নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পুতুল খেলা কি জায়েজ?
-----------------------------
পুজার মূর্তি হারাম সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু খেলার পুতুল ভিন্ন জিনিস। খেলনা পুতুল দিয়ে পুজার চিন্তা হিন্দুরাও করে না। খেলনা পুতুল আর পুজার মূর্তিতে পার্থক্য আছে। হিন্দু বাচ্চারা তাদের পুজার মূর্তি দিয়ে কখনো খেলে না। খেলনা পুতুল বৈধ। তা যেমনই হোক তা বৈধ। যা হাদিস থেকে প্রমাণিত। রাসুল সঃ যার অনুমতি দিয়েছেন তার বিপরীতে যুক্তি খোঁজা হচ্ছে নবীর প্রতি বেয়াদবি। রাসুলুল্লাহ সঃ অনুমতি দিয়েছেন। ব্যাস, এখানে আর কোন কথা থাকতে পারে না। কোন বিপরীত যুক্তি থাকতে পারে না।
*********************************************************
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর উপস্থিতিতে পুতুল দিয়ে খেলতাম। আমার বান্ধবিরাও আমার সাথে খেলত। যখন রাসুলুল্লাহ (সঃ) আসতেন তখন তারা লুকিয়ে যেত। কিন্তু নবী (সঃ) তাদেরকে ডাকতেন এবং খেলায় অংশগ্রহণ করতে বলতেন।
-সহিহ বুখারি, কিতাবুল আদব, অধ্যায়ঃ৭৩, হাদিসঃ১৫১
-Sahih al-Bukhari Vol. 8, Book of Good Manners, Hadith 151
---
আয়েশা(রাদ্বিঃ) বলেন-
كنت ألعب بالبنات عند النبي صلى الله عليه وسلم وكان لي صواحب يلعبن معي، فكان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل يَتَقَمَّعْن منه (أي: يتغيبن عنه)؛ فيسربهن إليّ (أي: يرسلهن إليّ) فيلعبن معي
আমি আল্লাহর রাসুলের উপস্থিতিতে পুতুল নিয়ে খেলা করতাম আমার বান্ধবীরাও আমার সাথে খেলত। যখন আল্লাহর রাসুল (আলাইহিছ ছালাম) বাড়ীতে প্রবেশ করতেন, তখন ওরা পুতুলগুলো লুকিয়ে নিত। কিন্তু তিনি (সঃ) তাদেরকে আমার সাথে একত্রে খেলতে বলতেন।
(সহিহ বুখারি, হাদিস নং-৬১৩০ ; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-২৪৪০ )
আয়েশা (রদ্বিঃ) আরো বলেন-
قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم من غزوة تبوك أو خيبر، وفي سهوتها ستر؛ فهبت ريح، فكشفت ناحية الستر عن بناتي، ورأى بينهن فرساً له جناحان من رقاع؛ فقال: ما هذا الذي أرى وسطهن؟ قالت: فرس، قال: ما هذا الذي عليه؟ قالت: جناحان. قال: فرس له جناحان؟ قالت: أما سمعت أن لسليمان خيلاً لها أجنحة؟ قالت: فضحك حتى رأيت نواجذه
