নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে লেখার মত এমন স্পেশাল কিছু এখনও অর্জন করতে পারি নি। ভালো থাকুন সবাই,আর ভালো রাখুন চারপাশের সবাইকে।

আদিল ইবনে সোলায়মান

আদিল ইবনে সোলায়মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি রোগ, একটি আতঙ্ক!!!!

১১ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৩৭



বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে
ডায়াবেটিস এক মহামারী রোগ।
কয়েক দশক আগেও এটি ছিল খুব স্বল্প
পরিচিত রোগ। অথচ বর্তমানে শুধু উন্নত
বিশ্বেই নয়, উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত
বিশ্বেও অসংক্রমক ব্যাধির মধ্যে
ডায়াবেটিস অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা
হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু শহরাঞ্চলে নয়,
গ্রামীণ জনপদে এমনকি শিশুদের
মধ্যেও ডায়াবেটিস বিস্তার লাভ
করেছে। এর ফলে সমাজ হারাচ্ছে
কর্মক্ষম ও সম্ভাবনাময় এক তরুণ যুব
প্রজন্মকে, যার সামাজিক ও
অর্থনৈতিক মন্দ প্রভাব গোটা
জাতিকে স্থবির করে দিচ্ছে। বেড়ে
যাচ্ছে অন্ধত্ব, স্নায়ুরোগ, কিডনি ও
হৃদযন্ত্র বিকল হওয়া, পায়ে আলসার এবং
পরিণামে পা কেটে ফেলতে বাধ্য
হওয়ার মতো ভয়াবহ জটিলতা। অসংখ্য
মানুষ নিজেদের কর্মক্ষমতা হারিয়ে,
পরিবারের ও সমাজের ওপর
অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে
পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
ডায়াবেটিস কী এবং কেন
শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট বিপাক
ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনের নাম
ইনসুলিন। অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত এই
হরমোন শরীরের কোষে গ্লুকোজ
প্রবিষ্ট করতে এবং সেই গ্লুকোজকে
গ্লাইকোলাইসিস নামক বিপাকীয়
ক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের জন্য শক্তি
উৎপাদন করতে সহায়তা করে। আবার
অতিরিক্ত গ্লুকোজকে লিভার
গ্লাইকোজেন হিসেবে সঞ্চয় করে।
ফলে রক্তের গ্লুকোজ স্বাভাবিক
মাত্রায় থাকে। এই হরমোন অগ্ন্যাশয়
থেকে পর্যাপ্ত নিঃসৃত না হলে,
ঘাটতি হলে বা উৎপাদিত ইনসুলিন
কোষে কার্যকর না হলে বা শরীরের
ইনসুলিন নিষ্ক্রিয় থাকলে, রক্তে
গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিকের
চেয়ে বৃদ্ধি পায় এবং প্রস্রাবের
সাথে গ্লুকোজ বের হয়ে যায়। এটিই
হচ্ছে ডায়াবেটিস মেলাইটাস বা
বহুমূত্র রোগ।
ডায়াবেটিস সাধারণত দুই রকম। টাইপ-১
বা ইনসুলিন-নির্ভর ডায়াবেটিস, যা
মূলত কম বয়সে হয়ে থাকে। তাতে
অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন তৈরি করার ক্ষমতা
হারায় এবং এসব রোগীদের ইনসুলিন
অপরিহার্য।
আরেকটি হচ্ছে টাইপ-২ বা ইনসুলিন
অনির্ভর ডায়াবেটিস। বিশ্বেজুড়ে
৮০ শতাংশ হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস,
যা বয়স্কদের হয়ে থাকে। স্থূলতা বা
ওজন বৃদ্ধি, মন্দ খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক
নিষ্ক্রিয়তা, মানসিক চাপ, ধূমপান
ইত্যাদি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের
অন্যতম কারণ। বর্তমানে একই সঙ্গে
বাড়ছে নারীদের গর্ভকালীন
ডায়াবেটিস বা জিডিএম এর প্রবণতা।
ডায়াবেটিসের কারণ
টাইপ-১ জন্মগত কিংবা পরিবেশগত
কারণে এই ডায়াবেটিসের প্রকোপ
দেখা যায়। বছরে ৩ শতাংশ হারে এই
ডায়াবেটিস বাড়ছে এবং সাধারণত
তরুণরাই এতে আক্রান্ত হচ্ছে। টাইপ-২
অতিরিক্ত ওজন, মেদবাহুল্য, কায়িক
পরিশ্রমের অভাব, উচ্চ শর্করা এবং কম
আঁশযুক্ত খাদ্যাভ্যাস থাকলে এই
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বংশগত কারণেও এই ধরনের
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। বাবা
মা কারও এক জনের ডায়াবেটিস
থাকলে ঝুঁকি বাড়ে, আর দুই জনেরই
থাকলে ডায়াবেটিসের আশঙ্কা
অনেক গুণ বেড়ে যায়।
অনেক সময় শুধ গর্ভকালেই
ডায়াবেটিসের উদ্ভব ঘটে।
মেডিকেল সায়েন্সের পরিভাষায়
একে জিডিএম বলে। এটি মা এবং
শিশুর অসংখ্য জটিলতার কারণ হতে
পারে। সঠিক কারণ জানা না গেলেও
পরিবারে ডায়াবেটিস থাকলে
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
বেড়ে যায়।

