নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পছন্দের কয়েকটি কাজ হচ্ছে— বই পড়া, গল্প লেখা, বিতর্ক করা, টবে গাছ লাগানো, নতুন নতুন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে চিন্তা করা, নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া ইত্যাদি।সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলার সৎ সাহস সর্বদা রাখি। প্রগতিশীল। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দ

মোহাম্মদ আজিজুল গাফফার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্সে এমবিএ করছি— স্বপ্ন দেখছি। একসময় প্রচুর বই পড়তাম, বইয়ে ডুবে থাকতাম। গল্প নামক হাবিজাবি লিখতাম। তারপর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিতর্ক করে বেড়িয়েছি কিছু কাল।

মোহাম্মদ আজিজুল গাফফার › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রেমাম : এ মালায়লাম মুভি উইথ মেসেজ

২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:০৯



মালায়লাম এই সিনেমার মূলকথাটি অনেক চমৎকার লেগেছে আমার কাছে! আমাদের এই উপমহাদেশের টিপিক্যাল সিনেমায় দেখানো হয় নায়ক বা নায়িকা তার জীবনে একবারই প্রেমে পড়ে এবং এই একজনকে নিয়েই সে সুখে-শান্তিতে বসবাস করে অথবা এই একজনকে না পেয়ে দুখে-কষ্টে নিজেকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে।

এই সিনেমার ক্ষেত্রে কাহিনী একটু ভিন্ন। এখানে জর্জ ডেভিড নামে এক ছেলের কাহিনী দেখানো হয়েছে যে প্রথম প্রেমে পড়ে টিন-এজে। তাঁর এলাকার এক মেয়ের উপর। সে মেয়ে ঐ এলাকায় ভয়াবহ রকমের পাগল। ছেলেরা রোজ সে স্কুলে যাওয়ার সময় তাকে ফলো করে, তার বাসার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, তাকে চিঠি দেয়ার চেষ্টা করে এবং ব্যর্থ হয়ে মেয়ের বাবার হাতে চড়-থাপ্পড় খায়!
শেষের দিকে মেয়ে এসে জর্জ ডেভিডের সাথে আরো একজন জর্জের পরিচয় করিয়ে দেয় যে কী না এই মেয়েকে ভালোবাসে। বেচারা জর্জ ডেভিড নিজের ভালোবাসাকে অন্য কারো হয়ে যেত দেখে; মনে মনে হতাশ হয় এবং লাইফে প্রথম বারের মত প্রেম হবার আগেই ছ্যাঁকা খায়!

জর্জ ডেভিড দ্বিতীয় বার প্রেমে পড়ে গ্রাজুয়েশনে পড়ার সময়।
ক্যাম্পাসে গিয়ে জুনিয়রদেরকে র্যা গ দেয়ার সময় হঠাৎ এসে উপস্থিত হয় একজন; নাম মালার। তার সহজ-সরল চেহারা আর অমায়িক হাসির প্রেমে পড়ে যায় নায়ক। অথচ সে এই কলেজের গেস্ট লেকচারার!
সে যাই হোক, জর্জ ডেভিড টিচারের প্রেমেই ফিদা! তার ক্লাসে গিয়ে পাগলামো করে, তাকে ফোন দিয়ে এটা সেটা বলে। এক সময় মালারের মনও বরফের মত গলতে থাকে। কিন্তু তখনই...? সব আমি বলে দিলে মুভি দেখে কী করবেন!

সিনেমার মূল মেসেজ কী তা যদি বলতে হয় তাহলে আমি আমাদের হুমায়ুন আজাদের একটা বাণী কোট করতে চাই: ‘দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম প্রেম বলতে কিছু নেই; মানুষ যখন প্রেমে পড়ে তখন প্রতিটি প্রেমই প্রথম প্রেম।’

নায়ক (জর্জ ডেভিড) চরিত্রে নিভিন পৌলির অভিনয় ভালো ছিল। নায়িকা তিনজনের অভিনয়ও স্ট্যান্ডার্ড ছিল। তবে আমি রেটিং দেয়ার সময় (মালার) সাই পল্লবীকে প্রথম, (সেলিন জর্জ) ম্যাডোনা সেবাস্তিয়ানকে দ্বিতীয় এবং (ম্যারি জর্জ) অনুপমা পরমেশ্বরকে সবার শেষে রাখবো। নায়কের বন্ধুর চরিত্রে যারা ছিলেন তাঁরাও ভালোই করেছেন।
ছবিতে যে জিনিসটি বেশি ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে সকলের একদম সাদামাটা ও সিম্পল প্রেজেন্টেশন। এতে করে প্রতিটি দৃশ্য অনেক রিয়েল বলে মনে হচ্ছিল; বিশেষত ক্যামেরা যখন চেহারার উপর ছিল তখন।

পরিচালক আলফানেজ পুথরেন অনেক ভালো করেছেন। তিনি প্রজাপতি দিয়ে পুরো সিনেমা যেভাবে কানেক্ট করেছেন এবং শেষে প্রজাপতির যে সুন্দর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা অনেক ভালো লেগেছে।
আনোয়ার রশিদ প্রযোজনার এই সিনেমাটি বানিজ্যিক ভাবেও দারুণ সফল। মাত্র ৪ কোটি বাজেটের এই সিনেমাটির বক্স অফিস আয় ৬০ কোটি রুপি!

সিনেমার কিছু কিছু জায়গা আছে ভীষণ রকমের ভালো লেগেছে। এরকম কিছু সিনের কথা এবার বলা যাক!
১) জর্জ ডেভিড যখন তাঁর ক্রাশের বাসায় ফোন দেয় তখন ফোন রিসিভ করে মেয়ের বাবা। সেখানে নাম-ধাম জিজ্ঞেস করার এক-পর্যায়ে বলে
: নাম ডেভিডসন?
: আসলে এটা ডেভিডসন না। এটা Devid’s son!

২) ‘ঐ মেয়েকে বিয়ে করতে হলে বি. টেক সার্টিফিকেট লাগবে।’
‘সেটা আমি ম্যানেজ করে ফেলব। কিন্তু এতে করে কি ১২ গ্রেডের সার্টিফিকেট মিলবে?’
‘তুমি টুয়েলভ গ্রেডও পাশ করো নি?’

৩) আরেক জায়গায় সে তাঁর বন্ধুদের বলে, ‘মেয়ের বাবার নামও জর্জ, আমার নামও জর্জ! বিয়ের পর ওর আর পদবী বদলাতে হবে না!’

৪) জর্জ মেয়েকে ইমপ্রেস করার জন্য প্ল্যান করে, ‘পত্রিকা ওয়ালার মাধ্যমে পত্রিকার ভেতরে করে কার্ড পাঠাবো, চিঠি পাঠাবো, সাথে একটা ফুলও পাঠাবো।’
পাশ থেকে বন্ধু বলে, ‘সাথে একটা ফুলদানীও পাঠাস!’
...এরকম ছোটছোট অনেক গুলো পাঞ্চ আছে সিনেমায়; সেই সাথে দারুণ একটা কাহিনী তো আছেই। তাহলে আর দেরি কেন? পপকর্ণ আর ‘সাবটাইটেল’ নিয়ে বসে যান ‘প্রেমাম’ দেখতে!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.