নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরিফুজ্জামান১৯৮৭

আরিফুজ্জামান১৯৮৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘোস্ট ফায়ার বইয়ের অনুবাদ

১২ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:২৯

এখন উইলবার স্মিথের ঘোস্ট ফায়ার বইটি অনুবাদের কাজ করছি। উইলবার স্মিথের বই অনুবাদ করা অনেক কঠিন। সেটা অনুবাদ করতে গিয়ে টের পাচ্ছি।
পাঠকদের পড়ার জন্য অনুবাদের কিছু অংশ শেয়ার করলাম। ( বিঃ দ্রঃ- এই বইতে ১৮+ এলিমেন্টত আছে।)
.
সেন্ট জর্জ দুর্গ, মাদ্রাজ, ভারত, ১৭৫৪ খ্রিস্টাব্দ

দুজন কিশোর-কিশোরী দেয়াল বেয়ে উঠছে। একটু পরেই দেয়ালের ওপর থেকে ধপ করে মাটিতে পা ফেলল ওরা।
এখন সময়টা গ্রীষ্মকাল। একটু আগে সন্ধ্যা নেমেছে। বাতাসে ভাসছে জুঁই ফুলের সুবাস। লণ্ঠনে নারিকেল তেল পোড়ার গন্ধ নাকে আসছে। পরিবেশটাও কেমন চুপচাপ।
কমবয়সি ছেলে-মেয়ে দুটো হামাগুড়ি দিতে দিতে একটি বাড়ির দিকে যেতে থাকল। বাড়িটির আকৃতি বিশাল। ওটার মালিক যে ধনী তা বাড়ির আকৃতি দেখেই বুঝা যায়। বাড়িটি থেকে বাইরের বাগানে এত দীর্ঘ একটা ছায়া নিক্ষিপ্ত হয়েছে যে ওরা সহজেই এই ছায়ার আড়ালে নিজেদেরকে লুকিয়ে রাখতে পারছে।
ওরা দুজন সম্পর্কে ভাই-বোন। দুজনের মাঝে মেয়েটা বয়সে বড়। মেয়েটা তার দীর্ঘ চুল ঢিলেঢালা ভঙ্গিতে পিঠের ওপরে ফেলে রেখেছে। তবে কথা হচ্ছে, মেয়েটার যা বয়স তাতে শীঘ্রই তাকে বিয়ে দেয়ার তোড়জোর শুরু হবে। এবং তখন তাকে পোশাকে-আশাকে, চাল-চলনে শালীনতা এবং ভদ্রতা ফুটিয়ে তুলতে হবে। নাহলে ভালো বর পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে। ভারতের সূর্যের উত্তাপের কারণে মেয়েটির ত্বকের রঙ সোনালি হয়ে হয়ে গেছে। ওর দেহে খেলা করছে মেয়েলী বাঁক। কিন্তু তারপরেও ওর চেহারাটা কোমল এবং বালিকাসুলভ। তবে বাইরে থেকে ওর চেহারা যেমনই দেখাক, দুষ্টুমিতে এই মেয়েটার ধারে-কাছেও কেউ আসতে পারবে না।
"কন্টি, আমরা এখানে কেন এসেছি?" ছেলেটি জিজ্ঞেস করল। ছেলেটির উচ্চতা মেয়েটির থেকে সামান্য বেশি। উচ্চতায় বড় হওয়ার কারণে ছেলেটি মনে মনে গর্ব অনুভব করে, যদিও সে বয়সে মেয়েটির থেকে এক বছরের ছোট।
