নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসর গ্রহনের পূর্ব পর্যন্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের বর্তমান বছরের তুলনায় পরের বছরে আয়ের পরিমান বাড়ে। তো একটা ক্যালকুলেশন থাকে। আজ থেকে দশ বছর পর আমি আরো বেশী টাকা আয় করব যা আমার তখনকার প্রয়োজনের তুলনা বেশী হবে তাহলে আমার ভবিষ্যতের আয় থেকে এখন কিছু খরচ করলে সমস্যা কোথায়?
প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা করে জমিয়ে বছর শেষে একটা স্মার্ট ফোন কেনা। স্মার্ট ফোন কোম্পানী বা কার্ড ব্যবসায়ী স্যালারি সার্টিফিকেটে/ট্রা্সজেকশন রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়ে অফার করল স্মার্ট ফোনের জন্য এক বছর অপেক্ষা করার দরকার নাই এখনই নিয়ে যান। মাসে মাসে ঐ দুই হাজার টাকা ইন্সটলমেন্ট দেন তাহলেই হবে। ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাস।
নভেম্বর ডিসেম্বর মাসের শীতে একটা ফ্যামেলি ট্যুর না দিলে কেমন হয়? কিন্তু এই মুহুতে নগদ টাকা নাই। ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাস আছে আমার এবং কার্ড ব্যবসায়ীদের। সামনে জানুয়ারী অথবা ফেব্রুয়ারীতে ইনটেন্সিভ বোনাস পাওয়া যাবে। কার্ডওয়ালারা অফার করল আমি লুফে নিলাম। একটা জম্পেষ ট্যুর হয়ে গেল। ছয় মাসের ইন্সট্রলমেন্টে লেভেল হয়ে গেল। ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাস।
একটা গাড়ি কিনতে চাই। টাকা জমাতে জমাতে জীবন শেষ করে বুইড়া বয়সে গাড়ী কিনে নিজের ইঞ্জিন আর চলে না। গাড়ী কোম্পানী অফার করল যা জামাচ্ছেন তাই ইন্সট্রলমেন্ট দেন। গাড়ী একটা নিয়ে যান। ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাস।
এমন হাজার হাজার লাখ লাখ উদহারন দেওয়া যায়। যে ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাস ভোগবাদ এবং পুঁজিবাদের ভিত্তি। অর্থনীতির চাকা বংবং করে ঘোরে এই ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাসে। এ বিশ্বাস না থাকলে কোম্পানীর ঐ স্মার্ট ফোন বিক্রি হত এক বছর পর, গাড়ীটা বিশ বছর পর আর বেড়ানো যাওয়া হত রির্টাডমেন্টের টাকায়। পৃথিবীর ২৫ শতাংশ মানুষের কাজই থাকত না। টাকার হাত বদল থেমে সারা পৃথিবীর অর্থনীতির চাকা থমকে যেত না বটে কিন্তু চলত অতি ধীরে।
সবকিছুই মোটের উপর ভালই চলছিল এ ভবিষ্যতের উপরে আস্থার জীবন। পশ্চিমা বিশ্বে এবং আমাদের দেশে শহুরে নাগরিকদের ইন্সট্রলমেন্ট কেন্দ্রিয় ভোগবাদ খারাপ ছিল না। জীবন যাত্রার মান বাড়ছিল। কিন্তু ভোগবাদী জীবনের চাহিদা পুরুন করতে করতে সঞ্চয়ের দিকে তেমন নজর দেওয়ার দরকার হয় নাই। ভবিষ্যতের উপর অগাথ বিশ্বাসের কারনে। যার ফলে সঞ্চয় করা হয় নাই তেমন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মানুষের এ ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাসে চিড় ধরানোর মত উল্লেখযোগ্য তেমন কোন ঘটনা ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে এ করোন ভাইরাসের মহামারী সারা পৃথিবীর মানুষের ভবিষ্যতের উপর বিশ্বাসকে চরম একটা ঝাকুনি দিয়েছে। কর্ম হারিয়েছে কোটি কোটি মানুষ। হঠাৎ করে আমরা আবিস্কার করেছি যে মাত্র তিন মাস চলবার মত সঞ্চয় আমরা করতে পারি নি। তাই ঢাকা ছাড়তে হচ্ছে অনেককে।
এ বিশ্বাস আবার ফিরে আসবে নিউ নরমাল পৃথিবীতে। তবে তখন অনেকেই ফিরতে পারবে না তার আগের কর্মস্থলে এ মহামারীতে বেঁচে থাকার পরও। আমার মত তথাকথিত স্বঘোসিত মধ্যবিত্তদের জীবন বোধকে তথা ভবিষ্যতের উপর এ বিশ্বাসকে হয়ত চিরতরে বদলে দেবে এ মহামারী। তবে বিশ্বাসটা কিন্তু থাকতেই হবে।
২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৬
আঁধার রাত বলেছেন: রাজিব ভাই আপনি ইতিবাচক শব্দ ব্যবহার করেছেন। দরিদ্র মানুষরা খুব খারাপ আছে।
২| ২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১:৪৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: জীবনের অনেক ধাক্কা অনেক সময় পরিণামে জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সাহায্য করে। কন্সিউমারইজমের খপ্পর থেকে সারা বিশ্বের মধ্যবিত্ত বের হতে পারছে না। এ এক নেশা যা আইন দিয়ে থামানো যায় না। অ্যামেরিকার মধ্যবিত্ত ৩ বা ৪ মাসের বেশী চাকরী ছাড়া থাকতে পারে না। ওদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র থেকে কিছু সাহায্য পাওয়া যায়। আমাদের দেশে যারা বেসরকারি চাকরিজীবী তাদের দেখার কেউ নাই। আসলে এবারে ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা হতভম্ব হয়ে গেছি। গত ১০০ বছরে এরকম দুর্যোগ সারা বিশ্ব জুড়ে আসে নাই।
৩| ২৫ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: যারা এতিদিন বলেছে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে আজ তারা কোথায়?
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: দরিদ্র মানুষেরা ভালো নেই।