নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধন্যবাদ সকলকে !

একজন অশিক্ষিত মানুষ

ধন্যবাদ সকলকে !

একজন অশিক্ষিত মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবিভক্ত ভারতের লুকায়িত থাকা গুপ্তধনগুলোর না জানা কাহিনী

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৪২


কেউ কেউ কখনো সফল হয়েছেন আবার অনেকেই হইয়েছেন ব্যর্থতা। তারপরও রহস্যের অনুসন্ধান থেকে কেউ থেমে ছিলেননা । একসময় আমাদের এই ভারতীয় উপমাহদেশের অবিভক্ত ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পরগণা বিভিন্ন রাজা মহারাজার অধীনে ছিল। ক্ষমতায় থাকার সুবাদে এবং নানান বৈধ বা অবৈধ উপায়ে তারা বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছিলেন।আবার তারাই তাদের সেই সকল সম্পদগুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে লুকিয়ে রাখাতেন তাদের তৈরি বিভিন্ন গোপন স্থানে। কিন্তু কষ্ট লাগলেও বলতে হয় তাদের মৃত্যুর পর
সেই সকল অনেক সম্পদের কোনো খোঁজ আজও পাওয়া যায়নি,আর হয়ত কোনোদিন পাওয়া যাবেও না।একটা সময় যখন ভারতবর্ষ ইংরেজদের অধীনে চলে আসে আর তারা বেরিয়ে পড়েন সেই সকল গুপ্তধনের সন্ধানে। কখনো সরকারি তত্ত্বাবধানে আবার কখনো ব্যক্তিগত যার যার নিজ উদ্যোগে চলে সেসব অভিযান। সেসব লুকায়িত সম্পদের কিছু কিছু উদ্ধার হলেও অনেক গুপ্তধনের কোনো সন্ধান তখন পাওয়া যায়নি। এমনকি ভারত স্বাধীন হওয়ার পরেও তা মরীচিকা হয়েই রয়ে যায়। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় তেমনি কিছু খুঁজে না পাওয়া গুপ্তধনের সন্ধানে কথা আজ বলবো।

সুলতান মহম্মদ কুলি কুতুব শাহের খাজানা
ভারতীয় ইতিহাসের প্রতিটা পাতায় পাতায় মিশে আছে হায়দ্রাবাদ শহরের নাম। শহরের দর্শনীয় এক স্থাপত্য চারমিনার টানেল।লোক মুখে শোনা যায় ১৫৯৩ সালে সুলতান মুহাম্মদ কুলি কুতুব শাহের তত্ত্বাবধানে মিনারটি নির্মিত হয়েছিল এই স্থাপনাটি। পুরো স্থাপনা জুড়ে দেখা যায় পারস্য স্থাপত্যের ছোঁয়া। ৪৮.৭ মিটার বা ১৬০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এই চারমিনারের উত্তর দিকে রয়েছে চার কামান বা খিলান।প্রত্যেকটি মিনারের মাথায় মুকুটের মতন সুন্দর কারুকাজ করে কাটা এবং প্রত্যেক মিনারের ভিত্তিতে ফুলের পাপড়ির মতন নকশা করা আছে। চারমিনারের চূড়ায় উঠার জন্য ১৪৯ ধাপসম্পন্ন পেচানো সিড়ি রয়েছে। এই স্থাপনাটি গ্রানাইট, চুনাপাথর ও মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরী। চারমিনারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হলো মিনারের নিচে নির্মিত এক সুড়ঙ্গ।সুড়ঙ্গটি যতটুকো জানা যায়,তাতে বোঝা যায়, এই সুরঙ্গ দিয়ে গোলকুন্ডা দুর্গে যাওয়ার মত ব্যবস্থা ছিল। কোনোরকম বিপদ আসলে যাতে নিরাপদে পালিয়ে যাওয়া যায় সেজন্যই এই টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে টানেলটি যে কারণে সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে আছে তা হলো টানেলে থাকা কোনো এক গোপন কক্ষে নাকি লুকিয়ে রাখা ছিল প্রচুর ধনসম্পদ যার সন্ধান আজপর্যন্ত কেউ পাননি।