ছেলেটির শরীর বেশ শক্তপোক্ত। পরিণত বয়সে ওর শরীর কেমন আকৃতি নেবে তা ওকে দেখে এখনই আন্দাজ করে নেয়া যায়। ছেলেটির চুলের রঙ সোনালি, এলেমেলো হয়ে আছে ওগুলো। ওর বাদামী চোখজোড়ায় বুদ্ধির ঝিলিক। মেয়েটার তুলনায় ওর ত্বক কিছুটা কালচে, চেহারায় তামাটে একটা ভাব। বালকটির চেহারার বৈশিষ্ট্য এমন যে এই চেহারা একই সাথে ভারত এবং ইউরোপ, দুই জায়গাতে স্বাচ্ছন্দ্যে মানিয়ে যাবে।
মেয়েটির নাম কন্সট্যান্স। সে হামাগুড়ি দিয়ে একটা মাটির কলসির পেছনে অবস্থান নিল। "মিস্টার মেরিডিউ আজ সন্ধ্যায় একটা পার্টি আয়োজন করেছেন। এই পার্টিতে শুধু ভদ্রলোকেরাই আমন্ত্রিত।"
"কিন্তু এই পার্টিটা তো দুনিয়ার সবচেয়ে বোরিং একটা পার্টি হতে যাচ্ছে।" থিওর কণ্ঠস্বরে অসন্তোষ। "বুড়ো বুড়ো সব মানুষ সারা রাত ধরে শুধু সুতি কাপড়ের দাম নিয়ে কথা বলবে।"
"আরে, বুদ্ধু। ওরা ব্যবসার কথা বলতে আসেনি। আমি এই পার্টির কথা শুনেছি আমার হেয়ারড্রেসারের কাছ থেকে, ওই হেয়ারড্রেসার আবার শুনেছে তার বোনের কাছ থেকে। ওই হেয়ারড্রেসারের বোন আবার এই বাড়িতে রান্নাবান্নার কাজ করে কিনা। সে যাহোক, আমার হেয়ারড্রেসার বলেছে মিস্টার মেরিডিউ নাচের জন্য একদল বাঈজী মেয়ে ভাড়া করেছেন। আমাকে বলা হয়েছে বাঈজী মেয়ে আনার এই ব্যাপারটা লোক জানাজানি হলে দারুণ কলংকজনক একটা বিষয় হবে। তাই ওই পুরুষেরা পুরো সপ্তাহ জুড়ে খুব সামান্যই কথা বলেছে।"
"তুই চাচ্ছিস ওই বাড়িতে ঢুকে দেখবি যে ওরা কী করে?"
"কেন, তুই চাচ্ছিস না?"
"অবশ্যই চাই। কিন্তু..." থিওকে কাপুরুষ বলা যায় না। সে যথেষ্ট সাহসী। কিন্তু বাস্তবতা সম্বন্ধে ওর ভালোই ধারণা আছে। কিছু যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা ওকে শিখিয়েছে যে ওরা দুজনেই যদি ধরা পড়ে যায়, তাহলে বাবার রাগের প্রকোপটা ওর ওপর দিয়েই প্রবল বেগে বয়ে যাবে।
কন্সট্যান্সের সবুজাভ চোখ তখন উত্তেজনায় ঝিকমিক করছে। "আমার কথা শুন, থিও। ওরা বলেছে এই বাঈজী মেয়েরা নাকি দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী নারী। শীঘ্রই তুই একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষে পরিণত হবি। মেয়েলী শরীরের রহস্য দেখার ব্যাপারে তোর কী কোনো কৌতূহল নেই?"
