নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ধবিশ্বাস নয়, যুক্তিতে বাঁচতে চাই

"জীবনবোধ মানুষকে তার রূপ-রস-রঙে ভরে তোলে কানায় কানায়, জীবনকে দেখবার প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গি তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৃথিবীটাকে মোচড় দিয়ে বদলে দিতে চায়"

আবিদুল ইসলাম

আবিদুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজ্ঞাপনের ভাষা: সরকারী নীতিমালার অভাব এবং মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা

২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ৯:৫২

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে কোচিং ব্যবসায়ের অন্যতম অগ্রণী Saifur's-এর একটি বিজ্ঞাপন, যেখানে এই প্রতিষ্ঠানে Spoken, phonetics, writing ইত্যাদি কোর্স করার পর অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী পাত্রের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা দেখে তার কন্যা সন্তানকে বিয়ে করার বিষয়ে এক ব্যক্তির জবানে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে। এই ধরনের বিকারগ্রস্ত কিন্তু মনস্তাত্ত্বিকভাবে খুবই কার্যকর চটকদার বিজ্ঞাপনগুলোর বিষয়ে সচেতন দৃষ্টি ফেরানো প্রয়োজন। এ জাতীয় নিম্ন শ্রেণীর বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে Saifur's প্রায় এককভাবে অগ্রণী ভূমিকায় আছে। বর্তমানে আবার নতুন উপদ্রব হিসেবে শুরু হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া (ইউএসএ) নামক এক ভূঁইফোঁড় তথাকথিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রচার-সন্ত্রাস। এ বিষয়ে তাদের প্রচারণাও অনেকটা Saifur's-এর মতোই। ঔপনিবেশিক আবর্জনায় পূর্ণ চিন্তাভাবনাকে পুঁজি করে চালানো হচ্ছে অবাধ বাণিজ্য। এবং লক্ষণীয় যে এখানে ব্যবসায়টা সম্পূর্ণভাবে চলছে শিক্ষার একটি মাধ্যমের পণ্যায়ন ঘটিয়ে। Saifur's একটি কোচিং সেন্টার এবং ইউএসএ অ্যাকাডেমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও উভয়টিই শিক্ষার পণ্যায়নের ধারণাটাকে জোরদার করার জন্যই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বহুজাতিক প্রসাধনী দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন বর্ণবাদী চিন্তাকাঠামোর ওপর ভর করে তাদের পণ্যের প্রসার ঘটায় উপমহাদেশে, খাদ্য ও শিশু-খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যেমনিভাবে বিভ্রান্তিকর এবং অতিরঞ্জিত তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মনোজগতে প্রভুত্ব এবং ব্র্যান্ড-বিশ্বস্ততার একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত করে, ছবির এই প্রতিষ্ঠানটিও তেমনি চরম ছ্যাঁচড়ামিপূর্ণ কথাবার্তার মাধ্যমে সস্তা জনপ্রিয়তার ওপর দাঁড়িয়ে ঘটিয়ে চলেছে তাদের 'পণ্য' গ্রাহকের বিস্তৃতি।



বাংলাদেশে বিজ্ঞাপন সম্প্রচার এবং এইসব বিজ্ঞাপনে কী ধরনের ভাষা ও তথ্য ব্যবহৃত হবে সে বিষয়ে সরকারের কোনো নীতিমালা নেই। বোধহয় এ জাতীয় কোনো কিছুর অস্তিত্বের প্রয়োজনও তারা অনুভব করে না। এই সুযোগে Fair & Lovely, Horlicks, Complan, Saifur's-এর মতো আরো অজস্র দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদক বিজ্ঞাপনের বাতাবরণে ধাপ্পাবাজিপূর্ণ, মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, বর্ণবাদী, বস্তাপঁচা, ঘিলুপঁচা বক্তব্য এবং ধারণার প্রচার ও প্রসার ঘটিয়ে যাচ্ছে অনেক দিন যাবত। বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক মহলেও এ বিষয়ে কোনো কথাবার্তা অথবা আলোচনা হতে শোনা যায় না। এসব বিষয়ে ছুঁৎমার্গ বজায় রেখে তারা স্বকীয় দুর্গের অভ্যন্তরে আভিজাত্যের শিরস্ত্রাণ পরিধান করে থাকেন। এই বিজ্ঞাপনগুলোতে ব্যবহৃত বক্তব্য এবং ভাষা যতোই চটুল, কপট, অশালীন অথবা বর্ণবিদ্বেষপূর্ণ হোক না কেন আমাদের শিশু-কিশোর-তরুণ-তরুণী সমাজের অভিভাবকদের এক রকম প্রশ্রয় এবং আদিখ্যেতা এগুলোকে কেন্দ্র করে লক্ষ করা যায়। যেহেতু পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় পণ্যায়নের সর্বোচ্চকরণের মধ্য দিয়েই বস্তু বা ধারণার সার্থকতা নির্ণীত হয় সেহেতু এই ঘৃণ্য প্রচারণার স্বরূপ উপলব্ধির প্রচেষ্টা অনুপস্থিত নাগরিক সমাজে। কিন্তু স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তা নিয়ে অগ্রসর হতে সক্ষম প্রগতিশীল কর্মীদের মধ্যে এ বিষয়ে স্থবিরতা কাম্য নয়। জ্বালাও-পোড়াও ধরনের আন্দোলন নয়, বরং মনস্তাত্ত্বিকভাবে এগুলো যেমন নিজেদের বিনষ্ট অধিকারে নিয়ে যাচ্ছে চেতনার অনাবাদি জমিন, তার বিপরীতে পাল্টা মতাদর্শিক লড়াই চালু হওয়া আজ নিতান্ত প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে এ সমাজে। এই লড়াইয়ের মশাল নিয়ে এগিয়ে আসার দাবি প্রগতিশীল তরুণ সমাজের কাছে।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:০২

শ্রীঘর বলেছেন: Onek onek din por ekta one of the best post porlam. Toy amago edu minister number kom dile master go upor vishon rag kore. Board ek dakaia nia shashay.

