নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার ওপর মানুষ সত্য

আবু আফিয়া

আবু আফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাষ্ট্রকে সবার মৌলিক অধিকার দিতে হবে

০৩ রা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২৪

রাষ্ট্রকে সবার মৌলিক অধিকার দিতে হবে


সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খতমে নবুয়ত সংগঠনের পক্ষ থেকে আবারও আহমদিয়া মুসলিম জামাতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে সম্মেলন, পোস্টার বা মাইকযোগে 'কাদিয়ানীদের সকল অপতৎপরতা নিষিদ্ধ এবং তাদেরকে সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা হোক'- এই দাবি জানিয়ে আসছে। খতমে নবুয়তের দাবি হচ্ছে মহানবীকে (সা.) শেষ নবী হিসেবে আহমদিয়ারা মানেন না, তাই তারা মুসলমান নয়, এ জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদেরকে অমুসলমান ঘোষণা করতে হবে।

অথচ আহমদিয়া সম্প্রদায় মুসলিম কি-না এবং মহানবীকে (সা.) শেষ নবী হিসেবে মানে কি না এ বিষয়টির সুরাহা অনেক পূর্বেই হয়ে গেছে। এদেশে আহমদিয়া জামাতের বিরোধিতা যখন তুঙ্গে তখনই আহমদিয়াদের পক্ষ থেকে একাধিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানানো হয়েছে তাদের ধর্ম বিশ্বাস কী?

সে সময়ে তারা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, 'আমরা ঈমান রাখি, খোদাতায়ালা ছাড়া কোন মাবুদ নাই এবং সৈয়্যদনা হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) আল্লাহর রসূল ও খাতামুল আম্বিয়া। আমরা ঈমান রাখি, ফিরিশতা, হাশর, জান্নাত এবং জাহান্নাম সত্য এবং আমরা আরও ঈমান রাখি, কোরআন শরীফে আল্লাহতায়ালা যা বলেছেন এবং আমাদের নবী (সা.) থেকে যা বর্ণীত হয়েছে উল্লিখিত বর্ণনানুসারে তা সবই সত্য। আমরা আরও ঈমান রাখি, যে ব্যক্তি এই ইসলামী শরীয়ত থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হয় অথবা যে বিষয়গুলো অবশ্য করণীয় বলে নির্ধারিত তা পরিত্যাগ করে এবং অবৈধ বস্তুকে বৈধকরণের ভিত্তি স্থাপন করে সে ব্যক্তি বেঈমান এবং ইসলাম বিরোধী। আমি আমার জামাতকে উপদেশ দিচ্ছি তারা যেন বিশুদ্ধ অন্তরে পবিত্র কলেমা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ'-এর প্রতি ঈমান রাখে এবং এই ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করে (আইয়্যামুস সুলেহ পুস্তক, পৃষ্ঠা, ৮৭)।

এ ছাড়া খতমে নবুওত প্রসঙ্গে আহমদিয়ারা তাদের প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে বলেন, 'আমাদের বিরুদ্ধে খতমে নবুওত না মানার মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। খতমে নবুওত সম্বন্ধে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন 'খাতামান নবীঈন'। আরবি ভাষায় 'খাতাম' শব্দের যত অর্থ আছে সব অর্থেই আমরা মহনবী (সা.)-কে 'খাতামান নবীঈন' বলে মান্য করি। সর্বশেষ শরীয়ত-বাহক নবী হিসেবেও তিনি 'শেষ নবী' আর নবুওতের উৎকর্ষের শেষ মার্গ অর্জনকারী হিসেবেও তিনিই 'শেষ নবী'। আমরা 'খাতামান নবীঈন' উপাধির সেই একই ব্যাখ্যা মান্য করি যা উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করে গেছেন। দেওবন্দী মাদ্রাসা ও মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা, উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা মুহাম্মদ কাসেম নানুতবী সাহেব 'খতমে নবুওতের' যে বিশ্লেষণ প্রদান করেছেন তার সাথে আমরা সম্পূর্ণ একমত। আমরা কলেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাত তথা ইসলামের সব মৌলিক শিক্ষা মানি ও পালন করার চেষ্টা করি। কেবল তাই নয়, সারা পৃথিবীতে শুধু আমরাই এক খলীফার নেতৃত্বে ইসলাম প্রচারে রত আছি এবং বিপুল সংখ্যায় অ-মুসলমানকে মুসলামান বানানোর সৌভাগ্য লাভ করছি।

