নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯) ৭।শহরনামা (উপন্যাস, মাওলা ব্রাদার্স, ২০২২), ৮। মুরাকামির শেহেরজাদ ও অন্যান্য গল্প (অনুবাদ, ২০২৩), ৯। নির্বাচিত দেবদূত(গল্পগ্রন্থ, ২০২৪), ১০। দেওয়ানেগির চল্লিশ কানুন/ফরটি রুলস অফ লাভ (অনুবাদ, ঐতিহ্য, ২০২৪)
ভালোবাসা দেখতে কেমন , প্রায় নিশ্চিতভাবে জানতাম যখন আমি ক্লাস সেভেনে পড়ি।
যদিও প্রেমে পড়িনি তখনো একবারের জন্যেও, তবু
প্রেম হেঁটে বেড়াতো আমার মনের আনাচে কানাচে, ঘরময়
হয়তো একবার সামনা সামনি দেখা হলেই চিনে ফেলতাম তাকে!
দুটো বেণী মাথার দুপাশে ঝুলিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে ভালোবাসা এসে স্কুলে হাজির হত,
নাচের ক্লাসে ছোট ছোট ঘুঙুর বেঁধে পায়ে নেচে বেড়াতো হলঘর জুড়ে
ভালোবাসা গিটার বাজাতে জানতো, জানতো আমার পছন্দের সবগুলো গান
বাসস্ট্যান্ডে ভোর সকালে এসে দাঁড়িয়ে থাকতো - আমার সাথে একসাথে কলেজে যাবে বলে।
ভালোবাসা অমন হয় - তা আমি জানতাম
কিন্তু খুঁজে পাইনি কখনো তাকে।
হয়তো তার খোঁজে উঁকি দিয়েছি সবসময় ভুল ক্লাসরুমে
ভুল স্যারের কোচিংএ
ভুল সিঁড়িঘরে, ভুল ফ্ল্যাটের বারান্দায়।
ওখানেই, আশেপাশেই কোথাও ছিল সে, কেন যে খুঁজে পেলাম না!
শেষমেশ যখন তার দেখা পেলাম প্রথমবার -
ওমা ! তার লম্বা চুলের ঝুঁটি কোথায়? সে দেখি একদম ছোট ছোট করে চুল কাটে!
একসপ্তাহ ধরে এক জামা পরে থাকে!
বাসে চড়লে বমি আসে বলে সকাল বেলা আমার কলেজের সময় আরাম করে ঘুমোয়!
নাচের 'ন' , গিটারের 'গ' ও জানে না!
বরং যতবার চুমু খেতে যাই - দু'জনের নাকে নাকে ঠোকাঠুকি বেঁধে যায়!
কিন্তু ভালোবাসা আমার বাবা-মা কে বলা প্রথম মিথ্যের কারন হয়ে দাঁড়ায় ('মা, আজকে বাড়ি ফিরতে দেরী হবে, রনির জন্মদিনের দাওয়াত!' )
ভালোবাসা গিটার বাজিয়ে গান গাইতে না পারলেও পছন্দের রোম্যান্টিক গানটি একই হেডফোন লাগিয়ে আমার সাথে বসে শোনে।
ভালোবাসা ক্রমশ রাত জাগতে শিখে যায় (আব্বুর ঘুমাতে ঘুমাতে রাত ১টা বাজে, তার আগে ফোন করা যায় না!)
ভালোবাসা বেড়ে চলে তরুণ চারাগাছের মত করে।
ভালোবাসা বদলায়।
ভালোবাসা হারিয়ে যায়।
ছোটবেলার দাঁত পড়ে যাবার মত করে ভালবাসাও ঝরে পড়ে যায়।
ভালোবাসা হারিয়ে যায় সেই অপটু জাদুকরের মত - যে হ্যাটের ভেতর খরগোশ উধাও করতে গিয়ে নিজেই উধাও হয়ে যায়।
সবাই তার ট্রিকটা ধরে ফেললেও আমি পারি না।
আমি তার দেখা পাই না আর।
ভালোবাসা দূরে সরে যায়।
বছরের পর বছর কেটে যাবার পর আবার যখন সে সামনে এসে দাঁড়ায় - তাকে আর চেনা যায় না।
ভালোবাসার মানে ততদিনে বদলে গেছে।
ভালোবাসার স্বাদ ততদিনে বদলে গেছে।
ভালোবাসার ঘ্রাণ এখন অন্যরকম,
ভালোবাসার আছে গভীর কালো চোখ,
উঁচু বুক,
ভালোবাসার মুখে অনেক পিম্পল।
ভালোবাসার জন্মদাগ শরীরের অন্য কোন জায়গায়,
গলার স্বর মিষ্টি,
ঘুমানোর প্যাটার্ন ভিন্ন,
পছন্দের লেখক ভিন্ন,
লিপস্টিকের চয়েজ ভিন্ন।
আমার পছন্দের গান শুনলে সে কেবল চোখ উল্টায় আর বড়বড় হাই তোলে।
কিন্তু ভালোবাসা রুমের কোনে ছোট একটা কাউচ খুঁজে নিয়েছে
যেখানে মন খারাপ হওয়া মাত্রই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকে।
ভালোবাসার সেন্স অফ হিউমার মারাত্মক!