থিও ঢোক গিলল। ওর চোখ কন্সট্যান্সের দিকে। কন্সট্যান্স আজ ভারতীয় স্টাইলে পোশাক পরেছে। একটা উজ্জ্বল রঙা শাড়ি দিয়ে সে ওর শরীরকে চারপাশ থেকে মুড়িয়ে রেখেছে। শাড়ির একটা অংশ আবার আলগাভাবে ফেলে রেখেছে কাঁধের ওপরে। কন্সট্যান্স এই অদ্ভূতুড়ে পোশাকের ঘোরপ্যাচ এত সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে যে এটা ওর শরীরকে সুন্দরভাবে জড়িয়ে রেখেছে। শাড়ির নিচে কন্সট্যান্সের পরনে আর কিছু নেই, তারপরেও ওর কোমরটা বেশ চিকন। বহু মেয়ে আছে যারা নিজেদের কোমরকে পুরুষের সামনে চিকন হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য লোহার বেল্ট, করসেট এবং আঁটসাট অন্তর্বাস ব্যবহার করে। কন্সট্যান্সের কোমর এমনিতেই চিকন, তাই ওর ওগুলোর কোনো দরকার নেই। এবং আরেকটি ব্যাপার থিওর নজর এড়াল না, কন্সট্যান্সের কচি স্তনযুগল ওর কাপড়ের তলায় স্ফীত হয়ে আছে।
থিওর কাছে মনে হয়, মেয়েদের কাপড়ের তলায় যেই জটিল ভুবন আছে তার রহস্যটা বীজগণিতের রহস্যময় সমীকরণের চেয়েও বহুগুণে জটিল। এবং ওর গৃহশিক্ষক বহু চেষ্টা করেও বীজগণিতের ওইসব সমীকরণ ছাত্রের মাথায় ঢোকাতে পারেননি।
গত দুই বছর ধরে বোনের দেহে যেই পরিবর্তনগুলো এসেছে সেটা থিওর নজর এড়ায়নি... এবং ওর বোন যখন নিঃসংকোচে ওসব অশ্লীল জিনিস নিয়ে কথা বলে তখন থিও খুব অস্বস্তিতে ভুগতে থাকে। সে জানে, মেয়েদের উচিত না ওসব জিনিস নিয়ে কথা বলা।
"নাকি তুই ভয় পাচ্ছিস?"
বোনের চোখ নিবদ্ধ হল ভাইয়ের চোখের ওপরে, চ্যালেঞ্জ খেলা করছে তাতে। থিও ওর মনের সন্দেহগুলোকে একপাশে ছুঁড়ে ফেলে দিল। এরকম দুঃসাহসিক কাজগুলোতে সে কখনই নিজের বোনকে আটকাতে পারেনি... যদিও ওর কারণে বহুবার বাবার স্টাডি রুমের বাবার কাছে বেইজ্জতি হতে হয়েছে।
"আমি আগে যাব," থিও বেপরোয়া ভঙ্গিতে বলল।
শরীরটা নিচু করে, থিও এক দৌড়ে বাড়িটির কাছে গেল। এরপরে দেয়ালের সাথে শরীরটিকে মিশিয়ে দিয়ে দাঁড়াল।
এই বাড়িটি স্থাপনা হিসেবে অত্যন্ত চমৎকার। এর মালিক মাদ্রাজের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ী। তার খ্যাতির সাথে এই বাড়িটি মানানসই। এমন আকর্ষণীয় স্টাইলে এই স্থাপনাটির নকশা করা হয়েছে যে ভারতে বসবাসরত ব্রিটিশরাও এটি দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়। এর চওড়া বারান্দাকে সাপোর্ট দিচ্ছে গ্রিক স্টাইলে নির্মিত সব পিলার। অট্টালিকার সম্মুখ প্রান্তে কয়েকটি পেঁয়াজ আকৃতির গম্বুজও বানানো হয়েছে। এই বাড়িটি সেন্ট জর্জ দুর্গ এবং মাদ্রাজ থেকে প্রায় আধা মাইল দূরে অবস্থিত। তবে তারপরেও এই বাড়ির বাসিন্দাদের সৈকতের গায়ে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের গর্জন শুনতে অসুবিধা হয় না। সৈকতটি শহরের সীমানা দেয়ালের সামনেই অবস্থিত।
