নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বসে আছি অন্ধকারে, \nআমাকে বুঝতে দাও \nমানুষ কেন আলোর \nপ্রত্যাশা করে!

আসোয়াদ লোদি

জীবন ও যন্ত্রণার মরুচরে আমি প্রপাতের ধারা ।

আসোয়াদ লোদি › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবরুদ্ধ আকাশ ।। পর্ব-৫

০২ রা জুন, ২০১৪ দুপুর ২:০৫


৪ পর্বের লিঙ্ক- Click This Link

৪র্থ পর্বের পরের অংশ

মণিকা সোজা সজলদের বাসায় চলে এলো। সে চেহারা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হল। আসলে সব ক্ষেত্রে তো আর অভিনয় করা যায় না। একটা দুশ্চিন্তা তার চেহারাকে ঘিরে ধরল। মণিকা সুমিকে দেখে বলে উঠল, আরে সুমি কবে এলি ?

সুমি একটু আগে নাস্তা শেষ করে মায়ের সঙ্গে গল্প করছিল। মণিকাকে জড়িয়ে ধরে বলল, সকালের ট্রেনে এলাম। আমি তো এসেই মার কাছে তোমার কথা জানতে চাইলাম। সত্যি তোমার সাথে দেখা হয়ে যাবে ভাবিনি।
মণিকা বিলকিসকে কদমবুচি করে জানতে চাইল, কেমন আছ মা।

বিলকিস দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। আমার আবার ভাল থাকা। কয়েকদিন ধরে ছেলেটা লাপাত্তা হয়ে গেল। গতরাতে পুলিশ এসেছিল ওকে খুঁজতে। টেনশানে টেনশানে দিন কাটে যাচ্ছে আর কি।

মণিকা নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে বলল, দুশ্চিন্তার দরকার নাই মা। ও ভাল আছে। আমি তো এ কথাই বলতে এসেছি।
বিলকিস আগ্রহ নিয়ে তাকালেন মণিকার দিকে। তুমি কী জান সজল কোথায় আছে ?
জানি মা। তার কিছু জামা-কাপড় দরকার।
আচ্ছা, তুমি যাওয়ার সময় নিয়ে যেও। যাক বাবা অন্তত মনটা কিছুটা হাল্কা হল। কিন্তু তুমি চেহারাকে কী হাল বানিয়েছ ! তোমার কী শরীর খারাপ ?
মণিকা মাথা দোলাল। না মা। শরীর ঠিক আছে। ও এম্নিতেই।
নিশ্চয় আবার মায়ের সাথে ঝগড়া-ঝাটি করেছ ?
না , না। মা-বাবা দুজনেই নেপাল গেছে।

বিলকিস বসা থেকে উঠে দাড়ালেন। তাকে এখন রান্নাঘরে ঢুকতে হবে। অনেক কাজ পড়ে আছে। আমি রান্নাঘরে যাচ্ছি। তুমি সুমির সঙ্গে গল্প কর। দুপুরে এখানে খাবে।
মণিকা মাথা নাড়ল। না মা আজ নয়। আমার তাড়া আছে। এখন আমি সুমিকে নিয়ে একটু বের হব।
আচ্ছা বলে বিলকিস রান্না ঘরে চলে গেলেন।

সুমি ও মণিকা সজলের ঘরে ঢুকল। সজলের প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় তার সাথে থাকা ব্যাগের মধ্যে ভরে নিল। ব্যাগের জিপার টানতে টানতে মণিকা বলল, তোর বাচ্চাটাকে দেখলাম না ?
বাবা সেতুকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে।
মণিকা ঘাড় বাঁকা করে তাকাল সুমির দিকে। আর তোর হীরু ?
সুমি হেসে ফেলল। হীরু না ছাই। মণিকা আপু আমার কপালে একটা গাদা স্বামী জুটেছে।
এতক্ষণ পর মণিকা সামান্য হাসল। স্বামী গাদা হলে ভাল।
তুমি কীভাবে জান ? সুমি প্রশ্ন করল।
এম্নিতে বললাম। মণিকা সুমির হাত ধরে বলল, চল।
সুমি কৌতূহল নিয়ে তাকাল মণিকার দিকে। আমাকে কোথায় নিয়ে যাবে ?
আয় না, যেতে যেতে বলব।

