নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বসে আছি অন্ধকারে, \nআমাকে বুঝতে দাও \nমানুষ কেন আলোর \nপ্রত্যাশা করে!

আসোয়াদ লোদি

জীবন ও যন্ত্রণার মরুচরে আমি প্রপাতের ধারা ।

আসোয়াদ লোদি › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গঃ শুয়োর

০৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:৪৩


‘শুয়োরের বাচ্চা’। এটি প্রচলিত বাংলা গালি । বাঙালি সমাজে ক্ষুদ্ধ নারী-পুরুষ রাগ প্রশমনের জন্য গালিটি দিয়ে থাকেন । কিন্তু এই গালিটি কেন ব্যবহার করেন তারা । এর মধ্যে কী কোন দার্শনিকতা আছে ? হয়তবা আছে । পূর্ববঙ্গের (বাংলাদেশ) মানুষ নাকি দার্শনিক । তারা যৌন কাজকে বলে কাম, আবার দৈনন্দিন কাজকেও কাম বলে । কথাটা আমার নয়, বলেছিলেন প্রয়াত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ।

যাহোক, শুয়োর বৃতান্ত শুরু করি । পৃথিবীতে মানব আগমনের বাইবেলে বর্ণিত অ্যাডাম ও ঈভ এর আখ্যানটি আমরা সবাই জানি । কিন্তু সেখানে শুয়োর আগমনের সুনির্দিষ্ট আখ্যান পাওয়া যায় না । তবে ইহুদীদের কিতাবে শুয়োর ও চর্বিযুক্ত গরুর মাংস হারামের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে । ইসলাম আবির্ভাবের পূর্বে আরবরা শুয়োরের মাংস খেত। কোরআন শরীফে আল্লাহ বলেন শুয়োর খাওয়া হারাম । সে থেকে মুসলমানরা শুয়োরের মাংস খায় না এবং শুয়োরকে ঘৃণার চোখে দেখে । কোরআন শুয়োর খাওয়া নিষেধ করলেও শুয়োরের আবির্ভাব সম্পর্কে কোন তথ্য সেখানে পাওয়া যায় না । তবে কাসাসুল আম্বিয়াতে হযরত নুহ (আঃ) এর মহাপ্লাবনের কাহিনীতে শুয়োর সৃষ্টির উল্লেখ আছে । যেহেতু আমি শুয়োর বৃতান্ত লিখছি, তাই সেদিকে একটু দৃষ্টিপাত করতে চাই ।

মহাপ্লাবন শুরু হওয়ার পূর্বে হযরত নুহ (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে উদ্ভিদ ও প্রাণীর এক জোড়া করে জাহাজে তুলে নিলেন । গাধাকে জাহাজে তোলার সময় ইবলিস শয়তান গাধার লেজে লটকে জাহাজে উঠে আসে । এদিকে প্লাবণ শুরু হয়েছে । জাহাজ উত্তাল পানির উপর ভেসে চলছে। কিন্তু জাহাজের ভেতর এক ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিল । সেখানে পশুপাখি ও মানুষের মল মূত্রে পরিবেশ দুর্বিসহ হয়ে উঠল । হযরত নুহ (আঃ) অনন্যোপায় হয়ে আল্লাহর কাছে হাত তুলে সাহায্য প্রার্থনা করলেন । আল্লাহ নুহ (আঃ)কে নির্দেশ দিলেন, হে নুহ তুমি হাতির কপালে হাত বুলিয়ে দাও । নুহ (আঃ) আল্লাহর নির্দেশমত হাতির কপালে হাত বুলিয়ে দিতেই সাথে সাথে দুইটা শুয়োর পয়দা হল । শুয়োর আর দেরি করল না, জাহাজে যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা মলমূত্র খেয়ে ফেলে জাহাজ পবিত্র করে দিল । শুয়োর পয়দা হওয়ার ঘটনাটা শয়তান আড়াল থেকে দেখে ফেলেছিল । তিনি নুহ (আঃ) এর অলক্ষ্যে শুয়োরের কপালে হাত বুলিয়ে দিলেন । সাথে সাথে দুইটা ইঁদুর সৃষ্টি হল । ইঁদুর আর দেরি করল না ; জাহাজের তলদেশ কাটা শুরু করল । নুহ (আঃ) ইঁদুরকে জাহাজের তলদেশ কাটতে দেখে আবার আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলেন । আল্লাহ নির্দেশ দিলেন, হে নুহ তুমি বাঘের কপালে হাত বুলিয়ে দাও । নুহ (আঃ) বাঘের কপালে হাত বুলিয়ে দিলেন । এবার জন্ম নীল দুটি বিড়াল । বিড়াল ঝাঁপিয়ে পড়ল ইঁদুরের উপর । ইঁদুরকে মেরে খেয়ে ফেলল । নুহ (আঃ) এর জাহাজে যে তিনটি প্রাণী সৃষ্টি হয়েছিল, ইঁদুরের কথা বাদ দিলে মানব কল্যাণে বিড়াল ও শুয়োরের অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই ।

