নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী আমি ইসলামী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা লেখি করি

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী

লেখক, দ্বায়ী, এক্টিভিস্ট

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আকীদা সংশ্লিষ্ট শাখাগত মতবৈচিত্র ও তানজিমের দৃষ্টিভঙ্গি

০২ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৫৮




আকীদা সংশ্লিষ্ট শাখাগত মতবৈচিত্র ও তানজিমের দৃষ্টিভঙ্গি
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
তানজিম কায়িদাতিল জিহাদ সকল বিষয়ে পরিপূর্ণভাবে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর আদর্শ লালন করে।
-
যেসব শাখাগত বিষয়ে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর মাঝে একাধিক হক্বপন্থী মাজহাব মাসলাক ও মানহ|জ রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে সবগুলোকেই আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত মনে করে। নির্দিষ্ট কোনো একটি মাসলাককে পৃথিবীর সকল মুসলমানের উপর চাপিয়ে দেওয়ার মতাদর্শ লালন করে না। বরং শরীয়াহর গণ্ডির ভিতর থেকে প্রত্যেক অঞ্চলের মানুষ নিজ নিজ অঞ্চলে প্রচলিত মাজহাব মাসলাকের অনুসরণ করাকেই অধিক উত্তম ও নিরাপদ মনে করে।
-
এ মূলনীতি ফিকহের ম|জ*হ|বগুলোর ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য তেমনি অ|'কী'দ|র শাখাগত ম|জ*হ|বগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। হানাফী, শাফিয়ী, মালিকী, হাম্বলী সবগুলো ম|জ*হ|বই অ|হলুস সুন্ন|হর অন্তর্গত ম|জ*হ|ব। ঠিক তেমনি অ|'কী'দ|র ফুরুঈ বিষয়গুলোতেও আশআরী, মাতুরিদী এবং আছারী ধারা সবগুলোই অ|হলুস সুন্ন|হর অন্তর্ভুক্ত ম|স'ল|ক।
-
তাই অ|ল*ক|য়েদ| নির্দিষ্ট কোন ম|স'ল|ককে অফিসিয়াল ম|জ*হ|ব হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বাকিগুলোকে খারিজ করে দেয়নি। ‘অমুক ম|স'ল|কের অনুসারী না হলে তাকে ত|ন*জি&মে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না বা ত|ন*জি&মে থাকতে দেয়া হবে না’ - এমন কোনো ঘোষণাও কখনো দেয়নি।
-
মনে রাখতে হবে: জাহমিয়া, মুআত্তিলা, মুতাজিলা, মুজাসসিমারা অ|হলুস সুন্ন|হর অন্তর্ভুক্ত নয়। এদের ভ্রান্তির প্রতি অ|ল*ক|য়েদ| বিন্দুমাত্র সমর্থন বা সহানুভূতি রাখে না। পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে: আশআরী-মাতুরিদীদের উলামায়ে কেরামকে জাহমিয়া-মুরজিয়া-মুআত্তিলা সাব্যস্ত করা যেমন অন্যায়; একইভাবে আছারী ধারাকেও মুজাসসিমা, মুশাব্বিহা কিংবা হাশাবিয়্যাহ সাব্যস্ত করাও অন্যায়। তর্কে জেতার জন্য অ|হলুস সুন্নার কোন ম|জ*হ|বকে বাতিল ফিরকার নামে ডাকা শ;রী:য়তে বৈধ নয়। একই সঙ্গে অ|হলুস সুন্ন|হর অনুসারীরা খেয়াল রাখতে হবে- তারা যেন ওই বাতিল ফিরকাগুলোর মতামত দ্বারা পুরোপুরি কিংবা আংশিক প্রভাবিত না হন। তাদের প্রভাব এড়িয়ে তারা যেন পরিপূর্ণভাবে অ|হলুস সুন্ন|হর মতামতকেই লালন করেন।
-
অ|ল*ক|য়েদ| ত|লেঃব|নের হাতে বাইআতবদ্ধ একটি বৈশ্বিক জামাত। এর কর্মপরিধি সারা পৃথিবী জুড়ে। পৃথিবীর যে অঞ্চলে অ|হলুস সুন্ন|হ ওয়াল জামাআর যে ম|স'ল|কটি অধিক প্রসিদ্ধ ও প্রচলিত, সে অঞ্চলের মু-জ|/হি"দগণ সাধারণত সে ম|স'ল|কের অনুসরণ করবেন- এটিই স্বাভাবিক। শ;রী:য়াহ সমর্থিত আবহমান কাল ধরে চলে আসা ম|স'ল|ক পরিত্যাগ করে ভিন্ন একটি ম|স'ল|ক গ্রহণ করতে হবে- এমন কথা অ|ল*ক|য়েদ| কখনও বলে না।
-
হাঁ, কারো নিকট নিজ অঞ্চলে প্রচলিত অ|'কী'দ|র ম|স'ল|কের তুলনায় আহলে সুন্ন|হর অ|'কী'দ|র ভিন্ন ম|স'ল|ক দলিল ও শরয়ী উসূলের আলোকে অগ্রগণ্য মনে হলে ব্যক্তিগতভাবে সে তার অনুসরণ করতে পারে। কিন্তু অন্যের উপর নিজের মত চাপিয়ে দেয়া, এসব ফুরুয়ী বিষয় নিয়ে ফেতনা ও সংশয় সৃষ্টি করার অধিকার রাখে না।
