![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])
অফিসে নওগাঁর এক ভদ্রলোক আছে, তার কাজের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। বন্ধের দিন যেখানে বউকে সময় দেবে, মা-বাবাকে সময় দেবে, দেখা যায় এদিনও সে বন্ধুদের নিয়ে দেশ উদ্ধারে নেমে যায়। এই পার্টি ওই পার্টি- একটা না একটা আছেই। দেখা গেল আমার বন্ধের দিনও সে মেরে দেয়। পরে অন্য সময় আমার বন্ধ নিতে হয়।
প্রথম দিকে অনেক সুযোগ দিলেও এখন আর দেই না। সরলতাকে দুর্বলতা হিসেবে নিয়েছে। তাই বলি দরকার আমারও আছে। এ কারণে দেখি মাঝেমধ্যে আমার ওপর রাগ থাকে। আমি পাত্তা দেই না। তার তো তার খাই বা পরি না। এত গুরুত্ব দেওয়ার কী আছে?
যাহোক, সে কিন্তু কাজে ফাঁকি দেয় খুব। অফিসে ৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে এক ঘণ্টা স্থির হয়ে বসে থাকে না। এই সিগারেট খেতে যায়, এই ক্যান্টিনে যায়। এটা-ওটা আছেই। আর সময় মতো তো অফিসে আসেই না।
এই যে এত ফাঁকিঝুঁকি দেয়, তাও কেউ কিছু বলে না। কেন বলে না, কারণটা ঠিক জানি না। তবে কর্তৃপক্ষের সাথে তার খুব খাতির। একসাথে সিগারেট খায়। অফিস শেষে আড্ডা দেয়। আর তৈলমর্দন তো আছেই। আমি আবার এসব পারি না। অফিসে আসি, চুপচাপ কাজকর্ম করি, দরকার পড়লে হয়তো আলাপসালাপ করি। অতঃপর চলে আসি।
এই অফিসে আরও অনেকেই আছে যারা চাকরি ছাড়ার নাম নেয় না। বছরের পর বছর এখানেই পড়ে আছে। সবার তো চেষ্টা থাকে ভালো বেতনে অন্য কোথাও যাওয়ার, আমি নিজেও চেষ্টা করি। অথচ এখানকার কেউ চেষ্টাই করে না। একেকজন সাত-আট বছর ধরে থেকে নিজের বাড়ির মতো করে ফেলছে।
আমি আসলে কোনো কাজেই আনুকুল্য পাই না। কোথাও কখনও পাইওনি। পাব কেমনে? তোষামোদি তো করতে পারি না। খেজুরে আলাপও করতে পারি না। নিজের সীমাবদ্ধতা বুঝি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। মরি স্বভাব তো যাবে না।
জীবনে একবারই আনুকুল্য পেয়েছিলাম। সে ঘটনাই বলব এখানে।
বোর্ডিংয়ে বসবাসের স্মৃতি
আরও প্রায় বিশ বছর আগের কথা। তখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়তাম। পরীক্ষায় ভালো করার উদ্দেশ্যে ঠিকমতো পড়ালেখা করতে উঠলাম বোর্ডিংয়ে। এলাকায় তখন বিদ্যুৎ ছিল না। হারিকেন জ্বালিয়ে রাতে পড়ালেখা করতাম আমরা।
করোসিন কিনে আনি। কিন্তু জায়গামতো থাকে না। কে জানি নিজের মনে করে নিয়ে যায়। ভারি বিপদ! বাপের অঢেল টাকাও নেই যে বিলাব। কী করি, কী করি নানান কথা ভাবছিলাম।
হঠাৎ মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চাপল। যা ভাবা, তাই কাজ।
রাতের বেলা সালিশ বসল। অপরাধ গুরুতর। কী অপরাধ? কেরোসিনের বোতলে প্রশ্রাব ভরে রেখেছে। কে করেছে এই কাজ?
দশম শ্রেণির বড় ভাইদের পাশে বসা ছিলাম। এক ভাইকে বললাম, কাজ তো আমি করছি। এখন কী হবে?
বড় ভাইয়েরা আমার মেজো বোনের সহপাঠী। আমাকে স্নেহ করতেন। একজন বললেন, স্বীকার করো। এর পর চুপ করে বসে থাকো। যা করার আমরা করছি।
ভয়ে ভয়ে আমি হাত উঠিয়ে বললাম, আমি করেছি।
শিক্ষকগণ তো মহা ক্ষ্যাপা। আজকে আমার খবর আছে। বড় ভাইয়েরা বললেন, রাতের বেলা ওর প্রশ্রাব চেপেছিল। একা বের হতে ভয় পাচ্ছিল। তাই ঘরেই বোতলে কাজ সেরে ফেলছে।
আমি চুপিচুপি বললাম, ভাই, আমি তো তেল চুরির প্রতিশোধ নিতে এই কাজ করেছি। মিথ্যে হয়ে গেল না?
একজন বললেন, চুপ যাও। এটা বললে পিটিয়ে পাছা লাল করে ফেলবে।
আমি চুপ। বড় ভাইদের আনুকুল্যে মুগ্ধ হলাম। এমন আনুকুল্য কেবল আর একজনই আমাকে দিতেন। তিনি আমার বড়ো বোন।
আজকাল অনেক পাতি নেতা শত অপকর্ম করে পার পেয়ে যায়। লোকজন দেখি তাদের সাফাইও গায়। যদিও বিরোধীদের সামান্য বিষয়কেও অসামান্য করে তোলে। অনেকে কাজে ফাঁকি দিয়েও পদোন্নতি পায়। প্রশংসিত হয়। আমি মাঝেমাঝে ভাবি এমন আনুকুল্য আমি পেলে জীবনে হয়তো ভালো কিছু করতে পারতাম।
জীবনে না পারলাম তোষামোদি করতে, না পেলাম আনুকুল্য। আফসোসে কেটে গেল জীবন।
ছবিঃ ইন্টারনেট
২১ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৩০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: তাড়াহুড়োয় শেষ করেছিলাম। আবার একটু যোগ করলাম।
২| ২০ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:১৬
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: খুব মজা পেলাম ।
২১ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৩০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বিষয়টা আসলে ছোটবেলার দুষ্টুমিই বলা যায়।
৩| ২১ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১:১৯
সুলাইমান হোসেন বলেছেন: ভালো লাগলো,স্মৃতি চারণ
২১ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১:২২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:২০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: খুব ভালো হয়েছে লেখা ।