নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯) ৭।শহরনামা (উপন্যাস, মাওলা ব্রাদার্স, ২০২২), ৮। মুরাকামির শেহেরজাদ ও অন্যান্য গল্প (অনুবাদ, ২০২৩), ৯। নির্বাচিত দেবদূত(গল্পগ্রন্থ, ২০২৪), ১০। দেওয়ানেগির চল্লিশ কানুন/ফরটি রুলস অফ লাভ (অনুবাদ, ঐতিহ্য, ২০২৪)
'যারা চিন্তা করে, আলোচনা করে, যারা বিবেচনা করে কাজ করে, যারা জানে ভালোমন্দ কাকে বলে, তাদের সহজে ভালোবাসা ভারী শক্ত। তারা শ্রদ্ধা - শক্তি - বিশ্বাস পেতে পারে, কিন্তু তারা অনায়াসে ভালোবাসা পায় না।'
.
ছিন্ন পত্রাবলী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর , চিঠি নং ২১১
আফসার ব্রাদার্স (২০১৭)
আমার শৈশব রবীন্দ্রনাথময় হলেও, রবীন্দ্রপ্রীতিময় ছিল না। চারিদিক থেকে রবীন্দ্রনাথ - রবীন্দ্রনাথ চিৎকার - শীৎকার এত বেশী ছিল, স্বাধীনচেতাভাবে বড় হওয়ার কালে সেটা আমার কাছে এক বাঁধার মতই প্রতিভাত হত। বাসায় - বাসার বাইরে, রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রসঙ্গীত, রবীন্দ্রনাথের কবিতা, কেবলি রবীন্দ্রনাথ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম যখন, আমি আর আমার বন্ধু চিশতী অনিমেশ মিলে যখন একটার পর একটা নতুন গান সৃষ্টি করে স্বপ্ন দেখছিলাম বাংলা গানের জগতে নতুন একটা ভাষা তৈরি করবার, তখনও রবীন্দ্রনাথ ছিলেন আমাদের শত্রুপক্ষ। আমরা নিজেদের মাঝে বলাবলি করতাম - মনুষ্য অনুভূতির এমন তল নেই, যাতে রবীন্দ্রনাথের স্পর্শ নেই। হিংসে হওয়াটা স্বাভাবিকই ছিল, অবোধ ছিলাম যেহেতু।
.
অবাক করা বিষয়, রবীন্দ্রনাথের সাথে ভাবের ব্যক্তিগত পর্যায়ে আদান প্রদান শুরু হল আমার এই সেদিন, ছিন্ন পত্রাবলী থেকেই। এই চিঠিগুলোতে রবীন্দ্রনাথকে আবিষ্কার করলাম আমার সমবয়সী - সমভাবাপন্ন অসীমের দিকে তাকিয়ে থাকা একজন সৃষ্টিবেদনাকাতর মানুষ হিসেবে। অধিকাংশ চিঠিতে তিনি যা লিখছেন, যে অনুভূতিগুলো ব্যক্ত করছেন, তা সবই আমি আমার বিগত জীবনের কোন না কোন ক্ষেত্রে অনুভব করেছি। কিছু কিছু জায়গায় তিনি আমাকে নতুন করে চিন্তা করবার দ্বার খুলে দিচ্ছেন, অন্তরের বদ্ধ জানালায় ধাক্কা দিয়ে। ২০২০ সালের বইমেলায় নির্দ্বিধায় আমার সেরা ক্রয়, আফসার ব্রাদার্সের রিপ্রিন্টে ছিন্ন পত্রাবলী
.
সে যাক, চিন্তার কারখানার চিন্তকবৃন্দ, আপনাদের উদ্দেশ্যে আজ আমার চিন্তা করবার জন্যে চিন্তাসূত্র উপরের ঐ উদ্ধৃতিটুকুই।
আপনি একমত , এই পয়েন্টটায়, রবিঠাকুরের সঙ্গে?