-
মূলত বিশ্বব্যাপী খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার সং&গ্র|মে লিপ্ত কোনো ইসলামী আ"ন্দো"লনের জন্যই এমন সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি লালন করা উচিত নয় যে, ইজতিহাদী বিষয়ে কেবল একটি ম|জ*হ|বকে অফিসিয়াল মতাদর্শ বানিয়ে নিয়ে বাকি সকল ম|জ*হ|ব-ম|স'ল|ককে বাতিল করে দিবে। এ ধরনের পদক্ষেপ মুসলিম সমাজে গভীর সংকটের সৃষ্টি করে।
-
এ জন্যই খলিফা মানসুর যখন ইমাম মালেক রাহিমাহুল্লাহকে বলেছিলেন- "আমি সকল মুসলমানকে এই কিতাব (মুআত্তায়ে মালেক) অনুযায়ী চলার আদেশ দিতে চাই" তখন ইমাম মালেক রহিমাহুল্লাহ বলেছিলেন-
يا أمير المؤمنين، لا تفعل فإن الناس قد سبقت إليهم أقاويل وسمعوا أحاديث ورووا روايات وأخذ كل قوم بما سبق إليهم وعملوا به ودانوا به من اختلاف الناس أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم وغيرهم، وإن ردهم عما اعتقدوه شديد، فدع الناس وما هم عليه وما اختار كل أهل بلد لأنفسهم. –رواه الإمام ابن عبد البر بإسناده في جامع بيان العلم وفضله (1/ 533)
“হে আমিরুল মুমিনীন! আপনি এমনটা করবেন না। মানুষের নিকট বিভিন্ন মত আগেই পৌঁছেছে। তারা হাদীস শুনেছে, বিভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছে এবং সাহাবা-তাবেয়ীদের মতভেদ হতে প্রত্যেক জাতি ঐ মতটি গ্রহণ করেছে যা তাদের নিকট প্রথমে পৌঁছেছে এবং সে অনুযায়ী তারা আমল করেছে। এখন এ থেকে তাদেরকে ফিরানো কঠিন। তাই মানুষকে আপন অবস্থায় ছেড়ে দিন। যে অঞ্চলের মানুষ যে মত গ্রহণ করেছে তা অনুযায়ী আমল করতে দিন।” -জামিউ বয়ানিল ইলম: ১/৫৩৩
খলিফা তখন এই সংকল্প পরিত্যাগ করলেন।
-
অনেকের ধারণা ফিকহের শাখাগত বিষয়ে একাধিক হক ম|জ*হ|ব থাকলেও অ|'কী'দ|র শাখাগত বিষয়ে একটি ম|স'ল|কই সঠিক, বাকি সবাই বাতিল। অথচ এটি বাস্তবতার সম্পূর্ণ বিপরীত। অ|'কী'দ|র যেসব সূক্ষ্ম বিষয়ে একাধিক ম|জ*হ|ব তৈরী হয়েছে সেসব বিষয় যদি অকাট্য, কতয়ী, এবং মুহকাম হতো তাহলে একাধিক ম|জ*হ|ব তৈরীই হতো না। বিষয়গুলো শাখাগত, জন্নী এবং সূক্ষ্ম বলেই একাধিক ম|জ*হ|ব তৈরী হয়েছে। সাধারণ মুসলিমদের জন্য মৌলিক অ|'কী'দ|টুকুই যথেষ্ট, শাখাগত ওইসব মতভেদ জানা জরুরী না। দ্বীনের পথে সং&গ্র|মকারীদের জন্য এসব বিষয়ে লিপ্ত না হয়ে নিজেদের আসল কাজে ব্যস্ত থাকা উচিৎ। সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম যেমনিভাবে এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনো বিতর্কে লিপ্ত হননি- সেটিকেই ইসলামী আ"ন্দো"লনগুলো নিজেদের কর্মপন্থা বানানো উচিৎ। শায়খ উ;স|"ম| এবং শায়খ জ|"ওয়|"হিরির জীবন ও কর্মপন্থা আমাদেরকে এটাই শিখায়। এসব বিষয়কে তাঁরা কখনোও প্রশ্রয় দেননি। আর নির্দিষ্ট কোনো ম|জ*হ|বকে অফিসিয়াল ম|জ*হ|ব বানিয়ে বাকিদেরকে খারিজও করেননি। ফলে ত|লেঃব|ন-অ|ল*ক|য়েদ|র ছায়াতলে একই সময়ে হানাফী, শাফিয়ী, মালিকী, হাম্বলী এবং আশআরী-মাতুরিদী-আছারী সকল ঘরানার মুসলমান জি@হা/দ ফি-স|বিলিল্ল|হ জিম্মাদারী আদায় করেছেন।
-
আর অ|ল*ক|য়েদ| সমর্থক যেসকল উলামা এসব বিষয়ে কথা বলেছেন, কলম ধরেছেন: তো এসব বিষয়ে আলোচনা ও মতভেদ সালাফদের যামানা থেকেই চলে আসছে। আমরা সালাফদের মতভেদকে যেভাবে মূল্যায়ন করি, সমকালীনদের মতভেদকেও সেভাবেই মূল্যায়ন করা উচিৎ। এসব বিষয়কে অবলম্বন করে দলাদলী সৃষ্টি করা কখনও সালাফের তরিকা ছিল না।
-
যারা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন ক|য়েম করতে চান, সকল মুসলমানকে খেল|"ফতের সুশীতল ছায়াতলে একত্রিত করতে চান তাদের জন্য অ|হলুস সুন্ন|হ ওয়াল জামাআতের সকল ঘরানার প্রতি উদারতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বজায় রেখে এগিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.