নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ জগতে নতুন পা রেখেছি কিছু জানবার জানাবার শিখবার শেখাবার সর্বোপরি ইসলামী খেদমতের উদ্দেশ্যে! কবুল করার মালিক উপরওয়ালা ়়়়়়়

Ahmad Faiz

তালিবুল ইলম!

Ahmad Faiz › বিস্তারিত পোস্টঃ

Linguistic imperialism -‘লিঙ্গুইস্টিক ইম্পেরিয়ালিজম

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৬


Linguistic imperialism
-----------
একটা পরিভাষা আছে ‘লিঙ্গুইস্টিক
ইম্পেরিয়ালিজম’। আক্ষরিক অর্থটা কি ‘ভাষাগত
উপনিবেশ’ হবে?
পরিভাষাটার অর্থ হলো, অন্যদেশের ওপর ভাষার
আধিপত্য চাপিয়ে দেয়া। যেমন আমরা এখন
ইংরেজির আধিপত্যের শিকার। ইংরেজি না
জানলে ভাল চাকুরি হয় না। বিদেশে যাওয়া যায়
না। সমাজে দাম থাকে না।
.
এটা শুধু ইংরেজির ক্ষেত্রেই নয়, আরবী-উর্দু বা
অন্য ভাষার ক্ষেত্রে হতে পারে। আমাদের ঘর-
বাড়িগুলোতে এখন তো বলতে গেলে হিন্দির বেশ
প্রভাব। সিরিয়াল দেখতে দেখতে ক্ষুদেরাও
ইঁচড়ে পাকা!
.
আমাদের ধর্মীয় পরিমন্ডলেও দেখি, একটু উর্দু বা
আরবী বলতে পারলে, ভাবটা অন্য রকম হয়ে যায়।
যারা পারে না, তাদের মনে ক্ষীণ হলেও
হীনমন্যতা জন্ম নেয়।
.
তাবলীগে বিদেশী জামাত, বিশেষ করে উর্দুভাষী
জামাত পড়লে তো, অনেককে দেখি, উর্দু বলতে না
পারলে, রীতিমতো অধোবদনই হয়ে পড়ে লজ্জায়।
আর টুটাফাটা উর্দু বলতে পারলে, বুকের ছাতি
ফুলে ওঠে। ওরাও পিঠ চাপড়ে দেয়:
-বাঙাল উর্দু কইতা হায়!
.
আমরা উর্দু বলতে পারলে বা ভুল উর্দু বললে,
জামাতের উর্দভাষীরা করুণামাখা দৃষ্টিতে
তাকায়। পাকিস্তানে বা ভারতে পড়তে গেলে,
আমাদের ভুল উর্দু শুনে তারা হাসে। আমরাও
তাদের হাসি দেখে ‘হাসু’ হয়ে পড়ি!
.
আমার কাছে অবাক লাগে, তারা কেন ভাবে:
আমরা তাদের ভাষা পারবো? আমাদেরকে তাদের
ভাষা পারতে হবে? এবং সেটা শুদ্ধভাবেই পারতে
হবে?
.
আমাদের ভাষা কেন তাদের পারতে হবে না? কই
তারা তো আমাদের বাঙলা না পারলে লজ্জা পায়
না। আমরাও সেটাকে খারাপ চোখে দেখি না!
তাহলে কি আসলেই ‘ইম্পেরিয়ালিজম’ আছে?
এবং আমরা তার ‘ভিক্টিম’?
.
বহুভাষিক যোগ্যতায়, কোন দেশের আলিমরা
বেশি দক্ষ? এটা তো সহজ: বাঙলাদেশের
আলিমরাই বেশি দক্ষ। আমাদের ব্যক্তিগত
বইয়ের তাকে কয় ভাষার কিতাবপত্র থাকে?
পাঁচটা ভাষার:
= বাঙলা। আরবী। উর্দু। ফারসী। ইংরেজী।
আর তাদের তাকে? চারটা। বাঙলা বাদ। আমরাই
তো এগিয়ে।
.
বিদেশে যেখানে মিশ্র কমিউনিটির বাস। বিশেষ
করে বাঙলা-আরবী-উর্দু-ইংরেজি ভাষা চলে,
সেখানে একজন বাঙালি আলিমই সবার সাথে
সমানতালে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে পারে।
এটা আমার একান্ত অভিজ্ঞতার আলোকেই
বলছি।
.
আমার অত্যন্ত কাছের একজন মানুষ। মাওলানা।
রিয়াদে বেশ সম্পন্ন অফিসে কর্তা ছিল। বলতে
গেলে বিশ্বের প্রধান প্রধান ভাষার লোকজন
অফিসে আসে। একমাত্র বাঙালি হিশেবে তারই
তোলায় তোলায় কদর ছিল। কারণ কেউই: আরবী-
ইংরেজি-উর্দু-ফারসী-বাঙলা একসাথে বলতে
