![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
https://www.facebook.com/ahsnan.arifa\\n\\nলেখার কোন অংশই লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবেনা । বানান ভুল পাওয়া যেতে পারে এর জন্য আগে থেকেই ক্ষমা চাই । ভুল বানান গুলো ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলে সেগুলাকে ঠিক করে দেওয়া হবে। (ব্লগ লিংক ফেসবুক শেয়ার করা যাবে)
পিছনে ফিরেই দেখলেন ছেলে ঠিক তাঁর পিছনে চার কাপ চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
দিনে দিনে এই ছেলেটার উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন তিনি। সেটা নিজেই ভাল করেই উপলব্ধি করতে পারছেন। ছেলে অফিসে থাকলে দিনে বার-চারেক ফোন করেন তিনি। আগে এমন টা ছিলেন না তিনি। ব্রেন স্ট্রোক টা করার পর থেকেই এই রকম হয়ে গেছেন । আগে এমনি ছিলেন যে নিজের জামা-কাপড় পর্যন্ত নিজে পছন্দ করে পরতেন না। তাঁর বউ যা পছন্দ করে কিনে আনতো, তিনি সেটায় খুব উৎসাহ নিয়ে পরতেন। আর এখন কোন কিছু কিনতে হলে তিনি নিজেই যান আর সাথে অবশ্যই তাঁর বড় ছেলে কে থাকতেই হবে। তাঁর নিজের ঔষধ পর্যন্ত তিনি নিজে ও কেনেন না আর কাওকে কিনতে ও দেন না কারন তিনি ভরসা পান না। শুধু বড় ছেলে ছাড়া আর কারো উপর তিনি এখন আস্থা রাখতে পারেন না, নিজের উপর ও না।
সত্যি বলতে গেলে একটা বয়সের পর সবাই একটা নিরাপদ আশ্রয় চাই। চাই বিশ্বস্ত কোন সঙ্গী। যার ছায়ায় একটু বিশ্রাম নেওয়া যাবে, কাটানো যাবে অখণ্ড অবসর বিনা দ্বিধায়। যেমন টি আমার বাবা আমার মাঝে পেয়েছিলোন। সব সন্তানের মাঝে থেকে তিনি আমাকেই বেছে নিয়েছিলেন তাঁর জীবনের শেষ সময় আমার ছায়ায় নিরাপদে থাকবেন এই বিশ্বাস আর আস্থার উপর। আর তিনি ও সেই বিশ্বাস আর আস্থা রেখেছেন অটুট ভাবে।
এক কথায় একটা শক্ত শিকড় ধরে বেঁচে থাকা, নতুন করে বেঁচে থাকার অবলম্বন পাওয়া। সময় তো শেষ হয়ে আসছে দিনে দিনে, কাওকে না কাওকে দায়িক্ত বুঝিয়ে দিতে হবে আর শেষ দিন গুলোতে এই মৃত প্রায় শিকড় বেঁচে থাকবে চাই নতুন কোন শক্ত শিকড়ের শক্তির উপর। এই টুকুই হয়তো চাওয়া তাঁর নিজের জীবনে ও তাই হয় তো অনেক বেশি আস্থা রাখছেন বড় ছেলেটার উপর।
ছোট ছেলে টা তাঁর বড় ভাইকে দেখে লাফিয়ে পড়লো
- ভাই চা নিয়ে এসছিস। থ্যাঙ্গুক ভাই থ্যাংকুই.........