মন্তব্য লিখে জানাতে পারেন। আমার প্রত্যুত্তরের অপর অবশ্যই আপনার মতামতের যথার্থতা নির্ভর করে না।
মৌলিক মূল্যায়ন শোনবার অপেক্ষায় রইলাম। মন্তব্যের সূত্র ধরে প্রতিমন্তব্যে যাওয়ার বা না যাওয়ার পূর্ণ অধিকার আমার রয়েছে।
শুভসন্ধ্যা।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩০
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: প্রিয় নেওয়াজ ভাই, আপনার মন্তব্যে ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যের প্রতিউত্তর সূত্রে জানিয়ে দিই, এই ব্লগে লেখার সময় আমাকে শিক্ষক পরিচয়ে সীমাবদ্ধ করে ফেলাটা আমার পছন্দনীয় নয়।
আপনার কথা আলাদাভাবে বলছি না। এই ব্লগে আমার সঙ্গে লেখেন, এমন যে বা যারাই এটা মনে করেন যে আমি শিক্ষক বলে আমার শিক্ষকদের জন্যে নির্দিষ্ট (?) আচরণ কোড মেনে ব্লগিং করতে হবে, তাঁদের আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তারা আমাকে তাঁদের শিক্ষক বিবেচনা করে আচরণ করেন না।
আমার কর্মস্থলে আমি দিনে এভারেজে পাঁচশ সালাম পাই। সাড়ে তিনশো ছেলেপেলে প্রতিদিন আমাকে দাঁড়িয়ে সম্মান দেখায়। বিনয়ের সঙ্গে কথা বলে, কুতর্ক করে না , আমাকে শ্রদ্ধা করে। তারপরেও, কারো আচরণবিধি সীমালঙ্ঘন করলে তাঁকে শাস্তি দেয়ার পূর্ণ অধিকার আমার থাকে।
মাসে একাধিক গার্জিয়ান, যাদের সবার বয়স পঞ্চাশের উপরে, এসে আমাকে বিনীতভাবে, কেউ কেউ হাত জোড় করে অনুরোধ করেন - যাতে আমি তাঁদের সন্তানদের একটু যত্ন নিয়ে পড়াই, কারণ তারা তাঁদের বহুকষ্টে জমানো অর্থে সন্তানকে পড়াচ্ছেন।
এই আচরণ কি আমার সহব্লগাররা আমার সঙ্গে করেন? কেউ সালাম দিয়ে কথা শুরু করেন? কেউ জায়গা থেকে উঠে দাঁড়ান? শতকরা সত্তর শতাংশ মন্তব্য বিনয় তো পরের কথা, সৌজন্যবোধের ধার কাছ দিয়েও আমি পাই না।
অথবা, আমি কি কোনদিন এই দাবী করেছি যে আমি মাস্টারি করি বলে আমার সঙ্গে মাষ্টারদের প্রাপ্য ব্যবহার ব্লগে করতে হবে? করি নি কোনদিন। গল্পচ্ছলে নিজের প্রফেশনের ব্যাপারে এককথা - দু' কথা বলেছি হয়তো।
যেহেতু ব্লগে আমাকে আমার কর্মস্থলের মত আচরণ দেয়া হয় না, তবে কেন আমার কাছ থেকে ব্লগে 'শিক্ষকসুলভ' আচরণ আশা করা?
