নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৯৪৭ থেকে ১৯৫৪ - মুসলিম লীগের পতনের ইতিহাস

২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৩০

সুবিশাল ভারতীয় উপমহাদেশ ভেঙ্গে পাকিস্তান নামের একটি রাষ্ট্রের জন্ম হয় ১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্ট। রাষ্ট্রটি জন্ম নেয় ভারতীয় মুসলমানদের পৃথক একটি রাষ্ট্রের জন্যে তীব্র দাবীর সম্মুখে। ১৯৪৬ সালেই পূর্ব বাংলার মুসলমানদের দাবী অনুযায়ী পূর্ব বাংলাকে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে সংযুক্তকরণের চুক্তি সম্পাদিত হয়। মুসলিম অধ্যুষিত একটি পৃথক রাষ্ট্রের জন্মের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকা পূর্ব বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের পক্ষে এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে সাক্ষর করে যে রাজনৈতিক দল, তার নাম মুসলিম লীগ।

জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সকলে আশা করেছিল, উপনিবেশিক শাসন শেষ হওয়া মাত্রই পাকিস্তান রাষ্ট্রটির মুখচ্ছবি হবে এই রাজনৈতিক দলটি। বস্তুত, ৪৭এর দেশভাগের সময় মুসলিম লীগই মুসলমানদের স্বাধীনতা, তথা পৃথক রাষ্ট্র আদায় করে নেবার সংগ্রামের প্রতীকী কণ্ঠস্বর ছিল। এই রাজনৈতিক দলের তাৎপর্য তুলে ধরার জন্যে এক পাকিস্তানী ঐতিহাসিক উল্লেখ করেন – “একটা রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর জন্যে যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা আশা করে, তার সমস্ত কিছু হাতের মুঠোয় নিয়ে মুসলিম লীগ পাকিস্তানে নিজ রাজনৈতিক অভিযাত্রা শুরু করে... এই দলটির প্রতি জনগণের দৃষ্টিভঙ্গীতে শুধু শ্রদ্ধা বা কৃতজ্ঞতাই ছিল না, ছিল ভালবাসা এবং অনুরাগের এমন এক মিশ্র আবেগীয় অনুভূতি যা সচরাচর কোন রাজনৈতিক দলের জন্যে দেখা যায় না।”

ব্রিটিশ পরবর্তী পাকিস্তানে শাসকশ্রেণীর রদবদলে পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধরনের মধ্যে বিদ্যমান সামাজিক শৃঙ্খলের মধ্যে কোন আশু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় নি। বরং ব্রিটিশ রাজের শেষদিকে এ অঞ্চলের রাজনীতিতে যে ধারাবাহিক এবং সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন চিহ্নিত হচ্ছিল, তারই প্রারম্ভ বলে প্রতিভাত হয়। ব্রিটিশ রাজ তাদের শাসন ব্যাবস্থা যেখানে, যে অবস্থায় ছেড়ে যায়, ঠিক সেখান থেকেই পূর্ব পাকিস্তান শাসন করা শুরু করে মুসলিম লীগ। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে ভারতীয় মুসলমানদের ভাগ্যবিধাতা হিসেবে এই দলটির আবির্ভাবের পেছনে ছিল না অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মত সুদীর্ঘ কোন ইতিহাস। ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসের মত এই দলটির সমর্থনে তৃণমূল পর্যায়ে না ছিল কোন সংগঠিত জনবল, না ছিল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ত্যাগতিতিক্ষা ও জনগণকে নিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার কোন উদাহরণ। স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর যদিও তারা নিজেদের পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র রাজনৈতিক দল বলে দাবী করে, তবে এই অঞ্চলের সাধারণ মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের দুঃখগাঁথার সাথে তাদের ছিল না কোন রকম সংযোগ।