আমাদের সাথে অন্যান্য মুসলমানদের পার্থক্য কেবল মহানবীর (সা.) একটি ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতাকে কেন্দ্র করে। মহনবী (সা.) বলে গেছেন, শেষ যুগে মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সারা পৃথিবীতে ইসলামের চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে রসুলুল্লাহর উম্মতে এক মহান নেতা 'ইমাম মাহদী (আ.)'-এর আবির্ভাব ঘটবে। আহমদি মুসলমানরা বিশ্বাস করে, রসুল করিম (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী সেই প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী ইতোমধ্যে আবির্ভূত হয়ে পরলোকবরণ করেছেন। তার পবিত্র নাম হজরত মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ.)। আর অন্যান্য মুসলমানরা বিশ্বাস করেন ইমাম মাহদী (আ.) আসবেন ঠিকই কিন্তু এখনও আসেন নাই। একদল বলছেন, হজরত ইমাম মাহদী (আ.) এসে গেছেন আর অন্য দল বলছেন এখনও আসেন নাই। বিষয়টি এতটুকুই (জনকণ্ঠ, ৮/০১/০৪ প্রথম পৃষ্ঠা ও মানবজমিন, ৯/০১/০৪ প্রথম পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য)।
জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনটি থেকে স্পষ্ট হয়, আহমদিয়া জামাত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ শরীয়তদাতা নবী হিসেবে মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন। আর এমনটাই আহমদিয়া জামাতের বিভিন্ন বই-পুস্তকে দেখা যায়।

এছাড়া এ বিষয়টি সম্পর্কে আহমদিয়া জামাতের মুবাল্লেগ ইনচার্জ মাওলানা আব্দুল আউয়াল খান চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো মহানবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) ছাড়া অন্য কাউকে আমরা 'খাতামান নবীঈন' বা 'খাতামুল আম্বিয়া' বলে বিশ্বাস করি না। একমাত্র হযরত মুহাম্মদ রসূলুল্লাহ (সা.) হলেন 'খাতামান নবীঈন' যার আধ্যাত্মিক পরশ পেয়ে আহমদীয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আ.) আল্লাহর নৈকট্য লাভের সৌভাগ্য পেয়েছেন।'

অনেক পূর্বেই যেখানে আহমদিয়া জামাতের ধর্ম বিশ্বাস সম্পর্কে খোলাসা করা হয়েছে সেখানে আবার কেন তাদেরকে সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোঘণা করার দাবি জানিয়ে জনমনে বিভেধ সৃষ্টি করছে বিষয়টি বোধগম্য নয়। এতে কী খতমে নবুয়ত সংগঠনের লোকেরা পুনরায় দেশে উগ্রমৌলবাদীদের মাথাচাড়া দেয়ার প্রবণতাকে উস্কে দিচ্ছে না?
একটি রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, যারা ধর্মের নামে অধর্ম করে সমাজ ও দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আহমদী, অআহমদী, আস্তিক-নাস্তিক, বিধর্মী সবাই এদেশের নাগরিক, রাষ্ট্রকে সবার মৌলিক অধিকার দিতে হবে।

http://www.jaijaidinbd.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=03-05-2018&type=single&pub_no=2242&cat_id=1&menu_id=19&news_type_id=1&index=4

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯

প্রামানিক বলেছেন: বিশৃংখলাকারী না হলে সবাইকে মৌলিক অধিকার দেয়া দরকার।

০৩ রা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৩

আবু আফিয়া বলেছেন: যথার্থই বলেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.