এই ব্লগে আমি লিখি ছ'টি প্রকাশিত বইয়ের লেখক পরিচয়ে। আমার পরিচয় আমার লেখায়, আমার চিন্তায়। তাই ব্লগে লেখক হিসেবেই আমাকে ট্রিট করার অনুরোধ।
মনে কষ্ট নিয়েন না যেন ভাই আমার। আপনার একার উদ্দেশ্যে বলি নি। তাঁদের সবার উদ্দেশ্যেই এই বিষয়টি ক্লিয়ার করলাম, যারা মনে করেন ব্লগে বা ব্যক্তিজীবনে শিক্ষকদের একটা শিক্ষকসুলভ ছকবাঁধা আচরণ করতে হবে।
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৮
পদ্মপুকুর বলেছেন: সাধারণত দেখা যায়- যাদের বিবেচনাবোধ বেশি, চিন্তাক্ষমতা সাধারণ্যের চেয়ে স্বচ্ছ, চিন্তাগত কারণেই তাদের সাথে সাধারণ মানুষের একটা দুরত্ব তৈরী হয়। বিবেচনাবোধ এবং চিন্তা ও পর্যবেক্ষণে দুরদর্শিতার ফলে সাধারণ মানুষ থেকে সে একটু উপরে উঠে যায়। আর যখনই সে একটু উপরে ওঠে, তখনি সমসাময়িক অন্যদের চেয়ে জীবনকে বেশি দেখতে পায় এবং এই বেশি দেখার ফলেই সে আরও একটু উপরে উঠে যায়। এভাবেই উপরে ওঠা এবং অন্যদের চেয়ে বেশি দেখতে পাওয়াটা সামান্তরালে বাড়তে থাকে। অনেকটা চিল, ঈগলের মত, অনেক উচু থেকে এরা দেখে সবচে বেশি।
এভাবে যখন সে সাধারণ মানুষ থেকে অনেক উপরে উঠে যায়, স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের চেয়ে তার জীবনবোধ ভিন্ন হয়। এ যায়গা থেকেই সে আর সাধারণদেরকে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক সঙ্গি হিসেবে নিতে পারে না, তখন তার চারপাশে একটা আবরণ তৈরী হয়, যে আবরণের ফলে কেউ তার কাছে পৌঁছাতে পারে না, এবং অনায়াসে ভালোবাসা পাওয়া হয় না। মানুষ তাকে শ্রদ্ধা করতে পারে, বিশ্বাস করতে পারে, কিন্তু ভালোবেসে কাছে যেতে পারে না ওই আবরণের কারণেই....
মোটকথা, তাকে ভালোবাসতে পারে, তারই মত চিন্তাগোত্রীয় একজন। কিন্তু সমস্যা হলো এ ধরণের সকলেই নিজ নিজ আবরণে আটকে থাকে।
আমার কমবুদ্ধিতে যা বুঝলাম, তাতে রবীন্দ্রনাথ ওটা ঠিকই বলেছেন।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৩
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: শুভসকাল হজরত! রবীন্দ্রনাথের উপর্যুক্ত উদ্ধৃতির ব্যাপারে আপনার চিন্তার সঙ্গে আমার চিন্তা হুবহু মিলে যায়! শুকরিয়া।
৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: রবীন্দ্রনাথে উপরে কোনো কথা নাই।
তিনি অলটাইম বস।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৪
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ঠিক বলেছেন স্যার। তবে কাউকে বস বানানোর বা বাতিল বলে ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার ক্ষেত্রে লোকমুখে প্রচলিত মতামতের চে আমি নিজের পঠন পাঠন, যুক্তি ও বিচারকে বেশী প্রাধান্য দিই। আপনিও তাই করেন আশা করি।
৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০৭