এমনকি ১৯৩৫ সালেও মুসলিম লীগ ছিল একটি প্রায় ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক দল। জিনকিনসের ভাষ্য মতে , ১৯৪০ সালেও মুসলমানদের জন্যে একটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র কামনা এ অঞ্চলের সম্ভ্রান্ত মুসলমানদের জন্যেও ছিল সুদূরের স্বপ্ন। এত কিছুর পরেও ১৯৪৬ সালের ভোটে মুসলিম লীগ তাদের কথার সত্যতা প্রমাণ করলো। প্রমাণ করলো যে মুসলিম লীগই ভারতীয় মুসলমানদের মুখপাত্র রাজনৈতিক দল। বিশেষ করে পূর্ব বাংলার মুসলমানদের মধ্যে তাদের সমর্থনের কোন অভাব ছিল না। ঐ নির্বাচনে তারা মুসলমানদের জন্যে পৃথকভাবে সংরক্ষিত ১২১টি সিটের মধ্যে ১১৩টি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। ২৪,৩৪,১০০ জন ভোটারের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ ভোটারের উপস্থিতিতে ভোট গ্রহন কার্যক্রম শুরু হয়। মুসলিম লীগ তার ২০,৩৬,৭৭৫টি ভোট পায়। যেহেতু নির্বাচনটি ছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম সংক্রান্ত, তাই নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে যারা ছিলেন তারা চেষ্টা করেন সকল মতপথ এবং সর্বস্তরের মুসলমানদের একত্রিত করার। বলাই বাহুল্য, তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়। কলেজ- ভার্সিটি গমনকারী তরুণ যুবক, চাকুরীজীবী মধ্যবিত্ত, মোল্লা-মৌলভি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে শহুরে নেতা – সবাই এসে এককাতারে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়।

ব্রিটিশ শাসনামলের শেষদিকের কিছু ওলটপালটে, তুলনামূলকভাবে ১৯৪০ সাল থেকে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা বিপুলাকারে বৃদ্ধি পায়। ১৯৩০ সালেও যে রাজনৈতিক দলটি ছিল মূলত কাগজে কলমেই- ১৯৪৪ সালে এসে সেই রাজনৈতিক দলটির পাঁচ লাখ নিবন্ধিত সদস্য সংখ্যার বড়াই নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করে সবাইকে। বেঙ্গল মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের মতে ১৯৪৬ সাল নাগাদ মুসলিম লীগের সদস্য সংখ্যা দশলাখ অতিক্রম করে। যদিও উক্ত রাজনৈতিক দলের ক্রমবর্ধমান সদস্য সংখ্যা দলটির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বা সদস্যদের মধ্যে শক্তিশালী গণসংযোগ নির্দেশ করে না। ওটা ছিল শুধুই তাদের পূর্ব পাকিস্তানের আমজনতার মাঝে জনপ্রিয়তা পরিমাপের একটি মাপকাঠি মাত্র। এমনকি তখনও দলটির সদস্যদের নিয়ে কোন অভ্যন্তরীণ কাঠামো এবং দলীয় নীতিনির্ধারক মেনিফেস্টো ছিল না। ভিন্ন মত কিন্তু অভিন্ন লক্ষ্যের লোকদের নিয়ে একটি “জাতীয়তাবাদি যুক্তফ্রন্ট” ছিল এটি। উত্তুঙ্গ জনপ্রিয়তার এ ঢেউ মুসলিম লীগকে ১৯৪৬ সালে বাংলা প্রদেশের ক্ষমতায় এনে বসায়। স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর স্বাভাবিকভাবেই ধরা হয়েছিল যে মুসলিম লীগ দেশটির জাতীয় রাজনৈতিক দলে পরিণত হবে।

টানা সাত বছরের মত ক্ষমতায় থাকার পর ১৯৫৪ সালের ৮ই মার্চের জেনারেল ইলেকশনে প্রথমবারের মত পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা পরীক্ষার সম্মুখীন হয়, যদিও সেটা না হলেই বোধহয় দলটির জন্যে ভালো হত। দুই কোটি ভোটারের ৬০ শতাংশ ভোটারের ভোট ব্যালট বাক্সে জমা পড়ে এবং সেই ফলাফলে দেখা যায় মুসলিম লীগ সম্পূর্ণ পরাস্ত এবং বিধ্বস্ত হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের ২৩৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ১০টি আসনে তারা জয়লাভ করে। তাদের দোর্দণ্ড প্রতাপধারী একেক নেতা ভোটের হিসেবে একদম মুখ থুবড়ে পড়ে আসন হারান। এমনকি তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও পরাজিত হন অপেক্ষাকৃত অচেনা এক ছাত্রনেতার কাছে।