::::: ডায়াবেটিস সম্পর্কে কিছু ভূল ধারনা :::::


ডায়াবেটিসকে বলা হয় নীরব ঘাতক।
বিশ্বের বহু মানুষ এ রোগে আক্রান্ত।
ডায়াবেটিস নিয়ে বহুকাল ধরে
গবেষণা হয়ে আসছে। মানুষের মাঝে এ
রোগ নিয়ে বহু ভুল ধারণা প্রচলিত
রয়েছে। এখানে জেনে নিন, বহুমূত্র
রোগ সম্পর্কে কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা
এবং আসল তথ্য।
১. তিতা স্বাদযুক্ত খাবার রক্তে
গ্লুকোজের পরিমাণ হ্রাস করে বলে
মনে করেন সবাই। এ করণে করলা বা নিম
বা অন্যান্য তিতা খাবার খান। এটা
ভুল একটি ধারণা।
আসল তথ্যটি হলো, রক্তের গ্লুকোজ
বৃদ্ধি পায় কার্বোহাইড্রেটপূর্ণ খাবার
থেকে। এমনকি সেগুলো মিষ্টি না
হলেও গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
২. ডায়াবেটিস রোগীদের কোনো
প্রকার সুইটেইনার খাওয়া উচিত নয়
বলে ভাবেন অনেকে। এটি ভুল ধারণা।
সত্যটা হলো, চিনির দুটো বিকল্প
খেতে পারবেন। ফ্রুকটোজ সুগার (যা
ফলে থাকে) এবং কৃত্রিম সুইটেইনার।
৩. ডায়াবেটিস রোগীরা ফল খেতে
পারেন না। এটাও একটা ভুল ধারণা।
আসল তথ্য হলো, ডায়াবেটিস
রোগীরা ফল খেতে পারবেন। কারণ
এতে ফাইবার রয়েছে। তাই ফ্রুকটোজ
খুব ধীরে রক্তে মেশে। আর ইনসুলিন
ছাড়াই আমাদের দেহ ফ্রুকটোজকে
কাজে লাগাতে পারে। তবে ফলের
জুস খাওয়া উচিত নয়। কারণ জুসে
ফাইবার থাকে না। এ কারণে কলা,
আম, আঙ্গুর, আখ এবং পিষে ফেলা
আপেল খাওয়া ঠিক নয়।
৪. সকল কৃত্রিম সুইটেইনার খাওয়া
নিরাপদ বলে ভুল ধারণা পোষণ করেন
সবাই।
আসল তথ্যটা হলো, বহু কৃত্রিম
সুইটেইনারে এক ধরনের উপাদান
রয়েছে যার নাম 'অ্যাসপারটেম'। এটি
কোল্ড বেভারেজসহ বহু খাদ্যতে ব্যবহৃত
হয়। এটি উচ্চ তাপমাত্রায় মিষ্টি
নিঃসৃত করে। গবেষণায় বলা হয়, এই
সুইটেইনার মস্তিষ্কে বিরূপ
প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের এই
উপাদানপূর্ণ সুইটেইনার খাওয়া উচিত
নয়।
৫. ডায়াবেটিস রোগীরা বাইরে
খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। ভুল
ধারণা থেকেই এ কাজটি করেন
তারা।
ডায়াবেটিস রোগীরাও যেকোনো
রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন।
৬. ডায়াবেটিস রোগীদের বেশি
ভাত খেতে নেই বলে ভুল ধারণা
প্রচলিত রয়েছে।
কিন্তু তারাও ভাত খেতে পারেন।
তবে এর পরিমাণ নির্ভর করে কি
ধরনের ডায়াবেটিস হয়েছে তার ওপর।
৭. ডায়াবেটিস রোগীরা স্থূলতা
থেকে বাঁচতে বেরিয়াট্রিক
সার্জারি করতে পারবেন না বলে
জানেন সবাই। এটা ভুল ধারণা।
স্থূলতা ডায়াবেটিস রোগীদের বড়
সমস্যা। এ থেকে বাঁচতে অনেকের
বেরিয়াট্রিক সার্জারির প্রয়োজন
হয়। এই সার্জারি নিতেই পারেন
তারা। বরং নেওয়াটা জরুরি হয়ে
ওঠে। কারণ স্থূলতার কারণে হাড়ের
সংযোগস্থলে ব্যথা, অ্যাজমা, ঘুমের
সমস্যাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
৮. ডায়াবেটিস রোগীদের যত দ্রুত
সম্ভব ওজন কমানো উচিত বলে ভাবেন
অনেকে। এটা আসলে ভুল ভাবনা।
স্থূলকায়দের জন্যে ওজন কমানো জরুরি।
কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য
নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমানোর কথা বলেন
না চিকিৎসকরা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.