সেল্টিক ও আইরিশদের পুরাণে শুয়োর শিকারের অনেক কাহিনীর উল্লেখ আছে । সেল্টিক পুরাণে দেবী আরডুইনা শুয়োরকে পবিত্র করেছিল । এই ধরনের একটি গল্প হচ্ছে ফিনন ম্যাক কামহাইল (ফিন ম্যাককুল) একটি বন্য শুয়োর দ্বারা তার শ্ত্রু ডায়ারমুইড উয়া ডুইভান কে কিভাবে প্রতারণার মাধ্যমে মৃত্যুর ফাঁদে ফেলেছিল । ক্যালিডোনিয়ানের বন্য শুয়োরটি ছিল গ্রীক পুরানের এক অতিকায় দানব যে অলিম্পিয়ানের বীরদের পরাস্ত করেছিল । দেবী আর্টিমিস আতলিয়ার ক্যালিডনে শুয়োরটি প্রেরন করেছিলেন রাজার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। কারন রাজা তাকে ও তার দেবতাদের শেষকৃত্যে সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে যাদের ক্যালিডোনিয়ায় হত্যা করা হয়েছিল । সেখানে অনেক নারী বীর যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু আটালান্টা ছিল খুবই শক্তিশালি এক নারী যে প্রথম তার আশ্চোর্যজনক তীর অদৃশ্য করে জিতে গিয়েছিল । তার এই নিষ্ঠুরতা কিছু মানুষের বিয়োগান্তক পরিনতির জন্য দায়ী ছিল । ক্যালিডোনিয়ার সেই বন্য শুয়োরটির নাম ছিল স্ট্রাবো ।

