![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কথোপকথন – ১১
– তুমি আজকাল বড্ড সিগারেট খাচ্ছ শুভন্কর।
– এখুনি ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছি…
কিন্তু তার বদলে??
–বড্ড হ্যাংলা। যেন খাওনি কখনো?
– খেয়েছি।
কিন্তু আমার খিদের কাছে সে সব নস্যি।
কলকাতাকে এক খাবলায় চিবিয়ে খেতে পারি আমি,
আকাশটাকে ওমলেটের মতো চিরে চিরে,
নক্ষত্রগুলোকে চিনেবাদামের মতো টুকটাক করে,
পাহাড়গুলোকে পাঁপর ভাজার মতো মড়মড়িয়ে,
আর গঙ্গা?
সে তো এক গ্লাস সরবত।
–থাক। খুব বীরপুরুষ।
–সত্যি তাই…
পৃথিবীর কাছে আমি এই রকমই ভয়ন্কর বিস্ফোরণ।
কেবল তোমার কাছে এলেই দুধের বালক,
কেবল তোমার কাছে এলেই ফুটপাতের নুলো ভিখারি,
এক পয়সা, আধ পয়সা কিংবা এক টুকরো পাউরুটির বেশী আর কিছু চিনিয়ে নিতে পারিনা।
–মিথ্যুক..।
–কেন?
–সেদিন আমার সর্বাঙ্গের শাড়ি ধরে টান মারনি?
– হতে পারে।
ভিখারিদের কি ডাকাত হতে ইচ্ছে করবে না একদিনও??
কথোপকথন - ১২
কাল বিকেলে
তোমার ঘাড়ে চিবুক রেখে প্রকাণ্ড
বাঘ কি খুঁজছিল
দেখতে পেলে?
-জানি জানি খুঁজছিল তার সুখের নদীর উৎস
এবং পারাপারের
শেষ পারানি
-সমস্ত রাত
নিজের বুকের পাথর খুড়ে বইয়েছে
কাল ক্ষতিকারক
জলপ্রপাত।
-লক্ষী সোনা,
আমি তোমার রৌদ্র ছায়ায় সর্বক্ষনই
সংগে হাটি
সমুদ্র তীর কষ্ট দিলে বিছোই বালির
শীতল পাটি
বুকের কাছে নেই তবুও তোমার
বুকেই বসতবাটি
ভুল কোরো না।
কথোপকথন –১৩
-তোমার মধ্যে অনন্তকাল বসবাসের ইচ্ছে
তোমার মধ্যেই জমিজমা ঘরবাড়ি, আপাতত একতলা
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?
-একতলা আমার এক বিন্দু পছন্দ নয়
সকাল সন্ধে চাঁদের সাথে গপ্পো গুজব হবে
তেমন উচু নাহলে আবার বাড়ি নাকি?
-আচ্ছা তাই হবে
চাঁদের গা ছুঁয়ে বাড়ি,
রহস্য উপন্যাসের মতো ঘোরানো প্যাচানো সিড়ি
বাঁকে বাঁকে সোনালী সাজানো স্বপ্নদৃশ্য
শিং সমেত মায়া হরিণের মুণ্ডু
হাসছো কেন ? বলো হাসছো কেন?
-কাটা হরিণ দেয়ালে ঝুলবে অসহ্য।
হরিণ থাকবে বনে বন থাকবে আমাদের,
খাট পালংকের চারধারে
খাট পালংকের নিচে ছোট্ট একটি পাহাড়
পাহাড়ের পেটচিরে ঝর্ণা।
-আচ্ছা তাই হবে
পাহাড় চিরে ঝর্ণা, ঝর্ণার উপরে কাশ্মিরী কার্পেট
সিলিং এ রাজস্থানী-ঝাড়ঝলে ঝাঝরীর মতো উপুর করা।
জানালার গায়ে মেঘ, মেঘের গায়ে ফুরফুরে আদ্দির
পাঞ্জাবী
পাঞ্জাবীর গায়ে লক্ষ্ণই চিকনের কাজ
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?
-মেঘ রোজ রোজ পাঞ্জাবী পরবে কেন?
এক একদিন পরবে বালুচরী কিংবা
খাটাও এর পাতলা প্রিন্ট
মাথায় বাগান-খোপা-খোপায় হীরের প্রজাপতি
-আচ্ছা তাই হবে।
মেঘ সাজবে জরি পাড় সাড়িতে
আর তখনই নহবতখানার সানাই এ জয়জয়ন্তী
আর তখনই অরণ্যের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বুনো জানোয়ারের হাকডাক।
খাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য জেগে উঠবে জলপ্রপাত
শিকারের জন্য তীর ধনুক, দামামা দুন্দুভি
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?
-তুমি এমন ভাবে বলছো
যেন ভালবাসা মানে সাপে নেউলো ভয়াভহ
একটা যুদ্ধ।
ভয় লাগছে
অন্য গল্প বলো।
কথোপকথন – ১৪
-দেখো অনন্তকাল ঝিঁ ঝিঁ পোকার মত
আমরা কথা বলছি
অথচ কোন কথাই শেষ হয় না এখনও।
একটা লাল গোলাপের কান্নার গল্প শোনাবে বলেছিলে
কবে বলবে?
-চলো উঠি। বড্ড গরম এখানে।
-দেখ, অনন্তকাল শুকনো বাঁশপাতার মতো
আমরা ঘুরছি
অখচ কেউ কাউকে ছুঁতে পারলাম না এখনও
একটা কালো হরিণকে কোজাগরী উপহার
দেওয়ার কথা ছিলো
কবে দেবে?
-চলো উঠি। বড্ড ঝড়ঝাপটা এখানে।
কথোপকথন – ১৫
তরমুজের বাইরে টা সবুজ
ভিতরটা লাল
আচ্ছা বলোতো, কেন মনে পড়লো কথাটা?
পারলে না?
তোমার সবুজ শাড়ির দিকে তাকিয়ে।
কথোপকথন – ১৭
—নন্দিনী, একটুখানি তো জল
অথচ ভাসাও স্রোতের কলস্বরে।
—তুমিও তো মিহি বাতাস, শুভঙ্কর
অথচ কী করে কাঁপাও সুখের ঝড়ে?
©somewhere in net ltd.