![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কথোপকথন – ২১
তোমাদের ওখানে এখন লোডশেডিং কি রকম?
-বোলো না। দিন নেই, রাত নেই, জ্বালিয়ে মারছে।
-তুমি তখন কী করো?
-দরজা খুলে দিই
জানালা খুলে দিই
র্প দা খুলে দিই।
আজকাল হাওয়াও হয়েছে তেমনি ফন্দিবাজ ।
যেমনি অন্ধকার, অমনি মানুষের ত্রিসীমানা ছেড়ে দৌড়
-তুমি তখন কি করো?
-গায়ে জামা-কাপড় রাখতে পারি না।
সব খুলে দিই,
চোখের চশমা, চুলের বিনুনি, বুকের আঁচল লাজ-লজ্জ্বা সব ।
-টাকা থাকলে তোমার নামে ঘাট বাঁধিয়ে দিতুম কাশী মিত্তিরে
এমন তোমার উথাল – পাতল দয়া।
তুমি অন্ধকারকে সর্ বস্ব, সব অগি্নস্ফুলিঙ্গ খুলে দিত পার কত সহজে।
আর শুভঙ্কর মেঘের মত একটু ঝুঁকলেই
কি হচ্ছে কি?
শুভঙ্কর তার খিদে- তেষ্টার ডালপালা নাড়লেই
কি হচ্ছে কি ?
শুভঙ্কর রোদে – পোড়া হরিণের জিভ নাড়লেই
কি হচ্ছে কি?
পরের জন্মে দশদিগন্তের অন্ধকার হব আমি।
'কথোপকথন –২২'
তেরোই জুলাই কথা দিয়েছিলে আসবে।
সেই মত আমি সাজিয়েছিলাম আকাশে
ব্যস্ত আলোর অজস্র নীল জোনাকি।
সেই মত আমি জানিয়েছিলাম নদীকে প্রস্তুত থেকো,
জলে যেন ছায়া না পড়ে মেঘ বা গাছের।
তেরোই জুলাই এলে না।
জ্বর হয়েছিল? বাড়িতে তো ছিল টেলিফোন
জানালে পারতে। থার্মোমিটার সাজতাম।
নীলিমাকে ছুঁয়ে পাখি হতো পরিতৃপ্ত।
কথোপকথন –২৩
-কাল তোমাকে ভেবেছি বহুবার
কাল ছিল আমার জন্ম দিন।
পরেছিলাম তোমারি দেওয়া হার ।
- আমার হার কি আমার চেয়েও বড়?
বালিকে তুমি বিলোলে আলিঙ্গন
সমুদ্রকে দিলে না কুটো খড়ও।
-বাতাস ছিল , বাতাসে ছিল পাখি
আকাশ ছিল , আকাশে ছিল চাঁদ
তাদের বললে, খবর দিত নাকি?
- আজ্ঞে মশাই বলেছিলাম তাও।
তারা বললে , ধুঁকছি লোডশেডিং-এ,
নড়তে-চড়তে পারবো না এক পাও।
- আমার কি দোষ ? ডেকেছি বহুবার
কিন্তু তোমার এমন টেলিফোন
ঘাটের মড়া। নেইকো কোনো সাড়া।
কথোপকথন-২৫
- হাত-ঘড়িটা কি ছোঁ মেরেছে গাংচিলে?
শকুন্তলার আংটির মত গিলেছে কি কোনো রাঘব
বোয়াল-টোয়াল?
- কেন?
আসবার কথা কখন, এখন এলে?
বসে আছি যেন যুগযুগান্ত, ভাঙা মন্দিরে উপুড়
শালগ্রাম।
চা খেলাম, খেয়ে সিগারেট, খেয়ে আবার - বেয়ারা,
কফি!
আর ঘড়ি দেখা, এবং যে-কোনো জুতোর
শব্দে চমকে চমকে ওঠা।
মনে হচ্ছিল অনন্তকাল প্রতীক্ষাটারও অন্য নাম
প্রেম।
- স্যরি, সত্যিই! কী করবো বল রাস্তায় যেন মাছি-
থকথকে ভিড়
তারপরে লাল মিছিলে মিছিলে লরীতে লরীতে সব
রাস্তাই বন্ধ্
তারপরে এই লু-হাঁকানো রোদ, কী যে বিচ্ছিরি!
জ্বলে-পুড়ে সব খাক্,
আকাশটার কি ব্যামো হল কিছু? আষাঢ় মাসেও
মেঘের কলসী ফাঁকা।
মনে হচ্ছিল শতাব্দী কেটে যাবে
তবু কোনদিন লেনিন
সরণি পারবে না যেতে শেক্পীয়রের কাছে।
তারপর জানো কাল সারারাত ঘুমোইনি, শুধু কেঁদে
কাঁদবো যে তারও সুখ কি কপালে আছে?
পাশে বোন শোয়, পিসীমা খাটের নীচে।
- হঠাৎ কান্না কেন?
তোমার একটা চিঠি সামহাউ পড়েছে বাবার হাতে।
বাবা গম্ভীর। তার মানে আজ কাল বা পরশু
ঘটবে বিস্ফোরণ।
পুরে দেওয়া হবে বিধিনিষেধের গোল গন্ডীর
ভিতরে হ্যাঁচকা টানে।
- যা অনিবার্য, দ্রুত ঘটে যাওয়া ভালো।
আজ সকালের কাগজেই লেখা আছে
ঘণ্টায় আশী মাইল দৌড়ে আসছে বৃষ্টি-ঝড়।
বুঝেছি অতঃপর
পরিতে হইবে সারা গায়ে রণসাজ।
মনে পড়ে? আমি ভিক্টোরিয়ার মাঠে একদিন শীতের
সন্ধ্যেবেলায়
তোমার শরীর ভর্তি আগুনে সেঁক-তাপ নিতে নিতে
বলিয়াছিলাম, নন্দিনী! মনে রেখো
ভালোবাসা মানে আমরণ এক রক্ত রণাঙ্গণ।
©somewhere in net ltd.