যাত্রার অংশ | এর কোনো পরিবর্তন হবেনা এর সাথে মানিয়ে নিতে হবে |
©somewhere in net ltd.