নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রয়োজনে যে বেয়াদপ হতে পারে, ভদ্রতা পাওয়ার অধিকার শুধু তাই।

অদ্বিত

পরাজয়ে ডরে না বীর।

অদ্বিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রী উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

১০ ই জুন, ২০২০ সকাল ৯:০৭


বাংলা ভাষার প্রথম শিশু সাহিত্যিক শ্রী উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। আজ উনার জন্মদিন নয়, এমনিই উনাকে নিয়ে লিখছি। উপেন্দ্রকিশোর জন্ম ১৮৬৩ সালের ১২ই মে ময়মনসিংহ জেলার বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তার পৈতৃক নাম ছিল কামদারঞ্জন রায়। পাঁচ বছরেরও কম বয়সে তার পিতার অপুত্রক আত্মীয় জমিদার হরিকিশোর রায়চৌধুরী তাকে দত্তক নেন ও নতুন নাম দেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে উপেন্দ্রকিশোর প্রবেশিকা পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে বৃত্তি পান। তারপর কলকাতায় এসে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সী কলেজে।
একুশ বছর বয়সে বিএ পাস করে ছবি আঁকা শিখতে আরম্ভ করেন উপেন্দ্রকিশোর। এই সময় তিনি ব্রাহ্ম সমাজের সদস্য হওয়ায় তার অনেক আত্মীয়ের সঙ্গে মনোমালিন্য ঘটে। ছাত্র থাকাকালীনই তিনি ছোটোদের জন্যে লিখতে আরম্ভ করেন। সেই সময়কার সখা, সাথী, মুকুল ও জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত বালক নামে মাসিক পত্রিকাগুলিতে তার লেখা প্রকাশ হতে শুরু হয়। প্রথমদিকের (যেমন সখা, ১৮৮৩) প্রকাশিত লেখাগুলি ছিল জীববিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ। তার পরে চিত্র অলঙ্করণযুক্ত গল্প প্রকাশিত হতে আরম্ভ হয়।

১৮৮৬ সালে ২৩ বছরের উপেন্দ্রকিশোরের সঙ্গে বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ব্রাহ্মসমাজের দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম পক্ষের কন্যা বিধুমুখীর বিবাহ হয়, এবং তখনকার কলকাতার কর্নওয়ালিস স্ট্রীটের ব্রাহ্ম সমাজের মন্দিরের বিপরীতে লাহাদের বাড়ির দোতলায় কয়েকটি ঘর ভাড়া নিয়ে উপেন্দ্রকিশোরেরর সংসার জীবন শুরু হয়। উপেন্দ্রকিশোরের তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। ছেলেরা হলেন সুকুমার, সুবিনয় ও সুবিমল, এবং মেয়েরা হলেন সুখলতা, পুণ্যলতা ও শান্তিলতা। ছেলেদের মধ্যে সুকুমার রায় সবচেয়ে বিখ্যাত। সুকুমার রায়ের ছেলে অর্থাৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়ের নাতি হলেন অস্কারজয়ী চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় যিনি খ্যাতির দিক দিয়ে পিতা ও দাদু উভয়কেই ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন।

