![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটি বিদেশী গল্পের ছায়া অবলম্বনে "শিয়ালের কাছে ক্ষমতা যেমনঃ বিপদে বেকায়দা!"
এমএবি সুজন
অনেকদিন আগের কথা। এক বনের রাজা সিংহ প্রাসাদে ন্যাক্কারজনক হামলার শিকার হন। সেনা সমর্থণে শিয়াল সম্প্রদায় ঐ সশস্ত্র হামলা ও আক্রমন চালায় বলে তারা গর্ববোধে দাবী করেন। সেই রক্তক্ষয়ী হামলায় রাজা সিংহ রাজ পরিবার পরিজনসহ নির্মমভাবে খুন হন। কেবল দূরবর্তী অবস্থান ও বাসস্থান পরিবর্তন করায় রাজার কিছু বংশবুনাইদ প্রাণে বেঁচে যায়। সিংহ রাজার আমল পতন হয়।
এদিকে রাজা সিংহ খুন হবার পর নতুন কে বা কারা নতুন রাজা হবেন এই নিয়ে তলে তলে চলে কূ! যারা আগের রাজাকে সরাসরি হত্যা করলো তারাই এখন রাজ্য চালাবে এটাই স্বাভাবিক তথাপি রাজা হত্যায় সরাসরি নেতৃত্বদানকারী খুনি শেয়ালগণ তাদের ওয়াদামতে নিজেরা প্রত্যক্ষ ক্ষমতা নিতে বিব্রত হলেন আর সেই সুযোগে সিংহ রাজা হত্যায় গোপনে জড়িত সেনাপতি লেজকাটা সেই বেঈমান শিয়াল রাজা হত্যা ও ক্ষমতাসূত্রে শেয়াল বিদ্রোহ দমনের নামে সিপাহী বিপ্লব দেখিয়ে নিজেই সুযোগবুঝে ক্ষমতা দখল করে নেন। ক্ষমতায় বসে লেজকাটা শিয়াল রাজ্যের সংবিধান কাটাছেড়া ও সংযোজন বিয়োজন শুরু করলেন। আইন করে বাঘ ও সিংহ সম্প্রদায়কে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে সাহস ও কন্ঠস্বর কোনঠাসা করে বনের সাহসী সব প্রাণীদের দূর্বলকারক করে ধরে ধরে ঝিমানো ব্যারাম ছড়ানোর পলিসিতে বাধ্যতামূলক স্লোপয়জনিং সুই দেয়া কর্মসূচি চালু করলেন। তখন লেজকাটা শেয়ালের মনগড়া কানুন থেকে থেকে বাঁচার তাকিদে বনের বাঘ, সিংহ, মহিষ এমনকি হাতিরাও ভয়ে পালিয়ে বেড়াতো দিকবিদিক! সবাইকে সুই দিয়ে সুখশান্তিতে রাজা লেজকাটা শেয়াল খালকেটে কুমিড় আনা শুরু করলেন। কুমিড়দের বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে জঙ্গলের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করতে বললেন। এতেকরে ক্ষিপ্ত হলেন খোদ শিয়াল সম্প্রদায়। শিয়াল সমাজে উত্তেজনা ও বিদ্রোহ দেখা দিল। দ্বিধাদ্বন্দ্ব জমে বনবিরোধি বনবিদ্রোহ চলতে লাগলো। এবার লেজকাটা শিয়াল রাজা জঙ্গলদ্রোহ থামাতে ঘোষণা দিলেন, "আমি ছাড়া যেসব শিয়ালের লেজকাটা পাওয়া যাবে তাদের কতল কর! আর আন্দোলন সংগ্রামি যেসব শিয়ালের কান দুই ইঞ্চির বেশি লম্বা তাদের প্রত্যেককে কানকাটা নীতি ও আইনের আওতায় এনে সবার একটি করে (বাম) কান কেটে দাও।
