নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাল ২০৫০। বাংলাদেশে শিল্প বিপ্লব হয়েছে। দেশের শিক্ষিত যুব সমাজ আর বেকার নেই। তারা এখন আর চাকরীর জন্য অপেক্ষা করে না। দেশের প্রতিটি বাড়িই যেন আজ ছোট ছোট কুটির শিল্প। বিশ্ব বাজারে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশী পন্য। চীনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। রপ্তানি বাণিজ্য সহজ করে দেয়া হয়েছে। নেই কোন জটিলতা, দুর্নীতি। যে কেউ খুব সহজেই পন্য বিদেশে রপ্তানি করতে পারে। যুবকদের মনে আর চাকরীর জন্য হাহাকার নেই। অনার্স পাশ করার আগেই তারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। তবে খুব সমস্যায় আছে চাকরী দাতারা। তাদের সেই ভাব প্রতিপত্তি এখন আর নাই। চাকরী প্রার্থী পাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে। বাছাই সেত দূর কি বাত। কত সুন্দর দিন ছিল ২০১৮ সালে। ১ টি পদের জন্য লাখ লাখ বেকারের করুন হাহাকার। চাকরী দাতাদের সেই ভাব। চাকরী না দিলে যাবি কোথায় টাইপ। কত খেলাই না খেলা যেত বেকারদের দিয়ে। হুতাশন, পাবক এসব হাবিজাবি শব্দ মুখস্ত করতে দিলেও কোন বেকার আপত্তি করত না। তারা বলত না এসব অপ্রচলিত ভাষা কেন আমাদের শিখতে হবে। তারা প্রতিবাদ করে বলত না চাকরী করতে শব্দের উৎপত্তি রহস্য, কারক, সমাস জানার কি প্রয়োজন। যাই বলা হত, দেয়া হত সবই বেকাররা মেনে নিত। না মেনে যাবে কোথায়! কিন্তু এখন পরিস্থিতি উল্টে গেছে। ৫০০০ পদ পূরণের জন্য প্রার্থী চেয়ে বিসিএসের সার্কুলার আসল। অথচ আবেদন পড়েছে মাত্র ৩০০০। তার মধ্যে ১০০০ আবার প্রিলিতে অনুপস্থিত। বিশেষ ঘোষণায় লিখিত পরীক্ষা রহিত করা হল। কারন ২০০০ এর মধ্যে কাউকে বাদ দেয়া যাবে না। এমনিতেই লোক সংকট। আজ ভাইভা দিবে শুভ।
দরজা খুলে প্রবেশ করল শুভ। সালাম দিল। অথচ কেউ বসতে বলছে না। এ কেমন অভদ্রতা। শুভ কিছু না বলে টুপ করে বসে পড়ল। স্যাররা এই আচরণে একটু চমকে গেল। এ যেন এক অদৃশ্য পাল্টা জবাব। এক সময় ক্ষমতা এক পাক্ষিক ছিল কিন্তু এখন দুই পাক্ষিক। কাজ করার জন্য লোক লাগবে। কিছুই করার নেই।
-আচ্ছা বলুনত, পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব কত?
-জানি না। চাঁদের দূরত্ব দিয়ে আমার কি কাজ? আমিত নাসায় ভাইভা দিতে আসি নাই।
প্রশ্ন কর্তা বোকার মত প্রশ্ন করে মিইয়ে গেলেন। কিছু বলার নেই। লোক লাগবে।
-আচ্ছা বলুনত তৎপুরুষ সমাস কত প্রকার?
-স্যার এসব কি বলছেন। আমি বিজ্ঞানের ছাত্র। আমাকে নিশ্চয়ই কলেজে বাংলা ব্যাকরণ পড়াতে হবে না। স্যার ভালো না লাগলে বলেন। চইলা যায়। এমনিতেই এখানে আসা বোকামি হয়ে গেছে। আমার বন্ধু তার নিজের ফার্ম থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছে। আর আমি এখানে এসেছি ২২ হাজার টাকার চাকরীর পরীক্ষা দিতে। হুহ।
-আহা আপনি রাগ করবেন না। আমরা দেখছি ব্যাপারটা। আপনার ভাইভাত চমৎকার হয়েছে। আর সরকার খুব শিগ্রই বেতন বাড়াবে বলেই আমাদের ধারনা।
এভাবেই ভাইভা শেষ হল শুভর। ভাইবা বোর্ড থেকে বেড়িয়ে এল শুভ। স্যারদের মনে উদ্বেগ, শুভ কি চাকরীটা করবে!
©somewhere in net ltd.