![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Even an ugly truth is better than a beautiful lie....
আজ থেকে বেশ কয় বছর আগে যখন প্রথম কানাডার উইন্ডসর শহরে গেলাম, তখন একটা রাস্তার নাম দেখে বেশ অবাক হয়েছিলাম। রাস্তাটার নাম “তেকুমসেহ” রোড।
(ছবি ইন্টারনেট)
এদেশে বেশিরভাগ রাস্তার নাম কিং /কুইন বা এই জাতীয়। সেখানে এরকম এব্রজিনাল ধরনের তেকুমসেহ রোড দেখে একটু অবাকই হয়েছিলাম। তখন জানতাম না এই কানাডিয়ানরা “তেকুমসেহ” নামের আদিবাসী বীরকে কি পরিমান শ্রদ্ধা করে। আসলে কানাডার জন্মের সাথেই তেকুমসেহ জড়িত। নাহলে হয়ত কানাডাকে আমেরিকার একটা স্টেট হিসাবে থাকতে হত কে জানে।
কানাডার রয়াল অন্টারিও মিউজিয়ামে তেকুমসেহর মূর্তি (ছবি ইন্টারনেট)
তেকুমসেহর জন্ম ১৭৬৮ সালে শাউনি ট্রাইবে। আদিবাসী নর্থ আমেরিকান বা রেড ইন্ডিয়ানদের মধ্যে অনেক ট্রাইব বা গোত্র ছিল যার মধ্যে একটি এই শাউনি। বর্তমান আমেরিকার ওহাইও, কেন্টাকি, ভার্জিনিয়া এলাকায় এদের আবাস ছিল। ভাষা ছিল “এলগনকুইয়ান” ( কানাডার অন্টারিওবাসীরা “এলগনকুইন পার্ক” এর কথা শুনে থাকবেন)।
তেকুমসেহর বাবা যার নাম পাকেশিনওয়া - ছিলেন শাইনির এক উপগোত্রের সেনাপতি।
সে সময় নর্থ আমেরিকা এক ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো। “নিউ ওয়ার্ল্ড” তৈরির প্রক্রিয়া চলছিলো, যার বলি হচ্ছিলো আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ানরা। ইউরোপ থেকে আসা রোগ বালাই যেমন গুটি বসন্তে গ্রামের পর গ্রাম উজার হয়ে যেত। এর মধ্যে ফ্রান্স আর ব্রিটেনের মধ্যে চলছিলো নর্থ আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দন্দ্ব।
যাইহোক, এর মধ্যে ১৭৬২ সালের পর মূলত ব্রিটেনের হাতে নর্থ আমেরিকার একচ্ছত্র আধিপত্য চলে গেল। ফ্রেঞ্চরা আর তেমন সুবিধা করতে পারল না। অথচ আদিবাসীদের অধিকাংশ ফ্রেঞ্চদের পক্ষে ছিলো।
১৭৭৪ সালে ভার্জিনিয়া মিলিশিয়া (যারা সে সময় ছিলো ব্রিটিশ কলোনিস্ট) দের সাথে আদিবাসী শাউনি-দের এক যুদ্ধ হয় ওহাইও রিভারের কাছে। যুদ্ধে তেকুমসেহর বাবা আহত ও পরে নিহত হয়।
তেকুমসের মা তখন ৬ মাসের অন্তঃস্ত্বা।
এর মাঝে নর্থ আমেরিকায় ছড়িয়ে গেলো “আমেরিকান রেভ্যলুশন”। ব্রিটিশ স্যাটেলার, যারা নর্থ আমেরিকায় ঘাটি গেড়েছিলো, তাদের কিছু অংশ বেকে বসল স্বয়ং ব্রিটিশদের তথা রাজা জর্জের বিরুদ্ধে।
আবারো বলছি, “ব্রিটিশ স্যাটালার” রা নর্থ আমেরিকায় ব্রিটেনের কর্তৃত্ব না মেনে হলো “দ্য প্যাট্রিয়টস”।
