নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা যখন বয়স্ক যুবকদের জিজ্ঞেস করি- আপনি এখনো কেন বিয়ে করছেন না? তারা বলে চাকরী নাই। রোজগার ছাড়া কি করে বিয়ে করি। বিয়ের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যেই শব্দটি সেটি হল জীবিকা। বিয়ের জন্য জীবিকা থাকা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। এক সাহাবির কথা হাদিসে আছে। সেই সাহাবির একটি লুঙ্গি ছাড়া কিছুই ছিল না। রাসুলুল্লাহ (সঃ) তাকে বিয়ে করিয়ে দিয়েছিলেন। আসলে সেই সাহাবী গরীব হলেও খুব সম্ভবত বেরোজগার ছিল না। হয়ত দিন আনত দিন খেত। আমাদের বর্তমান যুব সমাজের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থা। আমাদের বর্তমান যুব সমাজ ৩০ বছর বয়স হয়ে যায় কিন্তু দিন এনে দিন খাওয়ার মত যোগ্যতাও তাদের নেই। তারা প্রচুর বই পড়েছে। প্রচুর ডিগ্রী তাদের। কিন্তু তারা রোজগার করতে পারে না। আমরা এমনই এক ক্রান্তি লগ্নে অবস্থান করছি। চিন্তা করে দেখুন, আমরা বলি আধুনিক যুগ, অথচ এই আধুনিক যুগে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত পড়ালেখা করেও একজন পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট বলে আমার বিয়ে করার টাকা নাই। কতটা ভয়ংকর যুগে আমরা উপস্থিত হয়েছি। আগে মানুষের লেখাপড়া কম ছিল। কিন্তু তাদের কম হলেও উপার্জন ছিল। ২০ বছর বয়সে তারা বউয়ের খরচ দিতে পারত। ৩০বছর বয়সি বেকার সেসময় বেশ দুর্লভ ছিল। এসবের পিছনে অন্যতম কারন হচ্ছে সিস্টেমের ভয়ংকর সমস্যা এবং আমাদের মানসিকতা।
-------------------------------------
একজন লোক উচ্চ শিক্ষা নিয়েও উপযুক্ত কাজ পাচ্ছে না এর মুল কারন সিস্টেমের জটিলতা। অন্যদেশে যেই ডিগ্রী নিতে ২০/২২ বছর বয়স লাগে আমাদের দেশে তা করতে বয়স হয়ে যায় ৩০। এমনই শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের যোগ্য বানানোর বদল বরং যেন যোগ্যতা নষ্ট করে দেয়। ৩০ বছর বয়সে শিক্ষিত বেকারটি কাজ না পেয়ে হতাশ হতে বাধ্য। তাকে শিক্ষা ব্যবস্থা এমন অবস্থায় এনে ছুড়ে ফেলে যখন তার হাতে কয়েকটা সার্টিফিকেট ছাড়া কিছুই থাকে না। শিক্ষার জন্য সময় ও শ্রম দেয়ায় সে পুজি উপার্জনেও সময় দিতে পারে না। আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষা ব্যবস্থাই আদিম, যুগ অনুপযোগী। একমাত্র মেডিক্যাল শিক্ষা অর্জন করে আপনি শিক্ষাকালিন সময়ে আস্থার সাথে বলতে পারবেন -আমি যা শিখছি তা আমার কর্ম জীবনে অবশ্যই কাজে আসবে। আমি যা শিখছি তা দিয়ে সম্মানের সাথে জীবন চালাতে পারব নিশ্চিত। অন্যান্য সাবজেক্টের বেলায় চিত্র ভিন্ন।
--------------------------------------
দ্বিতীয় সমস্যা হল আমাদের মানসিকতায়। আমাদের মানসিকতায় ঢুকে গেছে চাকরী করতেই হবে। তাইত ৫০০ পদের জন্য ৩ থেকে ৪ লাখ গ্র্যাজুয়েট ঝাপিয়ে পড়ে। চিন্তা করুন তারা যত সাধনাই এই পথে করুক সমাধান কি সম্ভব??? এত গ্র্যাজুয়েটকে চাকরী দেয়ার মত চাকরী কোথায়??? সবার চাকরী করতে হবে মানসিকতাই এই ক্রাইসিস তৈরি করেছে। এটা একটা ভয়ংকর চিত্র। অথচ সরকারের এ নিয়ে মাথাব্যথা লক্ষ করা যায় না। সরকার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গ্র্যাজুয়েটদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পারে। গ্র্যাজুয়েটদের বিনা সুদে ঋণ দিতে পারে। সরকারের ইনকামত অনেকভাবেই হচ্ছে। দেশে একজন ভিক্ষুকেও ট্যাক্স(VAT) দিতে হয়। ১ টাকার ১টা চকলেট খেলেও সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়। বেকারদের কাছ থেকে সরকার না হয় অতিরিক্ত নাই নিল। এতে দেশের সমস্যা হবার কথা নয়। বিনা সুদে গ্র্যাজুয়েটদের ঋণ দিলে তারা উদ্যোক্তা হবার মানসিকতা ফিরে পাবে। সুদ মুক্ত হওয়ায় লাভ অর্জন সহজ হবে। সে মানসিক বল পাবে। এতে দেশেরই উন্নতি হবে।