আমার সাথে উপেন্দ্রকিশোরের পরিচয় যেভাবে ঘটেঃ অবশ্যই সাহিত্যের মাধ্যমে পরিচয় ঘটে। ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হওয়া তো সম্ভব না। হিন্দু পরিবারে জন্ম হওয়ায় হিন্দু ধর্মগ্রন্থ রামায়ন ও মহাভারতের প্রতি আমার ছোটবেলা থেকেই আকর্ষণ ছিল। বিশেষত যুদ্ধের অংশটুকু। স্কুলে হিন্দুধর্মের পাঠ্যবইতে যুদ্ধের বর্ণনা ছিল না। শুধু লেখা থাকত - ভীষণ যুদ্ধ হল। যুদ্ধে অমুক জিতল তমুক হারল।
এটুকু বর্ণনায় কি শিশুমন ভরে ? যুদ্ধের বিস্তারিত বর্ণনা দরকার। যেমন রামায়নে রাম সর্পাস্ত্র ( সাপের শক্তিবিশিষ্ট তীর ) ছুড়ল, রাবণ গড়ুরাস্ত্র ( বাজপাখির শক্তিবিশিষ্ট তীর ) দিয়ে সেটা নিবারণ করল। তারপর মহাভারতে অর্জুন অগ্নিবাণ ( আগুণের শক্তিবিশিষ্ট তীর ) ছুড়লে অঙ্গরাজ কর্ণ বরুনাস্ত্র ( জলের শক্তিবিশিষ্ট তীর ) দিয়ে সেটা নিবারণ করল। রামের ভাই লক্ষণের সাথে রাবণের বীরপুত্র ঈন্দ্রজিৎ এর তীরে তীরে fight. লক্ষণের ছোড়া তীর ঈন্দ্রজিৎ কাটে আবার ঈন্দ্রজিৎ এর ছোড়া তীর লক্ষণ কাটে। মহাভারতে ভীমের রাক্ষস পুত্র ঘটোৎকচ জাদু দিয়ে একাধিক অবয়ব নিলে কর্ণ তীর ছুড়ে রাক্ষসের মায়া ( জাদু ) ধ্বংস করল। একেকজন যোদ্ধা তীরের বন্যা বইয়ে দেয়। তীরের বৃষ্টিতে আকাশ অন্ধকার হয়ে যায়, সূর্য দেখা যায় না।
এই ধরণের বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়ার জন্য মন যখন ক্ষুধার্থ তখনই মনের সেই ক্ষুধা নাশ করল শ্রী উপেন্দ্রকিশোর রায়ের ছেলেদের রামায়ন ও ছেলেদের মহাভারত বই দুটো। ক্লাস 6 এ পড়ার সময় জ্যাঠার ( বড় চাচা ) বাসায় চোখে পড়ল উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র প্রথম খন্ড। দেখেই তো আমার মাথা নষ্ট। অনুরোধ করে টরে বইখানা বাসায় এনে ধুমিয়ে দিলাম পড়া। রামায়ন মহাভারত বাদেও ছিল রূপকথার গল্পের সংকলন "টুনটনির বই" ও "পুরাণের গল্প" ( হিন্দু পুরাণ )। টুনটুনির বইয়ের কিছু গল্প আজও মনে পড়ে। যেমন - এক কুমির তার সাতটা বাচ্চাকে শিয়াল পন্ডিতের কাছে দিয়েছিল পড়ানোর জন্য। শিয়াল সাত দিনে সাতটা বাচ্চা খেয়ে ফেলে। যখন কুমির তার বাচ্চাদের দেখতে আসে তখন চালাক শিয়াল একটা বাচ্চাকে সাতবার দেখিয়ে কুমিরকে বুঝ দিয়ে দেয়। তারপর এক বুড়ির তিনটা কুকুর থাকে - রঙ্গা, বঙ্গা, ভূতো। ক্লাস 3 এর বাংলা বইতে গল্পটা ছিল। তারপর এক বাঘ এক ছাগলকে খেতে আসলে ছাগল গুহার ভিতর থেকে বলে -
সিংহের মামা আমি নরহরি দাস, পঞ্চাশ বাঘে মোর এক এক গ্রাস
এ কথা শুনে বাঘ মামা ভয় পেয়ে দৌড়। হাঃ হাঃ .....
এসমস্ত গল্প যে ছোটবেলায় পড়েনি সে অনেক বড় মিস করেছে।

উপেন্দ্রকিশোরের হাতেই সৃষ্টি হয়েছে রাংলার প্রথম সুপারহিরো চরিত্র "গুপি গাইন ও বাঘা বাইন"। এই বাচ্চাদের গল্প নিয়ে উনার নাতি সত্যজিৎ রায় 2 টা সিনেমা করেছেন। তৃতীয় সিনেমাটা সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দীপ রায় করেছেন। প্রথম সিনেমার কাহিনী উপেন্দ্রকিশোরের লেখা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সিনেমার কাহিনী লিখেছেন সত্যজিৎ রায়।

