নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাগতম অদৃশ্যের এই ব্লগে।।আসবেন , দেখবেন , ঘুরবেন ,বুঝবেন - হারিয়ে যাবেন এই তো দুনিয়ার খেলা। আমি শুধু রুপক মাত্র ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭

সবাইকে একদিন এই মায়া ছেড়ে হতে হবে অদৃশ্য।স্বাগতম অদৃশ্যের এই রহস্যময় ব্লগে্‌।জাতিকে লেখনীর মাধ্যমে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই ব্লগ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি অদ্ভুত রাত (রহস্যময়তার হাতছানী)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৬

আমাদের বাড়িওয়ালার মতন কৃপন ব্যক্তি আমি আমার লাইফে আরেকটা দেখিনি। খুলনা শহরে চারতলা বাড়ির মালিক কিন্তু দেখলে মনে হয় সংসার চালানোর জন্য প্রতি শুক্র আর শনিবার রুপসা ব্রিজের উপর কাসার প্লেট হাতে ভিক্ষা করেন। সংসার বলতে উনি, উনার স্ত্রী আর একমাত্র মেয়ে তুলি। তুলি মেয়েটা খুব নরম। নরম বলতে আমি ওর মন নরম বুঝাইনি। এরকম একটা খচ্চরের থেকে কিভাবে এতো কিউট আর তুলতুলে কারো জন্ম হতে পারে সেটা আমি তুলিকে না দেখলে কখনোই বিশ্বাস করতাম না। টাকার লোভে লোকটা মাত্র একটা রুম রেখে বাকি প্রতিটা রুম ভাড়া দিয়ে দিয়েছেন। সেই রুমের খাটে ঘুমায় তুলি আর তুলির আম্মু, আর উনি ফ্লোরিং করেন। এজন্যই মেবি তুলির পরে উনার আর কোনো বাচ্চাকাচ্চা হয়নি! আমি কখনো মেহমান আসলে ঐ বাসায় রাতে থাকতে দেখিনি।
এইতো গেলো প্রস্তাবনা, এবার আসল গল্পে আসি। তার আগে আরেকটা কথা বলে রাখি, তুলিকে আমার খুব পছন্দ। পছন্দ মানে লাইক না। পছন্দ মানে লাভ। আর চারতলা বাড়ির একমাত্র উত্তরাধিকারীর বর হওয়ার চাইতে বেশি লাভজনক কিইবা হতে পারে!
.
খুলনায় একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ার সুবাদে এই বাসার নীচতলায় একটা রুম ভাড়া নিয়ে আমরা দুইজন থাকি। আমি আর আমার আরেকটা ফ্রেন্ড। বাসায় একটু ঝামেলার কারনে ঈদের একদিন পরই আমি খুলনা চলে এসেছি। শুধু আমার ফ্রেন্ড না, পুরো বাসাতে আর কেউ'ই আসেনি। এমনকি দারোয়ানও ছুটিতে। পুরো বাড়িতে মানুষ বলতে চারতলায় বাড়িওয়ালারা তিনজন আর নীচতলায় আমি একা। এই বাড়ির আশেপাশে কোনো বাড়িঘর নেই তেমন। বেশ ফাকা। কেমন গা ছমছমে একটা পরিবেশ। সেটাকে আরো একটু বাড়াতেই যেন সন্ধ্যা থেকে থেমে থেমে টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হলো। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে লাগলো বৃষ্টির বেগ। রাত সাড়ে নয়টার দিকে শুরু হলো তুমুল ঝড়। হুট করে কারেন্ট চলে গেলো। আমি খুজে টুজেও কোনো মোমবাতি পেলাম না ঘরে। রীতিমতো হরর সিনেমার দৃশ্যপট। সেই মুহুর্তে আমার দরজায় থেমে থেমে তিনবার নক হলো। ঠক..ঠক..ঠক...!
.
আমার বুকের মধ্যে ধুকপুক শুরু হলো। তারপর কী- হোলে চোখ রেখে যা দেখলাম তাতে হৃদয়ের ধুকপুকানি আরো বাড়লো। তবে এবারে আর ভয়ের কারনে না, অন্য কারনে। দরজার সামনে মোমবাতি হাতে তুলি দাঁড়িয়ে আছে। আমি চুল টুল ঠিক করে, মুখে ফেয়ার এন্ড হ্যান্ডসাম মেখে, টিশার্টটা খুলে ঈদের একটা নতুন শার্ট পরে দরজা খুললাম। দরজা খুলেই আশাভঙ্গ হলো। তুলির পেছনে ওর বাবা দাঁড়িয়ে আছেন। তুলি একটু পাশে সরে গেলে তার বাবা আই মিন আমাদের বাড়িওয়ালা সামনে এগিয়ে আসলেন। তারপর আমাকে লক্ষ্য করে যা