বাড়ির ভেতর থেকে যেই আওয়াজ আসছে, তা থেকে থিও আন্দাজ করল পার্টিটির আয়োজন করা হয়েছে দোতলায়। ওর স্মরণে এল দোতলায় একটা গ্র্যান্ড বলরুম আছে। বাবার পিছে পিছে একবার এই বাড়িতে এসেছিল সে, জাস্ট একবার।
থিও দেখল, নিচ-তলার জানালার কাছ দিয়ে একটা ছায়া অস্থির ভঙ্গিতে দ্রুতগতিতে সামনের দিকে চলে গেল। থিও নিজেকে আড়াল করার জন্য তাড়াতাড়ি মাথা নিচু করে ফেলল। সে দেখতে পাচ্ছে বাড়ির সামনে লাইন ধরে ক্যারিজ এবং পালকি রাখা আছে। থিও ধরে নিল, আজ যেহেতু মাদ্রাজের সবচেয়ে সম্মানিত নাগরিকরা এখানে জড়ো হয়েছেন, বাড়িটি অবশ্যই চাকর-বাকর দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে থাকবে। এই অবস্থায় নিজেকে লুকিয়ে সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে দোতলায় যাওয়া অসম্ভব। থিওকে তাই দোতলায় যাওয়ার জন্য অন্য কোনো উপায় বের করতে হবে।
থিও দেখল, পাথরের গায়ে খোদাই করা একটা হাতির মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে টেরাসের ওপরে। মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় থিওর সমান। সে ফুলের টব বেয়ে ওপরে উঠল, হামাগুড়ি দিয়ে এর পিঠে চড়ল, এরপরে নিজের দেহকে উত্তোলিত করে বারান্দার ছাদের ওপরে নিয়ে গেল। ঠিক সময়মতো করা হল কাজটা। ওর পা-জোড়া ছাদের কিনারা থেকে সরে যেতেই, টেরাসের ওপরে একটা আলো এসে পড়ল। একজন শিখ চৌকিদার তখন লণ্ঠন হাতে নিয়ে এপাশটা চক্কর দিচ্ছে। থিও চাইল ছাদের সাথে নিজের শরীর পুরোপুরি মিশিয়ে ফেলতে। বিপদটা দৃষ্টিসীমা থেকে সরে যাওয়া পর্যন্ত সে অপেক্ষা করল। সে ছাদের কিনারা ধরে ধরে সবচেয়ে কাছের জানালার কাছে গেল, এরপরে উঁকি দিল ভেতরে।
এই বাড়ির জানালায় কোনো কাঁচ নেই। এটাই স্বাভাবিক। ভারতবর্ষে এমন বিলাসদ্রব্যের কথা কল্পনাই করা যায় না। জানালার সামনে কাঠনির্মিত খড়খড়ি ঝুলছে। খড়খড়ি কারণে এই কক্ষটি দিনের উত্তাপ এবং ধূলাবালি থেকে সামান্য সুরক্ষা পাচ্ছে। থিও তবলার মৃদু স্পন্দন শুনতে পেল, সেই সাথে বাঁশির সুরেলা আওয়াজ। থিও ওর আঙুল দিয়ে জানালাটা সামান্য ফাঁক করে ঘরের ভেতরে উঁকি দিল।