গুপী গাইন বাঘা বাইনকে সুপারহিরো বলার কারণ তাদের super power. সুপারম্যান আকাশে উড়তে পারে, স্পাইডারম্যান জাল ছুড়তে পারে। আর গুপি বাঘা গান গাইতে পারে। গানই তাদের super power. তাদের গান শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ নড়তে পারবে না। আরো আছে জাদুর জুতা যেটা পড়ে superman এর চাইতেও দ্রুত মুহূর্তের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া যায়।
পাশাপাশি পুরাণের গল্প পড়ে জানলাম হিন্দু পুরাণ সমন্ধে। যেমন্ - গণেশ দেবতার মাথা হাতির মত হবার কারণ। মহাভারতের অর্জুনের নাতি পরীক্ষিৎ যখন তক্ষক নামক সাপের কামড়ে মারা যায় তখন পরীক্ষিৎ এর পুত্র জনমেজেয় পৃথিবীর সমস্ত সাপ পুড়িয়ে মারার জন্য সর্পযজ্ঞের আয়োজন করে কিন্তু সাপের দেবী মনসার পুত্র আস্তিক এসে তক্ষক সাপকে বাঁচিয়ে দেয়। আবার দেবরাজ ঈন্দ্র ঋষি দধিচীর হাড় দিয়ে বজ্র ( অস্ত্র ) তৈরি করে অসুররাজ বৃত্রকে হত্যা করলে অসুরেরা জলের তলায় আশ্রয় নেয় আর রাতে বের হয়ে মুনিঋষিদের মারে, তখন দেবতারা অগস্ত্য মুনির শরণাপন্ন হলে অগস্ত্য সম্পূর্ণ সমুদ্রের জল শোষণ করে নেন এবং অসুরেরা দেবতাদের হাতে ধরা খায়।
আমার কাছে সবচেয়ে interesting পৌরাণিক কাহিনী হল - দেবতারা সবসময় অমর ছিল না। অসুরদের সাথে যুদ্ধে দেবতারা সবসময়ই মারা যেত। অসুরদের গুরু শুক্রাচার্য্য স্নেহবশত মন্ত্র পড়ে দেবতাদের জীবিত করে দিতেন। দেবতারা ভাবলেন অমৃত খেয়ে একবারে অমর হয়ে গেলে বারবার জীবিত হবার প্রয়োজন নেই। কিন্তু সমুদ্র থেকে অমৃত বের করতে গেলে সমুদ্র মন্থন করতে হবে। যেমন কৃষিজমিতে সেচ দিলে জমি ফসল দেয় তেমনি সমুদ্রকে সেচ দিলে সমুদ্র দিবে অমৃত। অসুরদের অমৃত দেবার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তাদের help নিয়ে সমুদ্র মন্থন করে অমৃত উঠাল। অসুরদের সাথে ছলনা করে দেবতারা অমৃত খাবার সময় রাহু নামে এক অসুর দেবতা সেজে অমৃত খেয়ে ফেলল। সূর্যদেব ও চন্দ্রদেব এ কথা বিষ্ণুকে বললে বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে রাহুর মাথা কেটে ফেলল। অমৃত খাওয়ায় সে মরল না। প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রাহুর কাটা মাথা যখন সূর্যকে গিলে ফেলে তখন সূর্যগ্রহণ হয়, যখন চাঁদকে গেলে তখন চন্দ্রগ্রহণ হয়।

