নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন জেনারেল ব্লগারের নিজের সম্পর্কে বলার কিছু থাকে না ।

আবদুর রব শরীফ

যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!

আবদুর রব শরীফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যদ্যপি আমার মা

১০ ই মে, ২০২০ রাত ৮:২৭



গল্পটি আমার মায়ের, তোমার মাকে উৎসর্গ করে লেখা,
.
পত্রিকা ব্লগ পেইজ গ্রুপ কিংবা ফেসবুকের টাইমলাইন সব জায়গায় কম বেশী লেখার সুযোগ হয়েছে,
.
এসব ই আমার মায়ের অবদান! আমার মা আমাকে লেখক বানিয়েছে কারণ স্কুলের শেষ দিকে আমার কাজ ছিলো ওনাকে সঙ্গ দেওয়া!
.
সঙ্গ দেওয়ার পাশাপাশি সময় কাটানোর মাধ্যম হয়ে উঠেছিলো এই অনলাইন জগত, যেখানে আমি খুঁজে পেয়েছি বন্দী জীবনের মাঝেও উড়ার ঠিকানা,
.
আমার মায়ের পাশে আমাকে থাকতে হতো এমন কিছু সময়ে যখন সমবয়সী কেউ পার্কে কোন ললনার কোলে হেলে দুলে খেলছে ৷
.
তখন আমাকে বাধ্যতামূলক সময় কাটানোর জন্য লিখতে হতো, হয়তো কোন ললনার সাথে লুল চ্যাট আর এভাবে মাথায় রম্যদের জেগে উঠা,
.
ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুমিয়ে থাকা মায়ের পাশ থেকে কখনো লেখার মধ্য দিয়ে ছুঁয়ে দিয়েছি কোন ললনার হৃদয়, কখনোবা ফিরে এসেছি ধরে মেঠো পথ ৷
.
আমার টেবিলে রবীন্দ্রনাথ, শরৎ, নজরুল, মিলন থেকে শুরু করে গোর্কি তলস্তয় রোজ চা খেতে এসেছে, তারা কখনো আসতো না যদি না হাইপার টেনশনের রোগী হয়ে মা পাশে না থাকতো...!
.
পরিস্থিতি আমাকে মায়ের আঁচলে করে এনে দিয়েছে নতুন এক পৃথিবী,
.
আমাকে দিয়েছে ধৈর্য, তা থেকে আমি শিখেছি লিখে যা বাছাধন, এভাবে কখন যে তোমাদের একজন হয়ে গেছি আমার মনেও নেই ৷
.
লেখা দিয়ে জ্বালিয়েছি পাঠকদের, পিটিয়েছি জালি বেত দিয়ে, নিতম্ব চুলকাতে চুলকাতে তোরাও মায়ের মতো সব সময় পাশে থেকে বলেছিস্, লুল্ ভাই, লুল চাই!
.
আমি অনেকবার মাথা চুলকিয়ে দুইটা লাইন লিখতে চেয়েছি, পারিনি, হঠাৎ মায়ের চিৎকার আমার মধ্যে বিদ্রোহী ভাব এনে দিয়েছিলো ৷
.
আমি উপলব্দি করতে শিখেছি কিভাবে এক সময়ে আমাকে সবচেয়ে ভালবাসতো যে মানুষটা, সে রোজ অন্য জগতে বসবাস করছে! একদম পৃথিবীর জগত থেকে শিশুসুলভ এক জগতে! আমি শিখেছি এভাবেও হারিয়ে যাওয়া যায়! হারিয়ে যেতে চেষ্টা করেছি তোমাদের জীবনে, সেখানে হরেক রকম আনন্দ অশ্রু বেদনা খেলা করে ৷
.
আমার আম্মু নিজের মনে সুখে হাসতো আমিও আমার লেখায় লুটোপুটি খেয়ে হাসতে শিখেছি, আমি আবারো বলছি কখনো যদি লেখক হয়ে যায় সেটা আমার মায়ের অবদান!
.
শেষ কবে আমি মাকে হাসতে দেখেছি জানি না, তবে আমি যখন বুঝেছি এক টুকরো হাসির মূল্য তখনি আমি তোমাদের হাসাতে মরিয়া হয়ে উঠতে শিখেছি,
.
তোমাদের মুখের এক টুকরো হাসি আমার শত সাধনার ফল্! হাসাতে না পারলে মাঝে মাঝে মাথা খারাপ হয়ে গেলে আমি নোয়াখালি নিয়ে ভাবি, ট্রল করি!
.
অথচ এই বুকে নোয়াখালি, বরিশাল পুতে রেখেছি, শুধু অনন্ত জলিল হতে পারিনি বলে বুক ছিঁড়ে দেখাতে পারিনা ৷
.