সুমি আর কোন বাক্য ব্যয় করল না।

মণিকা যখন সুমিকে নিয়ে ঘরে ফিরল, তখনও সজলের ঘুম ভাঙ্গেনি। মণিকা রহমতকে জিজ্ঞেস করল, কেউ এসেছিল ?
রহমত মাথা নাড়ল। জে না আপামণি।
মণিকা পার্স থেকে প্রেসক্রিপশন ও টাকা বের করে রহমতের হাতে দিয়ে বলল, এই ওষুধগুলো নিয়ে আয়। রহমত চলে গেল।
ভাইয়ের এই অবস্থা দেখে সুমি নিজেকে সংযত রাখতে পারল না। সে মণিকার বুকে ঝাপিয়ে পড়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। মণিকা দুই হাতে জড়িয়ে নিল সুমিকে। সে নিজেও চোখের পানি সামলাতে পারল না।
ইশতিয়াক ভাই বলেছেন, দুই ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে আসবে। প্রায় দুই ঘণ্টা হতে চলল। আর একটু দেখি। তারপর ইশতিয়াক ভাইকে ফোন করব।

দুই ঘণ্টা দশ মিনিট পর সজলের জ্ঞান ফিরে এলো। ক্ষতস্থানে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করল সে। মনে হল কেউ যেন পাথর দিয়ে চাপা দিচ্ছে। সামান্যতম নড়াচড়াও করতে পারলনা। শরীর যেন শক্ত হয়ে আছে। সুমি ভাইয়ের পাশে গিয়ে বসে ভাইয়ের একটা হাত নিজের দুই মুঠোয় চেপে ধরে কাঁদতে লাগল।

সজল দুর্বল কন্ঠে বলল, কাঁদিস না। সামান্য একটু লেগেছে। চিটাগাং থেকে কবে এসেছিস ?
সুমি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলল, সকালে। বাড়ির সবাই ভাল তো ? সুমি মাথা নাড়ল।

মণিকা ওষুধ ও ফলের রস খাইয়ে দিল সজলকে। সে বলল, এখান থেকে শিফিট করতে হবে। তুমি কী মুভ করতে পারবে ?
সজল মাথা নাড়ল। পুরো শরীর ব্যথা, হাত-পা নাড়াতে পারছিনা।
আচ্ছা আমি আর সুমি তোমাকে সাহায্য করছি।

সজল মণিকা ও সুমির কাঁধে ভর দিয়ে দোতলায় মণিকার ঘরে চলে এলো। মণিকার ঘরটি বেশ বড় এবং খুব পরিপাটি করে গোছানো। কাপড় ও অন্যান্য জিনিসপত্র রাখার ক্যাবিনেট ওয়ালের সাথে ফ্লাড করে বানানো। এর আলাদা অস্তিত্ব বুঝাই যাচ্ছেনা। ড্রেসিং টেবিলের ডিজাইনও একই রকম। মনে হচ্ছে ওয়ালে গ্লাসটি ঝুলে আছে। ঘরের এক কোণে ছোট একটি পড়ার টেবিল। টেবিলের উপর সজলের ছবি ফ্রেমে বাঁধাই করা আছে। ছবির পাশে আছে একটি ক্রিস্টালের ফুলের টব। টবের ফুলগুলো তাজা। সারা ঘর জুড়ে একটি মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে আছে। দামী কার্পেট দিয়ে সম্পূর্ণ ফ্লোর ঢেকে দেয়া হয়েছে। কার্পেটের প্রান্তছুঁয়ে একটি টেলিভিশন সেট বিছানার দিকে তাকিয়ে আছে। মণিকা শুয়ে শুয়ে টিভি দেখে বলে সে টেলিভিশনটি এভাবে বসিয়েছে।
সজল কাপড় চেঞ্জ করে পরেছে পাজামার সাথে সাদা ফতোয়া। সে মণিকার বিছানায় শুয়ে আছে। বুয়া এসে কয়েক পদের ফলের প্লেট রেখে গেল। মণিকা ও সুমি কার্পেটের উপর বসেছিল। মণিকা বলল, ফ্রুট খাও। তারপর সুমির দিকে তাকাল সে। সুমি তুইও নে।