১৯৫৪র নির্বাচনে এই সর্বাত্মক পরাজয়ের ফলে মুসলিম লীগ পাকিস্তানের “গনমানুষের মুখপাত্র” – এই দাবী স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে ঐতিহাসিকগণের কাছে। এই নির্বাচনী ফলাফল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করে – যদিও ১৯৪৬এর নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগ বেশ প্রতাপের সাথেই জয়লাভ করে, তার কারণ ছিল তৎকালীন জনসংখ্যার মাত্র ১৫ শতাংশ লোক ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে গিয়েছিল। তাই ’৪৬ এবং ‘৫৪র নির্বাচনী উপাত্তগুলিকে সরাসরি তুলনা করার সুযোগ নেই। তবে এ কথা প্রায় সকল মতপথের বিদগ্ধজনের কাছে স্বীকৃত যে – ১৯৪৬সালে মুসলমানদের জন্যে পৃথক রাষ্ট্রের দাবীতে মুসলিম লীগের নেতাদের যুদ্ধাংদেহী মনোভাবই গনমানুষের মাঝে দলটির আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা এনে দেয়। তবে ১৯৫৪ সালে এসে কি হল? কেন পূর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয়তায় এত নিদারুণ ভাটা পড়লো?

গবেষকদের মতে, তাদের জনপ্রিয়তায় হ্রাসের একটি প্রধান কারণ পূর্ব বঙ্গের অনেক ক্যারিশমেটিক নেতা, যারা একসময় মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন, তাদের দলটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। সে তালিকাটি বেশ দীর্ঘ – এ কে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানি, হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আতাউর রহমান খান, আবুল মনসুর আহমাদ, এবং শেখ মুজিবুর রহমান তাদের অন্যতম। মুসলিম লীগের প্রতি জনসাধারণের অনাস্থা তৈরিতে এই নেতাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।

জনগণ কেন অনাস্থার সাথে মুখ ফিরিয়ে নিল এই বনেদী রাজনৈতিক দলটি থেকে, সেই সংক্রান্ত নিজস্ব কিছু ব্যাখ্যা মুসলিম লীগ দাঁড় করায় বটে। তার মধ্যে একটি হল উক্ত নির্বাচনে “নির্বাচনী স্বচ্ছতা” বজায় রাখা সম্ভব হয় নি। মুসলিম লীগ নিজেই তৎকালীন ক্ষমতার মসনদে থাকায় এই অভিযোগের তেমন একটা গ্রহণযোগ্যতা নেই। এছাড়াও তারা মুসলিম লীগের সদস্যদের প্রতি নিষ্ক্রিয়তা, অসহযোগিতা এবং অসৎ আচরণের অভিযোগ আনে। এই অভিযোগটি একদিক থেকে যেমন পক্ষপাতদুষ্ট, অপরদিকে মুসলিম লীগের ক্রমশ হ্রাস পাওয়া জনপ্রিয়তার ইস্যুটি এড়িয়ে যাওয়ার একটা প্রয়াসও বটে।

মুসলিম লীগ শাসন ক্ষমতায় শুধুমাত্র পাকিস্তানী মুসলমানদের সুখ-দুঃখের সারথি হিসেবে আসে নি, তাদের ক্ষমতায় আরোহণ ছিল একঅর্থে গণতন্ত্রের বিজয়, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের রাজনৈতিক সহনশীলতার উদাহরণ। অথচ ক্ষমতায় আরোহণের মাত্র সাত বছরের মাথায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাদের ব্যালটের অধিকার প্রয়োগ করে ক্ষমতাচ্যুত করে, আর তার ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে দেশে সামরিক শাসকের আবির্ভাব ঘটে। কাজেই মুসলিম লীগের পতনের ইতিহাস বুঝতে হলে আমাদের আলোকপাত করতে হবে দলটির ক্রমশ জনবিচ্ছিন্নতার দিকে। সেই উদ্দেশ্যেই এই গ্রন্থটিতে পূর্ব বাংলার রাজনীতির আদি ইতিহাস আলোচনা করা হয়েছে – যে ইস্যুটি প্রায়ই আলোচনার টেবিলে উহ্য থেকে যায়। এছাড়াও উপমহাদেশের উত্তর উপনিবেশিক রাজনীতি, জনসাধারণের মতপথের বিভিন্নতা এবং আমলাতান্ত্রিকতাও বিবেচনা করা হয়েছে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে।