রাতের বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল মিষ্টি তামাকের গন্ধ। ঘটনাটা এত আকস্মিকভাবে ঘটল যে আরেকটু হলে থিওর শ্বাসরোধ হয়ে আসছিল। সে তাড়াতাড়ি ওর মুখ হাত দিয়ে চেপে কাশি আটকাল। সে দেখল মাদ্রাজের একজন ধনী ব্যবসায়ী কুশনের ওপরে আয়েশ করে বসে আছে। চোখে লালসার দৃষ্টি মেখে হুক্কা পাইপ টানছে। এখানকার বেশির ভাগ মানুষই তাদের কোট এবং পরচুলা খুলে ফেলেছে, কিন্তু এমনকি পেছন থেকে দেখার পরেও থিও এদের প্রায় সবাইকে চিনতে পারল। ওরা বলতে গেলে প্রায় প্রতিদিনই বাবার অফিসে বা ওদের ফ্যামিলি গোডাউনে আসে।
তবে ওদের কেউই থিওকে খেয়াল করল না। ওদের সবার দৃষ্টি তখন নৃত্য করতে থাকা একদল বাঈজী মেয়েদের ওপরে নিবদ্ধ। বাঈজী মেয়েরা তখন বাজনার তালে তালে কোমর দোলাচ্ছে বা শরীর পাক খাওয়াচ্ছে। কন্সট্যান্সের মতোই ওদের পরনেও শাড়ি। তবে ওদের শাড়িটা এত সুক্ষ আর স্বচ্ছ কাপড় দিয়ে তৈরি যে কাপড়ের তলার নারীদেহ পরিষ্কার দেখা যায়। থিও একদৃষ্টিতে নর্তকীদের দিকে চেয়ে রইল। মেয়েদের এই নাচ ওকে প্রায় সম্মোহিত করে ফেলেছে। নাচের তালে তালে মেয়েদের নিতম্বে যেন ঢেউ উঠছিল। পাতলা ও স্বচ্ছ কাপড়ের তলায় থাকা মেয়েদের স্তনগুলো তরঙ্গায়িত হচ্ছিল। তবে, বিশেষ করে একটা মেয়ে থিওকে একদম মুগ্ধ করে দিলঃ চিকন শরীরের একজন তরুণী, চোখজোড়ার আকৃতি কাজুবাদামের মতো। বাতির আলোয় ওর তৈলাক্ত ত্বক ঝিলমিল করছিল।
নর্তকীরা ওদের মাথায় থাকা পাগড়ির প্যাঁচ খুলে ফেলল। আর তাতেই ওদের দীঘল কালো চুল কাঁধের ওপরে আছড়ে পড়ল, স্তনের ওপরে নেমে আসছে।
ওখানে থাকা পুরুষেরা তারিফ করার ভঙ্গিতে হাততালি দিতে লাগল, কয়েকজন আবার উৎসাহ দেয়ার ভঙ্গিতে চিৎকার করছিল।
মনে হচ্ছিল বাজনাটা এখন যেন আরও দ্রুতলয়ে চলছে, আরও বেশি উত্তেজনা ঢেলে দিচ্ছে রুমের মধ্যে। সকল নর্তকী এক হয়ে নৃত্য করছে, কিন্তু থিওর চোখ শুধু একটা মেয়ের ওপরেই নিবদ্ধ। কাজুবাদামের মতো চোখওয়ালা ওই মেয়েটা। মেয়েটা ওর পাগড়ির কাপড়টা ওর নিতম্বের চারপাশে বাঁধল, এরপরে ওর শাড়িতে টান দিল। পাতলা কাপড়টা মেয়েটির দেহ থেকে খুলে নিচে পড়ে গেল, যেভাবে ঘোমটার ফিতা টেনে দিলে ঘোমটা নিচে পড়ে যায়।
মেয়েটার দেহে এখন কাপড় বলতে শুধু ওর নিতম্ব প্যাঁচিয়ে থাকা এক পাটি কাপড়। মেয়েটার কালো চুল ওর স্তনের সাথে ঘষা খাচ্ছিল। মেয়েটা এরপরে ওর হাতের তালু দুটো একত্র করে সামনের দিকে এনে ওর নিতম্বকে আন্দোলিত করল। এই দৃশ্য দেখে থিওর বুকে কাঁপুনি সৃষ্টি হল। মেয়েটার চুল এদিক-ওদিক দোল খাচ্ছিল। চুলগুলো ওর স্তনযুগলে পরশ বুলাচ্ছিল এবং মাঝে মাঝে ক্ষণিকের জন্য চুলের আড়ালে থাকা মেয়েটির কালচে বাদামি নিপল দেখা যাচ্ছিল।