সময়ের আবর্তে ফিরে আসে পালিয়ে বেঁচে থাকা বেড়ে ওঠা সেই রাজা সিংহের বংশধরগণ। তারাও তাদের বিচ্ছিন্ন দলকে মৃদুপায়ে গোছাতে শুরু করলো। ইতিমধ্যে লেজকাটা শিয়ালের কানকাটা নীতির বিরুদ্ধে সেনাবিদ্রোহ দেখা দিল। সেই শিয়াল বিদ্রোহেই একদিন লেজকাটা শেয়াল প্রাসাদ ষড়যন্ত্র ও সেনাচক্রান্তে খুনের শিকার হন। স্ত্রীর পরকিয়া স্বামীর চক্রান্তে লেজকাটা শিয়াল নিশ্চিন্ন হন। তারপর শুরু হয় সকাল বিকাল বা প্রায় প্রতিদিনই চলতে থাকে ক্ষমতার পালাবদল। শেয়ালের দূর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা কেড়ে নেন সেনাপতি বাঘডাসা! বাঘডাসা বাঘের মত ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখে। তখন ক্ষমতা পিপাসু সিংহ, বাঘ, গরু, মহিষ, শিয়ালসহ সব সমাজ এক হয়ে বাঘডাসার পতনের দাবীতে যৌথ আন্দোলন শুরু হয়। রাজনৈতিক শিকারে পরিণত হন রাজা বাঘডাসা। পদত্যাগে বাধ্য হন বাঘডাসা। ক্ষমতাচ্যূত রাজা বাঘডাসা আবার ভুল করে লেজকাটা শিয়ালের অলিওয়ারিশদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে খাঁচায় বাঘডাসা বাঘবন্দী হন। লেজকাটা শিয়ালের বংশধরেরা আবার তাদের মৃত লেজকাটা শিয়ালের অসমাপ্ত কানকাটাসহ নাককাটা এমনকি গলকাটা অভিযান শুরু করেন। পরে জঙ্গলবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবারও জঙ্গলে মঙ্গলমন্ত্র রাজতন্ত্র কায়েম করেন। লেজকাটা পরিবার দূর্ণীতি ও হত্যা মামলার জালে জর্জরিত হলে লেজকাটা রাজ পরিবার জঙ্গলে ধিকৃত ও তিরোস্কৃত হন। তারা আর কোনদিন ক্ষমতায় যাবেননা এবঙ আর কোনদিন রাজনীতি করবেনা মর্মে মুচলেকা দিয়ে নির্বাসন দন্ড ভোগ করা শুরু করেন।
জানা যায়, এখন সেই অবৈধ শহীদ লেজকাটা শিয়ালের পুত্রবাহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মুরগিচুরিতে পারদর্শী, পলাতক বিদ্রোহী ও বনদস্যু খুনের আসামী পালিয়ে থাকা গালকাটা খেকশিয়াল বহুদূর থেকে হুংকার দিচ্ছে। সিংহ, বাঘ, মহিষ, কুমিড় ও হাতীকে টপকিয়ে তারা আবার ক্ষমতায় যাবার ষড়যন্ত্রে মাতোয়ারা গালকাটা খেকশিয়ালের নেতৃত্বে।
খেকশিয়াল ছিল, খেকশিয়াল আছে এবং খেকশিয়াল থাকবে আবার ক্ষমতা পাবে এমনটাই শিয়াল ও পন্ডিত সমাজ নিশ্চিত আশা করেন এবঙ দৃঢ় বিশ্বাস করে অপপ্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। রাজনীতিতে মুখরোচক কথা না বললে, মিথ্যা আশ্বাস না পেলে আন্দোলন চাঙ্গা হয়না। ফাঁকা ফিল্ডে গোল দেয়া এবং অবাস্তব ও অসম্ভব ছাড়া শিয়াল বা খেকশিয়াল কিংবা তাদের সহযোগি সমমনা পন্ডিত সমাজ কোন কিছু ভিন্নভাবার সময় পায়না তারা মূলতঃ জঙ্গলে মঙ্গল চায়না।
চলবে........
#mabkheaal
#এমএবি_খেয়াল
©somewhere in net ltd.