ব্যাপারী সাহেবের স্ত্রী এত ক্ষণ বসে বাবা-ছেলের কথা শুনছিলেন। এবার তিনি বলে উঠলেন
- চা করে এনে খাওয়ালে শুধু থ্যাংকুই দিয়েই দায়িক্ত শেষ না। একদিন ও তো দেখলাম না বড় ভাইকে চা করে খাওয়ালে।
- সব কাজ সবাই কে দিয়ে হয় না মা। জানো তো তুমি।
- এই সব কথা বলার অর্থ হল দায়িক্ত থেকে এড়িয়ে যাওয়া।
আরসাদ এবার বলে উঠলো
-বাদ দাও তো আম্মা, আর কথা বাড়িয়ো না। চা করে এনেছি এবার চা টা নাও।
- আমি তোর দাদা কে একবার দেখে আসি। কি করছে কে জানে।
- আমি দেখে আসলাম। এক গ্লাস দুধ দিয়ে আসলাম। “হিরো” বলে কি –“দাদা, আমাকে এখন এক কাপ চা দিবি না?”
এই কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে উঠলো শুধু ব্যাপারী সাহেবের স্ত্রী বাদে।
তিনি এবার লাফ দিয়ে উঠলেন ছেলের কথা শুনে
- এখন কোন দুধ দিলি খেতে!!?? এখন খালি পেটে দুধ খেলে তো অ্যাসিডিটি হবে রাতে।
আরসাদ এবার কোন কথা না বলেই সোজা নিজের দুইটা কান ধরেই বলে উঠলো
- সরি আম্মা, আমি বুঝতে পারিনি।
- তোরা যে কি করিস না। এখন কি আর তাঁর সেই বয়স আছে। সেটা তোদের বুঝতে হবে না। যা এক একটা কাজ করিস না।
খুব রাগ করেই কথা গুলো বলতে বলতে চলে গেলের শ্বশুরের রুমে, ব্যাপারী সাহেবের স্ত্রী “পলা”। ব্যাপারী সাহেবের বুঝলেন তাঁর খুব রাগ হয়েছে। সত্যি বলতে তাঁর সেটার অধিকার ও আছে। দিন রাত শ্বশুরের সেবা করে যাচ্ছে বিনা বাক্যে। কোন বিকার নেই তার। পলা ও কৃতজ্ঞ বাবার প্রতি। আর সে বাবাকে সবার থেকে আলাদা মানে এবং মান্য করে। সেই জীবনের শুরু থেকেই পলার কথা বাবা শুনে আসছে। এখন ও পর্যন্ত সেটা বহাল আছে। এই কাহিনী অবশ্য এক বিত্তশালীর এতিমের প্রতি ভালবাসা আর সেই এতিমের পক্ষ থেকে তাঁর রক্ষা কর্তার প্রতি ঋণ শোধ করার প্রাণ পণ চেষ্টা আর কি।
চায়ের কাপ বাবার দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে আরসাদ বলল
- সারা দিন কি কি করলে তুমি আব্বা??
ছেলে টা প্রতিদিন এসেই এটা জানতে চাই। হয়তো তাকে ডাক্তার বলে দিয়েছে । আমার ডেলি এক্টিভিটি জানার জন্য।
- তেমন কিছু করিনি আজ।
- কোন?
- আজ কোথায় কোন সমস্যা ছিল না। সব-ই ঠিক-ঠাক ছিল । শুধু দুপুরের পর তিন তালার মইন ভাই ফোন করে বলল একটু বাসায় যেতে, যদি কোন সমস্যা না থাকে।
- কোন ?? প্রশ্ন করলো আরসাদ
- বাসায় কেউ ছিল না আর তাঁরা ও ডাক্তার এর কাছে যেতেন। কিন্তু নাতিটা কে কার কাছে রেখে যাবে। তাই বাসায় কেউ না আসা পর্যন্ত আমি যেন নাতিটার সাথে থাকি সেটার জন্য। সেখানেই ছিলাম কিছু খন, ক্যারাম খেললাম...... এই তো, আর কি।
আরসাদ এবার পুরো ঠাট্টার গলায় বলল
- তাহলে আজ কে মায়া ভাইয়ের কর্ম দিবস ভাল যায় নি।
এটা বলেই আরসাদ জিহবা কামড় দিয়ে তাঁর বাবার দিকে তাকালো। আর ইয়াসার হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়লো সেফার উপর।
ব্যাপারী সাহেব ওরফে মায়া ভাই বলে উঠলেন ছেলেদের উদ্দেশ্য করে বিকৃত গলায়
- হাসো হাসো আমাকে নিয়ে তো তোমরা হাসবে।
- নিজের বাবা কে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করবে না তো কি করবে।
- তাই না ?