থিও ওই মেয়ের নাচে এতটাই ঘোরের মাঝে চলে গিয়েছিল যে সে ওর পেছনের আওয়াজটা শুনতেই পায়নি।
"মানতেই হবে, মেয়েটা খুব সুন্দর।" কন্সট্যান্স ফিসফিসিয়ে বলল।
থিও ঝট করে পেছন ফিরে তাকাল। "তুই এখানে কী করছিস?" সে হিসহিসিয়ে উঠল। "তোর এসব জিনিস দেখা একেবারেই উচিত হচ্ছে না।"
কন্সট্যান্স বিরক্ত হওয়ার ভঙ্গিতে ঠোঁট ফোলাল। "মেয়েদের দেহ দেখতে কেমন হয় সেটা তোর থেকে আমার ভালো করেই জানা আছে।"
থিও বুঝতে পারছে যে সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। সে জানে, ওদের এখন এখান থেকে চলে যাওয়া উচিত। কিন্তু সে কিছুতেই ওই মেয়েটির ওপর থেকে নজর সরাতে পারছে না। মেয়েটি এখন তার কোমর প্যাঁচিয়ে রাখা কাপড়টি পুরোপুরি খুলে ফেলেছে। সে কাপড়টিকে ওর সামনে বাড়িয়ে ধরল, এরপরে কাপড়ের আড়ালে নিজের শরীরকে দোলাতে লাগল। থিও হঠাৎ হঠাৎ কিছুক্ষণের জন্য মেয়েটির নগ্ন দেহের খানিকটা দেখতে পাচ্ছিল। সে ক্ষণিকের জন্য মেয়েটির দুই নিতম্বের মাঝখানের বাঁক দেখতে পেল। সে দেখতে পেল মেয়েটার পেটের নিচটা কিভাবে সরু হয়ে দুই উরুর মাঝে হারিয়ে গিয়েছে।
আচমকা, মেয়েটা অদ্ভুত একটা কাজ করে বসল। কাপড়টিকে মেঝেতে পড়ে যেতে দিল সে। এবং একই সময়ে ঝাড়া দিয়ে নিজের চুলগুলোকে পিঠের ওপরে পাঠিয়ে দিল।
সবার সামনে প্রকাশিত হল মেয়েটির নগ্ন দেহ।
এই দৃশ্য দেখে থিওর মুখটা বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেল। মেয়েটির দৃঢ় স্তনযুগল দেখতে পাচ্ছিল সে। মেয়েটি ওর চামড়ায় তেল মালিশ করেছিল, সে কারণে ওর নগ্ন দেহটা আলোর বিপরীতে মৃদু আভা ছড়াচ্ছিল। মেয়েটির দুই পায়ের মাঝখানে থাকা ওর যৌনাঙ্গটি মসৃণ, কেশহীন এবং অনাবৃত। ওই নগ্ন যৌনাঙ্গ দেখে থিওর শরীরে প্রবল উত্তেজনা বয়ে গেল। সে এর আগে এমন কিছু কখনও দেখেনি। সে অনুভব করতে পারল, পায়জামার ভেতরে থাকা ওর পুরুষাঙ্গটি শক্ত হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে, রুমের ভেতরে থাকা পুরুষেরা ততক্ষণে পায়ের ওপরে খাড়া হয়ে গেছে। তারা শিস দিচ্ছে এবং উল্লাসধ্বনি করছে। ওদের মাঝে একজন জানালার সামনে দাঁড়িয়ে গেল, নিজের পায়জামার উরুসন্ধির জায়গাটা ঘষছে। লোকটার কারণে থিও ওর সামনের কিছু দেখতে পাচ্ছিল না, চোখের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওই লোকটার পিঠ।