আমি এইসব কাহিনী বিশ্বাস করতাম ( এখন করিনা )। ভাবতাম সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোরও এসব পৌরাণিক কাহিনী বিশ্বাস করে। তানাহলে উনি কেন পুরাণের কাহিনী, রামায়ন মহাভারতের কাহিনী বাচ্চাদের জন্য লিখবেন ? আমার এ ধারণা ভেঙে খান খান হয়ে গেল যখন উনার রচনাসমগ্রের প্রথম খন্ডেই উনার লেখা best প্রবন্ধ "সেকালের কথা" পড়লাম। এটা আমার পড়া প্রথম বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ। পড়ে আমার মাথা এমন চক্কর দিয়ে উঠেছিল যে কহতব্য না।
আমি ঐ পৌরাণিক গালগল্প পড়ে যে মজা পেয়েছিলাম তার চেয়ে লক্ষগুণ বেশী মজা পেয়েছিলাম "সেকালের কথা" পড়ে। এমন নয় যে আমি ডাইনোসর সমন্ধে আগে জানতাম না, কিন্তু প্রাচীনকালের পৃথিবীর পরিবেশ, জীবজন্তুর এমন অসাধারণ বর্ণনা জীবনে প্রথমবার পড়ে আমার ব্রেনে আনন্দের অনুভূতি ( ড্রাগ সেবনের মত ) বইয়ে দিল। আমি যে সিরিজ লিখছি "সেকালের কথা" নামে সেটা উপেন্দ্রকিশোরের "সেকালের কথা" প্রবন্ধ থেকেই inspired.
শ্রী উপেন্দ্রকিশোর রায়ের "সেকালের কথা" প্রবন্ধটাকে HSC লেভেলের বাংলা বইতে স্থান দেয়া উচিত বলে মনে করি। শ্রী উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বন্ধুত্ব ছিল। রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, উপেন্দ্রকিশোর এনারা সবাই পৈতৃক হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ব্রাহ্ম সমাজের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। এদের হাত ধরেই বাঙালি সমাজে, বাঙালির চিন্তন মননে বিপ্লব তথা রেনাসার জাগরণ ঘটেছিল। কবি কাজী নজরুল ইসলামে কাব্য প্রতিভা ছোটবেলায় অঙ্কুরিত হলেও তিনি এইজন্যই মহান কবি হতে পেরেছিলেন কারণ তিনি ব্রাহ্ম সমাজের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এতেই উনাকে নিয়ে আমাদের গর্ব ও অহংকারের সীমা নাই। যদি তিনিও সাহস করে পৈতৃক ধর্ম ছেড়ে ব্রাহ্ম ধর্মের দীক্ষা নিতেন, তবে তিনি যা হয়েছেন তার চেয়েও বেশী কিছু হতে পারতেন।

১৯১৩ সালে উপেন্দ্রকিশোর প্রকাশ করেন ছোটদের জন্য সন্দেশ পত্রিকা। এই সন্দেশ পত্রিকা রীতিমত কীংবদন্তী বলা যায়। সুকুমার রায়ের "আবোল তাবোল ও পাগলা দাশু", সত্যজিৎ রায়ের রচিত "ফেলুদা ও প্রোফেসর শঙ্কু", প্রেমেন্দ্র মিত্রের অমর চরিত্র "ঘনাদা", নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের "টেনিদা" ইত্যাদি বাংলা শিশু সাহিত্যের কীংবদন্তী চরিত্রগুলো সন্দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ যা পড়ে "তিন গোয়েন্দা ও মাসুদ রানা" এগুলো ফেলুদা, টেনিদা, ঘনাদার তুলনায় নিতান্তই বস্তাপঁচা, সাহিত্যের মান বিচারে গোবর। কেন জানি বাংলাদেশের মানুষ এই গোবরকে অ্মৃত মনে করে। মুহাম্মদ জাফর ইকবালের লেখাগুলো তাও সন্দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাগুলোর একটু কাছাকছি যায়। কিন্তু সেবা প্রকাশনীর বই মানেই আবর্জনা। যারা বিরিয়ানী খায়নি ( ঘনাদা, টেনিদা পড়েনি ) তাদের কাছে পান্তা ভাতকেই ( মাসুদ রানাকেই ) বিরিয়ানী মনে হবে। অনেকের কাছে মনে হতে পারে, "হচ্ছিল উপেন্দ্রকিশোরের কথা, এখানে এসব বলার কি দরকার ছিল ?" Well একটু খোঁচা মারার দরকার ছিল বৈকি।