আর যেসব ব্রিটিশ স্যাটালার ব্রিটেনের প্রতি আনুগত্য বহাল রাখল তাদের বলা হয় “দ্য লয়ালিস্ট”।
বর্তমান আমেরিকা মুলত “প্যাট্রিয়টস”দের, আর কানাডা “লয়ালিস্ট”দের।
এমন পরিস্থিতিতে নর্থ আমেরিকায় রেভ্যুলুশন যুদ্ধে মূলত দুই পক্ষ হল এবার। ফেঞ্চরা ব্রিটিশদের বিপক্ষে যোগ দিল প্যাট্রিয়ট শিবিরে। আর শাউনি সহ বেশ কিছু আদিবাসী নর্থ আমেরিকান গোত্র তাদের ভূমি ফিরে পাবার আশায় যোগ দিল লয়ালিস্ট তথা “অরিজিনাল ব্রিটিশ”দের দলে।
শাউনি আর অন্যান্য রেড ইন্ডিয়ান গোত্রদের লয়ালিস্টদের সাথে দেখে প্যাট্রিয়টরা খুশি হল না। কেন্টাকি মিলিশিয়ারা এসে তেকুমসেহর গ্রাম পুড়িয়ে দিল। তেকুমসেহর পরিবার পালিয়ে আরেকটি গ্রামে গেলো। কিন্ত ১৭৮০ তে সেটাও পুড়িয়ে দেয়া হয়।
তেকুমসেহর বড় ভাই “চিসিকাও”, তখন তাদের উপগোত্রের যুদ্ধ সেনাপতি। চিসিকাও এর কাছে তেকুমসেহ যুদ্ধ আর শিকারে শিক্ষা নিতে শুরু করে। কথিত আছে শুধুমাত্র একটা তীর আর ধনুক দিয়ে ১৬ টি বাইসন শিকার করেছিলেন তেকুমসেহ।
যুদ্ধে অপ্রতুল অস্ত্রশস্ত্রের কারনে শাউনিদের মূল ট্যাকটিস হয়ে উঠল হিট-এন্ড রান। তেকুমসেহ আর তার ভাই চিসিকাউ আমেরিকান কলোনিস্টদের বিরুদ্ধে এমন অনেক ছোট খাট যুদ্ধে জড়াতে লাগল।
এরইমধ্যে ভিশনারি তেকুমসেহ বুঝতে পারল, সব গোত্র এক না হতে পারলে আমেরিকানদের এক্সপানশনের বিরুদ্ধে টিকে থাকা সম্ভব হবে না। কারন অনেক গোত্রই নিজেদের ভূমি আমেরিকানদের কাছে বেঁচে দিচ্ছিলো, যার প্রভাব পড়ছিলো অন্য গোত্রদের উপরও। কাজের টিকতে হলে নিজের গোত্রের আগে সব গোত্রের স্বার্থ দেখতে হবে । এককথায় “ন্যাটিভ’স ফার্স্ট”।
এভাবে তেকুমসেহ স্বপ্ন দেখা শুরু করল একটি “ইউনাইটেড ইন্ডেপেন্ডেন্ট ন্যাটিভ নেশন” - যেখানে ভূমি কোনো ইন্ডিভিজুয়াল গোত্রের কাছে নয়, থাকবে শাউনি,চেরোকি, ডালাওয়ার সহ সব গোত্রের জন্য।
আজকে আপাতত এই পর্যন্তই। দ্বিতীয় পর্বে আশা করি তেকুমসেহর স্বপ্নের পরিসমাপ্তির অংশ বলতে পারব।
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:৩২
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ২ পর্বের অপেক্ষায়। +++
৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: আবার কানাডার লোকজন আমাদের দেশে এলে আমাদের নাম ধাম দেখে অবাক হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৫:৩৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: জানলাম