পারে না। কোনও একটা ভাষাতে আটকা পড়েই
যায়।
.
আরেক পরিচিত আপনজন। থাকে মিশ্রভাষিক
কমিউনিটিতে। বাঙালিদের জন্যে বাঙলায় বয়ান
করে। ইংরেজিভাষীদের জন্যে ইংরেজিতে।
উর্দুভাষীদের জন্যে উর্দুতে। সেখানে বেশি কিছু
মরোক্কী ও মাসরী থাকে, তাদেরকে চোস্ত
আরবীতে বয়ান করে।
.
এটা সত্য, আমার সেই আপন জনের চেয়ে আরও
বেশি যোগ্য, ডক্টরেট করা ব্যক্তিরাও সেখানে
থাকেন। কিন্তু তারা একটা ভাষায় গিয়ে আটকা
পড়ে যান। এই ফাঁকে বাঙালি এগিয়ে যায়।
.
এই ভাষাগত হীনমন্যতা শুধু জাতীয় বা ভিনদেশী
ভাষার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়।
আঞ্চলিক ভাষার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যারা
এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে পড়তে যায়,
তারাও ভাষা নিয়ে সংকোচে ভোগে।
.
নয় বছর চট্টগ্রামে পড়ার সুবাদে, দেখেছি কিছু
ভাইয়ের সে কি ‘শরম’! তারা চট্টগ্রামের ভাষা
পারে না যে!
আবার ঢাকাতেও দেখি, নিজের অঞ্চলের ভাষা
বাদ দিয়ে, ঢাকার মাদরাসা বা রাস্তাঘাটে
প্রচলিত: কুমিল্লা-ময়মন-কুট্টিমিশ্রিত ভাষায়
কথা বলতে! কেউ কেউ তো গ্রামের বাড়িতে এসে
নিজের বাবা-মায়ের সাথেও সেই জগাখিচুড়ি
ভাষায় কথা বলতে শুরু করে! আজব! বাবা মাও
খুশি, ছেলে ঢাকায় পড়ে ‘শুদ্ধ’ ভাষায় কথা বলা
শিখেছে। সে খুশিতে ডগমগ হয়ে মাছের পেটিটা
ছেলের পাতে তুলে দেয়। খা বাবা খা। খেয়ে আরও
‘করতাছি-গোমাইতাছি-খাইতাছি-মার্কা
‘কিম্ভূতকিমাকার’ শুদ্ধ ভাষা শেখ! আমাকে ধন্য
কর!
.
আবার কিছু ব্যতিক্রমী মানুষও আছেন। তারা
নিজের মতোই বেঁচে থাকেন। কোনও ভাষাতেই
প্রভাবিত হন না। যত বড় ব্যক্তির কাছেই যান, সব
সময় নিজের সেই ভাষাতেই কথা বলতে স্বচ্ছন্দ
বোধ করেন। আমার আব্বাজান (রাহিমাহুল্লাহ)-ও
ছিলেন এমন প্রকৃতির মানুষ।
= আর্মির সিওর সাথে প্রয়োজনে দেখা করতে
গেছেন:
-স্যার বালা আছেন নি!
= বিডিআরের সিও স্কুল পরিদর্শনে এসেছেন:
-স্যার, এক্কানা অপিসে বই এক কাপ চা খাই যান
না। বেশি খুশি অমু!
= টিএনও এসেছেন স্কুলে:
-স্যার, দুপুরে আঁর ঘরে চাইরগা ডাইলবাত খাইলে
খুশি অইতাম!
.
আরও অদ্ভুত বিষয় হলো, টাকার মানিঅর্ডারের
শেষে দুয়েক লাইনের উপদেশের মধ্যে একটা কথা
আব্বা সবসময় লিখতেন:
= ‘সব সময় বিশুদ্ধ ভাষায় কথা বলিবে’!!!
.
তার মানে কি আমরা অন্য অঞ্চলের ভাষার প্রতি
বিদ্বেষী হয়ে পড়বো? ৎ
= ওহ! ‘অবসলূটলি’ না। আমরা বলতে চাইছি, অন্য
ভাষা শেখ। তবে নিজের ভাষার প্রতি হীনমন্যতা
বোধ করো না।
.
তবে আমরা বাংলাভাষীরা বোধ হয়,
জন্মগতভাবেই ভাষাতাত্তি¦ক উপনিবেশের
শিকার!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৪০

সাবলীল মনির বলেছেন: ভাল লিখেছেন, কিন্তু বড্ড বেশি লম্বা করে ফেলেছেন ।

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০

পদ্মপুকুর বলেছেন: সাবলীল মনির বলেছেন: ভাল লিখেছেন, কিন্তু বড্ড বেশি লম্বা করে ফেলেছেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.