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপ্নে এই ছ্যামরার ব্লগবাড়িটা ঘুইরা দেইখেন মৌলভী সাহেব, আপ্নের ভাল্লাগ্বো। আপ্নের ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র, এক্বার এ্যার কথা আপ্নেরে জিজ্ঞাইছিলাম, চিনেন্নাইক্যা। আমার বন্ধু লাগে, দেশের বাইরে যাওনের লগে লগে বোলগ থেইক্যাও বাইরে গ্যাছেগা। সাংঘাতিক ক্রিয়েটিভ এবং চিন্তক মানু, লেখায় ধার আছে।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫০
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: মনে আছে হজরত। বন্ধুদের ব্যাপারে আমাদের একটা সহজাত মমত্ববোধ কাজ করে বরাবর। আপনার ক্ষেত্রেও বিষয়টা ক্রিয়াশীল। আমার ক্ষেত্রেও।
আপনার বন্ধুর প্রতি আপনার অনুভূতিকে একটু সাইডে রেখে দু' একটা মন্তব্য করি। ইংরেজি বিভাগের সব ছাত্রছাত্রীরই জীবনে একটা অংশ কাটে গল্প - কবিতা লেখার চেষ্টা করে। জীবনে একটু দুঃখবিলাস, একটু ক্রিটিক্যালি দেখার চেষ্টা এটাও আমরা সবাই করি। ক্রিয়েটিভ চিন্তা - কম বেশী অনেকেই করে। কিন্তু আমি সেই সমস্ত মানুষকে রেস্পেক্ট করি, যারা নিজের ক্রিয়েটিভিটিকে রেস্পেক্ট করে বা করেছে। সাহিত্যই বলেন, বা সমালোচনা প্রবন্ধ - যারা ফেসবুক বা ব্লগের গণ্ডি পেরিয়ে ছাপার হরফে নিজের লেখা প্রকাশ করেছে, এবং আজীবন এই স্ট্রাগলটা ক্যারি করেছে বা করছে।
অর্থাৎ যারা একসময় টুকটাক ফেসবুক ব্লগে লিখত বা লেখে - এইটা কাউরে আমার কাছে বিশেষায়িত করে না। যে বা যারা এইটা একটা প্রফেশনালিজমের দৃষ্টিকোন থেকে অ্যাপ্রোচ করে তাঁদের প্রতি আমার বিশেষ রেস্পেক্ট।
আপনার বন্ধুর লেখা যদি আমার কাছে ছাপার হরফে এসে পৌঁছাইত , কারো রেফারেন্স ছাড়া, যেমন কিনা হালের পিয়াস মজিদ, বা শাহাদুজ্জামান, বা ইমতিয়ার শামিম, ভালো হইত। আমার ডিপার্টমেন্টের অধিকাংশ সিনিয়ররেই আমি সৃজনশীলতার বিবেচনায় খুব একটা শ্রদ্ধার চোখে দেখি নাই বা দেখি না।
প্লিজ আর ভার্সিটির সিনিয়র - জুনিয়র প্রসঙ্গটা আইনেন না। অস্বস্তি উৎপাদন করে। ব্লগে ইদানীং দেখি মানুষের বয়স মাপামাপির খুব চল। কে কার কয়টা বই পড়ছে - এইটা যে চিন্তাশীল মানুষের স্ট্যান্ডার্ড - এইটা কেউ স্মরণও করায়ে দেয় না কাউকে।
৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২৩
পদ্মপুকুর বলেছেন: হু, বুঝলাম, কল্পদ্রুমের লেখায় আপনার মন্তব্য 'শিল্পীর ঔদ্ধত্য থাকাই স্বাভাবিক' আপনি পুরোপুরিই ধারণ করেন!!!
ঠিকাছে বিলকুল খামোশ হয়ে যাচ্ছি। শুধু একটা নোকতা ফেলা দরকার, সেইটা হইলো- এই ছেলের প্রতি আমার মুগ্ধতা 'সহজাত মমত্ব' ছাঁপিয়ে গিয়েছে এ কারণে যে, সে এখন কেবল এই ব্লগেই লেখাটা বাদ দিয়ে দিয়েছে, অন্য সব যায়গায় জারি আছে এবং তাঁর লেখা বেশ কিছু গান বিভিন্ন মাধ্যমে দিনভর উচ্চারিত হয়ে ওর পেশাদারিত্ব ঘোষণা করতে থাকে।
আর চতুর্থ প্যারায় আপনার বক্তব্যর বরাতে কিন্তু এদেশের অনেক জ্ঞানীজনই খারিজ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে...