ভালোবাসা শখ করে আমার জন্যে চকলেট কুকিজ বানিয়ে দিতে পারে,
আবার মাঝরাতে ক্ষুধা লাগলে সে একাই তার সবটা সাবাড় করে দিয়ে বসে থাকে।
ভালোবাসা বাসে চড়তে নারাজ হলেও রিকশার হুড ফেলে দিয়ে
বৃষ্টির দিন সারাটা শহর ঘুরে বেড়াতে রাজি আছে আমার সাথে।
ভালোবাসাকে দু'টুকরো অন্তর্বাসে সবচে সুন্দর দেখায়
কিন্তু সেকথা তাকে বললে আবার সে তেড়ে মারতে আসে!
বেড়াতে যাবার প্লান করায় তার জুড়ি নেই,
খালি কোন ড্রেসটা পরে যাওয়া যায় তা ঠিক করতে তার ঘণ্টা তিনেক সময় লাগে।
ভালোবাসা অনেক এলোমেলো, মোটেও গোছানো স্বভাবের নয়।
ভালোবাসা বাবা মায়ের সামনেই জোরে - 'বুবস' বলে চিৎকার করে ওঠে
রেস্টুরেন্টে হাপুসহুপুস করে খায়
ব্রাশ করে টুথপেস্টের ছিপি লাগাতে ভুলে যায়
ফেসবুকে চ্যাটে ওয়ার্ড টাইপ করার বদলে একগাদা স্টিকার আর ইমোটিকনস পাঠায়।
উফ! ভালোবাসা ফার্ট করে! ভালোবাসা বাথরুমেও যায়!
কিন্তু ভালোবাসা কান্নাও করে...
এবং ভালোবাসা বলে - ' আল্লাহ! তুমি এত সুন্দর কেন?'
বারবার
বারবার
এবং সে মিন করে বলে।
ঘুম থেকে চোখ মেলে প্রথম কথা - 'আল্লাহ! তুমি এত সুন্দর কেন?'
যখন মন খারাপ করে কাঁদতে বসি - আল্লাহ! তুমি এত সুন্দর কেন?'
যখন শুনতে মনে চাচ্ছে না , তখনো - আল্লাহ! তুমি এত সুন্দর কেন?'
যখন নিজের কাছে নিজেকে বিধ্বস্ত লাগছে - আল্লাহ! তুমি এত সুন্দর কেন?'
যখন কেউ বলে না, তখনো - আল্লাহ! তুমি এত সুন্দর কেন?'
ভালোবাসার কাছে , তখনো আমি সবচে সুন্দর।
কিন্তু ভালোবাসা পারফেক্ট না।
যখন সুন্দর করে সেজে গুঁজে সামনে এসে দাঁড়াই
'সুন্দর লাগছে তোমায়' কথাটি শোনার আশায়,
সে হয়তো তাকিয়ে দেখবেই না,
বা ভুলে যাবে।
দুটো কথা বলার ফুসরত হবে না - এমন ব্যাস্ত ভাব দেখাবে।
ভালোবাসা তোমার আকাঙ্ক্ষার মত হবে না কখনো
ভালোবাসার ব্যাপারে তোমার কোন পূর্বানুমান খাটবে না।
ভালোবাসা হয়তো খিলগাঁও, রিয়াজবাগে ঘুমিয়ে আছে, নিজের বিছানায়
আর তুমি তাকে খুঁজে ফিরছ - ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, কলাবাগান, মিরপুর, পান্থপথ
ভুল সময়ে, ভুল জায়গায়।
হয়তো ভালোবাসা এখনও তোমার জন্যে তৈরি না
হয়তো ভালোবাসার জন্যে তুমি এখনও তৈরি না
হয়তো ভালোবাসা বিবাহোপযোগী না
হয়তো ভালোবাসার সাথে তোমার পরবর্তী দেখাটা হবে কুড়ি বছর বাদ
তার ডিভোর্সের পরে
ভালোবাসা ততদিনে বুড়িয়ে যাবে
কিন্তু থাকবে প্রথমবার দেখার মতই সুন্দর
ভালোবাসা হয়তো একমাসের জন্যে এসেছে
ভালোবাসা হয়তো চিরদিনের জন্যে এসেছে
ভালবাসা হয়তো থাকবে
হয়তো থাকবে না
হয়তো তার থাকা উচিৎ হবে না
কিন্তু ভালোবাসা তোমার দরজায় এসে দাঁড়াবে একদম ঠিক সময়ে
এবং যদি চলে যায়, যাবেও যখন যাবার কথা ঠিক তখনি।
যখন ভালোবাসা দরজায় এসে দাঁড়ায় তাকে অভিবাদন জানাও
সবচে নরম সোফাটা ঝেড়ে মুছে দিয়ে তাকে বল - আরাম করে বোসো প্রিয়!