সজল একটি আঙ্গুর তুলে নিয়ে মণিকার দিকে তাকাল। তুমি কী মাকে বলেছ ?
মণিকা মাথা নাড়ল। বলি নি।
সজল সুমির দিকে চোখ ফেরাল। ব্যথার কারণে এখনও ঘাড় নড়াচড়া করতে পারছেনা। সুমি মাকে কিছু জানানোর দরকার নেই। শুধু বলবি ভালো আছি।
সুমি মাথা কাত করল। ঠিক আছে ভাইয়া।
সেতু কেমন আছে ?
ভাল আছে ভাইয়া। একটু পর পর মামা কোথায় মামা কোথায় জিজ্ঞেস করে। বাবা ওকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে।
সেতুকে কী ইস্কুলে দিয়েছিস ?
সুমি কপালের চুল সরিয়ে কানের পিছে ঠেলে দিল। এই বছরই তো ভর্তি করালাম। কিন্তু কোথায় আর লেখাপড়া। এত ঘন ঘন হরতাল হয় যে ইস্কুলে যেতে না পারলে বাচ্চারা খুব খুশি।
আমানের খবর কী ?
ও বন্ধুদের সাথে দেখা করবে বলে ঘর থেকে বেরিয়েছে। দেশের যা অবস্থা ওর ব্যবসা-বানিজ্য লাটে উঠতেছে।
সজল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আসলে হরতাল দেশের জন্য ক্ষতিকর সেটা আমরা বুঝি। কিন্তু অধিকার আদায়ের জন্য কিছুটা ক্ষতি স্বীকার করতেই হয়। শুধু স্বাধীনতার জন্যে ত্রিশ লাখ বাঙালী প্রাণ দিয়েছে।
মণিকা চোখ উল্টে তাকাল সজলের দিকে। এই মুহূর্তে হলেও রাজনীতিটা বন্ধ করে একটু আরাম কর। রাজনীতি ছাড়া আর কোন বিষয় ভাবতে পারনা ? মানুষের তো সাবসিডিয়ারি বলে আরও অনেক বিষয় থাকে।
সজল কিছু বলল না। চোখ বন্ধ করল। মনে হয় তার আবার ঘুম পাচ্ছে। সুমি মণিকার দিকে তাকাল।
মণিকা সুমির হাত ধরে বলল, চল ব্যালকুনিতে গিয়ে দাঁড়ায়। এখানে থাকলে ও শুধু কথাই বলতে থাকবে।
মণিকা ও সুমি ব্যালকুনিতে এসে দাঁড়িয়েছে। ব্যালকুনিতে দাঁড়ালে মণিকার দৃষ্টি আকাশের দিকে চলে যায়। তখন একখণ্ড কালো মেঘ তাঁর দৃষ্টিতে ফিরে আসে। মণিকা একদৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থাকে। সে বুঝতে পারেনা এ কি সত্যি নাকি মনের ভুল। জানিস সুমি আমি যখন আকাশের দিকে তাকায় ঐ একখণ্ড কালো মেঘ সবসময় দেখতে পাই। বুঝতে পারিনা ঐ মেঘ সরে না কেন।

সুমি আকাশের দিকে তাকিয়ে কোন মেঘ না দেখে মণিকার দিকে ঘাড় বাঁকা করল। কোথায় মেঘ দেখলে আকাশ তো নীল ?
মণিকা আকাশ থেকে দৃষ্টি ফিরাল না। তোদের আকাশ নীল, আমার আকাশ সবসময় মেঘাচ্ছন্ন।
সুমি দুই হাতের আঙুল মটকাল। আড়াআড়ি চোখের দৃষ্টি নিবদ্ধ করল মণিকার চেহারার উপর। মেঘে ঢাকা শুধু তোমার আকাশ নয়, তোমার চেহারার দিকে তাকিয়ে আমি শুধু মেঘই দেখতে পাচ্ছি। তুমি ভাইয়াকে কেন ভালোবাস ? ভাইয়া তোমাকে কী দিয়েছে ?