মুসলিম লীগের পতনের গুরুত্বপূর্ণ সব কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ওমর, জাহান, জিরিং, সাইদের মত বিদগ্ধজনেরা। ওমরের তিন ভলিউমের বইয়ে আলোকপাত করা হয়েছে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই –এর দাবীতে জনসাধারণের মিছিল এবং তাতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে পুলিশের গুলি ছোঁড়া এবং আন্দোলন সংশ্লিষ্ট কতিপয় ভাষা সৈনিকের নিহত হবার ঘটনা। যদিও ওমর তার তিনখণ্ডের বইয়ে একাধিক আন্দোলনের প্রসঙ্গ এনেছেন – কিন্তু তার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেও ছিল ভাষা আন্দোলন, যাকে তিনি উল্লেখ করেছেন পূর্ব পাকিস্তানের “রাজনৈতিক আন্দোলনের তীব্রতম বহিঃপ্রকাশ” হিসেবে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসবে বাংলাদেশের জন্মের ওপর তার সম্প্রতি প্রকাশিত দুই খণ্ডের বইয়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন ১৯৪৭ সাল থেকে নিয়ে ৭১ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একের পর এক রাজনৈতিক ঘটনাবলীর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের নিমিত্তে। তবে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাসে ওমরের গবেষণাকে খুব একটা সচেতন প্রয়াস বলে ধরা যায় না। পার্ক, আরেকজন গবেষক, মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তার পতনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানতম অর্থকরী ফসল পাটের দরপতনের কথা। আফজাল, একই সূত্র ধরে উল্লেখ করেন প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায় দলটির ব্যার্থতার আখ্যান। প্রাদেশিক বিভক্তিকরণের এবং সুযোগসুবিধার অসমবণ্টনের জের ধরে জনসাধারণের মনভাবেও বিচ্ছিন্নতার আঁচ লাগে। এই ইস্যুটিকেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়েছে বিবিধ গবেষণায়। সামগ্রিকভাবে তিনটি বিষয় মুসলিম লীগের পতন সংক্রান্ত সব ধরনের গবেষণাতেই গুরুত্বের সাথে এসেছে- এক, ভাষা আন্দোলন; দুই, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন এবং তিন, পাটের দরপতন।

আমার বইটি পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানে আরোপিত নানামুখী অচলাবস্থা নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবীদের অসন্তোষেরও চিত্রায়ন করবে। ব্রিটিশ রাজের পতন থেকে নিয়ে স্বাধীন বাংলার জন্ম – এর মধ্যবর্তী চব্বিশটি বছরকে এখন উত্তর উপনিবেশিক পরিসরে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেশ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রস্তুতিলগ্ন হিসেবেই দেখা হয়। বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির জন্মলগ্ন হিসেবে ধরা হয় ৫২’র ভাষা আন্দোলন এবং পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানীদের বিমাতাসুলভ আচরনকে। কেন একটি প্রাদেশিক অঙ্গরাজ্য হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান আর অখণ্ড পাকিস্তানের অংশ হিসেবে থাকতে পারল না – তার অতীত ইতিহাস সংক্রান্ত সবকিছুই দিনের আলোর মতন স্পষ্ট – এই ধরনের একটা মনোভাব বাংলাদেশের ঐতিহাসিকদের মধ্যে দেখা যায়। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের পেছনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এই “ব্যাকগ্রাউন্ড” – মূলত অনুমান নির্ভর হয়ে যাওয়ায় এখন আর এই ক্ষেত্রটিতে বৃহৎ অর্থে কোন গবেষণা চালানো হচ্ছে না। অথচ, বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের আণুবীক্ষণিক দৃষ্টির অধীনে আরও অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ দিক খুঁজে বের করা সম্ভব, যা হয়তো তৎসংশ্লিষ্ট সুপ্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সত্যের ভীত নড়িয়ে দেবে।

