নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনুস গত ২৫শে আগস্ট জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষণে গুণগত পরিবর্তনের জন্য নাগরিক সুপারিশের ডাক দিয়েছেন। আমার মতে গুণগত পরিবর্তনের প্রথম ধাপটি হতে পারে বর্তমান সংবিধানকে স্থগিত করে একটি সাংবিধানিক নাগরিক এসেম্বলি সত্যাপনের মাধ্যমে। যেই এসেম্বলি আগামী ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে একটি নতুন সংবিধানের রূপরেখা তুলে ধরবে এবং পরবর্তীতে রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে নতুন সংবিধানের চূড়ান্ত কাঠামো।
এই আলোচনার খোরাক হিসাবে ভবিষ্যৎ সংবিধান রচয়িতাদের উদ্দেশ্যে ৩টি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা সামনে রাখতে চাইঃ
প্রথমত, নতুন সংবিধানে বাংলাদেশে প্রাদেশিক শাসন ব্যাবস্থার সুপারিশ থাকতে হবে। বাংলাদেশের মতো একটি ‘বহুল জনসংখ্যার বৃহৎ রাষ্ট্রে’র জন্য প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। বাংলাদেশের এককেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা স্বৈরতন্ত্রের হাতকে প্রসারিত করেছে এবং সুষম উন্নয়নের আকাংখাকে দুরাশায় পরিণত করেছে। তাছাড়া এব্যাবস্থা অঞ্চলভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর বিকশিত হওয়ার সুযোগও ধ্বংস করেছে। প্রাদেশিক ব্যাবস্থা চালু হলে অঞ্চলভিত্তিক দল ও অঞ্চলভিত্তিক নেতার আবির্ভাব হবে, যেটি প্যান-বাংলাদেশভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বগ্রাসী রাজনীতি প্রতিহত করবে। উল্লেখ্য, আশেপাশের সকল প্রতিবেশী রাষ্ট্রে প্রাদেশিক ব্যাবস্থা বিদ্যমান, এমনকি নেপালের মতো একটি দেশেও ২০১৫ সালে প্রাদেশিক ব্যবস্থার পক্ষে সংবিধান রচনা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, জাতীয় সংসদকে ২টি কক্ষে বিভক্ত করতে হবে। উচ্চ কক্ষের নাম হবে আইন সভা যার সদস্য সংখ্যা হবে ৫০টি এবং নিম্ন কক্ষের নাম হবে সাধারণ সভা যার সদস্য সংখ্যা হবে ৩০০টি। জনসংখ্যার অনুপাতে প্রদেশগুলো থেকে জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষের আসন বন্টিত হবে। উচ্চকক্ষের ৫০টি আসন সমান অনুপাতে প্রদেশগুলোর মধ্য বন্টিত থাকবে। বর্তমানে বিদ্যমান ৫০টি নারী সংরক্ষিত আসন বিলুপ্ত হবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকৃত প্রতিটি রাজনৈতিক দলগুলোকে তাঁদের অংশগ্রহণকৃত আসনগুলোর নুন্যতম ১০ শতাংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন দিতে হবে। এছাড়া, সংখালঘু সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় জাতীয় সংসদের নিম্ন কক্ষের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারি দলগুলি তাঁদের মনোনয়নকৃত প্রার্থীদের নুন্যতম ১০ শতাংশ প্রার্থী সংখালঘু সম্প্রদায়ের জন্য বরাদ্দ রাখতে বাধ্য থাকবে।
