নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০২১ সালের সর্বশেষ সরকারি হিসাব মোতাবেক দেশে স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজার ৩৩৩ জন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) নামক একটি সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের এ কার্যক্রমটি করে থাকে। ক্ষমতার পালাবদলে জামুকার পরিসংখ্যানেরও পালাবদল হয়। এর আগে বহুবার এই লিস্টের পরিমার্জন হলেও ২০১৫ সালের পর থেকে এই তালিকার পরিসংখ্যান লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। এমনকি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লিগ ১ লাখ ৮৬ হাজার জনের যে তালিকা করে যায় সেটিও প্রায় অর্ধ লক্ষ বেড়ে যায় গত এক দশকে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এ পর্যন্ত অন্তত সাতবার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। প্রতিবারই সংযোজন-বিয়োজনের পিছনে কাজ করেছে রাজনৈতিক বিবেচনা।
১৯৮৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল আমীন আহম্মেদ চৌধুরী ভারত থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকাটি সংগ্রহ করেছিলেন সেই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা উল্লেখ করা ছিলো ৬৯ হাজার ৮৩৩ জন। ভারতীয় অনেক লেখক, বিশেষত যারা মুক্তিবাহিনীর ট্রেনিং-এর সাথে জড়িত ছিলেন তাঁদের লেখায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে একটা ধারনা পাওয়া যায়। এ সংখ্যাটা সর্বোচ্চ লাখ খানিক। কিন্তু, এই লাখ খানিকের সবাই আবার যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়নি। কারণ ট্রেনিং শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই যুদ্ধ শেষ হয়ে যায় । পাশাপাশি ছিলো অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের ক্রাইসিস। তাই মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাসহ অন্যান্য আরো কিছু উপবাহিনীর সদস্যদের যোগ করলে, স্বাধীনতার সংগ্রামে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যাটি দেড় লাখের কোন ক্রমেই বেশি হতে পারেনা।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বর্তমানে ১ লাখ ৯৪ হাজার 'বীর মুক্তিযোদ্ধাদের' নিয়মিত সরকার থেকে সম্মানী ভাতা দিচ্ছে। বর্তমানে এই ১ লাখ ৯৪ হাজার ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন। তা ছাড়া দুই ঈদে ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা, বিজয় দিবসে পাঁচ হাজার টাকা এবং বাংলা নববর্ষে দুই হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন। বছরে সব মিলিয়ে একজন প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন।
ভাতার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোটা, চিকিৎসার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারসহ আরো বিশেষ কিছু সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও তাঁদের পরবর্তী প্রজন্ম। অথচ, মুক্তিযুদ্ধের কথিত ‘৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষ বীরাঙ্গনা’র কোন পরিবার এ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কোন ভাতা পাননি। সরকারি চাকুরীর কোটায়ও তাঁদের কোন স্থান নেই। এমনকি স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও তালিকা করে তাঁদের চিহ্নিত করা হয়নি। দেওয়া হয়নি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। যে বীরাঙ্গনার গল্প বলে বেড়ান চেতনাজীবীরা, সেই বীরাঙ্গনার ‘জারজ সন্তানদের’ও খোঁজ নেয়নি রাষ্ট্র। তাঁদের অনেকেরই ঠাই হয়েছে পাশ্চাত্যের কোন পরিবারে।
দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা একটি বিশাল গোষ্ঠীকে অবজ্ঞা করে, যারা Call of Duty তে যাওয়া একটি বিশেষগোষ্ঠীকে অতিপ্রাধান্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে — বুঝতে হবে এর পিছনে দায়বদ্ধতা নয়, বরং একটি বিশেষ রাজনৈতিক অঙ্ক কাজ করে। এই অঙ্কের কারণেই মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্মও সরকারি চাকুরীর কোটায় বিবেচিত হয়। অথচ ৩০ লাখ শহীদের বিশাল পরিবার লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে যায়।
১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:০৪
আসিফ বাশার বলেছেন: চাকুরী যাওয়া অনেকের মধ্যে আমার বাবাও একজন। কিন্তু, তার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে আমরা কখনো কোন রাজনৈতিক সুবিধা নেইনি। কারণ আমাদের কাছে এটা গর্বের বিষয়, করুণার নয়।
২| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ৭:৩০
কামাল১৮ বলেছেন: ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা জামাত বিএনপিই বানিয়েগেছে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:৫৩
কামাল১৮ বলেছেন: রাজনৈতিক অংকটা হলো সামরিক শাসন এবং বিএনপির শাসন আমলে তারা নিগ্রিহীত হয়েছে।অনেকের চাকরি গেছে,অনেককে মেরেফেলা হয়েছে।ভুরি ভুরি প্রমান আছে।