নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রয়োজনে যে বেয়াদপ হতে পারে, ভদ্রতা পাওয়ার অধিকার শুধু তাই।

অদ্বিত

পরাজয়ে ডরে না বীর।

অদ্বিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্তর্মুখীরা কিভাবে সম্মান অর্জন করতে পারে ?

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৪৪



ঋত্বিক রোশন অভিনীত হিন্দী মুভি "Koi Mil Gaya" দেখেছেন ? কিভাবে তার এলাকার কিছু ছেলে তাকে নিয়ে মজা করত ? তারপর আমির খান অভিনীত "Tare Zameen Par" সিনেমায় সেই ছোট ছেলেটার কথা মনে আছে ? অন্তর্মুখীদের প্রায় সবাই বোকা মনে করে। আর যারা কথাবার্তায় চালু তাদের সবাই smart মনে করে। শিক্ষকরাও ভাবে, "চুপচাপ থাকা মানেই জড়বুদ্ধি্।" বাবা মায়েরাও যেই সন্তানের কথা আগে ফোটে তাকে চালাক মনে করে, যে সন্তানের কথা দেরীতে ফোটে তাকে বলদ মনে করে। অথচ বেশীরভাগ smart মানুষই অন্তর্মুখী। যেমন - বিল গেটস, ইলন মাস্ক, আইনস্টাইন। তারপরও অন্তর্মুখীদের বলদ ভাবার কারণ কি ?

আমার Dyslexia না থাকলেও সারাজীবন স্কুল ও কলেজ লাইফ এভাবেই কাটছে। ক্লাসে চুপচাপ বসে থেকে। কারণ, আমি Introvert ( অন্তর্মুখী )।
লাইফের বিশাল একটা অংশ জুড়ে আমি সহপাঠীদের দ্বারা এবং পাড়ার ছেলেদের দ্বারা বুলিং এর স্বীকার হয়েছি। যারা আমাকে বুলিং করছে, তারা সবাই একই কথা বলত, "তুমি সবার সাথে মিশতে পারো না ? সবার সাথে কথা বলতে পারো না ? অসামাজিক কোথাকার। "

এই প্রশ্নের কোন উত্তর নাই। স্বতস্ফূর্তভাবে সবার সাথে কথা বলা, সবার সাথে মেশা এই জিনিসগুলো আমার ভিতর থেকে আসে না। আমি কি করব ? Introvert কে মিশুক হতে বলাটা পঙ্গু লোককে Mount Everest জয় করতে বলার সামিল। অন্তর্মুখীরা অসামাজিক নয়। তারা নিজেকে express করতে পারে না। অন্তর্মুখীদের মানুষ ভুল বুঝে। এটা একটা ব্যক্তিত্ব। কিন্তু এই ব্যক্তিত্ব কেন জানি Extrovert রা হজম করতে পারে না। চুপচাপ সহপাঠীকে বলদ মনে করে। তারা ভাবে, "বলদের সাথে সবকিছু করা যায়। বলদকে থাপ্পড় মারা যায়, বলদের কান ধরে টানা যায়, বলদের মাথায় চাটি মারা যায়। বলদের উপর পৌরষত্ব দেখিয়ে নিজেকে পুরুষ প্রমাণ করা যায়।" এই ভেবে নিজেকে পুরুষ প্রমাণ করার জন্য চুপচাপ সহপাঠীকে অন্য সহপাঠীরা ক্ষেপায়, জ্বালায়। হ্যা, introvert পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করলে তখন তাকে কেউ বলদ ভাবে না, তাকে টিজও করে না। কিন্ত রেজাল্টও খারাপ করবা আবার চুপচাপও থাকবা এই দুটা তো extrovert রা কিছুতেই মেনে নিবে না। এই টিজিং, বুলিং এগুলো একজন introvert কে ভিতর থেকে ভেঙে দেয়। সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। নিজেকে ছোট ভাবতে শুরু কর। তার আত্মবিশ্বাস কমে যায়।
স্কুল বা কলেজ লাইফ শেষ হবার বহু বছর পর যখন introvert নিজের area তে সফল হয় তখন সহপাঠীরা ও শিক্ষকরা বুঝতে পারে যে তারা wrong ছিল। ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। তারা তাদের introvert সহপাঠী বা ছাত্রের সোনালী শৈশব বা কৈশোরকে হরর বানিয়ে দিছে। জীবনে সফল হলেও সে শৈশবের কোন সুখের স্মৃতি, বন্ধুদের সাথে আড্ডার মধুর স্মৃতি স্মরণ করতে পারে না। সে বলতে পারে না, "তোরা ছিলি, তোরা আছিস, তোরা থাকবি .......... বন্ধুওওওওও।"

এই সমস্যার সমাধান কি ? কিভাবে ক্লাসে, শিক্ষাজীবনে introvert দের মর্যাদা ও সম্মান বাড়ানো যায় ? একজন শিক্ষক দয়া করে অন্য ছাত্রদের তুলনায় introvert student কে extra care করলে তখন নাহয় ঐ অন্তর্মুখীর একটা চান্স থাকে ক্লাসে সম্মান অর্জন করার। কিন্তু সবাই তো Tare Zameen Par সিনেমার আমির খান নয়। ঐরকম টিচার লাখে একজন। উপায়টা কি ? শিক্ষকদের দায়িত্ব introvert ছাত্রকে অন্যদের তুলনায় বেশী প্রশংসা করা। তাহলে ওরা হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে।

হ্যা, এই আত্মবিশ্বাস অহংকারেও রূপ নিতে পারে। অহংকার সমন্ধে আমাদের একটা ভুল ধারণা আছে। নিজের প্রশংসা করলেই আমরা সেটাকে অহংকার ভেবে বসি। কিছু কিছু সময় মানুষ নিজের প্রশংসা করে নিজের সম্মান বাঁচানোর জন্য। আপনি একজনকে পঁচিয়ে ধুয়ে দিচ্ছেন। অপমান করে তাকে ছাতু বানিয়ে ফেলছেন। এ অবস্থায় অপমানিত ব্যক্তি নিজের প্রশংসা করবে না তো কি করবে ? তার তো আর কোন অপশন নাই। আপনার অপমান তো তাকে ভিতর থেকে ভেঙে ফেলছে, তাকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে, তার বেঁচে থাকার cause কেড়ে নিচ্ছে। তখন অহংকারই একমাত্র সম্বল তাকে বাঁচানোর। আপনি যত বেশী কাউকে অপমান করবেন, তত বেশী সে নিজের সম্মানের জন্য fight করবে। নিজের ঢোল নিজে পেটানোই হল নিজের সম্মানের জন্য fight করা। অপমানের ঝড় উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে আত্মপ্রশংসা হল শেষ খড়কুটো যেটা আকড়ে ধরে সে নিজেকে উড়ে যেতে দিচ্ছে না। তখন আপনি তাকে অহংকারী বলবেন, সাথে সাথে শেষ খড়কুটোও তার হাত থেকে ছুটে যাবে। আমার সাথে এরকম অজস্রবার হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হল, শিক্ষাজীবনে Introvert দের মর্যাদা বা সম্মান বাড়ানোর উপায় কি ? এই একটা সমস্যার সমাধান আমার কাছেও নাই।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.