নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবাইকে একদিন এই মায়া ছেড়ে হতে হবে অদৃশ্য।স্বাগতম অদৃশ্যের এই রহস্যময় ব্লগে্।জাতিকে লেখনীর মাধ্যমে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই ব্লগ।
হ্যালো !!
— হুম ।
— বাসায় ?
— না ।
— তাহলে ?
— ছাদে ।
— একই তো কথা ।
— তাহলে রাতে ছাদে বসে থাকলে বাসায় কেন
যেতে বলো ?
— উঁহু , তোমার সাথে কথায় পারবো না ।
— থ্যাংকু শিকার করার জন্য ।
— কি ??
— না কিছুনা ।
— কি করো ?
— গল্প লিখি ।
— পরীক্ষা চলছে না তোমার ?
— হুম ।
— এখন লেখালেখি বন্ধ রাখলে হয় না ?
— কেন ?
— সময় নষ্ট করার দরকার আছে কোন ?
— আছে ।
— কেন ?
— তোমার জন্যই তো লিখছি ।
— আমি কিন্তু পরীক্ষার মধ্যে তোমাকে সময়
নষ্ট করতে বলিনি ।
— আরে পাগলি সমস্যা নাই ।
— ওহহ ,, আচ্ছা যা তোমার ইচ্ছা ।
— থ্যাংকু দাও ।
— থ্যাংকু ।
— ওয়েলকু ।
— হি হি হি ।
— বিকালবেলা আসবে তো ?
— আসার কথা ছিলো ?
— ভুলে গেলা ?
— কয়টায় ?
— লাগবে না তোমার আসা ।
তুমি আমাকে একটুও ভালবাসো না ।
— খুব ভালবাসি ।
— তুমি একটা পাগল ।
— তোমার জন্যই তো ।
— জানি । কয়টায় আসতে পারবা ?
— তুমি যখন বলবে তখনই ।
— আচ্ছা আসরের নামাজের পর ।
— ওকে ।
— খেয়েছো ?
— হ্যা । তুমি ?
— না ।
— তোমার সাথে আর কোনদিন
কথা বলবো না ।
— কেন ?
— খাওনাই কেন এখনও ?
লেখালেখি বন্ধ করো । যাও খাইতে বসো ।
রাখলাম ।
— টা টা ।
তনয় ভদ্র ছেলের মতো নিচে নেমে
গিয়ে বিস্কুটের প্যাকেট থেকে ৩/৪
টা বিস্কুট বের করে খায় ।
গত দুই দিন কারেন্ট নাই । রান্নাও
হচ্ছে না । বাসার অন্যরা হোটেল এর
ভাত তরকারি দিয়ে দিন পার করছে । তনয়
তা পারে না ।
হোটেল এর খাওয়া তার পেটে সহ্য হয় না ।
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ।
কাওকে কিছু বলতেও পারেনা ।
বিস্কুট খাওয়া শেষ করে পানি খেয়ে আবার শুরু
করে গল্প লেখা ।
আসরের আযান দেওয়ার সময়ও প্রায়
হয়ে গেছে । গল্পও লেখা শেষ ।
আসরের আযানের শেষ হওয়ার
আগেই তনয় বের হয়ে গেলো ।
পকেটের আজকের লেখা গল্পটা ।
আর ৫০ টাকা ।
রিক্সা ডাকবে মাত্র ঠিক তখনই
ছোট একটা (পিচ্চি টোকাই) ডাক দিলো ।
পরনে ছেঁড়া একটা গেঞ্জি । আর
একটা হাফ প্যান্ট ।
— ভাইয়া ।
— কি হয়েছে পিচ্ছি বাবু ?
— ১০ টা টাকা দিবেন ?
কাল দুপুর থেকে কিছুই খাইনাই ।
হটাৎ টাকা চাইতে তনয়
ভিতরে ভিতরে একটা ধাক্কা খেলো ।
মাত্র ৫০ টাকা আছে তার
পকেটে । যাতায়াত খরচ ৩৫ টাকা আর ১৫
টাকার চকলেট ।
পিচ্চিটাকে দেখে তনয় আর
নিজেকে সামলাতে পারলো না ।
৫০ টাকা ধরেই তাকে দিয়ে দিলো ।
তারপর বললো:
— নেও ভাইয়া । পেট
ভোরে খাবে যা খেতে ইচ্ছা করে ।
তনয় হাটতে শুরু করেছে ।
সে পৌঁছাতে পৌঁছাতে নুশুও
পৌঁছে যাবে হয়তো ।
আজ আর চকলেট কেনা হলো না ।
তা নিয়ে কোন চিন্তা নেই তনয়ের ।
কোটিপতি বাবার এক মেয়ে , তাতে কি ?
তনয়ের কাছে তার চাওয়া শুধু
মাত্র গল্প ।
যেদিনই দেখা করবে দুজনে সেদিনই
তনয়ের গল্প পড়ে শোনাতে হবে নুশুকে ।
আর তা অবশ্যই তনয়ের নিজের
লেখা হতে হবে । শুধু এতোটুকুই ।
কোনদিন মুখ ফুটে একটা চকলেটও
দাবি করেনি মেয়েটা ।
নুশু এসে বসে আছে । এখন তনয়
আসেনি । চিন্তা হচ্ছে মেয়েটার । কখনই
তো দেরি করে না ছেলেটা ।
ভাবতে ভাবতে তনয়ের ফোন :
— হ্যালো ।
— কোথায় তুমি ? এতো দেরি করছো
কেন ?
— আসছি । ৫ মিনিট লাগবে ।
রাখলাম ।
— আচ্ছা ।
কিছুক্ষণ পর চলে আসে তনয় ।
নুশুর পাশে এসে বসে ।
নীল শাড়িতে আজ কেন জানি একটু
অন্যরকমের সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে ।
নুশুর দিকে বোকার মতো তাকিয়ে
থাকে সে ।
নিরবতা ভেঙে নুশুর প্রশ্ন :
— এই ফাজিল ,
এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো ?
লজ্জা লাগে তো ।
— ভালবাসি তো তাই ।
— ইশশশ , হইছে । গল্প লিখে আনছো ?
— হ্যা , কিন্তু আজ চকলেট
আনতে পারি নাই ।
— আমি কি তোমাকে চকলেট আনতে বলছি ?
— না ।
— তাহলে ঢং বাদ দিয়ে গল্প
পড়ে শোনাও আমাকে ।
— আচ্ছা পড়ছি ।
তনয় গল্প পড়া শুরু করে আর নুশু অবাক
হয়ে তনয়ের বেগুনি চশমা পরা চোখের
দিকে তাকিয়ে থাকে ।
আর মনে মনে হাজার বার বলতে
থাকে —
"ভালবাসি । খুব খুব খুব ভালবাসি ।"
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩৭
বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: হাউ রোমান্টিক!!