নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদ্রিজা

অথই জলে খুঁজে বেড়াই পূর্ণিমারই চাঁদ।

আদ্রিজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

পূর্ণেন্দু পত্রীর কথোপকথন__(৩৭,৩৮,৩৯)

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪০

কথোপকথন ৩৭





ভালবাসা, সেও আজ

হয়ে গেছে ষড়যন্ত্রময়।

নন্দিনী! এসব কথা তোমার

কখনো মনে হয়?

চক্রান্তের মত যেন,

সারা গায়ে অপরাধপ্রবণতা মেখে

একটি যুবক আজ যুবতীর কাছাকাছি এসে

সাদা রুমালের গায়ে ফুলতোলা শেখে।

যেন এই কাছে আসা সমাজের পক্ষে খুব বিপজ্জনক।

যেন ওরা আগ্নেয়াস্ত্র পেয়ে গেছে মল্লিকবাগানে

যেন ওরা হাইজ্যাকের নথিপত্র জানে

এসেছে বারুদ ভরে গোপন কামানে।



একটি যুবক যদি প্রতিদিন পাখি-রঙ বিকেলবেলায়

তার কোনো নায়িকার হাতে রাখে হাত

যেন এই ক লকাতার মারাত্মক ক্ষতি করে দেবে বজ্রপাত।

কলকাতায় জঙ্গল গজাবে

কলকাতাকে সাপে-খোপে খাবে।

এই সব ফিসফাস্, চারিদিকে অবিরল এইসব

ছুঁচোর কেত্তন,

একটি যুবক এসে যুবতীর

কাছাকাছি বসেছে যখন।



নন্দিনী! তোমার মনে পড়ে?

মামাশ্বশুরের মত বিচক্ষণ মুখভঙ্গী করে

একবার এক বুড়ো হাড় এসে প্রশ্ন করেছিল,

মেয়েটির সঙ্গে কেন এত মাখামাখি

মেয়েটির মধ্যে কোন গুপ্তধন আছে-টাছে নাকি?

লুকনো এয়ারপোর্ট আছে?

জাল-নোট ছাপাবার কারখানা আছে?

আন্তর্জাতিক কোন পাকচক্র আছে?

তাহলে কিসের জন্যে ছুঁচ ও সুতোর মত

শীত-গ্রীষ্ম এত কাছে কাছে?







কথোপকথন ৩৮



-নন্দিনী! আমার খুব ভয় করে ,বড় ভয় করে!

কোনও একদিন বুঝি জ্বর হবে ,দরজা দালান ভাঙ্গা জ্বর

তুষার পাতের মত আগুনের ঢল নেমে এসে

নিঃশব্দে দখল করে নেবে এই শরীরের শহর বন্দর।

বালিশের ওয়াড়ের ঘেরাটোপ ছিঁড়ে ফেলা তুলো

এখন হয়েছে মেঘ,উঁড়ো হাস, সাঁদা কবুতর।

সেই ভাবে জ্বর এসে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে অন্য কোন ভুমন্ডলে

নন্দিনী! আমার খুব ভয় করে ,বড় ভয় করে।

- বাজে কথা বকে বকে কি যে সুখ পাও শুভঙ্কর।

সত্যি বুঝি না।

কার জন্যে ছুরি নিয়ে খেলায় মেতেছো?

তুমি কি আমার চোখে রক্তদৃশ্য এঁকে দিতে চাও?

- ছুরি কই? ছুরি ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি জঙ্গলে

খাঁ খাঁ দুপুরের মত লম্বা ছুরি ছিল বটে কিছুদিন আগে।

তখন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল

তখন যে যুদ্ব দাঙ্গা লুটপাট ডাকাতির সম্ভাবনা ছিল

এখন ভীষন ভয় ছাড়া অন্য কোন প্রতিপক্ষ নেই ।

যুদ্ব নেই কামানের তোপ নেই , অসুখ বিসুখ কিছু নেই

ভয় ছাড়া অন্য কোন বীজানুর মারাত্মক আক্রমন নেই ।

- আমার যা কিছু ছিল সবই তো দিয়েছি,শুভঙ্কর।

তোমার বাঘের থাবা তাও ভরে দিয়েছি খাবারে।

চাঁদোয়ার মত ঘন বৃক্ষ ছায়া টাঙ্গিয়ে দিয়েছি

মাথার উপরে,ঠিক আকাশের মাপে মাপে বুনে।

তবুও তোমার এত ভয়?

তবুও কিসের এত ভয়?

-সেই ছেলেবেলা থেকে যা ছুয়েছি সব ভেঙ্গে গেছে।

প্রকান্ড ইস্কুলবাড়ি কাচের চিমনির মত ঝড়ে ভেঙ্গে গেল।

একান্নবর্তীর দীর্ঘ দালান-বারান্দা ছেড়া কাগজের কুচি হয়ে গেল।

কচি হাতে রুয়ে রুয়ে সাজিয়ে ছিলাম এক উৎফুল্ল বাগান

কুরে কুরে খেয়ে গেছে লাল পিঁপড়ে,পোকাও মাকড়।

একটা পতাকা ছিল, আকাশের অদ্বিতীয় সুর্যের মতন

তর্কেও বিতর্কে তাও সাত আটটা টুকড় হয়ে গেল ।

গাঁয়ের নদীকে ছুঁয়ে কী ভুল করেছি

নদীর ব্রীজ কে ছুঁয়ে কী ভুল করেছি

কাগজ ও মুদ্রাযন্ত্র ছুয়ে আমি কি ভুল করেছি?

নন্দিনী!

তোমাকে যদি বাগান,পতাকা,ব্রীজ,কাগজের মতন হারাই?







কথোপকথন ৩৯ [/sb





তোমাকে বাজাই

সমুদ্র-শাঁখ তুমি

গাছে ফুল আসে

ফুলেরা কিশোরী হয় ।

ডালপালাগুলো সবুজ পাতার খামে

চিঠি লিখে লিখে

প্রেম নিবেদন করে ।

ফ্রক ছেড়ে শাড়ি পরে

সমগ্র বনভূমি ।

তোমাকে ভাসাই

মেঘের নৌকো তুমি

তুমি জান লাল

প্রবালের নীল দ্বীপ ।

অমরাবতীর

দরজায় এসে নামো,

খাট-পালঙ্ক

পেতে দেয় জোৎস্নারা ।

বুড়ি চাঁদ এসে ঝাড়-লন্ঠন জ্বালে ।

পৃথিবীর ফাটা গালে

হেসে ওঠে পূর্ণিমা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.