নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাগতম অদৃশ্যের এই ব্লগে।।আসবেন , দেখবেন , ঘুরবেন ,বুঝবেন - হারিয়ে যাবেন এই তো দুনিয়ার খেলা। আমি শুধু রুপক মাত্র ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭

সবাইকে একদিন এই মায়া ছেড়ে হতে হবে অদৃশ্য।স্বাগতম অদৃশ্যের এই রহস্যময় ব্লগে্‌।জাতিকে লেখনীর মাধ্যমে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই ব্লগ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এইচ এসসি রেজাল্ট নিয়ে কিছু কথা

১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:১২

সিলিং ফ্যানের

সাথে ঝুলে আছি তিন মিনিট

ধরে।এই তিন মিনিটে আমার

মাথায় আগামী তিরিশ বছরের

কথা ঘুরপাক খাচ্ছে।

আমার এখন

মনে হচ্ছে আত্মহত্যা না করলে ভাল

হত।খুব ইচ্ছা করছে পৃথিবীর

সৌন্দর্য আরো একটু

উপভোগ করতে।কিন্তু সম্ভব

না। আজ রেজাল্ট দিচ্ছে।মা জানে।

মা আমার রেজাল্ট শুনার জন্য

অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

রেজাল্ট আমি পেয়ে গেছি।

আমি ফেল করেছি।মা আমার

ফেল করার খবর জানেন না। আমি রেজাল্ট

দেখে চুপটি করে ঘরে ঢুকেছি তাও

মা জানে না। আমার রুমটা মূল ঘর

থেকে আলাদা,নিরিবিলি।

আমি ফ্যানে ঝুলে আছি তাও

মা জানে না।

আমার রুমে পোলাও এত গন্ধ

আসছে।পোলাও-এর সুগন্ধে আমি মাতাল

হয়ে যাচ্ছি।

মা আমার জন্য পোলাও

রান্না করেছে।পোলাও আমার

খুব পছন্দের।মা খুব

আশা নিয়ে বসে আছেন আমার রেজাল্ট শুনার

জন্য।

রেজাল্ট শুনার পর মা আয়েশ

করে নিজ

হাতে আমাকে পোলাও

খাঁয়ে দিবেন।

আমি তো ঝুলে আছি পোলাও খাওয়া এখন

আমার

পক্ষে সম্ভব

হবে না।

আর কোনদিনও মায়ের হাতের

পোলাও আমি খেতে পারব না।

আজ রান্না করা পোলাও

গুলো কেউ খেতে পারবে না। মা রাগে-

দুঃখে,অভিমানে সব

ফেলে দিবে।

আর কোনদিন এই বাসায়

পোলাও রান্না হবে না। আমার চোখ

জুড়ানো স্বপ্নগুলো মেঘ

হয়ে আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে।

আমার মনও উড়ছে।শুধু আমার

দেহটা এই রুমে আটকে আছে।

মরে যাওয়ার পর আমি সবকিছু দেখতে পারছি।

কারোর

চেহারা দেখে এখন তার

ভবিষ্যৎও বলে দিতে পারব। আমার মন এখন

কলেজের

মাঠে পরে আছে।

অনাবিল

আনন্দে ছেয়ে গেছে প্রিয়

কলেজ।সবাই হই-হুলোড়

করছে। কোলাহলপূর্ণ

আনন্দময়ী পরিবেশ।ঢাক-

ঢোল পিটাচ্ছে অনেকে।

একজন

একজনকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ

ভাগাভাগি করছে। শফিক স্যারকে কোনদিন

হাসতে দেখিনি।আজ শফিক

স্যারও হাসছে।

ফোরকান স্যার

আমাকে খুঁজছে।আমার

কথা অনেকজনের কাছে জিজ্ঞেস করেছে।

সবাই বলেছে আমাকে দেখেনি।

আমি স্যারের

পাশে দাঁড়িয়ে আছি অথচ স্যার

আমাকে দেখছে না।

স্যার আমাকে খুব ভালবাসে। আমি এত

ভালবাসা পাবার

যোগ্য না।

স্যারকে আমি একদিন

বলেছিলাম,"স্যারএত

ভালবাসা আমাকে দিয়েন না।

এত

ভালবাসা আমি রাখতে না পারলে আপনি কষ্ট

পাবেন।"

আমি স্যারের

ভালবাসা রাখতে পারিনি।

জানি আজ স্যার খুব কষ্ট

পাবেন। মাঠের শেষ কোণায় কয়েকজন

ঝটলা পাঁকিয়ে বসে আছে।

তাদের কারো মুখে হাসি নেই।

ঝটলার

মধ্যে মধ্যমণি হচ্ছে বন্ধু

রিফাত। সে আমার মত ফেল করেছে।ফেল

করে মেয়েদের মত

ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।

তাকে সবাই সান্ত্বনা দিচ্ছে।

সে কাঁদতে কাঁদতে বলছে,"আমার

বাবা আমাকে মেরে ফেলবে। বাসায়

ঢুকতে দিবে না।"

আচ্ছা পড়ালেখা কি জীবনের

সব?বাবা-মারা কেন এমন করে?