মণিকা আকাশ থেকে দৃষ্টি ফিরাল সুমির দিকে। কেন ভালোবাসি জানি না। আর জানি না বলেই আমার ভালোবাসা অনন্ত। তুমি কী মনে কর Is the love only give and take ?
সুমি মাথা দোলাল। আমি জানি না।

বুয়া এসে বলল, আপুমনি টেবিলে খাবার দিছি। মণিকা সুমিকে ইশারা করল। চল, আমার সাথে খাবি।
সুমি ইতস্তত করল। বাসায় তো বলি নি। সবাই অপেক্ষা করবে। ফোন করে বলে দে, তুই আমার সঙ্গে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকবি। সন্ধ্যায় তোকে ড্রাইভার পৌঁছে দেবে।

সন্ধ্যায় সুমিকে বিদায় দিল মণিকা। বলল, কাল তোর বাচ্চাটাকে নিয়ে আবার আসবি। তোর বাচ্চাটা দেখতে ইচ্ছে করতেছে।
সুমি মাথা নেড়ে মণিকাকে জড়িয়ে ধরে বলে, আসি আপু।

সুমিকে বিদায় দিয়ে মণিকা সজলের পাশে এসে বসল। সজল তখন তার আগামি দিনের প্ল্যান নিয়ে ভাবছিল। মণিকা সজলের একটা হাত তার কোলের উপর টেনে নিয়ে আঙুলের নখ পরীক্ষা করছে। সজলের নখগুলো বেশ লম্বা হয়ে গেছে। মণিকা বলল, কয়দিন ধরে নখ কাটতেছ না ? তোমার নখ আর বাঘের নখের মধ্যে পার্থক্য নেই ।

সজল কিছু বলল না। হাসার চেষ্টা করল। মণিকা উঠে গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের ডেক্স থেকে নেইলকাটার বের করে আনল। একটা পুরনো পত্রিকা সজলের হাতের নিচে রেখে মণিকা নখ কাটায় মনোযোগ দিল। হাতের নখ কাঁটা শেষ হলে পায়ের নখও কেটে দিল। তুমি পাঁচ মিনিট একা থাক। আমি এই আসছি। টিভি চালিয়ে দেব ?
দাও।
মণিকা টিভি অন করে রিমোট সজলের হাতে দিয়ে ঘর থকে বেরিয়ে গেল। টিভিতে রুনা লায়লার একক গানের অনুষ্ঠান চলছে। সজল গান শুনায় মনোযোগ দিল।

একটা ছোট ট্রলি ঠেলতে ঠেলতে মণিকা ফিরে এলো। ট্রলিতে কফি বানানোর সব সরঞ্জাম সাজানো আছে। মণিকা একটা টুলের উপর বসে কফি বানাচ্ছে। প্রথমে সে টি-পট থেকে গরম পানি ঢালল মগে। দাঁত দিয়ে কফির প্যাকেট ছিড়ে গুলিয়ে দিল সেখানে। পরিমাণ মত দুধ চিনি মিশিয়ে সজলের হাতে কফির মগ দিয়ে বলল, কফি খাও। কফিতে শরীরের ব্যথা কমে।

সজল কফির মগে চুমুক দিয়ে বলল, যেভাবে নার্সিং দিচ্ছ, মনে হচ্ছে দুইদিনেই সুস্থ হয়ে আবার মিছিলে যেতে পারব।
মণিকা টিভির দিকে তাকিয়ে আনমনে কফির মগে চুমুক দিল। ‘তা তো যাবেই। তোমাকে ধরে রাখার ক্ষমতা আমার আছে নাকি’?
সজল কফির মগ খালি করে মণিকার হাতে দিল। তার দৃষ্টি টিভি থেকে সরে গিয়ে ছাদের দিকে চলে গেল। আসলে ভার্সিটি লাইফ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তোমাকে কিছু দিতে না পারলেও কষ্ট দিয়েছি প্রচুর।