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার আর যোগীন্দ্রনাথ সরকারের সমাদৃত ছোটদের গল্প ও ছড়াগুলির মতই উপেন্দ্রকিশোরের ‘টুনটুনির বই’ বাংলার ঘরে ঘরে ছোটদের মন জয় করে নিয়েছিল। তখন রেডিও, টেলিভিশন ছিল না। কলের গান কিছু কিছু বাড়িতে থাকলেও, তা ছোটদের আয়ত্তের বাইরেই থাকত। সুতরাং মাঠে-ঘাটে খেলা আর পড়া ছাড়া বিশেষ কিছুই করার সুযোগ ছিল না ছোটদের। আর এই বই পড়ার ভূমিকাটা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে যেমন বিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক বই পড়ে পাশ শিক্ষা লাভ করা... অন্যদিকে তেমন ঠিকমত কিছু বিশেষ বই তাদের দিকে এগিয়ে দেওয়া ছিল অভিভাবকদের কর্তব্য, যা থেকে মানসিক বিকাশ হয়, চরিত্র গঠন হয়। সেই বই পড়েও যদি আনন্দ না পাওয়া গেল, পাতার পর পাতা সাদাকালো ভারী ভারী জ্ঞানের কথা পড়েই যদি অবসর সময় যায়, তো কার ভাল লাগে? উপেন্দ্রকিশোরও ঠিক এই চিন্তার জায়গাটা থেকেই শিশু ও কিশোরদের রুচিবোধ, চিন্তাপ্রবাহ, মানসিক বিকাশের কথা ভেবে নানারকম চিত্তাকর্ষক বিষয় এবং ছবির সাহায্যে ছোটদের মনের মতন করে সন্দেশ পত্রিকাকে সাজাতেন। সেই পত্রিকা ছোট-বড় নির্বিশেষে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। সেই সময়ের বহু সাহিত্যিক এই পত্রিকায় ছোটদের জন্য লিখে মানসিক তৃপ্তি লাভ করতেন। ১৯১৫ সালের ২০শে ডিসেম্বর মাত্র বাহান্ন বছর বয়সে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরি পরলোক গমন করেন।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৩৬

ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: তার নাতি সত্যজিত রায়, এটা জানা ছিল না
ধন্যবাদ এই সুন্দর লেখা উস্থাপনের জন্য

২| ১০ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমি উপেন্দ্র কিশোর সম্পর্কে জানি। একজন গ্রেট বাঙ্গালী।

৩| ১০ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উপেন্দ্র কিশোর রায়, সুকুমার রায় এবং সত্যজিৎ রায়, দাদা, বাবা ও ছেলে তিন জনই প্রখ্যাত ব্যক্তি। পশ্চিম বঙ্গে বসবাসরত অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির আদি নিবাস দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে।

৪| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:১১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ইন্টারেস্টিং ব্যক্তি।

৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
শ্রী উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীকে নিয়ে ভাল লিখেছেন ।
তাঁর প্রথমদিককার জীবন বেশ সংগ্রামী জীবন ।
অবলাবান্ধব এর প্রকাশক বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক
ব্রাহ্মসমাজের দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম পক্ষের
কন্যা বিধুমুখীর সাথে তার বিয়ে হওটাও ছিল অনেকটা
অনিশ্চিত । যাহোক বিয়েটা তাঁর শেষ পর্যন্তন বিধুমুখীর
সাথেই হয়েছিল ।

উপেন্দ্রকিশোর শুধু সাহিত্যিকই ছিলেন না, তিনি একজন ভাল
বংশীবাদক ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র বাজাতেও ছিলেন সিদ্ধ হস্ত ।

ছবি আকাতেও তাঁর হাত ভাল ছিল অবশ্য তার এ
গুনটির কথাও আপনার লেখায় উঠে এসেছে ।
ব্রাম্ম সমাজের অনেক গুণী মানুষ উঠে এসেছেন
বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকা হতে । রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরও
একবার এসেছিলেন ময়মনসিংহে ।

এই গুণী সাহিত্যিক উপেন্দ্রনাথ কিশোরের প্রতি
রইল শ্রদ্ধাঞ্জলী ।

পোষ্টটি প্রিয়তে গেল ।

আপনার প্রতি রইল শুভেচ্ছা ।

৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৪

জুন বলেছেন: উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার রায়, লীলা মজুমদার, রাজশেখর বসু, দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার ছিল আমাদের ছেলেবেলার সাথী, আমাদের শৈশব ও কৈশর জীবনে এক অপার আনন্দ নিয়ে আসা লেখকরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.