মেয়েটাকে দেখতে না পারায় থিওর মনে এমন তীব্র বেদনা হল যা বলবার মতো না। থিও হাচড়ে-পাচড়ে পায়ের ওপরে উঠে দাঁড়াল। সে এখন কোনো বিপদের পরোয়া করে না। তাকে যে করেই হোক ওই সুন্দরী নারীর নগ্নদেহটি আর এক পলকের জন্য হলেও দেখতে হবে। ওই মেয়েটা এখনও সঙ্গীতের তালে তালে নিজের শরীরকে চক্রাকারে ঘোরাচ্ছে, যেন এটাই দুনিয়ার সবচেয়ে স্বাভাবিক কাজ।
"নিচু হ, থিও," কন্সট্যান্স হিসহিসিয়ে উঠল।
কন্সট্যান্স ওর ভাইয়ের বেল্ট ধরে সজোরে টান দিল। থিও ওই টান উপেক্ষা করতে চাইল, কিন্তু কন্সট্যান্স-ও ভীষণ জেদী। সে থিওর পায়ের গোড়ালি চেপে ধরল, থিওকে জোর করে নিচু করাতে চাইছে।
সন্ধ্যার শিশিরের কারণে ছাদের টাইলসগুলো পিচ্ছিল হয়ে ছিল। কন্সট্যান্সের টানে থিও ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেল। বুকের ওপরে ভর দিয়ে হড়কাতে হড়কাতে আলকাতরা মাখানো মসৃণ ছাদ বেয়ে নিচে পড়তে লাগল সে। থিও মরিয়া ভঙ্গিতে ওর হাতটিকে এদিক-ওদিক ঝাড়া মারল, চেষ্টা করছে কিছু একটাকে আঁকড়ে ধরতে। কিন্তু ওর আশেপাশে সেরকম কিছু ছিল না। পড়ার এক পর্যায়ে থিও বুঝতে পারল ওর পা-জোড়া ছাদের কিনারার ওপাড়ে চলে গেছে। যদিও শরীরের বাকি অংশটা ছাদের ওপরেই আছে। থিও ওভাবেই এক মুহূর্তের জন্য ঝুলে রইল। এরপরে পড়ে গেল ও।
সে জোরালোভাবে মাটিতে পতিত হল। একটা ফুলের টবের ওপরে আছড়ে পড়ল সে। তীব্র একটা যন্ত্রণা বয়ে গেল ওর গোড়ালির মাঝ দিয়ে, যেন ওখানটায় কেউ ছুরি চালিয়ে দিয়েছে। ও না চাইতেও ওর মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল জোরালো চিৎকার। অন্যদিকে ফুলের টবটা তখন গড়িয়ে গড়িয়ে দূরে সরে যাচ্ছে। সিঁড়ির ধাপে বাউন্স খেতে খেতে নিচে পড়ে যাচ্ছে এটি। ফুলের টবটা এক পর্যায়ে ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল।
কন্সট্যান্স থিওর পেছনেই লাফ দিয়ে নামল, এতটাই আলতো করে মাটিতে ল্যান্ড করল সে, যেন সে কোনো মানুষ না, বিড়াল। "ওহ, থিও," মেয়েটা বলল, "তুই কি খুব বেশি ব্যথা পেয়েছিস?"
সদর দরজার কাছ থেকে চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ কানে এল। লণ্ঠনের আলোয় বাড়ির সামনের লনটা আলোকিত হয়ে উঠেছে। থিও চেষ্টা করল উঠে দাঁড়াতে, ব্যথায় ওর মুখটা বিকৃত হয়ে গেছে। বাড়ির কোণা থেকে দ্রুত পায়ে কিছু মানুষের এগিয়ে আসার আওয়াজ কানে এল।
"তুই এখান থেকে পালা, তাড়াতাড়ি," কন্সট্যান্স জরুরী ভঙ্গিতে বলল, উত্তেজনায় ওর চোখজোড়া বড় বড় হয়ে আছে। "ওরা যদি আমাদের দুজনকেই ধরে ফেলে, আমরা ভয়াবহ বিপদে পড়ে যাব।"
"কিন্তু তোর কী হবে?"