একটা ছেলে তো পরীক্ষায়

ফেল করতে পারে!পরীক্ষায়

ফেল করে সে তো বড় কোন অন্যায়

করে ফেলেনি।তাই

না? মাঠে মেয়েরা ঝটলা বেঁধে হই-

হুলোড় করছে।সবাই

বৃত্তবন্ধী হয়ে ঘুরছে।

আমি বৃত্তের মাঝে বসে আছি।

আমাকে কেউ দেখছে না।

মেয়েদের সাথে কয়েকজন ম্যাডামও বৃত্তের

মধ্যে ঘুরছে।

অনেকে খুশিতে কান্না করছে।

তমাও খুশিতে কান্না করছে।

সে আমার আত্মহত্যার খবর

জানে না।

জানলে খুশির কান্না দুঃখের কান্নায় রূপান্তর

হত।

কার থেকে শুনলাম বন্ধু

নাজমুলও ফেল করেছে।ফেল

করার খবর

সে আগে পেয়েছে তাই আর

কলেজে আসেনি।

তাকে দেখতে হুট করে তার বাসায়

চলে আসলাম।

দেখি সেও

আমার পথে চলে আসতে চাইছে।

আমি যে ভুল করেছি সে ভুল

তো আর

কাউকে করতে দিতে পারি না।

নাজমুলরা নিম্নবিত্ত ।পরিবারের জন্য

অমানবিক

খাটুনিতে তার বাবার শরীরের

বেহাল অবস্থা।বাবার বর্তমান

আর অবর্তমানে নাজমুল

ছাড়া পরিবারের হাল ধরার আর

কেউ নাই।

নাজমুনকে কোনভাবে মরতে দিতে পারি না।

নাজমুল দরজা বন্ধ

করে ফ্যানের সাথে ছোট

বোনের ওড়না বাঁধছে।

দরজার ওপাশে তার মা সমস্ত

শক্ত দিয়ে দরজায় আঘাত করছে।আর

কান্না করতে করতে চিৎকার

করছে,"বাপধন

দরজা খোল,ফেল করছস কিছু

হয় তো না।তুই পোলা মানুষ।

কোন অসুবিধা নাই বাপ।ওহ নাজমুল,বাপ

আমার

দরজা খোল।"

মায়ের কথায় কান

না দিয়ে সে শাড়ি গলায় গিট্টু

দিচ্ছে।শেষমেষ

আমি নাজমুলকে অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে মৃত্যুর

দ্বারপ্রান্ত

থেকে ফিরিয়ে আনলাম।

অর্থহীন জীবনগুলো মৃত্যুর

দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকে।

তারপরও কারণে,অকারণে মৃত্যুর

দ্বারপ্রান্ত

থেকে ফিরে আসতে হয় । অনেকক্ষণ

ধরে সিলিং ফ্যানে ঝুলে আছি।

দরজা ভিতর থেকে আটকা।

মা,বাবা দরজা সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকছে।

আমি তো ঝুলে আছি দরজা খোলা আমার

পক্ষে সম্ভব না।

আমি দরজা আটকে আত্মহত্যা করেছি এইটা বাবা

কেমন

করে যেন বুঝতে পেরেছে।

পাশের বাসার সালাম

চাচাকে ডেকে নিয়ে এসে আমার

রুমের দরজা ভেঙ্গে ফেলল।

সিলিং ফ্যানের

সাথে আমাকে ঝুলতে দেখে মা নির্বাক

হয়ে গেছে।

বাবা দৌড়ে এসে আমার

পা জড়িয়ে কাঁদছে।

বাবার জন্য কেন জানি কষ্ট

হচ্ছে।সালাম চাচা কি একটা বলতে গিয়ে তার

গলা ধরে এল।

বাবাকে সরিয়ে তিনি আমাকে সিলিং ফ্যান

থেকে নামালেন।

অনেকক্ষণ ঝুলে থাকার পর

আমি কেমন জানি একটু লম্বা হয়ে গেলাম।

মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে।

বাবা তাঁর

রুমে গিয়ে একটা নতুন

মোবাইল নিয়ে আসলেন।

এই মোবাইলটা দেখে আমার

কেন জানি খুব খুশি লাগছে। পরীক্ষার পর

বাবাকে মোবাইলটার

কথা বলেছিলাম।

বাবা বলেছে রেজাল্টের পর

দিবে।বাবা বাবার

কথা রেখেছে কিন্তু আমি... মা আকাশ পাতাল

কাঁপিয়ে চিৎকার দিচ্ছে।

মায়ের চিৎকারে আশপাশের

মানুষজন আমাদের বাসায় ভিড়

করেছে।

সবাই আমাকে দেখে নির্বাক হয়ে গেছে।

নিষ্ঠুর সমাজ

আমাকে বাঁচতে দেই নাই।

কিন্তু মায়ের জন্য এখন আবার

বাঁচতে ইচ্ছে করছে।

মায়ের চোখের

পানিগুলো মুছে দিতে ইচ্ছে করছে।

কিন্তু আমি পারছি না।

# আজকে_HSC_রেজাল্ ট_কারো_রেজাল্ট_

খারাপ_হলে_দয়াকর ে_suicide_করবেন _না.

CLT

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:২৪

কথাকাহন বলেছেন: আমরা পড়ালেখা করি কেন।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫

লেখোয়াড় বলেছেন:
ভাল লিখেছেন তো!!!

আপনার নিকও ০০০৭ সিরিজের।

ভাল ভাল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.