জয়পুরের রাজা মান সিংহের লুন্ঠিত সম্পদ
জয়পুরের রাজা মানসিংহ ছিলেন মোঘল সম্রাট আকবরের প্রধান সেনাপতি। সম্রাট আকবর ১৫৮০ সালে আফগানিস্তানে মোঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য মানসিংহকে দায়িত্ব দেন। মানসিংহ আফগানদের পরাজিত করে আফগানিস্তানকে মোঘল সাম্রাজ্যের অধিকারে নিয়ে আসেন।ভগবান দাস ভারতের পাঞ্জাবের সুবাহদার অভিষিক্ত হলে মহারাজ মানসিংহ সিন্ধু নদের তীরবর্তী জেলাগুলি শাসন করেন। প্রদেশের নিয়ম কানুন বজায় রাখার জন্য ১৫৮৫ সালে তাকে কাবুলে পাঠানো হয় এবং ১৫৮৮ সালে তিনি বিহারের সুবাহদার নিযুক্ত হন। সেইসময় পর্যন্ত কুনওয়ার হিসেবে পরিচিত মানসিংহকে ১৫৯০ সালে ‘রাজা’ খেতাব এবং পাঁচ হাজারি মনসব প্রদান করা হয়েছিল। তিনি ১৫৯৪ সালের ১৭ই মার্চ থেকে ১৬০৬ সাল পর্যন্ত বাংলার সুবাহদারের দায়িত্ব পালন করেন।আফগানিস্তান দখল করে মানসিংহ আফগানদের কাছ থেকে এবং আফগান রাজকোষ থেকে প্রচুর ধনরত্ন নিজের অধিকারে নিয়ে নেন। সেই লুন্ঠন করা সম্পদের পুরোটাই মোঘল রাজকোষে জমা করা হয়নি বলে ধারণা করা হয়। এই লুট করা সম্পদের এক বিপুল অংশ তিনি তার জয়গড় দুর্গে লুকিয়ে রাখেন বলে অনেক গবেষকই অনুমান করেন। কিন্তু সেই লুকনো সম্পদের এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

কৃষ্ণা নদীর নীচের হীরার খনি
কৃষ্ণা নদী ভারতের দীর্ঘতম নদীগুলির মধ্যে অন্যতম একটা। প্রায় ১৩০০ কিমি দীর্ঘ এই নদী মহারাষ্ট্র রাজ্যের মহাবালেশ্বর থেকে উদ্ভূত হয়ে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে বইতে থাকে এবং অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের হংসলাঢিবি গ্রামের কাছে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মেশে। এই দুটি রাজ্য ছাড়া কর্ণাটক রাজ্যের উপর দিয়েও এই নদী প্রবাহিত হয়। এই নদীর বদ্বীপ অঞ্চল ভারতের সবচেয়ে উর্বর অঞ্চল্গুলির মধ্যে পড়ে। প্রাচীন ইতিহাসের সাতবাহন বংশ আর ইক্ষ্বাকু সূর্যবংশের রাজারা এই অঞ্চলে রাজত্ব করতেন। বিজয়ওয়াদা এই নদীর তীরে অবস্থিত শহরগুলির মধ্যে অন্যতম।মারাঠী ভাষায় একটি প্রবাদ আছে "সুন্ত বহতে কৃষ্ণামাই" যার অর্থ হল "কৃষ্ণা শান্তভাবে বহে"। কিন্তু বাস্তবে কৃষ্ণা নদীকে দুনিয়ার অন্যতম ভয়াবহী এং ক্ষরস্রোতা নদীগুলির ফেলা হয়। বর্ষাকালে, জুন থেকে অগাস্ট মাসের মধ্যে এই নদীর তীরভূমিতে প্রবল ভূমিক্ষয় দেখা যায়। এ সময় এই নদী প্রবলবেগে বইতে থাকে অনেক জায়গায় প্রায় গভীর খাতে। এসময় কৃষ্ণা নদী মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক আর পশ্চিম অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে উর্বর জমি নিয়ে গিয়ে বদ্বীপ এলাকায় গিয়ে ফেলে। অন্ধ্রপ্রদেশ হীরার জন্য বিখ্যাত। বিশ্বের বিখ্যাত দশটি হীরার সাতটি পাওয়া গিয়েছিল সেখানেরই বিভিন্ন খনিতে। একসময় এই অঞ্চল ছিল গোলকুন্ডা শাহির অন্তর্ভুক্ত। কৃষ্ণা নদীর অববাহিকার কোনো এক স্থানে বিশ্বখ্যাত গোলকুন্ডার হীরক খনিগুলো ছিল।কোহিনুর, হোপ ডায়মন্ডের মতো বিখ্যাত হীরাগুলো পাওয়া গিয়েছিল কৃষ্ণা নদীর তীরের কোনো এক খনি থেকে। কিন্তু নদী তার দিক পরিবর্তন করায় খনিগুলো নদীগর্ভে হারিয়ে যায়। তারপর বিভিন্ন সময়ে নানা স্থানে খননকার্য চালালেও সেই হীরার খনিগুলোর সন্ধান আজও পাওয়া যায়নি।