মণিকা কফি পান শেষ করে ট্রলিটা এক পাশে সরিয়ে রাখল। সজলের দিকে তাকিয়ে সামান্য হাসল। তারপর ও তো কিছু একটা দিয়েছ। ওটাই বা আমার জন্য কম কী ?
এমন সময় টেলিফোন বেজে উঠল। ইশতিয়াক ফোন করেছে। হ্যালো, মণিকা সজলের কী অবস্থা ?
শরীরে ব্যাথা আছে ইশতিয়াক ভাই। অন্যকোন সমস্যা নেই।
ব্যাথা সারতে দুই তিনদিন লাগবে। তুমি কাল ড্রেসিং বদলিয়ে দেবে। অয়েন্টমেন্টটা লাগাতে ভুলে যেওনা কিন্তু। আমি আজকে আর আসছি না। কাল আসব।
ঠিক আছে ইশতিয়াক ভাই।
ফোনটা সজলকে দাও।
মণিকা সজলের হাতে রিসিভার দিল। সজল বলল, হাঁ ইশতিয়াক বল ?
মণিকার ওখানে আছিস তো এজন্যে তোকে আর ক্লিনিকে শিফট করি নাই। এখানে তো ঐ নার্সিং পাবি না। আশা করছি সুস্থ হতে সময় লাগবে না। আমি কাল আসব। এখন রাখছি। খোদা হাফেজ।

সজল মণিকার দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার ফোনটা ব্যবহার করতে পারি? আমার দুয়েক জাগায় কন্টাক্ট করতে হবে।
মণিকা ঘাড় বাঁকা করে তাকিয়ে হাসল। অনুমতির দরকার আছে ? আমার সবকিছুই তো তোমার এরকম ভাবতে পারনা ?
থ্যাঙ্কস মণি।
ইউ আর ওয়েলকাম। তুমি ফোন কর, আমি রাতের খাবারের কী হল দেখে আসি। মণিকা ছোট ট্রলি ঠেলতে ঠেলতে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

রাতের খাবারে তারা স্যুপ আর স্যান্ডঅয়িচ খেল। সজলকে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে মণিকা বাথরুমে ঢুকে দাঁত ব্রাশ করল। রাতের পোশাক পরে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো সে। ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অনেক্ষন ধরে চুল আচড়াল। সজল তাকিয়ে রইল মণিকার দিকে। রাতের পোষাকে তাকে বেশ সুন্দর লাগছে। চাঁদের আলোর মত পোশাকটির রঙ। মণিকার রঙের সাথে বেশ মানিয়ে গেছে। মাথা আচড়াতে আচড়াতে মণিকা বলল, তুমি ঘুমিয়ে পড়। আমি নিচে শুব।
তোমাকে খুব সমস্যায় ফেলে দিয়েছি, তাই না ?
আমি কি তাই মিন করেছি ? খাট ছোট। তুমি অসুস্থ, তোমার কষ্ট হবে।
কিন্তু তুমি পাশে না থাকলে ঘুম আসবে না। মনে হচ্ছে তোমার জায়গাটা দখল করে নিয়েছি।
মণিকা কোন জবাব দিল না। মৃদু হেসে বাতি নিবিয়ে দিল। তারপর সজলের বুকে মুখ লুকাল। সজল মণিকার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর সে অনুভব করল, মণিকার চোখের জলে তার বুক ভেসে যাচ্ছে। সজল বলল, কাঁদছ কেন ?
মণিকা অস্ফূট স্বরে জবাব দিল, আনন্দে।

(চলবে.........................)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৭

স্বপ্ন কাঠি বলেছেন: দেখলাম!!! পরে পড়ার জন্য রাখলাম!

২| ০২ রা জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:০২

আসোয়াদ লোদি বলেছেন: হাঁ ভাই স্বপ্ন কাঠি, কথায় বলে প্রথমে দর্শনদারি পরে গুণবিচারি । আপনাকে ধন্যবাদ ।

৩| ০৩ রা জুন, ২০১৪ ভোর ৪:১০

আরজু মুন জারিন বলেছেন: অবরুদ্ধ আকাশ পর্ব পাচ পড়লাম। ভাল লেগেছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়। ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।

৪| ০৩ রা জুন, ২০১৪ দুপুর ২:০০

আসোয়াদ লোদি বলেছেন: ধন্যবাদ আরজু মুন জারিন । শীঘ্রই পেয়ে যাবেন পর্ব৬ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.