ভালোবাসা যদি চলে যেতে চায় - তাকে যেতে দাও
অনুরোধ করো - যাবার সময় দরজাটা পেছনে খুলে রেখে যেতে
সব বাতি নিভিয়ে দাও
সাউন্ডপ্লেয়ারে সুন্দর গানটি বন্ধ করো
ফিসফিস করে একবার তাকে বল -
এসেছিলে ভালোবাসা, তাইজন্যে একরাশ ধন্যবাদ!
(মূল - সারাহ কে' এবং ফিল কে' র কবিতা when love arrives থেকে ভাবানুবাদ
ছবি - পিক্সার এনিমেশনের মুভি 'আপ' এর স্থিরচিত্র)
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৩৭
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার বক্তব্য আরও ব্যাখ্যার দাবী করে চাচা।
যাই হোক, 'প্রেম' - শব্দটা অনুবাদের একদম শুরুতে একবার ক্রিয়াপদ (২য় লাইনে) হিসেবে, আর একবার বিশেষ্য/ পারসনিফাইড রূপ (৩য় লাইনে) হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। এই দু'টার পার্থক্য আশা করি ধরতে পেরেছেন। পরে তো 'ভালোবাসা' শব্দটাই ব্যবহার করা হল। কাজেই আপনার মতানুসারে জেনেরালাইজড ফর্মে এই ধরনের এক্সপ্রেশান দুর্বল (আমি ভুল শব্দটা ব্যবহার করবো না) হইলেও, আমার অনুবাদের প্রসঙ্গে একদম তাগড়া।
আরএকটা ব্যাপার, কবিতায় শব্দের লাঠিয়ালগিরি আমি মেনে নেই না খুব একটা। ফ্রি ফ্লোয়িং ভাবের প্রকাশে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কাজেই কবিতার ইন্টেলেকচুয়াল কাঁটাছেঁড়ায় আমার আগ্রহ নাই। ছাত্রজীবনে পাঁচ বছর তাই করসি, এবং খুব সফলভাবে করসি। এখন আর মন টানে না।
২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: গড় গড় করে পড়ে ফেললাম।
কবিতায় আবেগ আছে।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৪
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: গড় গড় করে পড়তে গিয়ে গলায় আটকায় নাই তো রাজীব ভাই?
জোকস অ্যাপার্ট, ধন্যবাদ পড়ার জন্য! : )
৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: মনে হয় দুইজনের নাক বড় তাই টুকাটুকি
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৬
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: হয়তো তাই! ধন্যবাদ নেওয়াজ ভাই! : )
৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ভোর ৬:২৫
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: চমৎকার একটি কবিতা পড়লাম !
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৭
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: শুকরিয়া স্বামীজী! ভালো লাগলো আপনারা ভালো লাগা জেনে।
৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৭:২১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: প্রেম করাও যায়না,প্রেমে পড়াও যায়না,প্রেম হয়ে যায় অনেকটা মনের অজান্তে।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৮
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ চাচা। এবার বুচ্ছি, প্রথম মন্তব্যে আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন।
৬| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৪৯
এম ডি মুসা বলেছেন: দীর্ঘ কবিতা
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৮
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: তাইতো!
৭| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫৭
রক্ত দান বলেছেন: এটা এমনই একটি বিষয় যার থেকে এড়িয়ে খুবই কঠিন।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৯
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: বটেই!
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
"প্রেমে পড়া", "প্রেম করা", "প্রেম করতে চাই", "প্রেম করিনি", "৫ বছরের প্রেম", এগুলো ভুল প্রকাশ।