তাই আমার এই গ্রন্থটিতে আমি চেষ্টা করেছি ভাষা আন্দোলন এবং অভ্যন্তরীণ ঔপনিবেশিকতা ছাড়াও আরও বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি তুলে ধরার – যা প্রথমত, মুসলিম লীগ এবং মুসলিম লীগ সংশ্লিষ্ট সবকিছু এবং দ্বিতীয়ত, পূর্ব পাকিস্তানের আইডিয়ার সাথে বাংলার জনসাধারণের সম্পর্ক ছিন্নের বিষয়টি ত্বরান্বিত করে। ভাষা আন্দোলন এবং অর্থনৈতিক দমন পীড়ন নিয়ে এ পর্যন্ত বহুআঙ্গিকে বিশ্লেষণ হয়েছে, তাই এ সংক্রান্ত আলোচনায় আমি আর অতিরিক্ত কিছু যোগ করবার পাইনি এবং প্রয়োজন বোধ করি নি। আমি চেষ্টা করেছি পূর্ব বাংলার ভূমি- খাদ্য এবং পানি – এই তিন প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাবহার নিয়ে যে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়েছিল তা তুলে ধরবার। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া চরিত্ররা ভিন্ন ভিন্ন গোত্র- বর্ণ এবং রাজনৈতিক দলের, তাদের আবির্ভাব ও ঘটে ভিন্নভিন্ন প্রসঙ্গে । এছাড়াও পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের রাজনীতিতে অংশ নেবার ক্রমবর্ধমান আকাঙ্ক্ষা এবং বিপরীতে ক্রমশ একনায়কতান্ত্রিক মনোভাবে পরিণত হওয়া পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের দমন পীড়নও বাড়তে থাকে।

এই বইটি লেখার পেছনে আমার উদ্দেশ্য উপরুল্লেখিত বিষয়াবলীর সাথে প্রয়োজনীয় তথ্য সংযোজন এবং শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মাঝে এই সংক্রান্ত যে একমাত্রিক চিত্র অঙ্কিত আছে – তার সংশোধন। এর আগে আলোচনার কেন্দ্রতে ছিল পূর্ব পাকিস্তানের শহর অঞ্চল এবং তাতে বসবাসকারী চাকুরীজীবী মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের জীবনধারা, কেননা ধরা হত যে রাজনৈতিক অদলবদলে এদের ভূমিকাই মুখ্য। আমি ঢাকা অথবা ঢাকা ছাড়িয়ে সর্বোচ্চ এর আশেপাশের জেলাশহরকেন্দ্রিক গবেষণা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমার গবেষণার লক্ষ্যস্থলে পরিণত করেছি গ্রামবাংলাকে, যেখানকার ধনী-গরিব নির্বিশেষে আপামর জনতা মুসলিম লীগ সরকারের চাপিয়ে দেয়া নানা নীতিমালা এবং আচার অনুষ্ঠান বলিষ্ঠতার সাথে প্রত্যাখ্যান করে এসেছে নিয়মিতই। পূর্ব পাকিস্তানের গ্রামাঞ্চলে সেই ঔপনিবেশিক আমলের শাসন ব্যাবস্থার পুনরাবৃত্তি ঘটছিল যেন। ভূমি-শস্য এবং পানির অধিকার নিয়ে শাসক শ্রেণীর সাথে লড়াই চলছিল ব্রিটিশ শাসনআমলের মতই। মুসলিম লীগ সরকারের আমলারাই ছিল সেই ঔপনিবেশিক মনোভাবের সূত্রধর।