উক্ত ২টি ব্যাবস্থার মাধ্যমে জাতীয় সংসদে আরও যোগ্য এবং মেধাবী রাজনীতিবিদের আগমন ঘটবে এবং সংসদ অনেক বেশি অংশগ্রহণমূলক হবে। বিশেষ করে উচ্চ কক্ষের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতার বিধি বিধান থাকতে হবে। কারণ এই কক্ষটি আইন প্রণয়নের সাথে সরাসরি জড়িত থাকবে। এছাড়া মহিলা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সবগুলো রাজনৈতিক দলগুলো এই নিয়ম মানতে বাধ্য থাকিবে। ফলে, সাংবিধানিকভাবে নারী এবং সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব কিছুটা হলেও নিশ্চিত হবে। কোন মৌলবাদী বা একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় আদর্শের দলের পক্ষে এই নিয়মের ব্যত্যয় করা সম্ভব হবে না, এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের স্বার্থে তাঁদের মনোনীত প্রার্থীর ১০ শতাংশ করে ঐ ২টি পক্ষের জন্য বরাদ্দ রাখতে তারা বাধ্য হবে।
সর্বশেষ প্রস্তাবনাটি হল, একজন ব্যাক্তি পরপর ২ বারের বেশি প্রধানমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন না করতে পারার বিধান। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে রাষ্ট্রপতিসহ সাংবিধানিক দ্বায়িত্ব পালনকৃত প্রতিটি ব্যাক্তির ক্ষেত্রে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাবলে সংসদ নেত্রী হওয়ার যে বিধানটি আছে, সেটিও বিলুপ্ত করতে হবে।বিলুপ্ত করতে হবে ৭০ অনুচ্ছেদের মতো অগণতান্ত্রিক ধারাগুলি। এছাড়া রাজনৈতিক দলের নির্বাচন করার বৈধতা পেতে হলে সেই দলের সংবিধান, জাতীয় সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তার ভেটিং করতে হবে মহামান্য হাইকোর্টের দ্বারা।
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩০
শাহিন-৯৯ বলেছেন:
তারেক রহমান আপনার দুই ও তিন নম্বর সংস্কার দাবিটি তাদের প্রস্তাবিত ৩১ দফায় নিয়ে এসেছে তবে তারা লিখেছে পরপর দুইবারের বেশি কেউ থাকতে পারবে না মানে গ্যাপ দিয়ে আবার হতে পারবে কিন্তু প্রয়োজন দুইবারের বেশি কেউ হতেই পারবে না।
প্রাদেশিক সরকার এত ক্ষুদ্র দেশে খুব কার্যকর নয়।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:২৫
আসিফ বাশার বলেছেন: দেশটা ক্ষুদ্র কে বললো আপনাকে? জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ। আর ভৌগলিকভাবে আমাদের থেকে অনেক ছোট দেশেও প্রাদেশিক ব্যাবস্থা আছে। যেমন নেপাল, শ্রীলংকা, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড ইত্যাদি।
৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০২
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান রচনা করা হোক।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো পরামর্শ। একই ব্যক্তি দুইবারের বেশী প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। এই বিধানটা খুব দরকার। আমার একটা পরামর্শ হল, ৫ বছরের বদলে ৪ বছর পরে নির্বাচন হওয়া উচিত। ৫ বছর পরে সরকার খেই হারিয়ে ফেলে এবং অগণতান্ত্রিক পথে হাঁটার সুযোগ বেশী পায়।
বাংলাদেশে মনে হয় একটা নিয়ম আছে যে সংসদে নিজ দলের বিরুদ্ধে মত দিলে তার এমপি পদ বাদ হয়ে যায়। অর্থাৎ দলের মধ্যেই গনতন্ত্রের কোন স্থান নাই। আইন থাকা উচিত যে দলের অধিকাংশের মতের বিরুদ্ধেও মত দেয়া যাবে। কোন রাজনৈতিক দল যেন তাকে পদচ্যুত করতে না পারে।
বড় সমস্যা হল বিচারপতিরা এখন অনেকেই বিচারপতি মানিকের মত হয়ে গেছে। এই অবস্থার উন্নতি কিভাবে করবেন। একটা দেশের সর্বোচ্চচ আদালতে মানিকের মত লোক বিচারপতি হলে ঐ দেশের বারোটা বাজতে সময় লাগার কথা না। পাকিস্তানের উচ্চ আদালতের অবস্থাও আমাদের চেয়ে ভালো।