ফরাসি অ্যাস্টেরিক্স কমিক সিরিজে দেখা যায় ওবেলিক্স এর প্রিয় খাদ্য ছিল বন্য শুয়োর । সে এক বসাতে অনেকগুলো শুয়োর খেতে পারত । নর্স পুরাণে গুল্লিনবারস্টি হল একটি বন্য শুয়োর । যার অর্থ সোনালি লোম । অনুরূপ ভাবে ইউরোপিয়ানদের পৌত্তলিক ঐতিহ্যে বন্য শুয়োর পুরুষ সূর্য দেবতা এন্ডোভেলিকাস, ফ্রেয়ার, এপোল্লোন এর সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল । মৃত্যু ও পুনর্জন্মের প্রকৃতি এবং পৃথিবীর মৃত প্রাণী ভক্ষণের আচরণকে শুয়োরের সাথে সম্পর্কিত মনে করত । হিন্দুদের পুরাণে বরাহ ছিল বিষ্ণুর তৃতীয় অবতার । বরাহ একটি বন্য শুয়োর ।
পূর্ব উজবেকিস্তানের কোকান্দ শহরের প্রচলিত নাম ছিল ‘বন্য শুয়োরের শহর’। একটি উপজাতীয় নাম থেকে এই নামের উৎপত্তি । হোমারের মহাকাব্য ওডিসি এর প্রধান চরিত্র হল ওডিসাস । সে যৌবনে একটি বন্য শুয়োর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল । নেভার্সদের উল্লেখযোগ্য কিংবদন্তী গল্পের মধ্যে আছে-এক রাতে চার্লম্যাগন স্বপ্ন দেখলেন, তিনি একটি বন্য শুয়োর শিকার করলেন । কিন্তু শুয়োরটি ছিল একটি শিশুর আদল । আর শিশুটি প্রতিজ্ঞা করেছিল যদি স্ম্রাট তার নগ্নতা ঢাকার জন্য কাপড় প্রদান করে, তবে সে স্ম্রাটকে রক্ষা করবে । নেভার্সদের বিসপ স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, শিশুটি ছিল সেন্ট সাইরিকাস, যে স্ম্রাট ক্যাথেড্রেল সেন্ট সাইরেট ও সেন্ট জুলিট ডি নেভার্স এর ছাদ মেরামত করতে চেয়েছিলেন ।

ইংল্যান্ডের লোককাহিনী ফরেস্ট অব ডিন এ একটি দৈত্য শুয়োরের উল্লেখ আছে। শুয়োরটি পশুদের ডিন হিসেবে পরিচিত ছিল । উনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তার আক্রমণে গ্রামবাসীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল । জো আর লেন্সডেল ছিলেন আমেরিকান লেখক । তার বিখ্যাত গল্প ‘দ্যা বোর’ এ দেখা যায় পূর্ব টেক্সাসের এক অবসাদ গ্রস্থ দিনে কম বয়সী এক বালক বিরাট এক বন্য শুয়োর শিকার করেছিল । মধ্য পৃথিবীর টোলকিন্দের কিংবদন্তী থেকে জানা যায় রোহানদের ১৩তম রাজা ফোলকা খুব নিষ্ঠুরভাবে একটি বড় বন্য শুয়োর শিকার করেছিলেন এবং তিনি এটির আক্রমণে আহত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন । টোলকিন্দের মহাকাব্য বিয়োলফ এ ইয়োফর শব্দটি পাওয়া যায় । এটি প্রাচীন ইংরেজি শব্দ । যার অর্থ বন্য শুয়োর ।

জার্মানির নগর কর্তৃপক্ষের পোষাকে বাহুতে প্রটোকল হিসেবে একটি ব্লেজ লাগানো থাকে । তাতেও একটি বন্য শুয়োরের মুন্ডের চিত্র দেখা যায় । বন্য শুয়োরের মুন্ডকে সাধারণ শক্তির এবং যুদ্ধে সাহস ও নিষ্ঠুরতার প্রতীক মনে করা হত । ক্যাম্পবেলের পসিল পরিবারে অস্ত্র হিসেবে বন্য শুয়োরের মুন্ড অন্তর্ভুক্ত ছিল । সুইন্টন পরিবারেও অস্ত্র হিসেবে বন্য শুয়োরের ব্যবহার ছিল । আর ম্যাকিনন সম্প্রদায়ের লোকেরা বন্য শুয়োর ও এর মুন্ডের ক্রেস্ট নির্মাণ করত ।
প্রাচীন রোমের সেনাবাহিনীর তিনটি লেজিওন এর প্রতীক ছিল একটি বন্য শুয়োর ।

ইটালির মিলান শহরে একটি বন্য শুয়োরের দীর্ঘস্থায়ী প্রতীক আছে । মিলান শহরের দেয়ালে আন্দ্রিয়া আলসিয়াটো ১৫৮৪ সালে কাঠে খোদাই করা এই শিল্পকর্মটি তৈরি করেছিলেন । এটির ডিজাইন ছিল একটি গর্ত থেকে একটি বন্য শুয়োর বেরিয়ে আসছে । ইংল্যান্ডের রাজা ৩য় রিচার্ড তার ব্যক্তিগত উপকরণ ও ব্যাজ হিসেবে একটি সাদা শুয়োরের ছবি ব্যবহার করতেন । তার অকাল প্রয়াত পুত্র এডওয়ার্ড পিতাকে অনুসরণ করেছিলেন ।