কিন্তু আমি সেই সমস্ত মানুষকে রেস্পেক্ট করি, যারা নিজের ক্রিয়েটিভিটিকে রেস্পেক্ট করে বা করেছে। সাহিত্যই বলেন, বা সমালোচনা প্রবন্ধ - যারা ফেসবুক বা ব্লগের গণ্ডি পেরিয়ে ছাপার হরফে নিজের লেখা প্রকাশ করেছে, এবং আজীবন এই স্ট্রাগলটা ক্যারি করেছে বা করছে। - এ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই নিজের ক্রিয়েটিভিটিকে রেস্পেক্ট করে না বা করতে পারে না আবার অনেকে আজীবন এই স্ট্রাগলটা ক্যারি করতে পারে না।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: কল্পদ্রুম সাহেবের ব্লগে কইরা আসা মন্তব্য পুনঃউদ্ধৃত করায় মনে হইল কষ্ট পাইছেন হজরত। বিষয়টা একটু অন্যভাবে চিন্তা করেন। আপনার বন্ধু ভদ্রলোকের ব্লগ লিঙ্ক আগেও শেয়ার করেছিলেন বললেন। তখন হয়তো আমি ভদ্রতাসূচক কিছু একটা উত্তরই দিসিলাম (নাকি না?)। আপনি যখন আবার আমার এই পোস্টে তাঁর ব্লগের লিঙ্ক শেয়ার করে তাঁর ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন, তখন আপনি আদতে কি করলেন? আপনার পছন্দ আমার উপর চাপায়ে দেয়ার চেষ্টাই তো করলেন (নাকি না?)। তখন আমার কি করার থাকে? এক পারি চাঁদগাজী মিয়ার কমেন্টে যেমন লামসাম জবাব দিই ইদানীং, সেরকম কিছু একটা বইলা দেয়া যে আহ বাহ, অথবা, চুপ থাকতে পারি, অথবা সেইটা বলতে পারি যেইটা কমেন্টের উত্তরে বললাম।
এইটা আমার ঔদ্ধত্য না হজরত। হিসাব কইরা দেখেন, এইটা বলা ছাড়া আমার আর কিছু করার ছিল না। ব্লগের অনেকরেই দেখসি, আমার রিঅ্যাকশনটারে দেখে আমারে স্যু করবার চেষ্টা করে, বোঝার চেষ্টা করে না - এই রিঅ্যাকশনের পিছনে কি কারণ থাকতে পারে।
বাকি রইল আপনার বন্ধুর গান লেখার ব্যাপার। উনি যদি ওনার কাজের মান, আর ফলাফল নিয়ে খুশী থাকেন , আমিও খুশী। অথবা, আমার মত একজন থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারের খুশী হওয়া - না হওয়াতে ওনার কিছু যাওয়া আসার কথা না।
চতুর্থ প্যারার বক্তব্যে আমি আমার পঠনাভ্যাসের কথা বলসি, জাতির উদ্দেশ্যে কিছু বলি নাই। পড়ার ব্যাপারে আমি সিলেক্টিভ। যার কাছে নেয়ার মত কিছু থাকে না, তাঁর লেখার কাছে আমি যাই না। জীবন সংক্ষিপ্ত।
রকস্টার মুভিতে রনবির কাপুরের সাদ্দা হক্কওয়ালা ফিকশনাল অ্যাটিচিউড ছাড়া আমরা সচরাচর বাস্তবে কোন আর্টিস্টের অ্যাটিচিউড সহ্য করতে পারি না, এইটা একটা ফানি ব্যাপার না? আমরা ফিকশনাল ক্যারেক্টারের অ্যাটিচিউড মানতে রাজি আছি, কিন্তু বাস্তব জীবনে শিল্পী সাহিত্যিকদের বায়বীয় নেজ কাইটা ভদ্র বানায়ে বসায় রাখতে চাই।
শুভসন্ধ্যা।
৬| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:১৬
