নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী আমি ইসলামী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা লেখি করি

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী

লেখক, দ্বায়ী, এক্টিভিস্ট

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী › বিস্তারিত পোস্টঃ

খেলাফতের ধারণার উৎস কী?

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৩৮


.
খেল|ফ'তের যে দর্শন, তার উৎস সরাসরি কুরআন মাজীদ।
.
আল্লাহ তা'আলা বলেন:
وَإِذۡ قَالَ رَبُّكَ لِلۡمَلَٰٓئِكَةِ إِنِّى جَاعِلٌ فِى ٱلۡأَرۡضِ خَلِيفَةًۖ
"এবং (সেই সময়ের বৃত্তান্ত শোন), যখন তোমার প্রতিপালক ফিরিশতাদেরকে বললেন, আমি পৃথিবীতে এক খলিফা বানাতে চাই।..." (সূরা বাক্বারা, ২:৩০)
.
আল্লাহ তা'আলা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টির আগে ফেরেশতাদের উদ্দেশ্যে কথাটি বলেছিলেন। খলিফা দ্বারা এখানে আদম আলাইহিস সালামই উদ্দেশ্য।
.
আমরা যদি বিভিন্ন তাফসিরগ্রন্থ তালাশ করি, তাহলে জানতে পারবো যে আয়াতটিতে খলিফা শব্দ দ্বারা কী অর্থ প্রকাশ পেয়েছে।
.
সাধারণভাবে খলিফা শব্দের অর্থ হতে পারে উত্তরসূরী বা প্রতিনিধি। কিন্তু উপরোক্ত আয়াতে আদম আলাইহিস সালামকে খলিফা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে আরো নির্দিষ্ট একটি অর্থে, যা হলো: আল্লাহর প্রতিনিধি, যিনি দুনিয়ার বুকে আল্লাহর শ|স"নব্যবস্থা কায়েম করবেন।
মূলত, মানবজাতির প্রত্যেক ব্যক্তিই বিল কুওয়্যাহ (পটেনশিয়ালি) আল্লাহর খলীফা। তবে যে ব্যক্তি আল্লাহর নাফরমানি করবে, সে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
.
আল্লাহ তা'আলা সমগ্র মানবজাতির সামনে সত্যের পয়গাম তুলে ধরেছেন। অতঃপর তাদেরকে এই স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন যে দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় তারা চাইলে আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করে নিতে পারে, আবার চাইলে অস্বীকৃতিও জানাতে পারে।
যারা অস্বীকৃতি জানাবে, যদিও তারা দুনিয়ার বুকে বেচে থাকার অধিকার হারাবে না, তারা একটা অধিকার ঠিকই হারাবে; তা হলো আল্লাহর খলিফা হওয়ার অধিকার। কেননা যে আল্লাহকে স্বীকার করে না, সে কিভাবে আল্লাহর প্রতিনিধি হয়ে তাঁর শ|স"ন কায়েম করবে?
.
মানবজগত ছাড়া অন্যান্য স্থানে আমরা আল্লাহর নিজাম বিনাবাধা ও বিনাবাক্যে কায়েম দেখতে পাই। শুধুমাত্র মানবজগতে আল্লাহর আইনকে আলাদাভাবে কায়েম করতে হয়, কারণ মানবজাতিকে আল্লাহ একটা স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন যে, সে কিছু ক্ষেত্রে আল্লাহর নাফরমানি করতে পারে। কিন্তু যারা আল্লাহর ফরমান মেনে চলতে আগ্রহী, তথা, যারা মুসলমান, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করে মানবজগতে তাঁরই বিধান কায়েম করা। কেননা, যিনি সকল জগতের স্রষ্টা ও পরিচালক, মানবজগতের জন্য তাঁর কানুনের চেয়ে উত্তম কানুন আর কার হতে পারে?
যদি এই ক্ষেত্রে মুসলিমগণ আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব না করেন, এবং দুনিয়াতে আল্লাহর বিধান কায়েম না করেন, তবে নাফরমানরা তাদের মানবমস্তিষ্কপ্রসূত ভ্রান্ত আইন কায়েম করে ফেলবে, যার মাধ্যমে শুধু মানবজগতেই না, বরং অন্যান্য জগতেও ফিতনা-ফাসাদের দুয়ার খুলে যাবে।
.
খলিফা কে?