ব্রিটিশ দাসত্বথেকে মুক্তি লাভের ফলে গনমানুষের মনে যে স্বাধীনতার পরশ লাগে- সেটাই অনেক কিছু পরিবর্তন করে দেয়। তারা ভাবা শুরু করে তারা রাজনৈতিক ভাবে স্বাধীন এবং এ স্বাধীনতার ক্ষমতা তারা এখন তাদের প্রাত্যাহিক জীবনে প্রয়োগ করতে পারবে। সাধারণ্যের এ মনভাব সদ্য ব্রিটিশদের সংশ্রব মুক্ত কিন্তু মানসিকভাবে তখনও ব্রিটিশায়িত আমলারা মেনে নিতে পারে নি। এই সংঘর্ষের প্রত্যক্ষ বহিঃপ্রকাশ পরিলক্ষিত হয় মুসলিম লীগের বিমাতাসুলভ আচরনে। অথচ স্বতঃস্ফূর্ত এ প্রাণের স্ফুরণকে মুসলিম লীগ যদি দেশ পুনর্গঠনে ব্যাবহার করতে পারতো, তবে তা হত একটি কাজের কাজ।

সদ্য স্বাধীন একটি দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে শাসকশ্রেণী যে সমস্যাগুলির সম্মুখীন হয় – তার সমাধান খুঁজতে তারা দ্বারস্থ হয় আমলাতন্ত্রের, এবং পূর্বেই উল্লেখ করেছিলাম – “ব্রিটিশায়িত” ধীশক্তির সে আমলা বাহিনী তাদের ব্রিটিশ প্রভুদের দমনপীড়ন নীতির ব্যাতিক্রম কোন পরামর্শ দিতে পারে নি রাষ্ট্রীয় শাসনযন্ত্রকে। যাই হোক, ‘৫৪র নির্বাচনে মুসলিম লীগের ভরাডুবি নির্দেশ করে- পাকিস্তানের রাজনীতিতে জনসাধারণের ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। মুসলিম লীগের পরাজয়ের কারণ তাদের জন্মের ইতিহাসের মধ্যেই নিবদ্ধ- ’৪০ সাল থেকে তাদের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতা মোটেও তৃণমূল জনসাধারণের সমর্থনের ভিত্তিতে অথবা রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণকে পাশে নিয়ে লড়াই করার ফলশ্রুতিতে আসে নি। তাদের রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা, আমলাদের সাথে কুশলী সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ আদায় করতে ব্যার্থতা ইত্যাদি পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে দুর্ভোগ বয়ে আনে।

পূর্ব বাংলার প্রাথমিক যুগের গুরুত্বপূর্ণ সকল পর্যায় ও পেক্ষাপটের ওপর আলোকপাতের দ্বারা বইটিতে আমি এ অঞ্চলের রাজনীতিকে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও উত্তর উপনিবেশিক আমলাতন্ত্র এবং পুলিশের মত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে একটি সদ্য স্বাধীন দেশের গণতন্ত্র রক্ষার ভার ন্যাস্ত হলে সে দেশের রাজনৈতিক অবস্থার কি করুণ দশা হয় – তারও একটি বিস্তৃত দৃশ্যায়ন পাবেন এই বইতে। এবং মুসলিম জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, তারাও ছিল ব্যার্থ। ফলাফলস্বরূপ – রাষ্ট্রযন্ত্রের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং স্থায়ী আসনটি দখল করে নেয় আমলাতন্ত্র।

মুসলিম লীগের পতনের কারণ উদ্ঘাটনের পাশাপাশি পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সম্বন্ধেও আলোকপাত করবে বইটি। উত্তর উপনিবেশিক আমলাতন্ত্রের অগণতান্ত্রিক মনোভাবও উঠে আসবে বিভিন্ন পর্যায়ে- পরিসরে। এককথায় – ব্রিটিশায়িত মনোভাবের আমলাতন্ত্রের ক্রমবর্ধমান শক্তির সামনে ক্রমশ নতজানু এবং জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগের পতন এবং পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের নিজ বলে বলিয়ান হয়ে অধিকারসমূহ আদায়ের দাবীতে সোচ্চার হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটি বর্ণিত এবং ব্যাখ্যা করার একটি প্রয়াস আমার এ বই।

