নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বসে আছি অন্ধকারে, \nআমাকে বুঝতে দাও \nমানুষ কেন আলোর \nপ্রত্যাশা করে!

আসোয়াদ লোদি

জীবন ও যন্ত্রণার মরুচরে আমি প্রপাতের ধারা ।

আসোয়াদ লোদি › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘হার্ড চয়েস’ হিলারির কূটনৈতিক স্মৃতিকথা

২৭ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৫২

হিলারি গত ১৪ জুন ২০১৪ খৃঃ ভার্জিনিয়ার আরলিংটনের কস্টকো বুক সপে তাঁর সদ্য প্রকাশিত 'Hard Choices' বইতে স্বাক্ষর প্রদান করেন । হিলারির বই প্রকাশের প্রথম সপ্তাহে ১ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে । তাঁর পূর্বের স্মৃতিকথা মূলক বই ‘Living History’ প্রথম সপ্তাহে ৬ লাখ কপি বিক্রি হয়েছিল ।

সাইমন এন্ড স্কুস্টার এর সভাপতি এবং প্রকাশক জনাথন কার্প বলেন, যদিও এটি প্রত্যাশিত বিক্রির চেয়ে কম, কিন্তু বইটি কথাসাহিত্য নয় এমন বইয়ের ক্ষেত্রে বেস্ট সেলিং এর পথে রয়েছে। আর এ জন্যে আমরা গর্ববোধ করছি । দি নিউ ইয়র্ক টাইমস এর ভাষ্য মতে, কথাসাহিত্য নয় এমন বইয়ের তালিকায় হিলারির ‘হার্ড চয়েস’ এর বিক্রি-বাট্টা ভাল । কিন্তু তাঁর আগের বই ‘লিভিং হিস্ট্রির’ চেয়ে তা অনেক মন্থর ।

হিলারির স্মৃতিকথা ‘লিভিং হিস্ট্রি’ প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৩ সালে । বিল ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট থাকা কালে হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরে মণিকা লিউনিস্কির সঙ্গে তাঁর ওরাল সেক্স এক সময় সারা পৃথিবীতে আলোচনার ঝড় তুলেছিল । হিলারি তাঁর এ গ্রন্থে সে সম্পর্কে স্বীয় দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরেছিলেন । ‘লিভিং হিস্ট্রি’ দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভের এটি একটি কারন বলে মনে করা হয় । আরও একটি কারন তখন সাবেক ফার্স্ট লেডির স্মৃতিকথা হিসেবে বইটি রচিত হয়েছিল । সাধারণত সাবেক ফার্স্ট লেডিদের স্মৃতিকথা সেরা বিক্রির তালিকায় স্থান দখল করে । এ প্রসঙ্গে বারবারা বুশ ও লরা বুশের বইয়ের কথা স্মরণ করা যায় । হিলারির চার বছর আমেরিকার স্টেট সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালনের উপর অধিকতর আলোকপাত এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন লাভের দৌড়ে অংশ গ্রহণ সম্পর্কে কিছু আলোচনা থাকবে, ‘হার্ড চয়েস’ নিয়ে এমনটি প্রত্যাশা ছিল পাঠকের । যাহোক তিনি ২০০৮ সালে ওবামার বিরুদ্ধে তাঁর প্রচারাভিযানের সামান্যই উল্লেখ করেছেন বইটিতে । ক্লিনটনের একটি বক্তব্য থেকে জানা যায়, হিলারি এখনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেনি ।

এটি সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত যে, একটি অতীব নিম্নমানের বই লিখে রাষ্ট্রপতির প্রতি তাঁদের আনুগত্যের ব্যগ্রতা দেখাতে হবে । এ ধরনের আগ্রহকে ঝুঁকিপূর্ণ একটি পদ্ধতি বলা যায় । হিলারি ক্লিনটনের স্মৃতিকথা ‘হার্ড চয়েস’ এর ব্যতিক্রম নয় । কিন্তু ফার্স্ট লেডি হিসেবে তাঁর রচিত স্মৃতিকথা ‘লিভিং হিস্ট্রি’ একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা । এটিতে ক্লিনটন কিছু পরিমার্জনের কাজটি করেছিলেন । আর প্রকাশকও প্রদান করেছিলেন বিরাট অংকের অগ্রিম । আরও ছিল জবরদস্ত প্রচারনা । সবকিছু হয়েছিল পরিকল্পনামাফিক ।