.
এক কথায়, খলিফা হলেন আল্লাহর প্রতিনিধি, যিনি দুনিয়ার বুকে আল্লাহর সমস্ত আইন বাস্তবায়ন করবেন। এবং সম্ভাবনার দিক থেকে মুসলিমমাত্রই আল্লাহর খলীফা। তাই প্রত্যেক মুসলিমদের দায়িত্বই হচ্ছে তার সাধ্য অনুযায়ী আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করা।
স্বাভাবিকভাবেই, প্রত্যেক মুসলমান বিল কুওয়্যাহ (পটেনশিয়ালি) খলিফা হলেও যখন পৃথিবীর কোনো ভূখণ্ডে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের প্রশ্ন আসবে, সবাই একই সাথে নির্বাহী হতে পারবেন না। তখন মুসলিম জনগণে তাদের মধ্য থেকে একজন তাকওয়াবান ব্যক্তিকে প্রধান কার্যনির্বাহী হিসেবে নির্বাচন করবেন। এবং তিনিই হবেন খলীফাতিল মুসলিমীন, তথা, মুসলিমদের খলীফা।
.
খেল|ফ'তে আইনের উৎস - সার্বভৌমত্ব
.
আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার একটু গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হচ্ছে সার্বভৌমত্বের ধারণা। জাতিরাষ্ট্রসমূহে রাষ্ট্র নিজে এই ক্ষমতার অধিকারী। সার্বভৌমত্বের অধিকারী যিনি, তিনিই আইনের উৎস। যেমন, চিরাচরিত রাজতন্ত্রে, রাজার আদেশই আইন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে, রাজা হলেন সার্বভৌম শক্তি বা সার্বভৌমত্বের অধিকারী। আর গ/ণ.ত"ন্ত্রের ক্ষেত্রে জনগণের রায়ই আইন হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে জনগণই হলেন সার্বভৌম শক্তি বা সার্বভৌমত্বের অধিকারী।
.
ইসলামি জীবনব্যবস্থায় উপরের দুইটি চিত্রই শিরকে আকবর। কেননা, আদতে আল্লাহ তা'আলা ছাড়া কারোরই আইন দেওয়ার অধিকার নেই। খেল|ফ'ত ব্যবস্থায় খলিফা নির্বাহী মাত্র। তিনি কোনো আইন প্রনয়ণের অধিকার রাখেন না। তিনি শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করতে পারবেন; যে আইন কুরআন ও সুন্নাহ থেকে নির্গত।
.
আলোচনার এ পর্যায়ে এসে একটা প্রশ্ন অনেকের মনে উদয় হতে পারে: সকল বিষয়ের বিস্তারিত আইন তো কুরআন বা হাদিসে নেই। এসকল ক্ষেত্রে আইন জানা যাবে হবে কিরূপে?
.
এর উত্তর খুবই সহজ: কুরআন সুন্নাহর মূলনীতির আলোকে (শাখাগত বিষয়ের) আইন ইস্তিমবাত (উদঘাটন) করার দায়িত্বে রত থাকবেন একদল আহলে ইলম, যারা ইজতিহাদ করার বা ফাতওয়া প্রদান করার সামর্থ রাখেন। তাদের এই মজলিসের মাধ্যমে নিত্যনতুন সমস্যার সমাধানে আইন নির্গত করা হবে, সৃষ্টি নয়। খলীফাও এই মজলিসের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, তবে জরুরী নয়।
.
খেল|ফ'ত বনাম ই'ম|র'ত
.
ই'ম|র'ত শব্দটি কখনো কখনো খেল|ফ'ত শব্দের সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কারণ খেল|ফ'ত হল-সমগ্র উম্মাহর সর্বোচ্য নেতৃত্ব। খেল|ফ'তের অধীনস্থ আঞ্চলিক গভর্নরদেরকে আমীর/ওয়ালী এবং তাদের প্রশ|স"নকে ই'ম|র'ত/উলায়াত বলা হয়। আবার কোনো জায়গায় যদি ইসলামি শ|স"ন চালু থাকে, তবে খেল|ফ'ত হওয়ার সকল শর্ত পুরণ না হয় তাহলে সেটাকে ই'ম|র'ত বলা যেতে পারে। এর একটা উদাহরণ হতে পারে-আন্দালুসের ইসলামী শ|স"ন। যেহেতু ই সময়ে আব্বাসীরাই ছিলেন খলীফা, আর ওখানকার আমীরগণ কেন্দ্রীয় আব্বাসি খেল|ফ'তের অধীন ছিলেন না, আবার একই সময়ে দুইটা খেল|ফ'ত হতে পারেনা-তাই সে সময়ের উলামায়ে কেরাম আন্দালুসের ইসলামী শ|স"নব্যবস্থাকে ই'ম|র'ত বিবেচনা করলেও খেল|ফ'ত হিসেবে স্বীকৃতি দেননি।
.
