নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী আমি ইসলামী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা লেখি করি

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী

লেখক, দ্বায়ী, এক্টিভিস্ট

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও || দ্বিতীয় পর্ব || ‘গণতন্ত্র মুসলিমদের যা ছিনিয়ে নিল পর্ব - ৫

০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৯



তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও

প্রিয় ভাইয়েরা!

সম্প্রতি পাকিস্তানে ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা ইসলামী জীবনাচারকে তার গোঁড়া থেকে উপড়ে ফেলছে এবং ইসলামের উপর সকল দিক থেকে আক্রমণ করে যাচ্ছে কিন্তু তাদের সম্মুখে আমাদের রাজনৈতিক দ্বীনি ভাইয়েরা মাথানত অবস্থায় নিজেদের পরিচ্ছন্নতা পেশ করছে! তারা ঐ সমস্ত ধর্মহীনদের সামনে এমনভাবে উজর-আপত্তি পেশ করে থাকে যে, নাউযুবিল্লাহ তাদের এই দ্বীনদারীর পরিচয় যেন মারাত্মক অপরাধের বিষয় যে, তাকে গোপন করার মাঝেই সফলতা নিহিত! তাদের প্রয়াস হচ্ছে: কিভাবে এই ধর্মনিরপেক্ষ ও দ্বীনের দুশমনেরা তাদেরকে নিজেদের পৃষ্ঠপোষক ভাববে অর্থাৎ যাদেরকে তাদের দাওয়াত দেয়া উচিত ছিল, যাদের অনিষ্টতাকে তাদের মুকাবিলা করা উচিত ছিল; আজ তারা তাদের থেকেই নিজেদের দাওয়াতকে লুকায়িত রাখে ও তাদের অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে এবং তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করাকে নিজেদের সফলতার পথ বলে বিবেচনা করে থাকে!! কিছুদিন পূর্বে এক দ্বীনি জামাতের প্রধানের কাছ থেকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান সাক্ষাৎকার গ্রহন করে। সাক্ষাৎ গ্রহনকারী প্রথমেই জিজ্ঞাসা করলেন: সেক্যুলারিজম তথা ধর্মনিরপেক্ষতা কি? তখন সেই মুততারাম এভাবে জবাব প্রদান করেন যে, আমার জনগণের সমস্যা ধর্মনিরপেক্ষতা নয়। বরং আমার জনগণের মৌলিক সমস্যা হচ্ছে: অসচ্ছলতা, বেকারত্ব এবং মৌলিক নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি থেকে বঞ্চিত হওয়া। হায় আল্লাহ! বিশ্বাস হচ্ছিল না যে, একজন দ্বীনি নেতা এমন কথা কিভাবে বলতে পারেন!!! একটি সময় এমন ছিল, যখন ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মহীনতার মোকাবিলা করাই দ্বীনি দলগুলোর প্রধান টার্গেট হত এবং তারা আল্লাহ তা‘আলা থেকে দুরত্ব অবলম্বন এবং দ্বীনের দুশমনদের এই ক্ষমতাকেই অসচ্ছলতা, বেকারত্ব ও নিরাপত্তাহীনতার মূল কারণ হিসাবে বিবেচনা করতেন। কিন্তু বর্তমানের অবস্থা দেখুন! স্বয়ং দ্বীনি দলগুলোর প্রধানরা পর্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষতাকে একটি সমস্যা বলতেও নারাজ! এই কারণেই উল্লেখিত নেতার কাছ থেকে যখন পাকিস্তানে বিদ্যমান সমস্যাগুলির সমাধান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন “আইনের শাসন, সম্পদের সুষম বন্টন এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ”!! বর্তমানে এই সমস্ত কথা-বার্তা সকল ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিই বলে থাকে। তাহলে এখন বলুন! দ্বীনি দল ও ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির উদ্দেশ্যের মাঝে আর কোন মৌলিক পার্থক্য বাকি থাকলো কি?!
.
ভাইয়েরা আমার!