গৃহপালিত শুয়োর ভীতু প্রকৃতির হয় । মানুষের তাড়া খেয়ে এরা সহজে পালিয়ে যায় । কিন্তু বন্য শুয়োর হয় পাশবিক প্রকৃতির । এদের পাশবিক আচরণ মানবসমাজে ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত । এরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বৃক্ষ নিধন করে, ফসলের ক্ষতি করে, যে সব পাখি মাটিতে বাসা বোনে তাদের ডিম এবং কাছিমের ডিম খেয়ে ফেলে । নিউজিল্যান্ডে বন্য শুয়োর ‘ক্যাপ্টেন কুকারস’ হিসেবে পরিচিত ।

২০০৪ সালের জুন মাসে আমেরিকার জর্জিয়াতে হগজিল্লা নামে এক বিশাল আকৃতির শুয়োরের অভিষেক হয়েছিল । প্রথমে এটিকে ধাপ্পাবাজি মনে হলেও ধীরে ধীরে এটি ইন্টারনেটে সংবেদনশীল হয়ে উঠে । ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এক্সপ্লোরার মাঠ পর্যায়ে কিছু বিজ্ঞানী পাঠিয়েছিল শুয়োরটি সম্পর্কে অনুসন্ধান করার জন্য । বিজ্ঞানীরা এটির শরীর ও ডিএনএ পরীক্ষার পর রিপোর্ট দেন, হগজিল্লা একটি বন্য শুয়োর ও একটি গৃহপালিত শুয়োরের হাইব্রিড শংকর জাত । ২০০৮ সালে এক গবেষণা থেকে জানা যায় ৪ মিলিয়ন বন্য শুয়োরের কারনে আমেরিকাতে প্রতি বছর ৮ মিলিয়ন সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতি হয় । বন্য শুয়োরের ভয়াবহ উৎপাতের কারনে কিছু স্টেটে একে ক্যান্সার প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করেছে । প্রায়শ ঐসব স্টেটে শিকার করে ব্যাপক হারে বন্য শুয়োর কমানোর আদেশ জারি করা হয় । এমন কি মিশৌরিতে বন্য শুয়োর শিকারের কোন অনুমতির প্রয়োজন পড়েনা । একজন শিকারি যে কোন অস্ত্রের মাধ্যমে বন্য শুয়োর শিকার করতে পারে ।
বন্য শুয়োর খব দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে পারে । শুয়োর ৬ মাস বয়সে যৌন সক্ষমতা অর্জন করে ।

পৃথিবীতে যত শুয়োর আছে তার অর্ধেক আছে চীনে । চীনারা সবচেয়ে বেশী শুয়োরের মাংস ভক্ষণ করে । ‘শুয়োরের সাথে রয়েছে মানুষের শারিরিক বৈশিষ্ট্যের চমকপ্রদ মিল। তুলনামূলক লোমহীন চামড়া, চামড়ার নীচে সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাটের আস্তরণ, হালকা রঙের চোখ, বেড়িয়ে আসা নাক, ঘন চোখের পাতা মানুষের এই সব শারিরিক বৈশিষ্ট্য গুলি অব্যর্থভাবে শুয়োরের মতই।’ কথাটা আমার নয় । বলেছেন জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যাল্যের বিজ্ঞানী ইউজিন ম্যাকার্থি । পশুদের শংকরায়নের ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীতে যার সুনাম আছে । সম্প্রতি প্রকাশিত তার মতবাদ হচ্ছে, এক পুরুষ শুয়োর ও এক স্ত্রী শিম্পাঞ্জির মিলনের ফলে পৃথিবীতে মানুষ জন্ম নিয়েছিল ।