আলোচনার সময়কালঃ
১৪ই আগস্ট, ১৯৪৭- মুসলিম লীগের ক্ষমতায় আসীন হবার দিন থেকে নিয়ে ৮ই মার্চ, ১৯৫৪- পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে মুসলিম লীগের জৌলুস সম্পূর্ণভাবে ভূলুণ্ঠিত হবার দিন পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনাবলীকে আমি আমার আলোচনার সময়কাল হিসেবে বেছে নিয়েছি। বর্ণনার ক্ষেত্রে আমি “ক্রনোলজি” অর্থাৎ সরলরৈখিক ঘটনাপঞ্জী ব্যাবহার করি নি। এই ধরনের গবেষণাকর্মের জন্যে তা ব্যাবহারিক পদ্ধতি নয়।


( লেখাটি ডঃ আহমেদ কামাল বিরচিত State Against the Nation বইয়ের সূচনাপর্বের অনুবাদ।

ডঃ আহমেদ কামাল স্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রবীণতম একজন শিক্ষক। ১৯৭২সাল হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সাথে জড়িত তিনি। পাকিস্তান নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয় মুসলিম লীগের হাত ধরে। অথচ ১৯৪৭ সালে শাসন ক্ষমতা হাতে পাওয়ার মাত্র সাত বছরের মাথায়, ১৯৫৪ সালের স্বাধীন পাকিস্তানের প্রথম নির্বাচনেই পূর্ব পাকিস্তানে মুখ থুবড়ে পড়ে তারা। কিন্তু কেন? ডঃ আহমেদ কামাল তার ২৫৭ পৃষ্ঠার এই বইয়ে তার বই – State Against the Nation এ সেই কারণগুলো অনুসন্ধান করেছেন।

স্যারের লেখা এই বইয়ের মান সম্পর্কে দু’কথা বলব – আমার সে যোগ্যতা আছে বলে আমি মনে করি না। তবুও, ছোট্ট করে বলতে গেলে, আমি এত গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠিন একটি বিষয়কে এত সহজে এবং সংক্ষিপ্ত পরিসরে পাঠকের সামনে নিয়ে আনার উদাহরণ এর আগে কখনো দেখি নি। ইংরেজি বইটির পাঠক মাত্রই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।

যাক, ইংরেজিতে রচিত মূল বইটির বাংলা অনুবাদের দায়িত্ব স্যার আমার হাতে দিয়েছেন। বইটির সূচনার অংশটুকু আমি সবার সাথে শেয়ার করছি, অনুবাদের গতিপ্রকৃতির ব্যাপারে আমার সহব্লগারদের পরামর্শ পাওয়ার আকাঙ্খায়।)

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৩৪

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: অনুবাদ ভালো হইছে। যদিও এতদিন পর এসে প্রকৃত কারন জানা উপলব্ধি করা খুব সহজ ব্যাপার না। তবে আমার মনে হয় ইতিহাসে আগ্রহ থাকলে অনেক পড়ে, সেই সময়ের মানুষের কথা শুনে সেটাকে নিজেই লিখে ফেলা আরো ভালো।

উনারা অনেকটা তাত্ত্বিক বিশ্লেষনে চলে যান। তবে আসল সত্যটা উঠে আসে সাধারন মানুষের কথায়। ধরেন, আপনি সেই আমলে মুসলিম লীগকে ভোট না দিয়ে যুক্তফ্রন্টে ভোট দেয়া কাউকে যদি খুঁজে পান, তাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন মতো বদলের কারন কি ছিলো। বেশ কয়জনকে খুঁজে পেলে নিজেও কিছু বোঝা যায়। আর এভাবে নতুন প্রজন্মের ধারনা, ভাবনার ব্যাপারগুলাও উঠে আসে।

পোস্টে ভালোলাগা রইলো।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৪২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, লেখাটি পড়ে দেখার জন্যে।

