![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গৃহকর্মে সুনিপুন স্বামী একজন নারীর জন্য ভাল নাকি খারাপ?
কার চোখ দিয়ে দেখা হচ্ছে সেইটা গুরত্বপূর্ণ। তবে গোশত আরেকটু কসানো লাগবে কিনা বা দেড় কেজি গোশতে তিন চামচ মরিচের গুড়া দেবে কি না তার এপ্রুভাল স্বামীর কাছ জানতে চাওয়া একটা ডিজাস্টার। ওই নারী ইতোমধ্যে অনেককিছুই হারিয়ে বসে আছে।
পুরুষ মানুষের হৃদপিন্ড থাকে তার পাকস্থলীতে। এই দূর্বলতাকে খুব শৈল্পিক অস্ত্র হিসেবে এবং বারগেনিং টুলস হিসেবে ব্যবহৃত হতে আমি দেখেছি।
সাংসারিক মতপার্থক্যের কারনে(ঝগড়া) কখনো কখনো স্ত্রী লোক রান্নাঘর ধর্মঘট করে থাকেন। এইটা একটা খুবই কার্যকর বার্গেনিং টুলস। রান্না জানা স্বামী সমস্যা সমাধানে আলোচনায় না গিয়ে ওভার ট্রাম করবে, ডাইরেক্ট ভাত, গরু ভুনা আর ডাল রান্না করে খেতে ডাকবে।
আপাত এমন স্বামীকে নিরীহ এবং অনেক ভাল স্বামী বলে মনে হতে পারে কিন্তু এমন স্বামী জাউরার জাউরা। হয়ত শাড়ী চুড়ি অলংকার বা কোন বস্তুগত চাওয়া নিয়ে আলোচনার অচলাবস্থার সময় অস্ত্র হিসেবে রান্না ঘরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এক্ষেত্রে স্ত্রীর রান্নাঘর ধর্মঘট যদি দ্বিতীয় প্রজন্মের মিসাইল হয় তবে সাংসারিক কর্মে সুনিপুন স্বামীর রান্না করে ফেলাটা এস-৪০০।
বুয়ার রান্না খেতে পারে না, মশারী টাঙ্গাতে পারে না, গ্লাসে পানিটাও ভরে খেতে পারে না বলে স্ত্রীলোকটি বাপের বাড়ি গিয়ে কয়টা দিন থাকতে পারে না। এ আক্ষেপ আমি কিছু নারীর কাছ থেকে জেনেছি।
আপত মনে হতে পারে যে এ না পারা গুলো খুব খারাপ। কিন্তু গভীর অর্ন্তদৃষ্টি দিয়ে দেখলে উপসংহার বদলে যাবে।
ধরি স্ত্রী লোকটি ১৫ দিন বাপের বাড়ি, গৃহকর্মে সুনিপুন স্বামী ঘর-দোর ধুয়ে মুছে গুছিয়ে রাখছে, ভালমন্দ রান্না করে খাচ্ছে, ফিল্টারে পানি দিচ্ছে, সেই পানি বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা নরমাল পানির সাথে মিশিয়ে পান করছে। নিয়ম করে ওষুধগুলো সেবন করছে। টিফিন ক্যারিয়ারে দুপুরের খাবার নিয়ে অফিসে যাচ্ছে। রাতের খাবারে মিল্কভিটার টুনি প্যাক। কেনো, কাটো, গরম করো, ঢকঢক করে পান করে খালি প্যাকেটটা বিনে চালান করে দেয়।
তার মানে স্বামী লোকটি কোন লজিস্টিক সার্পোটের জন্যই স্ত্রীর মুখাপেক্ষী না। আল্লাহর কসম, এমন স্বামী জাওরার জাওয়ার। হুমকি, ধামকি, ইমোশনাল ব্ল্যাক মেইল, নানা জাতের ধমঘট , কান্নাকাটি কোন কিছুইতেই আপনি আপনার ইচ্ছায় তাকে চালাতে পারবেন না। প্রমানিত সবগুলো মায়ার বাঁধন তার ক্ষেত্রে অকার্যকর। তাকে বাঁধতে বৃত্তের বাহির থেকে মায়ার দড়ি খুজে আনতে হবে যা সহজ নয়। আপনার প্রতিটি কাজের সমালোচনা শুনতে প্রস্তুত হন। তিনি হয়ত আরো দ্রুত আরো নিখুঁত ভাবে গৃহকর্ম করে প্রমান করে দেবেন গৃহকর্মে আপনার কাজের মান মধ্যম মানের চেয়ে নিচে।
তাই যে মা গুলো গৃহকর্মে অজ্ঞ, অর্থব পুত্র সন্তান বড় করে তুলতেছে তারা আখেরে অনাগত পুত্রবধুর জন্য একটা অনুগত স্বামী তৈরী করছেন খুব যতনে। যে স্বামী সাংসারিক প্রতিটি চাহিদার জন্য স্ত্রীর কাছে নির্ভরশীল. অধিকাংশ সময় সে স্বামী স্ত্রীর জন্য আর্শিবাদ। মায়ার বাঁধনে বেঁধে নিজের প্রয়োজনে পরিচালনা করার জন্য সহজলোভ্য ও প্রমানিত প্রতিটা টুলস তার ক্ষেত্রে কার্যকর।
তাই আমার মনেহয় গৃহকর্মে অনিপুন স্বামীই স্ত্রী লোকের জন্য উপকারী। কেবল শৈল্পিকভাবে পলাশসাহা হওয়া ঠেকালেই হবে। অবশ্য পলাশ সাহা সবাই হতে পারে না, অধিকাংশ সময় পলাশ সাহারা মায়ের শাসন থেকে স্ত্রীর শাসন তলে শীতল আশ্রয় খুঁজে নেয়। তারা স্ত্রী লোকের শাসনে বেঁচে থাকতে পছন্দ করে, সেটা মা হোক বা স্ত্রী।
তাই গৃহকর্মে অনিপুন এবং একান্ত ঠেকায় পড়লে গৃহকর্ম করে এমন স্বামীই স্ত্রীর জন্য আমার চোখ দিয়ে দেখে আমার মনে হয়েছে। কোন মহিলার চোখ দিয়ে দেখলে তিনি ভিন্ন দৃশ্যকল্প অবলোকন করবেন। সেটাই স্বাভাবিক।
©somewhere in net ltd.