ম্যাকারথির দাবী শিম্পাঞ্জিদের সাথে মানুষের অনেক মিল আছে । আবার অমিলের সংখ্যাও কম নয় । আর কোন প্রাইমেটের সঙ্গে মানুষের একই সঙ্গে এত মিল ও অমিল দৃষ্টিগোচর হয়না। মানুষের বিবর্তনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে এই পার্থক্য আসলে এক প্রকার শংকরায়নের ফলে সৃষ্টি হয়েছে । এর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন একটি নির্দিষ্ট প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য প্রাইমেটস আত্মীয়দের থেকে মানুষকে আলাদা করেছে । ম্যাকারথির মতে সেই প্রাণীটি শুয়োর ।
ম্যাকারথি তার চমকপ্রদ হাইপোথিসিস প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বলেছেন, শিম্পাঞ্জির সঙ্গে মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্যের প্রচুর মিল আছে, যদিও শারীরিক বৈশিষ্ট্যের রয়েছে প্রচুর অমিল । আর এই শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলোই প্রাণীজগতে শিম্পাঞ্জি ও মানুষকে দুটি পৃথক প্রজাতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ম্যাকারথি এখানে এনেছেন শুয়োরের প্রসঙ্গটি । শারীরিক বৈশিষ্ট্যের যে যে জায়গায় শিম্পাঞ্জির সাথে মানুষের অমিল পাওয়া যায়, ঠিক সে সে ক্ষেত্রে প্রচুর মিল পাওয়া যায় শুয়োরের সাথে । তাই তার দাবী শুয়োর ও শিম্পাঞ্জির শংকরায়নের ফলে পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব হয়েছে ।

আজকাল চিকিৎসার জন্য শুয়োরের চামড়ার কোষ ও হার্ট মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে । ম্যাকারথির ধারণা এটি তার হাইপোথিসিস এর পক্ষে বড় একটি প্রমাণ ।
ম্যাকার্থি তার মতবাদে আরও উল্লেখ করেছেন, সম্ভবত এই শুয়োর আর শিম্পাঞ্জির মিলনের পর বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে ব্যাকক্রসিং চালু ছিল। এই পুরুষ শুয়োর আর স্ত্রী শিম্পাঞ্জির মধ্যে মিলনের ফলে নতুন যে হাইব্রিড সন্তান জন্ম নিয়েছিল সে শিম্পাঞ্জিদের সঙ্গেই থাকত। ফলে সেই সন্তানের সঙ্গে বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে শিম্পাঞ্জিদের ব্যাকক্রসিং চলা স্বাভাবিক ছিল । এর ফলে প্রত্যেক প্রজন্মে জন্ম নেওয়া সন্তানদের মধ্যে জিনগত ভাবে শিম্পাঞ্জিদের বৈশিষ্ট্য প্রকট হয়েছে। এবং শুয়োরের সঙ্গে তাদের জিনগত বৈশিষ্ট্যের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। এইভাবে বেশ কয়েক প্রজন্ম চলার পর নতুন প্রজাতির যে প্রাণী সৃষ্টি হয়েছে তারা নিজেদের মধ্যে ধীরে ধীরে প্রজননে সক্ষম হয়েছে। এবং তাদের থেকেই এসেছে আধুনিক মানুষ । যাদের আমরা শুয়োরের বাচ্চা বলে গালি দিই ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ৩:১৫

ফয়সাল খালাসী বলেছেন: আমরা সবাই তাহলে শুয়ারের বাচ্চা :/

২| ০৭ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৪

আসোয়াদ লোদি বলেছেন: ফয়সাল খালাসী ভাই আমারও প্রশ্ন তাই । বাংলা গালি আর বিজ্ঞানের বুলি যদি প্রমাণ হয়ে যায়, আমাদের শুয়োরের বাচ্চা হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.