এটা বলে ছেলেদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ব্যাপারী সাহেব
ইয়াসার এবার উৎশুক হয়ে আবার ঠাট্টা শুরু করলো বাবার সাথে
- একদম ঠিক কথা বলেছো আব্বু।
- অন্য মানুষের বাপ কে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে মার খাব নাকি!!! এখন মার খেলেও ঘরের মধ্য, কোন সমস্যা নাই......। "আমরা-আমরা" তো......
এই কথা শেষ হতেই হাসির রোল পড়ে গেল ঘরের মধ্য......। সেই হাসির শব্দ হয় তো অনেক দূর ছড়িয়ে পড়েছে। হয় তো কেউ ভাবছে "এত হাসির কি হল ?" কেউ হয় তো এই হাসির শব্দ শুনে ঈষা করছে "উশ... কত না সুখে আছে !!" কিছু কিছু মানুষ মনে করে সুখ একটা আপেক্ষিক বস্তু কিন্তু এই কথাটা বেশির ভাগ মানুষ মানতে চাই না। তাঁর নিজের মনে হয় এই আপেক্ষিক বস্তু পেছনেই মানুষ সারা জীবন ছুটে বেড়ায় আর মাঝে মাঝে নিজের জীবনটা তছনছ করে দেয় আপেক্ষিকতার টানে পড়ে।
ব্যাপারী সাহেব আর তাঁর ছেলেদের হাসির রোল একটু থিতিয়ে গেল রবীন্দ্র সংগীতের গানের কলি কানে ভেসে আসতেই -
"দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ও পারে–
আমার সুরগুলি পায় চরণ, আমি পাই নে তোমারে ॥"
ইয়াসার আবার ও ঠাট্টা করে বলে উঠলো তার বাবা আর বড় ভাই কে উদ্দেশ্য করে
- প্রতিদিনই তো বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখে রবী বাবু কে। কবে ঘরে ঢুকতে দেবে কে জানে?? ব্যাচারা জন্য একটু মায়া ও হয় না !!!!
আরসাদ এবার একটু চেতেই গেল ইয়াসার এর কথা
- সব কিছু নিয়ে মজা করা একটা বদ অভ্যাস হয়ে গেছে তোর
- বুঝিস কিছু রবীন্দ্র সংগীতের???
- চুপ থাক শুনতেদে গান টা ।
ব্যাপারী সাহেব খুব ভাল করেই বুঝতে পারেন এই গাতকের প্রতি তাঁর বড় ছেলে মনটা একটু বেশিই দূর্বল । তবে আর যাই হোক মেয়ে টার গানের গলা ভাল। বেশি ভাগ সময় গাই রবীন্দ্র সংগীত।
পাশ থেকে ব্যাপারী সাহেবের ছোট ছেলে বলে উঠলো
- শুধু বুঝতে পারছি না তটিনী আপু গান টা নিজে গাইছে না কি সিডি ছেড়েছে......
