![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলাপ খুব জমে উঠেছে, আলাপের ধারাবাহিকতায় আপনি অতঃপর রাজনীতিতে প্রবেশ করলেন। তখন লক্ষ করলে দেখবেন কারো কারো মুখ কাঁচুমাচু, কেউ বা গলাটা খেকিয়ে নিচ্ছেন অথবা কেউ স্থান ত্যাগে উদ্যত। অথবা কেউ বলেই ফেলবে, এখানে রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ। বিষয়টা স্থান-কাল-পাত্রভেদে খুব একটা উঠানামা করে না। উচ্চ-শিক্ষিত মহলেও যেন দশাটা একই। তাই বিষয়টা নিয়ে ভেবেছিলাম দু´কলম ভাব ব্যক্ত করবো। অভাবের সংসারে এ আবার নেহাত গরীবের ঘোড়ারোগ কিনা এই ভেবে আবার কলম খানা উঠিয়েও রেখেছিলাম।কিন্তু তারপরও বিবেক খুব নাড়া দিচ্ছিল। ইতিহাসের শিক্ষাটাই যেন আবার দায়বদ্ধতার জন্ম দিল। পলাশীর প্রান্তরের কথা মনে পড়লো। সিরাজউদ্দোউলাকে যখন ইংরেজরা ধরে নিয়ে যাচ্ছিল তখন যে পরিমাণ দর্শকের সমাগম হয়েছিলো, তাতে নাকি সকলে একটা করে ঢিল ছুঁড়লেও ইংরেজদের মুন্ডুগুলান আস্ত ফেরত যেত না।
আমাদের পূর্ব পুরুষেরা নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে যান নি। এইজন্য আমাদের উত্তরসূরিদের কাউকেই কোন ইতিহাসবেত্তা (মনে হয়েছিল হয়তো হবে কোন রাজাকার) সাধুবাদ জানালো না, বিষয়টা আমাকে মর্মাহত করেছে। আশা করি আমার মতন যারা রাজনীতিতে নিজেদের গা ভাসাতে চান না, তাদেরকেও ব্যথিত করে তুলেছে। তাহলে ইতিহাস থেকে আমরা কি শিখলাম? আমরা শিখলাম যে, নিজেদের কে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখলেই কেবলমাত্র আজীবন দাসত্ব করার বিষয়টা পাকাপোক্ত হয়। সাধু সাধু। এই তো আমরা চাই, আর এই জন্যই তো নিজেদেরকে রাজনীতি থেকে সব সময় নিরাপদ দুরত্বে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।তাই আমাদেরকে দাসত্ব থেকে মুক্তি দেবে এমন সাধ্য কার?
মুখে বলবেন বাঙালি স্বাধীনচেতা, আর কাজের বেলায়-নিজে বাঁচলে বাপের নাম।এই যদি হয় চরিত্রের হাল, তবে সত্যিই তো আমাদের রুখবে কে? যতদিন পর্যন্ত চিন্তা ও কর্মে এই বৈপরীত্য থাকবে, ততদিন এই জাতীয় দুর্দশা আর অপমান থেকে আমাদের মুক্তি মিলবে বলে আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে না।বাঙালি সৃজনশীল আর পরিশ্রমীও, কিন্তু রাজনৈতিক অজ্ঞতাই আমাদেরকে জাতি হিসাবে মাথা তুলতে দিচ্ছে না। ইতিহাস স্বাক্ষি, বই খুলে দেখেন, যতদিন পর্যন্ত রাজনৈতিক বোধোদয় হয়নি ততদিন আমরা পরাজিতই ছিলাম, হয়েছি শোষিত।এ উপমহাদেশের ইতিহাস কিন্তু তাই-ই বলে।তাই প্রকৃত উন্নয়ন রাজনৈতিক অজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আসতে পারে না।রাজনৈতিকভাবে নতুন পঙ্গু করে দিতে দেশি এবং বিদেশী শুভাকাংখীদের টোপের মুখে নতুন প্রজন্ম। তাই রাজনীতি থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখে যদি ভাবেন, হালের গোদা ভারী হবে, তবে নেহাতই বোকার স্বর্গে বাস করছেন। তাই আসুন রাজনীতি নিয়ে আমরা মন খুলে আলোচনা করি, সত্যকে যুক্তির মানদণ্ড দিয়ে যাচাই করার মতন ঔদ্ধত্য দেখাই।নতুন পুরাতনের মধ্যে সেতু বন্ধনে নিবেদিত হই। বিপরীত মতের সাথে সহাবস্থানের সুচর্চায় মেতে উঠি। খারাপকে খারাপ বলি তা সে যে দলেরই হোক।আমাদের রাজনৈতিক সচেতনতাই পারে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে। বাস্তবায়ন করতে আমার দেশের সেই শহীদদের স্বপ্ন- একটি ক্ষুধা আর দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ যেখানে সাম্য, আর সুবিচারই হবে মানুষের মূল্যায়নের মাপকাঠি। তাই আসুন নিজে রাজনৈতিকভাবে সচেতন হই এবং নতুন প্রজন্মকেও সচেতন করে তুলি, অন্ধ আনুগত্যে নয়-চিন্তা আর যুক্তির বিশালতায়।