হায়দ্রাবাদের শেষ নিজাম মীর ওসমান আলীর গুপ্তধন
অবিভক্ত ভারতের হায়দ্রাবাদ নামক বিশাল রাজ্যের শেষ নিজাম ছিলেন মীর ওসমান আলী। ২০০৮ সালের ফোর্বস ম্যাগাজিনের এক প্রচ্ছদে এই নিজামকে বিশ্বের সর্বকালের সেরা ধনীদের মধ্যে পঞ্চম স্থান দিয়েছেন। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ২১০.৮ বিলিয়ন ডলার। টাইম ম্যাগাজিন তাকে ১৯৩৭ সালে তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।১৯১১ সালে মীর ওসমান আলী ক্ষমতার মসনদে আরোহন করেন। সে সময় রাজকোষ প্রায় শূন্য হতে চলেছিল। সাম্রাজ্যের পূর্বতন নিজাম মীর ওসমান আলীর পিতার উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য রাজকোষের এই করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়। মীর ওসমান আলী ক্ষমতা গ্রহণের পরেই রাজ্যের আর্থিক অবস্থা ফিরতে থাকে। তাঁর ৩৭ বছরের শাসনামলে রাজকোষ ফুলে ফেঁপে ওঠে। তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। কিন্ত মৃত্যুর পর তাঁর বিশাল সম্পদের কিছু অংশই খুঁজে পাওয়া যায়।

অনুমান করা হয় যে তার এই বিশাল সম্পদ লুকিয়ে রয়েছে এই কোথি প্রাসাদে। নিজাম তার এই প্রাসাদে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন। সেই কোথি প্রাসাদের কোনো এক গুপ্ত কুঠুরিতেই সেই লুকানো সম্পদ রয়েছে বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। তার সম্পদগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৭৩টি জমকালো রুবি, হীরা, প্রবাল, মুক্তো, নীলকান্তমণি দিয়ে তৈরি বিখ্যাত নিজাম জুয়েলারি, স্বর্ণ এবং রূপাযুক্ত বিভিন্ন দামী পাথর। আজও অনেকেই খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিজামের সেই লুকানো সম্পদ।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০০

শের শায়রী বলেছেন: দারুন। ব্যাপারগুলো জানা ছিল না। সাবলীল লেখনিতে পড়েও ভালো লাগল।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৪

একজন অশিক্ষিত মানুষ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শের শায়রী ভাই।আপনাদের এই ধরনের মন্তব্যেগুলো আমার লেখায় অনেক অনেক অনুপ্রেণা দিচ্ছে ভাই।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


এই ব্যাপারে আপনি আরো তথ্য জেনে থাকলে ব্লগে দিবেন না, প্লীজ! আমি ও আপনি মিলে এগুলো খুঁজতে নামবো। এই পোষ্টটা সরায়ে নেবেন নাকি? লোকজন সব জেনে যাচ্ছে!

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:০০

একজন অশিক্ষিত মানুষ বলেছেন: জানুক চাচা । সবাইরে নিয়া এক সঙ্গে খুঁজতে বাহির হমু ।

৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


১২ ঘন্টা আগে মন্তব্য করলাম, আপনি নেই; খন্তা, কোদাল নিয়ে, পায়ে হেঁটে ভারতের দিকে রওয়ানা দিলেন নাকি?

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৩

একজন অশিক্ষিত মানুষ বলেছেন: চাচা মিয়া এত ব্যস্ত হইলে কেমনে হইবো ? যাওয়ার সময় আপনেরে সাথে কইরা নিয়া যাবো ।

৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: গোপন কোনো গুপ্তধন থাকতে পারে না।
পৃথিবীর সব কোনাকানিতে মানুষের পায়ের ছাপ পড়ে গেছে।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:০১

একজন অশিক্ষিত মানুষ বলেছেন: পারে। পৃথিবীতে অনেক কিছুই সম্ভব যা হয়ত আমরা জানিনা ।

৫| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৬

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: বাহ! দারুন লেখা।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩১

একজন অশিক্ষিত মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ হাসু ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.