------------------------------------
আজকাল দেশে চাঁদাবাজি বৈধ হয়ে গেছে। সরকারই যেন কিছু মানুষকে বিনা শ্রমে খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছে। তারা কোন কাজ করবে না। সপ্তাহে সপ্তাহে বিভিন্ন দোকানে গিয়ে টাকা তুলবে। কি সুন্দর জীবিকা। কিছু মানুষ কাজ করেও টাকা পাচ্ছে না আর কিছু মানুষ কাজ না করেই দোকানে দোকানে ঘুরে লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন তুলছে। দেখার যেন কেউ নেই। সরকারের এসব চাঁদাবাজি কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। তাহলে যুবকদের মধ্যে ব্যবসা করার মানসিকতা আসবে। শিক্ষা ব্যবস্থা ও চাকরীর বাজারে চাপও কমে যাবে।
-----------------------------------------------
ব্যবসা বা উদ্যোক্তা হওয়ার কিছু সুবিধা আসুন আলোচনা করিঃ
১। অস্বাভাবিক প্রতযোগিতা করে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। এক জায়গায় পড়লেই হল।
২। সার্টিফিকেটের জন্য ২০/২৫ বছর সময় ও অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন নেই।
৩। লাখো বেকারের ভিড়ে চাকরী নাই জাতীয় হাপিত্যেশ নেই।
৪। পুজি নিয়ে যে কোন সময় শুরু করা যায়
৫। কোন এইজ লিমিট নাই
৬। শুরু করার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষের সাথে প্রতিযোগিতা করা লাগে না।
৭। স্বাধীনতা। কারো হুকুম মানার প্রয়োজন নেই।
৮। ছুটির জন্য কারো কাছে হাত পাততে হয় না।
৯। যখন তখন বাসায় যাওয়া যায়।
১০। টাকার নেশা না পেলে, এটা খুবই আরামের কাজ।
১১। অনেক উপরে উঠার সুযোগ।
১২। বিল গেটস , স্টিভ জবস এরা সবাই ছিলেন উদ্যোক্তা
১৩। প্রমশনের জন্য কারো অনুগত হবার প্রয়োজন নেই
১৪। নিজের প্রমোশন এখানে নিজের হাতে।
১৫। চাকরী পাওয়ার জন্য সাধনা করতে হয় না।
১৬। চাকরী যাবার ভয় নেই।
১৭। ট্রান্সফার হবার ভয় নেই। তাই নিজের পছন্দের জায়গায় আজীবন থাকতে পারবেন।
১৮। পুরাতন বন্ধুদের হারাতে হবে না।
১৯। প্রত্যন্ত এলাকায় কাজের জন্য স্থানান্তরিত হবার ভয় নেই।
------------------------------------------
এছাড়া আরও অনেক সুবিধা আপনি পাবেন যা চাকরী করলে অসম্ভব। তাই ভাবুন। কেন আপনাকে চাকরী করতেই হবে। বিল গেটস চাকরী করলে কি এত বড় কখনো হত? স্টিভ জবস চাকরী করলে কি এত বড় কখনো হত? বাংলাদেশের সাইফুরস’-এর সাইফুর রহমান খান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। চাকরী ছেড়ে তিনি হলেন উদ্যোক্তা। তিনি আজ বিখ্যাত। তিনি যদি ঢাবিতে শিক্ষকতার চাকরী করতেন আমরা কি আজ তাকে চিনতাম? চাকরী করে বিখ্যাত হওয়া যায় না। বড় হতে চাইলে নিজে কিছু করুন। চাকরী করবে সে যার কোন উপায় নেই। যার পুজি নাই, যার চিন্তা করার সামর্থ্য নাই, সৃজনশীলতা নাই সে চাকরী করতে পারে। আপনি কেন চাকরীর আশায় ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। আপনার পুজি আছে, আজই শুরু করে দিন। আপনি অনেক অল্প সময়েই নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যাবেন ইন শা আল্লাহ। অনেক পূর্বেই আপনি বিয়ে করার সামর্থ্য অর্জন করবেন। তাছাড়া চাকরীতে আপনি খুব লিমিটেড বেতনই পাবেন। ভাবুন চাকরীর আশায় বছরের পর বছর বেকার থাকবেন নাকি আজই উপার্জন শুরু করে নিজের পায়ে দাঁড়াবেন?
..............................No Copyright
©somewhere in net ltd.