একবার রাছূলুল্লাহ আলাইহিছ ছালাম আম্মাজী আয়েশার ঘরের পর্দা উন্মোচন করে খেলনা দেখে বললেন, এগুলো কী? তিনি বললেন, এগুলো আমার পুতুল। এগুলোর মধ্যে একটি পাখাওয়ালা ঘোড়া ছিল।সেটি দেখে তাকে তিনি(আলাইহিস সালাম) বললেন-" এই খেলনাগুলোর মাঝে এটি কি?" তিনি বললাম,"ঘোড়া", রাছূলুল্লাহ আলাইহিছ ছালাম বললেন-"ঘোড়ার উপর কি?" আমি বললাম-"২ টি ডানা",অতঃপর তিনি বললেন- "আপনি শুনেননি যে, সুলাইমান আলাইহিস সালামের একটি ঘোড়া ছিল যার ২ টি ডানা ছিল?এরপর রাছূলে আকরাম আলাইহিছ ছালাম হাসলেন এমনকি তার চোয়াল দাঁত মুবারক ও দেখা যাচ্ছিল।"
(সহিহ আবু দাউদ, হাদিস নং-২২৮১৩)
-----
সাহাবীরা বাচ্চাদেরকে খেলনা বানিয়ে দিতেনঃ
------------------------------------------------------
রুবাইয়্যা বিনতে মুওয়াবিয়াহ (রা.) বর্ণনা করেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) আশুরা (১০ম মহরম) এর দিন সকালে একজন ব্যক্তিকে আনসারদের গ্রামে এই ঘোষণা দেওয়ার জন্য পাঠান যে, যারা খেয়ে ফেলেছে তার যেন আর না খায় এবং দিনের বাকি অংশ সিয়াম পালন করে। আর যারা সিয়াম করছে তারা যেন সিয়াম পূর্ণ করে। তিনি বললেন, ‘সেদিন থেকে আশুরার দিনে আমরা নিজেরা সিয়াম পালন করতাম এবং আমাদের বাচ্চাদেরও সিয়াম পালন করাতাম।’ আমরা ওদের জন্য উলের খেলনা তৈরি করে রাখতাম। বাচ্চারা খাবারের জন্য কান্না করলে ইফতারির সময় পর্যন্ত খেলনা দিয়ে ওদেরকে থামিয়ে রাখতাম। সহীহ বুখারী, খণ্ড ৩ অধ্যায়ঃ সাওম।
***********************
হাদিসে অনুমতি থাকার পরও অনেকের মন মানতে চায় না। তাই তারা বিভিন্ন ভাবে এটা নিষিদ্ধ বলতে চায়।
১। কেউ বলতে চায় পুতুল বৈধ, তবে নিখুত হতে পারবে না। এ কথা হাদিস সম্মত নয়।
২। কেউ বলতে চায় ছোটরা কেবল পুতুল বানাতে পারবে, বড়রা পারবে না। আজগুবি কথা। হাদিসে এর ভিত্তি নেই।
৩। কেউ বলে পুতুল নিজে বানালে ঠিক আছে তবে বিদেশী পুতুল কিনা যাবে না। আশ্চর্যজনক লজিক তাই না? আমরা চাল ডাল কত কিছুই বিদেশ থেকে কিনি। বিদেশ থেকে কিনা হারাম হল কবে?
৪। সবই বুঝি তবে না খেলাই ভালো। এরা অনুমতিও দিতে পারছে না আবার হারামও বলতে পারছে না। দোটানায় আছে।
৫। ঠিক আছে হালাল তবে এটা প্রচার করার কি আছে? মানে এরা হালাল মানলেও এটা মানুষ জানুক তা চায় না। আসলে মন যে মানে না!
তাদের সবার ব্যপারটাই ইনিয়ে বিনিয়ে অনেকটা এরকম। বিচার মানি তবে তালগাছ আমার। হাদিসে জায়েজ বলা হলেও তাদের মতে পুতুল সম্পূর্ণ হারাম, কারো মতে আংশিক হারাম, কারো মতে মাকরুহ, কারো মতে...।
##আল্লাহ ও তার রাসুলের সিদ্ধান্ত আসার পরেও যদি আপনি বিপরীত যুক্তি খুজেন তাহলে আপনি নিশ্চিত থাকুন যে আপনি ভুল পথে হাটছেন। আল্লাহ ও তার রাসুলের সিদ্ধান্ত এসেছে, এটাই ব্যস, এখানে এর বিরুদ্ধে কোন যুক্তি খোঁজা যাবে না।
#আমার কথা কুরআন হাদিস সম্মত না হলে প্রত্যাখ্যান করুন।