"আমার নিজের দেখভাল আমি নিজেই করতে পারব।"
কবজিতে একবার মোচড় দিতেই, শাড়ির একটা অংশ কন্সট্যান্সের মাথার ওপরে উঠে এল, ওর মুখটা ঢেকে ফেলছে। এবং এক মুহূর্তের মধ্যে, কন্সট্যান্সকে চেনা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ল।
থিও পালানোর জন্য দৌড় দিল। প্রতিটি পদক্ষেপেই ওর শরীরের মাঝ দিয়ে তীব্র যন্ত্রণা বয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু সে নিজের ওপরে জোর প্রয়োগ করল। যে করেই হোক, ওকে এখান থেকে পালিয়ে যেতে হবে। ধরা পড়া যাবে না। ওরা যদি ওকে কোনোমতে পাকড়াও করতে পারে, এরপরে বাবা ওর কী হাল করবে সেটা ভেবেই ওর মনে আতংকের ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
টেরাসটা এখন ভেসে যাচ্ছে আলোর বন্যায়। বাজনা থেমে গেছে। ব্যবসায়ীরা দোতলার জানালা দিয়ে আগ্রহী দৃষ্টি মেখে তাদের মুখ বাড়িয়ে রেখেছে, দেখতে চাইছে নিচে কী ঘটছে। অন্যদিকে, নিচতলাটা এখন আগ্রহী দর্শক দিয়ে পরিপূর্ণ। অথচ কয়েক সেকেন্ড আগেও ওখানে কোনো মানুষজন ছিল না। এখানকার গোলমেলে অবস্থাটা চাক্ষুষ করার জন্য প্রতিটি চাকর-চাকরাণী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছে।
বাড়ির মালিক ভিড়ের সবাইকে ঠ্যালা-ধাক্কা মেরে সরাতে সরাতে ভিড়ের মাঝ দিয়ে নিজের জন্য পথ তৈরি করে এগোতে লাগলেন, প্রচন্ড রাগে তার চেহারা অগ্নিশর্মা হয়ে আছে। তিনি গত কয়েক মাস ধরে আজকের এই সন্ধ্যাটার জন্য পরিকল্পনা করে আসছেন। তিনি তার অতিথিদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে নাচ শেষ হওয়ার পরে তারা এই নর্তকীদের সাথে একটা প্রাইভেট সেশন কাটাতে পারবে। এই লোকগুলো তার ব্যবসায়ে যেই পরিমাণ সাহায্য-সহযোগিতা করে তার বিনিময়ে এটুকু তো তিনি করতেই পারেন। কিন্তু এখন এটা কী হল? তার সব পরিকল্পনা পণ্ড হয়ে গেছে। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিকে অবশ্যই মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
মিস্টার মেরিডিউ এখানে জড়ো হওয়া সব মানুষের দিকে তাকাতে লাগলেন। এক পর্যায়ে তার দৃষ্টি স্থির হল কন্সট্যান্সের ওপরে। কিন্তু কন্সট্যান্সকে তার কাছে স্রেফ ঘোমটা দেয়া আরেকজন চাকরাণীর মতোই লাগল... তার বাসায় এত এত চাকরাণী কাজ করে যে সব চাকরাণীকে তিনি চিনবেন এমনটা আশা করা যায় না। এটা তার মাথায় কিছুতেই খেলা করেনি যে একজন ইংরেজ মহিলা নেটিভ ইন্ডিয়ানদের মতো পোশাক পরে ছদ্মবেশ ধারণ করে নিজের মর্যাদাহানি করার ঝুঁকি নেবে। মিস্টার মেরিডিউ তাই তার মনোযোগ অন্যদিকে ফেরালেন।
তিনি দেখতে পেলেন, বাগানের দূর প্রান্তে, গোলাপের ঝাড়ের ভেতরে একটা ছায়া অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। "ধরো ওকে!"
থিও তখন ঝোপ-ঝাড়ের মাঝ দিয়ে হাঁচড়ে পাচড়ে দৌড়াচ্ছে। কাঁটার খোঁচা লেগে ওর হাতের বিভিন্ন জায়গা কেটে গেছে। পায়ের তলার মাটিটা ওর কাছে ভীষণ শক্ত ঠেকছে। এই শক্ত মাটিতে দৌড়ানোর সময় প্রবল ঝাঁকুনির কারণে ওর আহত গোড়ালিতে ভীষণ চাপ পড়ছে। সে শুনতে পেল ওর পেছনে কয়েকজন মানুষের দৌড়ানোর পদধ্বনি। ওরা ওকে ধরার জন্য এগিয়ে আসছে। ওই আওয়াজ কানে আসতেই, থিও আরও দ্বিগুণ উদ্যমে দৌড়ে পালানোর প্রচেষ্টা গ্রহণ করল। সে দেয়ালের কাছে গিয়ে নিজের দেহকে টেনে এটার ওপরে পৌঁছানোর চেষ্টা করল।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে দেয়ালটা অনেক উঁচু।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৪৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: বস্তুনিষ্ঠ লেখা।

২| ১২ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: খুব বেশি ১৮্+ না।
হালকা পাতলা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.