এই বইটির নেড়েচেড়ে দেখার সুযোগ আপনার হয়েছে কিনা জানি না, তবে এটি কিন্তু সবধরনের ডাটার ওপর বেইজ করেই লেখা। ডঃ আহমেদ কামাল আমার বড় চাচা। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের সময় ওনার বাবা, অর্থাৎ আমার দাদামশাই, মৌলভি আদেলুদ্দিন আহমেদ ফরিদপুরের একজন আইনজীবী এবং যুক্তফ্রন্টের মেম্বার ছিলেন। ফরিদপুরে মুসলিম লীগের পরাজয়ে তার একটি বড় ভূমিকা ছিল।

আমার চাচা ডঃ আহমেদ কামাল সাহেবের তথ্যউপাত্তগুলো অনেকাংশেই ব্যাক্তিগত সাক্ষাৎকার এবং পাশাপাশি বইপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল। ৫৪'র প্রাদেশিক নির্বাচনে তার বয়স ৬। কাজেই স্বাধীন বাংলাদেশের ধাপে ধাপে জন্ম নেয়ার প্রক্রিয়াটি তিনি ব্যাক্তিপর্যায়ে উপলব্ধি করেছেন। এই ধরনের একজন মানুষ যখন ইতিহাস লেখার প্রয়াস হাতে নেন - তখন তাতে থাকে তথ্যগত শুদ্ধি, দৃষ্টিভঙ্গীতে পার্থক্য এবং বিষয়বস্তুর মানবিক দিকগুলোর স্পষ্টতা।

হ্যাঁ, বুঝতেই পারছেন আমি অনেকটাই পক্ষপাতদুষ্ট এই বইয়ের ক্ষেত্রে। প্রথমত- আমি পুরোটা বই অনুবাদ যেহেতু করছি, আমার শ্রম একটা সার্থক কাজে ব্যয় হচ্ছে এই ব্যাপারটা আমায় নিশ্চিত করতে হবে, আর দ্বিতীয়ত এটা আমার পরিবারের একজনের বই। কাজেই, কি আর করা :)

ওনার পরিচিতির একটা লিঙ্ক শেয়ার করছি -

http://www.du.ac.bd/department/common/facultymemberdetail.php?memberid=FMHIS72026&bodyid=HIS

ভালো থাকবেন ভাই।

২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৫৯

এহসান সাবির বলেছেন: ভালো ইতিহাস জানলাম।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৪

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: পড়ার জন্যে ধন্যবাদ সাবির ভাই। :)

৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:১১

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: বাহ, আপনে দেখি রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিছেন। পরিচিতি দেখলাম, বিদ্বান মানুষ। উনার কিছুই পড়া নাই কেবল এই সুচনা পর্ব ছাড়া। আর এটা থেকে লেখা সম্পর্কে মুল্যায়ন করা যাবেনা। তবে আপনার যেহেতু চাচা, তাই উনার কাজটা ধরে রাখতে আপনি অনুবাদ করতেই পারেন। পরিবারের কেউ এই সম্পর্কে আগ্রহী হলে তারই করা উচিত।

আশা করি ভালো একটা কাজ হবে। শুভকামনা রইলো। :)

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: রাজনৈতিক পরিবার বা পরিমণ্ডল - কোন কিছুরই আঁচ তেমন লাগে নাই গায়ে শৈশব থেকে। নিজের মত বড় হওয়া শৈশব থেকে।
সে যাক, অনুবাদটা বই আকারে আসবে ইনশাআল্লাহ সামনের বইমেলায়। মাত্র শুরু করলাম কলেবরে ২৫৬ পৃষ্ঠার বইখানি। এখন অনুবাদের মান বজায় রেখে কাজটা শেষ করতে পারলে হয়।

ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন। :)

৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:১৯

খেয়ালি দুপুর বলেছেন: মূল্যবান তথ্য-প্রাচুর্যে ভরা চমৎকার অনুবাদ কর্ম। ডঃ আহমেদ কামাল স্যারের বইটির অনুবাদের উত্তম উদ্যোগটিকে সাধবাদ জানাই। শুভকামনা।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে প্রিয় ব্লগার :)
আপনার জন্যেও শুভকামনা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.