যে বয়সে তোমাদের মা তোমাদের আগলে রাখে সেই বয়সে আমি আমার মা কে আগলে রেখে শাসন করতে শিখেছি, জানো তো তুমি অন্যরকম বলোনি বলে কবিতা হয়না কতদিন!
.
শেষ যখন আম্মুকে একটি নার্সিং হোমে কোয়ারেন্টিনে রেখেছিলাম তখন মায়ের একটু হাসির জন্য দুই লাখ টাকার বিল্ দিয়েছি নার্সিং হোমকে,
.
তোমরা তো কত সহজে মায়ের হাসি দেখো, তাই মূল্য বুঝোনা! সেদিন দেখলাম এক বন্ধুকে তার মা রমজানে মাছ গোস্ত দিয়ে না খেয়ে কেনো করলা ভাজি দিয়ে খেয়েছে তাই জিজ্ঞেস করায় সে ভ্রুক্ষেপ করে উত্তর দিয়েছে, তার মা আমাকে এসে বললো, কেনো খোকার কপালে কাচ্চি জুটবে না ৷
.
তোমরা আসলে যেভাবে মায়ের মূল্যায়ন করো আসলে সেটা কেবলি হাস্যকর, আমি মা দিবসে এই লেখা লেখার সাহস করেছি কারণ একজন মানসিক রুগী মাকে বুকে লালন করেছি পনের বছর ধরে ৷ খুব সহজে মাকে যে ভালবাসি বলো, আসলে সেটা কি সত্যি ই ভালবাসা ৷
.
এই বুড়ো বয়সে তোমার মতো হাতিকে এখনো নুয়ে পরা মানুষটি সেবা করে যাচ্ছে, মাঝে মাঝে মনে হয় সকল মা ই যেনো মাদার তেরেসা ৷
.
পৃথিবীর সবচেয়ে অবহেলার শিকার হয় মায়ের ভালবাসা ৷ তোমার মা থেকে তোমার পাড়ার বখাটে বন্ধুটা তোমার থেকে বেশী গুরুত্ব পায় ৷
.
তুমি যখন খুনী হবে, একজন মানুষ ই তোমার পাশে এসে বলবে, বাবা আমার সোনা আমার, তুমি কখনো খুন করতে পারো না! মায়ের অবুঝ মন! পৃথিবীর সবাই তোমাকে ছেড়ে যাবে, কেবলি এই একজন ছাড়া ৷
.
অনেকে বলবে 'বাবু খাইছো' কিন্তু তুমি না খেয়ে থাকলে কেবলি একজনের ই মন খারাপ হবে, ভাববে, পৃথিবীতে দূর্ভিক্ষ চলছে ৷
.
সারাক্ষণ তোমাকে নিয়ে ঐ একজন ই ভাবে, লোক দেখানোর চেয়ে ভালোবাসাতেই যেনো তার বেশী আগ্রহ ৷
.
তুমি এতোক্ষণ লেখাটি পরে যা ভাবছো, একদিন সেটা তোমারও জীবনে ঘটবে ৷ আস্তে আস্তে তোমার হাসতে থাকা মায়েরা জীবনের ছন্দ ভুলে যাবে ৷ চারদিক থেকে অসুস্থতা এসে তাকে ঘিরে ধরবে,
.
একদিন সে তোমার শিশুকালের মতো বিছানা বন্দী হয়ে যাবে ৷ মাঝ রাতে সাধে ঘুম ভেঙ্গে আবিষ্কার করবে, মায়ের রুমে হাগু'র গন্ধ ৷ তোমার ভ্রু কোঁচকে উঠবে সাথে বউ মন্দ হলে তো কথায় নেই ৷
.
মা যেহেতু বুঝতে পারবে তোমার মনের অবস্থা ৷ মনে মনে আল্লাহকে তখন বলবে, তাকে উঠিয়ে নিতে ৷ কারণ খোঁজ করলে পাবে, তোমার সুখের কথা চিন্তা করে ৷
.
এমন অবস্থায় যদি কোন মা মন থেকে বলে, 'আল্লাহ আমি মরতে চাই না আমার সোনার সন্তান রেখে' সেদিন তোমার মা দিবস্! একমাত্র সেদিন তোমার মা দিবস্!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ১০:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: মাদারীপুরে যে বানর গুলোকে বিষ খাইয়ে মারা হয়েছে। সেই বানর গু্লোকে কে বিষ খাইয়েছে জানেন??

১১ ই মে, ২০২০ ভোর ৪:৫৫

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: স্থানীয় জনগন শুনলাম :P

২| ১১ ই মে, ২০২০ রাত ১২:০৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মা দিবস নামে নাটক হলো আজ

১১ ই মে, ২০২০ ভোর ৪:৫৫

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: এভাবে চলছে সমাজ ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.