নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। আমার ইচ্ছে করে একটা সুন্দর স্বপ্নের বাংলাদেশের ছবি আঁকতে, পাখির মতো উড়তে আবার কখনও রেলস্টেশনের মেঝেতে শুয়ে থাকা মানুষটি হতে। কখনও ইচ্ছে করে কোন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত নগরীতে শান্তির যোদ্ধা হতে। ভাল লাগে একা থাকতে।

অভিরাম কর্মকার

আমি হলাম তারকাঁটা, নই রক্তজবা ফুল //// আমি সেই পথের মাঝে, তুই করবি যেথায় ভুল।।

অভিরাম কর্মকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যাচেলর লাইফ

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০১

মানুষ যখন তার চারপাশটাকে বুঝতে শিখে তখন থেকেই দুঃখ-কষ্ট তার সঙ্গী হতে থাকে। একটা সময় এদের পরিমানটা অসম্ভব মাত্রায় বেড়ে যায়। যদিও এটাই তার সফলতার প্রথম ধাপ তবুও তখন টিকে থাকাটাই একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁডায়। A. P. J. Abdul Kalam said- Man needs his difficulties because they are necessary to enjoy success.

অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে উঠেছি। জীবনের ভয়াবহ বাস্তবতার সম্মূখীন হয়েছি। চারিদিকে শুধু নাই আর নাই। অভাবটা যেন নিত্য সঙ্গী। প্রতিটা মুহুর্ত যেন নরক যন্ত্রনা। পরিকল্পনা অনুযায়ি কিচ্ছু হয় না। বিষাদটা খুব আপন হয়ে আটকে আছে। কিন্তু তবুও আমাকে বাচতে হবে। আমার দিকে তাকিয়ে থাকা মানুষ গুলোর জন্যে আমায় বাচতে হবে। যেখানে আশাই একমাত্র ভরসা।

মাস শেষে পাওয়া টিউশনির তিন হাজার টাকা হিসাব-নিকাশ করে মাসের ২০-২২ তারিখের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। বাকি সময়টা? কান্না করব? লাভ কি? মরে যাব? বাকি সবার কি হবে যারা আমার দিকে চেয়ে আছে তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে? কেউ দিবে? কে দিবে? জীবনটাকে চালিয়ে নেয়া এত সহজ না। সমাধান সেটাও সহজ কোন বিষয় না। তবুও টিকে থাকতে হয় আমার।

খাওয়া, চাকরির পরীক্ষার জন্যে ঢাকায় যাওয়া, চাকরির বই কেনা আরও কত কি। ৫০০ বা ১০০০ টাকা শর্ট পরলে ধার করারও উপায় নাই। কোথা থেকে দিব? পরের মাস যে তাহলে না খেয়ে থাকতে হবে। এদিকে টাকার চিন্তায় পরাশোনাও ঠিক মতো করতে পারি না। আবার যখন কষ্ট করে পরিক্ষা দিয়ে এসে শুনি প্রশ্ন আউট, চান্স পাওয়ার কোন সুযোগ নাই। কি যেন এক আজানা বুক ফাটা আর্তনাদ আমায় ঘিরে ধরে। কিন্তু আমার যে বাচতে হবে।

স্ট্যাটাস মিলিয়ে চলতে পারিনা তাই রুমেই কাটাই সারাটা দিন। কিন্তু আর কত দিন? অনার্স শেষ, মাস্টার্সও ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাবে। তখন কি করব? কোথায় থাকব? চাকরি না নিয়ে বাসায় যাওয়াটাও অসম্ভব। বাসার এত ঝামেলা দেখে আমার যে সাহায্য করতে ইচ্ছা হয়। কিন্তু উপায় কই? টাকা কই পাব? কষ্টটা যে তখন চরম পর্যায়ে চলে যায়। আর তাই বাসায় যাওয়াটা অধরাই থেকে যায়। জানিনা মুক্তি কোথায়।

ছোট বেলায় কত সপ্ন ছিল। এটা হব, ওটা হব। কিন্তু কিসের কি। বাস্তবতা যে এত কঠিন সেটা তো জানতাম না। সময়ের পালা বদলে সব আশাই যে সাগর পাড়ে গড়ে উঠা বালিঘর। চাকরি সে তো আজ সোনার হরিন। মামা, চাচা, খালা, খালু আর টাকার। আমার যে ডিগ্রি ছাড়া কিছুই নাই। তাহলে আমার কি হবে? হঠাৎ করেই ফোন আসে দোস্ত গতমাসে যে ১০০০ টাকা নিছিলি দিতে পারবি? এটাই জীবন, এটাই বাস্তবতা। According to Shakespeare- "When sorrows come, they come not single spies, but in battalions".

আজানা গন্তব্য আর বুকের মাঝে ধীরে ধীরে গড়ে উঠা কষ্ট আজ আমার একদমই ভাল লাগে না। মানুষ নাকি তার আসে পাশের দুঃখী মানুষটাকে দেখে শিক্ষা নেয়। কিন্তু তাদের দেখলে আমার কষ্টটা আরো বেড়ে যায়। মনে হয়, না হয় সবাই একটু সুখেই থাকতাম। তাতে কি সৃষ্টিকর্তার কোথাও কিছু কম পরতো?

বিলাসিতা কি(?) কোনদিনই বুঝতে পারিনি। বন্ধুদের কটাক্ষ করে বলা অনেক কথাই সয়ে গেছি। কষ্ট করেই বড় হয়েছি। কিন্তু আর কতদিন? সময়ের সাথে সাথে সবই আরো কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। আকড়ে ধরছে আমায়। দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার। আমি কি সত্যি বেচে আছি?

তারপরও পিছু্টানের কারণে টিকে থাকতেই হবে আমায়। যানিনা কবে একটা চাকরি পাব। ছিড়ে যাওয়া শার্ট আর জুতোকে বিদায় জানাতে পারব।

গল্পটা মোটামুটি আমাদের অধিকাংশ মানুষের জীবনের। তারপরও আমরা হাল ছাড়িনা। সপ্নের পাখনা যেন উড়তেই থাকে দিক-বেদিক। আসলে এটাই জীবন, আমাদের জীবনের সুখ এখানেই। এভাবেই এগিয়ে যেতে হবে। হাল ছাড়া যাবে না। বাস্তবতাকে বরন করতেই হবে। সাফল্য একদিন আসবেই।। P. B, Shelly said "Our sweetest songs are those that tell of saddest thought".

ওপাশ থেকে ফোন আসে। না এটা কোন ধার পাওয়া টাকা চাওয়ার জন্যে না। এটা আমার বেচে থাকার ফোন। প্রতিটা সময়ে আমায় সাপোর্ট দেয়া ফোন। আমায় আকড়ে ধরে রাখা ফোন। আমার ভরসা। আমার শান্তি। আমার ভালবাসার ফোন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.