![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
রমজানুল মোবারকের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের পথ ও পদ্ধতি ছবিঃ অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।
রমজান মাস ইসলামী বর্ষপঞ্জির সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ মাস। এটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার বিশেষ রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। এই মাসে মুমিন মুসলিমগণ রোজা রাখেন, কুরআন তিলাওয়াত করেন, নফল ইবাদতের পরিমান বৃদ্ধি করেন এবং আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করেন। রমজান মাসের আগমনের প্রাক্কালে একজন মুসলিমের উচিত যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা। নিম্নে কুরআন ও হাদিসের আলোকে রমজানুল মোবারককে বরণ করে নেওয়ার পথ ও পদ্ধতি এবং এই মাসের জন্য নিজেদের প্রস্তুতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
১. আত্মিক প্রস্তুতি: তাওবা ও ইস্তেগফার
রমজান মাসের আগমনে সর্বপ্রথম আত্মিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। গুনাহ থেকে তাওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা এবং ইস্তেগফারের মাধ্যমে হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করা মুমিন বান্দার জন্য অতিব জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
"হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে ফিরে আসো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।" -সুরা আন-নুর, ২৪:৩১
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
«التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لاَ ذَنْبَ لَهُ»
"যে ব্যক্তি গুনাহ থেকে তাওবা করল, সে ঐ ব্যক্তির মতো যার কোনো গুনাহই নেই।" -ইবনে মাজাহ
২. দোয়া ও ফরিয়াদ
রমজান মাস পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব মাসের শুরু থেকেই রমজানের জন্য দোয়া করতেন:
«اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبَ وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ»
"হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।" -মুসনাদে আহমাদ
৩. জ্ঞানার্জন ও কুরআন চর্চা
রমজান মাস কুরআন নাজিলের মাস। তাই এই মাসের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কুরআন তিলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন এবং কুরআনের বিধান সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা উচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন:
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ
"রমজান মাস, যাতে কুরআন নাজিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হিদায়াত এবং সত্যপথের সুস্পষ্ট নিদর্শন ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।" -সুরা আল-বাকারা, ২:১৮৫
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান মাসে জিবরাইল (আ.)-এর সাথে কুরআন মুতালা করতেন এবং এই মাসে কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন।
৪. শারীরিক প্রস্তুতি: সুস্থতা ও শক্তি সংরক্ষণ
রমজান মাসে রোজা রাখার জন্য শারীরিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। শাবান মাস থেকেই অতিরিক্ত খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে শরীরকে রোজার জন্য প্রস্তুত করা উচিত। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসে বেশি রোজা রাখতেন এবং বলতেন:
«ذَلِكَ شَهْرٌ يَغْفُلُ النَّاسُ عَنْهُ بَيْنَ رَجَبٍ وَرَمَضَانَ»
"এটি এমন একটি মাস, যা রজব ও রমজানের মাঝে অবস্থিত এবং মানুষ এ মাস সম্পর্কে উদাসীন।" -নাসাঈ
৫. সময় ব্যবস্থাপনা ও ইবাদতের পরিকল্পনা
রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। তাই এই মাসের জন্য একটি সুষম সময়সূচি তৈরি করা উচিত, যাতে ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি নফল ইবাদত, কুরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা এবং পরিবার-সমাজের হক আদায় করা যায়। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
«مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ»
"যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজানে রাত্রি জাগরণ করে, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" -বুখারি ও মুসলিম
৬. দান-সদকা ও মানবিকতা
রমজান মাসে দান-সদকার গুরুত্ব অপরিসীম। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই মাসে অত্যন্ত দানশীল ছিলেন। তিনি বলতেন:
«مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ، غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْئًا»
"যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, তার জন্য রোজাদারের সমান সওয়াব রয়েছে, তবে রোজাদারের সওয়াব কমবে না।" -তিরমিজি
৭. রমজানের আগমনী বার্তা প্রচার
রমজান মাসের আগমনী বার্তা পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। এটি একটি সুন্নত এবং সওয়াবের কাজ। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
«بَشِّرُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا، وَيَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا»
"তোমরা সুসংবাদ দাও, ভীত সন্ত্রস্ত করো না। সহজ করো, কঠিন করো না।" -বুখারি ও মুসলিম
৮. রমজানের উদ্দেশ্য স্মরণ
রমজান মাসের মূল উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
"হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।" -সুরা আল-বাকারা, ২:১৮৩
উপসংহার
রমজান মাস আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মুমিনদের জন্য একটি মহান উপহার। এই মাসকে যথাযথভাবে বরণ করে নেওয়া এবং এর প্রতিটি মুহূর্তকে ইবাদত ও আত্মশুদ্ধিতে ব্যয় করা প্রতিটি মুসলিমের কর্তব্য। রমজানের আগমনে আমাদের উচিত আত্মিক, শারীরিক ও সামাজিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করে এই মাসের বরকত ও মাগফিরাত লাভের চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে রমজানের পূর্ণ বরকত দান করুন এবং আমাদেরকে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:০০
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রেরণামূলক মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। জাজাকুমুল্লাহ।
২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৪৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হে আল্লাহ তোমার ইবাদত সহজভাবে পালনের জন্য আমাদের তৌফিক দান কর।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:০১
নতুন নকিব বলেছেন:
আল্লাহুম্মা আমিন। জাজাকুমুল্লাহ।
৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:১২
আরোগ্য বলেছেন: আসন্ন রমজানে আল্লাহ আমাদের সকলকে গুনাহ মাফ করিয়ে নেয়ার তাওফিক দান করুন।
৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:২৫
এ পথের পথিক বলেছেন: জাযাকাল্লাহ খাইর ভাই ।
৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:১৬
আহরণ বলেছেন: প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। রমজান মানেই আতংক। চুরি, চামারি, বাটপারি, ধাপ্পা, ঘুষ, দূর্নীতি আগাম শুরু হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:৫৫
আফলাতুন হায়দার চৌধুরী বলেছেন: সময়োপযোগি পোষ্ট। ধন্যবাদ।