২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:০৫

বিপ্লব কান্তি বলেছেন: হুম , সমাজের চিন্তার প্রতিচ্ছবি

৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:১৫

আলতামাশ বলেছেন: +++

২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:১০

আবিদুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:২০

আয়না বাবা০০৭ বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট

২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:১০

আবিদুল ইসলাম বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ

৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:২৭

মাক্স বলেছেন: ১.জনসংখ্যা সমস্যা
২.বেকার সমস্যা
৩.পরিবেশ দূষন
৪.বিদ্যুত সমস্যা
৫.যানবাহন সংকট
.
.
.
.
.
.
বিজ্ঞাপন সমস্যা কত নাম্বারে যাইতে পারে বলে আপনার মনে হয়? তারচেয়ে বরং বিনুদন হিসাবে নেন।B-)B-)

২৬ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:৫০

আবিদুল ইসলাম বলেছেন: বিষয়টি বিনোদনের নয় কেবল। এটি শিক্ষা-সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট মানসকাঠামোকে টার্গেট করে পরিচালিত প্রচারণা, যা শিক্ষা-বিষয়ক ধারণাকে অত্যন্ত স্থূলভাবে বাজার ব্যভস্থার অঙ্গীভূত করে। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:১০

তোমোদাচি বলেছেন: সাইফুরসের বিজ্ঞাপন অনেক আগে থেকেই এমন, এইটা দেখার কেও নাই!
ইদানিং বনানীর এক প্রাইভেট ভার্সিটির বিজ্ঞাপন দেখলাম এটাকেও ছাড়িয়ে গেছে !
অবশ্য এসব বিজ্ঞাপন দেখেও যারা ঐ প্রতিষ্ঠানে যাবে সেটা তাদের রুচির ব্যাপার।
ফলাফল ও তেমন পাবে...

৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৩০

রিয়াদরকস্ বলেছেন: জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট। অ্যাড যারা বানায় আর যারা টাকার জন্য প্রচার করে সবাই সমান দোষী। যারা কিছু করবে তারাই লাভের ভাগীদার। কৌতুহল বশত সাইফুরসে ফোন দিয়েছিলাম এই অ্যাড নিয়ে কিছুদিন আগে। জনৈক কর্মকর্তা বললো এটা বাস্তব ঘটনা। প্রধান শিক্ষক মহোদয় নিজের হাতে একটা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। আমি বললাম অ্যাড যে দিয়েছেন উনার অনুমতি নিয়েছিলেন, উনি বললেন হ্যা।
বিয়ের কনেদের জন্য আলাদা একটা কোর্স খুললে ব্যবসা ভালো হবে, বলে লাইন কেটে দিলাম।

৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১২:৩৬

মির্জা৯৯৯ বলেছেন: সরকারের বিশেষ করে বিজ্ঞাপন গুলো যে সমস্ত তথ্য সরবরাহ করে তার উপর নজরদারি করা দরকার। যেমন ধরুন, আমের জুসের নামে যে পরিমান প্রতারনা এ দেশের মানুষের সাথে করা হচ্ছে তার একটা জবাব দিহিতা দরকার।

আবার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিৎ। কেননা, পুরো জাতি এগুলোর উপর নির্ভর করে।

আপনার চমৎকার লেখার জন্যে ধন্যবাদ।

২৬ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:৫৪

আবিদুল ইসলাম বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনি ঠিকই বলেছেন, যদিও বেশ সংক্ষেপে কিন্তু আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করছি।

৯| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:২১

রায়হান রবিন বলেছেন: দরকার তো অনেক কিছুরই। সবার শুরুতে দরকার নীতিমালা প্রয়োগে নীতিমালা!!
আর Saifurs তো পুরাই ক্যানভাসার টাইপ বিজ্ঞাপন দিতে অভ্যস্ত।

১০| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:০৪

ferdous বলেছেন: সাইফুরসের বিজ্ঞাপন অনেক আগে থেকেই এমন, এইটা দেখার কেও নাই!

১১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:০৯

মেলবোর্ন বলেছেন: মানুষরে কি আবাল পাইছে, যে ছেলে অস্ট্রেলিয়াতে আসছে তাদের ৯৯.৯৯% পড়ার জন্য তার মানে এসব ছেলেরা বোকা নয়, আর বিয়ের জন্য ইংলিশ জানা মেয়ে পেলেই যে ঝাপায়া পড়বে তাইলে তো আমরা সবাই ইংলিশ মিডিয়ামের মেয়ে বিয়ে করতাম, আর সাইফুর্স ব্যক্কলরা এইটা জানে না যে অস্ট্রেলিয়াতে বউ আনলে গভারম্যান্ট থেকেই ৫০০ ঘন্টার ফ্রি ইংলিশ কোর্স করায় , যা স্টুডেন্টদের করতে লাগে ৩-৪ লাখ টাকার মত।

আমাদের ভবিশ্যত কি তবে এরকম "এই জানিস আই না সাইফুর্স থেকে আংলিশ ও ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া (ইউএসএ) বিব্বেএ কম্পিলিট করেছি এখন আমার বিদেশি বড় আর গাড়ি দুটোই আছে হুমম"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.