এদিকে গান টা আর ও স্পষ্ট হয়ে কানে আসতে লাগলো
“বাতাস বহে মরি মরি, আর বেঁধে রেখো না তরী–…
এসো এসো পার হয়ে মোর হৃদয়মাঝারে ॥
তোমার সাথে গানের খেলা দূরের খেলা যে,
বেদনাতে বাঁশি বাজায় সকল বেলা যে”
N.B: [আড়ালের অনুভূতি (পর্ব- ৬)- পরের পোস্টে]
N.B: [ যদি কোন বানান ভুল করে থাকি তবে আশা করি বানান টা ধরিয়ে দেবেন। আমি সেটা আমি ঠিক করে নিবো ]
১৪ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৪০
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রামািনক ভাই।
ঘুড়িতে ও আপানকে পেয়েছি মন্তব্যরে। কিন্তু ঘুড়ি ব্লগ ডাউন পাচ্ছি। তাই উত্তর করতে পারছি না।
আবার ও বলছি অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রামািনক ভাই
২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ ভোর ৫:৫৮
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: সত্যি বলতে গেলে একটা বয়সের পর সবাই একটা নিরাপদ আশ্রয় চাই। চাই বিশ্বস্ত কোন সঙ্গী। যার ছায়ায় একটু বিশ্রাম নেওয়া যাবে, কাটানো যাবে অখণ্ড অবসর বিনা দ্বিধায়।
এই পর্বের উপরে তুলে ধরা কথাগুলো বেশ যৌক্তিক এবং আমি বিশ্বাসও করি কথাগুলো। একাকীত্ব মানুষকে ভীষণ যন্ত্রণা দেয়। আর শেষ বয়সের একাকীত্ব আরও বেশী যন্ত্রণা দেয়। তাই ঐ সময়টা প্রতিটা মানুষই কারো সঙ্গ খোঁজে, কাউকে অবলম্বন করে কিছুটা সুখ পেতে চায়। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম তিতলি। ভালো থেকো। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো।
১৪ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৪৫
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: ঘাস ভাই তোমার মত আমি ও এই কথা টা হাঁড়ে হাঁড়ে বিশ্বাস করি। আমার নিজের বাবা কে ও দেখি এই টপিক এর জীবন চাইতে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ঘাস ভাই ।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কি জানো এত বড় পোস্ট বলে পাঠক আমার কম। আর সেই জন্য আমি সত্যি বুঝতে পারছি না আমার কোন ভুল আছে কি না।
এখন মনে হচ্ছে ধারাবাহিক গল্প লিখে বিপদেই পড়েছি
৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:৫৯
জাফরুল মবীন বলেছেন: কাহিনিটা বেশ ভালোভাবেই এগুচ্ছে।
সাথেই আছি।লিখে যান।
অফুরন্ত শুভকামনা জানবেন।
১৪ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৪৭
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: মবীন ভাই অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
আপনারা আছেন বলেই তো আমি পোস্ট করি।
সাথে আছেন জেনে খুব খুশি হলাম।
৪| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: পোস্ট বড় বা ছোট বলে কোন কথা নয়, তোমার পাঠক কম তোমার জন্যই। সব ব্লগেই দুঃখের সহিত একটা অলিখিত নিয়ম লক্ষ্য করেছি, সেটা হল মন্তব্যে আদান প্রদান নীতি। তুমি কাউকে নিয়মিত মন্তব্য করলে, সেও তোমাকে নিয়মিত মন্তব্য করে যাবে। যেহেতু ব্লগে তুমি নিয়মিত নয় এবং মন্তব্যে খুব একটা সক্রিয় নয়, তাই তোমার পোস্ট যত ভালোই হোক না কেন পাঠক ঠিক মতো পাবে না। পাঠক পেতে হলে ব্লগে একটু সময় দাও।
১৫ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৫০
অর্বাচীন পথিক বলেছেন:
ভাল কথা বলেছও ঘাস ভাই। আমি নিজে ও জানি আমি ব্লগে নিয়মিত না। মাঝে মাঝে নিয়মিত হতে পারি আর মাঝে মাঝে একদম ই বসতে পারি না। কি যে করবো
সব দিক সামলে আর মাঝে মাঝে সময় করে উঠতে পারি না। এখন মনে আচ্ছে আমার বোসকার কথায় ঠিক ২৪ ঘণ্টা দিন না হয়ে ৪৮ ঘণ্টা হলে সব কাজ শেষ করে পারা যেত ভাল ভাবে
খুব চেষ্টা করবো এখন থেকে নিয়মিত হবার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৭
প্রামানিক বলেছেন: খুব ভাল লাগল কহিনী। ধন্যবাদ বোন অর্বাচীন পথিক। শুভেচ্ছা রইল।