‘হার্ড চয়েস’ গ্রন্থে হিলারি তাঁর সম্পূর্ণ অভিপ্রায় প্রকাশের ক্ষেত্রে সংযমের পরিচয় দিয়েছেন । আর তা তাঁর জন্য শোভনও ছিল । চার বছর বারাক ওবামার প্রশাসনের স্টেট সেক্রেটারি থাকাকালীন অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের রূপরেখা তিনি এ গ্রন্থে তুলে ধরেছেন । ৬৫৬ পৃষ্টার এই বইয়ে তিনি জোর দিয়েছেন ২০১৬ সালে কী ঘটতে যাবে এর উপর । আগামি দিনের আমেরিকানরা কেমন হবে এবং তাদের জন্য ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তারা কী চাইবে । তাঁর মতে অতি শীঘ্রই আরও একটি হার্ড চয়েস এর সময় আসবে । সেটি হবে জলের অতল থেকে উত্তরণের একটি পদক্ষেপ । সত্যিকার অর্থে এই বইটি হিলারির আগামি ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের আনঅফিসিয়াল প্রচেষ্টা ।

হিলারির সিদ্ধান্ত ছিল একটি স্পষ্টভাষী স্মৃতিকথা লিখবেন এবং তিনি শুরু থেকে যথেষ্ট সতর্ক ছিলেন যাতে তাঁর উদ্যোগ বিকলাঙ্গ হয়ে না পড়ে । তিনি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করেন ডেমোক্রেট দলের মনোনয়ন লাভ এবং শক্তিশালী প্রচারণা চলাতে বারাক ওবামার পূর্ণাঙ্গ সমর্থন প্রয়োজন হবে । তাই তিনি তাঁর সময়কার হোয়াইট হাউস ও স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর মধ্যকার টানাপোড়েনের বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে এড়িয়ে গেছেন । ফলে এটি হোয়াইট হাউস ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের মধ্যে সম্পর্ক নির্মাণে সহায়ক হবে ।

সিরিয়ার শাসন এবং ইসরাইল অধিকৃত উপনিবেশ অঞ্চলে আমেরিকার ভূমিকা কী হবে, সে সম্পর্কে হিলারি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ওবামা ও তাঁর মধ্যে এ বিষয়ে তেমন কোন পার্থক্য থাকবে না । হিলারির বইয়ে এই দুটি বিষয়ে আর কোন বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না । এখানে ওবামার ঘুঘু পাখির ভূমিকায় হিলারিকে অবতীর্ণ হতে দেখা যায় । তিনি বলেন আমারা হোয়াইট হাউস নিয়ন্ত্রিত এজেন্ডা বহির্ভূত অন্য কোনকিছু শুনব না । তাছাড়া আরেকটি বিষয় হচ্ছে তাঁর সাম্প্রতিক স্মৃতিকথায় হোয়াইট হাউসের বর্তমান প্রশাসনিক কর্মপদ্ধতির সমালোচনা এড়িয়ে যাওয়া । হিলারি এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরবতা পালন করেন ।

তা সত্ত্বেও হিলারি আবার ওবামাকে ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন লাভের অনিবার্য প্রচারণার অস্বস্তিকর দিনগুলোতে একজন কর্তব্যপরায়ণ প্রশংসিত ব্যক্তির প্রতিকৃতি রূপে চিত্রিত করেছেন । তিনি তাঁর শেষ কর্ম দিবসের স্মৃতি তাড়িত হয়ে অশ্রুসজল কণ্ঠে প্রেসিডেন্টকে বাহবা দিয়ে বলেন, আমাদের কর্ম ও বন্ধুত্ব আমার কাছে অনেক ব্যাপক অর্থ বহন করে । এবং যদি তিনি কখনও আমার প্রয়োজন অনুভব করেন, আমি তাঁর ডাকের অপেক্ষায় থাকব । ওবামার ২০১২ ডেমক্রেটিক কনভেনশনে বিল ক্লিনটন একটি দ্রুপদী ভাষণ দিয়েছিলেন । তিনি বলেছিলেন, একজন শীর্ষস্থানীয় আমেরিকান কূটনীতিক হয়েও হিলারি রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে । সে তাঁর হোটেল কক্ষে বসে চশমা দিয়ে দেখেছে পূর্ব তিমুরের স্বাধীনতা । আর হিলারি দশ হাজার মাইল দূরত্ব থেকে তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করেন এভাবে- আমি সম্পূর্ণরূপে গর্বিত যে আমি সাবেক প্রেসিডেন্টকে বিয়ে করেছি, বর্তমান প্রেসিডেন্ট কে সেবা দিয়েছি এবং আমরা সবাই দেশকে ভালোবাসি ।

হার্ড চয়েস এর কিছু বিষয় স্ববিরোধীতায় পূর্ণ । এটি এমন একটি ধারণা দেয় হিলারি অতি উঁচুদরের অভিজ্ঞ , কঠোর পরিশ্রমী এবং ভাল প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন । আবার এটাকে তাঁর একটি ভোঁতা ব্যাপার বলেও গণ্য করা যায় । এসব দৃষ্টিকোণ থেকে পাঠক নিজেই সহজ সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবে ।



মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:০২

রাজীব নুর বলেছেন: বইটি পড়া হয় নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.