সুতরাং আহলে ইলমদের পরিভাষাগত এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ই'ম|র'তকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়:
১. ই'ম|র'তে আম্মাহ
২. ই'ম|র'তে খাসসাহ
খেল|ফ'ত ব্যবস্থাকে বলা হয় ই'ম|র'তে আম্মাহ বা পুরো উম্মাহর সুপ্রীম লিডারশীপ। এবং এটি হচ্ছে রাজনীতির অঙ্গনে যেকোনো মুসলমানের চূড়ান্ত লক্ষ্য।
.
অপরদিকে, এই লক্ষ্য অর্জনের পথে একটা ধাপ হতে পারে ই'ম|র'তে খাসসাহ। ই'ম|র'তে খাসসাহ হচ্ছে এমন ভূখন্ড যেখানে ইসলামি আইন, তথা, শ;রী:য়ত কায়েম আছে; কিন্তু খেল|ফ'ত হওয়ার জন্য যেসকল শর্ত পূরণ করা জরুরী, তার সবকটি এখনো অর্জিত হয়নি।
.
কোনো একটা ব্যবস্থা সত্যিকার অর্থে খেল|ফ'ত হতে হলে তার জন্য কিছু আবশ্যক শর্ত রয়েছে। খেল|ফ'ত বা ই'ম|র'তে আম্মাহ কোনো ছেলেখেলার বিষয় নয় যে কোনো একটা রাষ্ট্রকে ঘোষণা করলেই তা খেল|ফ'ত হয়ে যাবে। ঠিক এ কারণেই দায়েশ বা আইসিস-এর দাবীকৃত খেল|ফ'তকে কোনো মুহাক্কিক আলেমই খেল|ফ'ত হিসেবে স্বীকৃতি দেননি।
.
খলিফা নির্বাচনের পদ্ধতি
.
খলিফা যেমন দুনিয়ার বুকে আল্লাহর আইন প্রয়োগকারী প্রতিনিধি, একইভাবে তিনি দুনিয়ার বুকে সকল মুসলিমেরও প্রতিনিধি। তাই খলিফা নির্বাচন করবেন মুসলিম আমজনতা। এটাই হচ্ছে সাধারণ কথা।
.
আল্লাহ তা'আলা খলিফা নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো একটি প্রক্রিয়াকে নির্দিষ্ট করে দেননি। একারণে উলামায়ে কেরাম বিভিন্ন পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেছেন।
খলিফা নির্বাচনের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি হলো-শুরা পদ্ধতি। উম্মাহর মাঝে জ্ঞানে-গুণে-ত্যাগে ও সততায় যারা উম্মাহর নেতৃস্থানীয় তাদেরকে "আহলুল হাল্ল ওয়াল আকদ" বলা হয়। খলিফা নির্বাচনে তাঁদের পরামর্শ জরুরী বিষয়। একই সঙ্গে সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও প্রিয়ভাজন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
.
আহলুল হল ওয়াল আকদের পরামর্শ সাপেক্ষে যোগ্য খলীফার নিয়োগ চূড়ান্ত করার তিনটি পদ্ধতির নজির রয়েছে খেল|ফ'তে রাশেদার সময়ে।
.
১। পূর্ববর্তী খলিফা পরবর্তী খলিফা নির্ধারণ করবেন।
২। পূর্ববর্তী খলিফা আহলুল হাল ওয়াল আকদ পর্যায়ের ব্যাক্তিদের একটি পরিষদ গঠন করে তাদেরকে পরবর্তী খলিফা নির্ধারণের জিম্মাদারি সোপর্দ করা।
৩। খলিফা যদি আগের দুটোর কোনোটাই না করেন, তাঁর মৃত্যুর পর আহলুল হাল ওয়াল আকদ পর্যায়ের ব্যক্তিগণ নতুন খলিফা নিয়োগ করবেন।
.
হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু সরাসরি একজন পরবর্তী খলিফা বা তাঁর উত্তরসূরী নির্বাচন করে যান। আর উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু পরবর্তী খলিফা নির্বাচনের জন্য আহলুল হাল ওয়াল আকদ সাহাবীদের একটি পরিষদ গঠন করে যান।
এখানে খেয়াল করা প্রয়োজন, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু সরাসরি তাঁর উত্তরসূরী নির্বাচন করলেও এর আগে অগ্রজ সাহাবীদের সাথে মাশওয়ারা করেছেন। অপরদিকে, উমর রাদিয়ল্লাহু আনহু যে পরিষদ গঠন করে গিয়েছিলেন, সেখানেও সাহাবীরা মাশওয়ারার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে পৌছার চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত, আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজ কাধে দায়িত্ব তুলে নেন এবং মদীনার ঘরে ঘরে গিয়ে মুসলমানদের মতামত গ্রহণ করার পর উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুকে খলিফা হিসেবে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করেন এবং সবাই তা মেনে নেন।
.
হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর শ|হ|'দ|তের পর পরিস্থিতি সামলানো এবং নেতৃত্ব শূণ্যতা পূরণের জন্য মদীনায় অবস্থানরত অধিকাংশ "আহলুল হাল ওয়াল আকদ" সাহাবীগণ আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে খলিফা হওয়ার প্রস্তাব দেন। সাধারণ মুসলিমদেরও ব্যপক ভালোবাসা ও সমর্থন ছিল আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর প্রতি। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন এ প্রস্তাবে সম্মত হয়ে খেল|ফ'তের জিম্মাদারী গ্রহণ করেন।
.
খলিফা নির্বাচনের জন্য আদর্শ তরীকা হিসেবে ধরা হয় যে, আহলে হাল্ল ওয়াল আকদ, বা প্রভাবশালী ও গুরুজনেরা মাশওয়ারার ভিত্তিতে মূলত খলিফা নির্বাচন করবেন, এবং এক্ষেত্রে মুসলমান জনগণের আম সম্মতি থাকবে।
এর বাইরে তাগাল্লুব বা জোর করে ক্ষমতা দখল করে নেওয়ার যে পদ্ধতি সেটা সুন্নাহ সম্মত নয়, তবে কেউ ক্ষমতা দখল করে যদি কুরান-সুন্নাহ দিয়ে শ|স"ন পরিচালনা করে তাহলে জনগণ তার আনুগত্য করবে।
.
খেল|ফ'ত প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি
.
খেল|ফ'তের আলোচনার এ পর্যায়ে সবার মনে একটা প্রশ্ন উদিত হতে পারে: এই মোবারক ব্যবস্থা কায়েম করার পদ্ধতি কী?
.
এর উত্তর বেশ লম্বা এবং জটিল। সংক্ষেপে বললে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিখিয়ে দেওয়া পদ্ধতিই হচ্ছে খেল|ফ'ত প্রতিষ্ঠার তরীকা, যার মধ্যে মৌলিক উপাদান হচ্ছে দাওয়াত এবং জি@হা/দ। এখানে দাওয়াতেরও যেমন কিছু ধাপ আছে, জি@হা/দেরও তেমন কিছু ধাপ রয়েছে। আর এ সকল ধাপের সর্বশেষ ধাপটি হচ্ছে কিতাল।
.
আল্লাহ তা'আলা বলেন:
وَقَٰتِلُوهُمۡ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتۡنَةٌ وَيَكُونَ ٱلدِّينُ لِلَّهِۖ
"তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাক, যতক্ষণ না ফিতনা খতম হয়ে যায় এবং দীন আল্লাহর হয়ে যায়।..." (সূরা বাক্বারাহ, ২:১৯৩)
.
খেল|ফ'ত সংক্রান্ত ওয়াদা ও ভবিষ্যতবাণী
.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসালামের পরেই ৩০ বছর পর্যন্ত খেল|ফ'তে রাশেদা দুনিয়ার বুকে বিদ্যমান ছিলো। তারপর যে খেল|ফ'তগুলো ছিলো, সেগুলো সামগ্রিকভাবে আদর্শ খেল|ফ'ত না হলেও ইসলামি হুকুম বাস্তবায়নে ছিলো বদ্ধপরিকর। এর মধ্যে কিছু তো মুসলিমদের সোনালী অধ্যায়। যেমনটি হয়েছিলো উমর ইবেন আব্দুল আজিজ রহমতুল্লাহি আলাইহি এর জমানায়।
.
হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, শেষ জমানায় আমরা আবারও খেল|ফ'তে রাশেদার অনুরূপ একটি খেল|ফ'ত দেখতে পারবো, ইনশাআল্লাহ। এই ভবিষ্যতবাণীর হাদিসটি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি:
تكون النبوة فيكم ما شاء الله أن تكون، ثم يرفعها الله إذا شاء أن يرفعها، ثم تكون خلافة على منهاج النبوة، فتكون ما شاء الله أن تكون، ثم يرفعها الله إذا شاء أن يرفعها، ثم تكون ملكاً عاضاً، فتكون ما شاء الله أن تكون، ثم يرفعها الله إذا شاء أن يرفعها، ثم تكون ملكاً جبريا، فتكون ما شاء الله أن تكون، ثم يرفعها إذا شاء أن يرفعها، ثم تكون خلافة على منهاج النبوة، ثم سكت
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : আল্লাহ যতদিন চাইবেন ততদিন তোমাদের মাঝে নুবুওয়্যাত বিদ্যমান থাকবে। অতঃপর আল্লাহ তাকে তুলে নেবেন, তারপর আল্লাহ যতদিন চাইবেন ততদিন নুবুয়্যাতের আদর্শ অনুজায়ী খিলাফত থাকবে, অতঃপর এমন এক সময় তাও উঠিয়ে নেবেন। তারপর প্রতিষ্ঠিত হবে দংশনকারী বাদশাহী, আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী তা যতদিন থাকার থাকবে, পরে এমন সময় তাকেও উঠিয়ে নেবেন। অতঃপর চেপে বসবে জবরদস্তিমূলক রাজত্ব। আল্লাহর ইচ্ছা যতদিন থাকার থাকবে, পরে তাকেও তুলে নেবেন। তারপর প্রতিষ্ঠিত হবে পুনরায় নুবুওয়্যাতের তরীকায় খিলাফত। এ পর্যন্ত বলার পর রসূল (সা.) নীরব হলেন। (মুসনাদে ইমাম আহমদ)
.
আমরা এও জানি সে সকল হাদিসের কথা যেখানে উল্লেখ আছে যে শেষ সময়ে মাহদির আগমন ঘটবে এবং তিনি হবে খলীফাতুল মুসলিমীন। এরপর আসবেন ঈসা ইবনে মরিয়ম আলাইহিস সালাম। অতঃপর তিনিই হবেন দুনিয়ার বুকে আল্লাহর খলীফা।
.
তাছাড়া, আমাদের জন্য রয়েছে আল্লাহ তা'আলার ওয়াদা:
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مِنكُمۡ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَيَسۡتَخۡلِفَنَّهُمۡ فِى ٱلۡأَرۡضِ كَمَا ٱسۡتَخۡلَفَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمۡ دِينَهُمُ ٱلَّذِى ٱرۡتَضَىٰ لَهُمۡ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّنۢ بَعۡدِ خَوۡفِهِمۡ أَمۡنًاۚ يَعۡبُدُونَنِى لَا يُشۡرِكُونَ بِى شَيۡئًاۚ وَمَن كَفَرَ بَعۡدَ ذَٰلِكَ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡفَٰسِقُونَ
"তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীতে নিজ খলিফা বানাবেন, যেমন খলিফা বানিয়েছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তাদের জন্য তিনি সেই দীনকে অবশ্যই প্রতিষ্ঠা দান করবেন, যে দীনকে তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তারা যে ভয়-ভীতির মধ্যে আছে, তার পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দান করবেন। তারা আমার ইবাদত করবে। আমার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। এরপরও যারা অকৃতজ্ঞতা করবে, তারাই অবাধ্য সাব্যস্ত হবে।" (সূরা নূর, ২৪:৫৫)
.
আর ওয়াদা পূরণে আল্লাহর চেয়ে সত্যবাদী কে আছেন?
.
আল্লাহ তা'আলা আমাদের তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন, যারা সঠিক পন্থায় আল্লাহর দ্বীন ও খেল|ফ'ত কায়েমে থাকবে সদাসচেষ্ট।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.