আফসোস লাগে! কারণ, একটা সময় এমন ছিল যে, যখন ধর্মনিরপেক্ষবাদ ও ধর্মহীনতা খতম করাই আমাদের দ্বীনি দলগুলোর মূল টার্গেট হত। অথচ আজ এই গণতন্ত্রেরই ফলাফল যে, স্বয়ং আমাদের দ্বীনদার ভাইয়েরা ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের শিকারে পরিণত হওয়ার দৃশ্য সামনে আসছে। আরো আফসোসের কথা হচ্ছে; এ জাতীয় সকল চাটুকারিতা দ্বীনের নুসরতের নামে চলছে! এ জাতীয় সকল বাতিল রাজনীতির জন্য “দাওয়াতি মাসলাহাত”অর্থাৎ ‘দাওয়াতী স্বার্থ’ পরিভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে! অথচ বাস্তবতা হলো: যে মাসলাহাতের কথা এখানে বলা হচ্ছে, তার সাথে দ্বীনের কোন সম্পর্ক নেই!! এই স্থানে ‘তাফসীর ফি যিলালিল কুরআন’এর লেখক শহীদ মুফাসসির সায়্যিদ কুতুব রহ. এর কথা উদ্ধৃত করা ফায়েদা থেকে খালি হবে না, ইনশা আল্লাহ। তিনি শরীয়াহর সীমারেখা ও বিধিনিষেধ থেকে উর্ধ্বে উঠার এই দাওয়াতী মাসলাহাতের ব্যাপারে বলেন:
.
“দাওয়াতি মাসলাহাত”নামের এই পরিভাষা দাঈীর নিজস্ব অভিধান থেকে মুছে ফেলে দেয়া উচিত। কেননা, তার মাধ্যমেই শয়তান আত্রুমণ করে থাকে। তার মাধ্যমেই দাঈীকে ফাঁসানো ও অধ:পতিত করা হয়। তার মাধ্যমেই শয়তান তাকে দাওয়াত ও দ্বীনের ফায়েদার নামে প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং লাভের রাস্তা দেখায়। পরবর্তীতে “দাওয়াতি মাসলাহাত”এমন একটা মূর্তিতে পরিবর্তিত হয়ে যায় যে, ফলশ্রুতিতে দ্বীনদার ব্যক্তিরা তার আরাধনা/পূজা করা শুরু করে। আবার কখনো কখনো সে প্রকৃত দাওয়াত ও সুষ্পষ্ট মানহাযকে পর্যন্ত ভুলে যায়! দ্বীনের দাঈীদের জন্য আবশ্যক হলো: দ্বীনের এই দাওয়াত তার আসল তরীকার সাথে জুড়ে দেওয়া; যা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছে। তাদের উপর আরো আবশ্যক হলো: সে এই সুষ্পষ্ট মানহাযের উপর দৃঢ় থাকবে। তবে তাকে এ দিকে লক্ষ্য রাখার কোন প্রয়োজন নেই যে, তার দাওয়াতের ফলাফল কি হবে? তা এই জন্য যে, এই গণতন্ত্রের রাস্তায় চলার দ্বারা সবচাইতে আশংকাজনক বিষয় হলো: দাঈী এর দ্বারা দাওয়াতের সহীহ মানহায থেকে পথচ্যুত হয়। আর এই পথচ্যুতিই প্রকৃত ধ্বংসের কারণ হয়। চাই তা ছোট হোক বা বড় হোক অথবা অন্য যেকোন কারণেই হোক না কেন। কেননা, দাওয়াতের উপকারিতা ও অপকারিতা আল্লাহ তা‘আলার কব্জায়। তিনি কোন দাঈীকে এমন কোন উপকারিতা পৌছাঁনোর দায়িত্ব অর্পণ করেননি, যার হুকুম তিনি তাকে দেননি। বরং দাঈীকে আল্লাহ তা‘আলা একটি বিষয়েরই জিম্মাদার নিযুক্ত করেছেন এবং দায়িত্ব দিয়েছেন, সেটা হলো: দাওয়ার পথে সে যাতে প্রকৃত রাস্তা থেকে বিচ্যুত না হয়ে যায় এবং এক মূহুর্তের জন্যও যাতে প্রকৃত রাস্তা থেকে পৃথক না হয়ে যায়।”
.
প্রিয় ভাইয়েরা আমার!
গণতান্ত্রিক রাজনীতির সাথে জড়িত ভাইয়েরা নিজেদের এই যাত্রার ক্ষেত্রে কিছু উপকারিতার কথা বলে থাকেন এবং কতিপয় কীর্তিকলাপও উল্লেখ করে থাকেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা কি কীর্তিকলাপ! যদি ধরে নেয়াও হয় যে, তা কীর্তিকলাপ, তাহলে কি তার কারণ রাজনৈতিক নির্বাচন? এই বিষয়ের উপর সামনের পর্বে আলোচনা করা হবে, ইনশা আল্লাহ।
وآخر دعوانا أنِ الحمدُ للهِ ربِ العالمين .والسلامُ عليكم ورحمةُ اللهِ وبركاتُه.

টিকা –

ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সমীপে দরদমাখা আহবান
তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.