কল্পদ্রুম বলেছেন: ভেবেছিলাম দুই এক কথায় কিছু মতামত দেওয়া যায় কি না৷ এখন দেখি চিন্তাসূত্র থেকে একের পর এক সূত্রই বের হচ্ছে আর গুটলি পাকাচ্ছে। সেখান থেকে দুই একটা বের করার সাহস করছি।
রবীন্দ্রনাথের এই পয়েন্টের ভিত্তিতে নিজেকে দুই ধরণের স্বত্তায় আবিষ্কার করি৷ একটি রবীন্দ্রনাথের উক্ত চিন্তক, আলোচক, বিবেচক এবং ভালো মন্দের বিচারক উন্নত স্বত্তা। অন্যটি এসবের বিপরীতে সাধারণ স্বত্তা।
আমি যখন উন্নত স্বত্তা তখন আমার কাছে কি ভালোবাসা পাওয়া কঠিন কিছু বলে মনে হয়? এই লাইনে চিন্তা করলে সবার আগে নিজের কাছে পরিষ্কার করতে চাই কোনটাকে আমি "ভালোবাসা" হিসেবে দেখি। "ভালোবাসা" নিজে অদৃশ্য হলেও তার প্রকাশ তো দৃশ্যমান কিছু আচরণের মাধ্যমে ঘটতে হয়। আমি আমার প্রতি মানুষের কোন ধরণের আচরণকে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করছি এইটা নিজের কাছে খোলাসা হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোড অব কন্ডাক্ট আছে। যেটা ভালোবাসার বহুরূপীতাকে অর্থাৎ পিতামাতার, প্রেমিকার, সন্তানের, বন্ধুদের ভালোবাসাকে ছাড়িয়ে এর একটি সার্বজনীন রূপ আমার কাছে প্রকাশ করে। ঐ আচরণগুলো আমি কত দ্রুত অন্যের কাছ থেকে পাচ্ছি সেটাই প্রমাণ করে আমার কাছে ভালোবাসা সহজলভ্য কি না।
এই পর্যায়ে আর একটি চিন্তা হাজির হয়৷ এই যে "ভালোবাসা"-র নিজস্ব রেসিপি — এইটা আমি আসলে কাদের কাছ থেকে চাই? আমি কি দুনিয়ার সব মানুষের কাছে চাই? না কি আমার দেশের মানুষের কাছে চাই? না কি আশে পাশের গুটিকয়েক মানুষের কাছে চাই?
আমি উন্নত স্বত্তা। তবে ভালোবাসার চাহিদার ক্ষেত্রে আমার প্রত্যাশা সীমিত। নির্দিষ্ট কিছু মানুষ আমার চাহিদা মিটালেই "ভালোবাসা" আমার কাছে সহজিয়া বিষয়। আমার বন্ধুও একজন উন্নত স্বত্তা। সে চায় তার লেখা, উন্নত কর্মকান্ড সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ুক। এমনকি সেনটিনেলিস ট্রাইবের লোকজনও তাকে দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলুক "I love you"৷ আমার বন্ধুর "ভালোবাসা" প্রাপ্তির এই কোয়েস্ট শুধু শক্তই নয়৷ আমার মতে একেবারেই অসম্ভব।
এবার আমি সাধারণ স্বত্তা। রবী ঠাকুরের বক্তব্য অনুযায়ী একজন উন্নত স্বত্তাকে সহজে ভালোবাসা আমার পক্ষে কি শক্ত? এইক্ষেত্রেও আগেই আমাকে "ভালোবাসা"-র নিজস্ব একটা স্ট্যান্ডার্ড ফর্ম দাঁড় করাতে হবে। আমি সেটা করেছি৷ এখন এই স্ট্যান্ডার্ডে আমি একজন উন্নত স্বত্তাকে ভালোবাসতে পারি কি না? না পারার তো কোন কারণ দেখি না! চিন্তা, বুদ্ধিমত্তার পার্থক্য ভালোবাসার অন্তরায় — এইটা আমার কাছে খুব কম গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪৩
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার সুবিশাল চিন্তার ঝাঁপি খুলে বসবার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ স্যার। আপনার মন্তব্যের লাইনে লাইনে আমার সাইড কমেন্টস অ্যাড করতে মন চাচ্ছে, কিন্তু সেটা দিনের শেষে এই আলোচনাকে অনন্তকালের দিকে ঠেলে নিয়ে যাবে, কাজেই সেটা না ই বা করলাম। তবে আমার মনে হয় ভালোবাসা'র সংজ্ঞায়নেরও পূর্বে আমাদের উন্নত সত্ত্বা বলতে কি বুঝছি, সেটার সংজ্ঞায়ন গুরুত্বপূর্ণ। তারচেয়েও, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্ন যে - উন্নত সত্ত্বার সংজ্ঞায়ন আমি কীভাবে করবো, বা আদৌ করতে পারবো কি না? কেননা, রবীন্দ্রনাথ যে স্তরের উন্নত সত্ত্বা, সে স্তরের উন্নত সত্ত্বা যদি আমি নিজে না হই, তবে কি আমার পক্ষে ওনার উদ্ধৃতির মধ্যে থাকা মন্তব্যটির প্রতি সুবিচার করে তাঁর একটা যোগ্য ব্যাখ্যা দাঁড়া করাতে পারবো? তাই সংজ্ঞায়নের জটিলতাকে এড়িয়ে আমি লিটারল অর্থে মন্তব্যটিকে অ্যাপ্রোচ করতে আগ্রহী।
রবীন্দ্রনাথের আলোচনার সাধারণ ব্যাখ্যা আমার কাছে যা মনে হয় সেটা ব্যক্ত করি। উদাহরণ দিই আমাদের চেনা জগত থেকেই। শিল্পের জগত। শিল্পকলার জগতে দু' ধরণের আর্টিস্টকে বিবেচনা করি। সিনেমার হিরো, বা হিরোইন, এবং একজন দার্শনিক ধাঁচের লেখক। আমার বিবেচনা এটা বলে যে - প্রথম জনরার শিল্পীর ব্যাপারে আমাদের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগপ্রসূত ভালোবাসা কাজ করে, দ্বিতীয়জনের ব্যাপারে মুখ্যত ইনডিফরেন্স, বড়োজোর বিস্ময়, খুবই অকিঞ্চিৎকর সংখ্যক ক্ষেত্রে শ্রদ্ধা। দার্শনিক - চিন্তক - লেখকের ব্যাপারে স্বতঃস্ফূর্ত আবেগের স্ফুরণে ব্যাঘাত ঘটায় - বেশীরভাগ সময় তাঁদের বুঝতে না পারা, কখনো কখনো তাঁদের বুঝতে পারলেও তাঁদের চিন্তাকে নিজ জীবনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক করতে না পারা। আর যখন এই শ্রেণীর লোকেদের আমরা বুঝতে পারি, নিজের জীবনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিকও করে তুলতে পারি, তখন আমরা নিজেরাও সেমি দার্শনিক পর্যায়ে উত্তীর্ণ হই। তখন আর স্বতঃস্ফূর্ত ভালোবাসার স্ফুরণ ঘটাটা হয়েও ওঠে না। পৃথিবীর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিটাও দার্শনিক হয়ে ওঠে।
শুভকামনা।
৭| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৯
ঘনশ্যাম বলেছেন: ছিন্ন পত্রাবলী পড়ার আগ্রহ তৈরী হল। পদ্মপুকুর এর মন্তব্যে ভালোলাগা।
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: জেনে খুশী হলাম। একজনও এই লেখা থেকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ হলে লেখাটি সার্থক হবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ব্যক্তিগত জীবনে কাদম্বরীদের প্রভাব না পড়লেই ভালো । আপনি একজন শিক্ষক মানুয়।