বললেন, সে কথাটা আমি অনেক চেষ্টা করেও আমার কানকে বিশ্বাস করাতে পারলাম না। তিনি বললেন, 'বাবা ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে, এদিকের পরিবেশটা আবার ভালো না। তাই রাতে একা একা খালি বাসায় থাকা ঠিক হবে না তোমার। আমি তুলিকে তোমার কাছে রেখে যাচ্ছি, রাতে থাকবে। আমিই থাকতাম কিন্তু ওদিকে আবার তোমার আন্টি ভয় পাবে। আর বুঝোই তো বৃষ্টির রাতে বউ এর কাছে থাকটা..., এটুকু বলে উনি আমার দিকে চেয়ে চোখ টিপে দিলেন। আমি যাই কেমন? রাতে বেশি প্রবলেম হলে আমাকে ডাক দিও। আজ রাতে আর ঘুমানো হবে না মেবি। বলে, উনি আবার চোখে টিপলেন।'
তুলি রাগ দেখালো, 'উফ বাবা, এতো কথা বইলো না তো। এখন যাও।'
তুলির বাবা বললেন, 'আচ্ছা যাচ্ছি। কিন্তু তোরা আবার একরাতে খুব বেশি কিছু করিস না। আর সাবধানে থাকিস।'
তুলি রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো, 'বাবা আমি এখন যথেষ্ট এডাল্ট। তোমার এতো টেনশন করা লাগবে না। যাও তুমি'। বলে দরজা বন্ধ করে দিলো।
.
মেয়ে এইসব কি বলে! আমার কানটান পুরা গরম হয়ে গেছে লজ্জায়। আচ্ছা এমন কি হতে পারে এটা স্বপ্ন? আমি আশেপাশে তাকালাম। নাহ, ঐতো তুলির ঠোটে গাড় লাল লিপস্টিক দেখা যাচ্ছে। আমি যতোদূর জানতাম স্বপ্ন সাদাকালো হয়।
খুশিতে কয়েকটা চিৎকার দিলাম, কিন্তু মনে মনে। তুলি টেবিলে মোমবাতিটা রাখলো। সেই আলোয় আমি ভালোভাবে ওকে দেখতে পেলাম। অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে। পরনে পাতলা গোলাপি টিশার্ট। গলার ওড়নাটা খুলে চেয়ারে রাখলো। তুলি এমনিতেই খুব তুলতুলে। আজ যেন সবকিছু একদম গলে গলে পড়ছে। সেদিকে তাকিয়ে আমি খচ্চর বাড়িওয়ালার ভাড়া বাড়ানো, পানি না দেয়া, ঝাড়ি দেয়া; টাইপ এখন অব্দি করা যাবতীয় দোষ মাফ করে দিলাম। খুব কম ভাগ্যবান ব্যাচেলরের বাড়িতে এরকম বাড়িওয়ালা জন্মায়!
তুলি ওয়াশরুমে ঢুকতে ঢুকতে আমাকে বললো, 'তুমি বিছানা রেডি করো, আমি একটু ফ্রেস হয়ে আসছি।'
.
আমি আয়েশ করে বিছানায় উঠে হাতপা ছড়িয়ে বসলাম। বাইরে একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। এমন বৃষ্টি যে বৃষ্টির রাতে পৃথিবীর প্রতিটা ব্যাচেলর তার বুকের মধ্যে একটা বউএর অভাব নিয়ে ঘুমাতে যায়। তাদের এছাড়া অবশ্য কোনো উপায়ও থাকে না। সবার বাড়িওয়ালা তো আর আমার বাড়িওয়ালার মতো হয় না। বাইরে কোথাও প্রচন্ড শব্দে বাজ পড়লো। হাওয়ার ঝাপটা এসে মোমবাতির আলোকে কাপিয়ে দিয়ে গেলো। কিন্তু আমার এসবে কোনো খেয়াল নেই। আমি ভাবছি আজকে দুজন মিলে খেলা হবে। ইয়ে মানে প্লে স্টেশনে ফিফা'১৭ গেম আরকি!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:২২

শুভবাদী রোদ বলেছেন: জটিল লাগলো। কথাগুলো বেশ লাগলো<
খুব কম ভাগ্যবান ব্যাচেলরের বাড়িতে এরকম বাড়িওয়ালা জন্মায়!
এমন বৃষ্টি যে বৃষ্টির রাতে পৃথিবীর প্রতিটা ব্যাচেলর তার বুকের মধ্যে একটা বউএর অভাব নিয়ে ঘুমাতে যায়।<

আসলেই, আপনার মতো কপাল কয়জনের! আমার যে আপনার বাড়িওয়ালার বাসায় ভাড়া থাকতে ইচ্ছে করছে! মাইরি বলছি, ভাড়া দ্বিগুণ গুণতে রাজি।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৩৯

অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: ভূতের খপ্পরে পড়বেন কিন্তু

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.