![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
https://www.facebook.com/ahsnan.arifa\\n\\nলেখার কোন অংশই লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবেনা । বানান ভুল পাওয়া যেতে পারে এর জন্য আগে থেকেই ক্ষমা চাই । ভুল বানান গুলো ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলে সেগুলাকে ঠিক করে দেওয়া হবে। (ব্লগ লিংক ফেসবুক শেয়ার করা যাবে)
কাদের সাহেব খেয়াল করেননি কখন ঘড়ির কাটা ১২টা ঘরে প্রায় চলে গেছে। বসার ঘরে ঘড়ি যখন ১২ টায় ঢং ঢং করে উঠলো তখনই তিনি বুঝলেন। এই ঘড়িটা সেই দাদার আমলের।বাপ-দাদার আমলের জিনিস বলতে এই ঘড়িটাই আছে তার কাছে। প্রতিদিন যখন ঘড়িটা ঠিক ১২ টায় ঢং ঢং করে উঠে সেই সময় কাদের সাহেবের প্রথমেই মনে হয় - জীবন থেকে আর একটা দিন ছিটকে পড়লো। মৃতুর আর ও একটা দিন কাছে চলে আসলেন তিনি।
ঘুমাতে যাবার আগে তিনি অবশ্যই মেয়েদের রুমে একবার যান আর দেখে আসেন তারা কি করছে। তার শুধু মনে হয় যদি কাল সকালে ঘুম থেকে আর না উঠি তাহলে আর মেয়েদের শেষ বারের মত দেখা হবে না এই জীবনে। কোন দিন আর তিনি আদর করতে পারবেন না ওদের কে। মাঝে মাঝে তিনি নিজেই হয়রান হয়ে যান এত ভাল মেয়েদের বাবা হবার যোগ্যতা আদ্যও তার আছে কি না। এদানিং তিনি খুব বেশি চিন্তিত যে এত লক্ষ্মী মেয়েদের কে তিনি সঠিক আর যোগ্য পাএের হাতে তুলে দিতে পারবেন কিনা। আর যাদের হাতে তুলে দেবে তার কি তার মেয়েদের ঠিক মত দেক-ভাল করতে পারবে ?
মেয়েদের রুমের দিকে এগিয়ে যেতেই মনে পড়ে গেল বড় মেয়ে তটিনীর কথা। সন্ধ্যার পর মেয়েটা গলা ছেড়ে গান ধরেছিল। মেয়েটার মন যে দিনই খুব চঞ্চল থাকে সেই দিনই সে এই কাজ করে। মাঝে মাঝে মধ্য রাতে ও তার গান শুনতে পাওয়া যায়। যদি ও কপাল ভাল এখন ও পর্যন্ত কোন দিন প্রতিবেশি অভিযোগ করেনি এই মধ্য রাতের গানের জন্য।
আস্তে করে রুমের দরজা খুলতেই কাদের সাহেব দেখলেন যে লহরী কাঁথা দিয়ে নিজেকে ভাল মত পেঁচিয়ে ঠিক কোল বালিশের মত করে ঘুমিয়ে আছে তার বিছানার এক কোণায়। আর তটিনী, লহরীর পড়ার চেয়ারে বসে মাথা টা টেবিলে উপর রেখে ল্যাম্প টা একবার অন করছে আর অফ করছে। বুঝতে আর বাকী রইল না যে মেয়ের মনটা আজ খুবই অস্থির আর চঞ্চল হয়ে আছে।
কাদের সাহেব প্রায় নিশব্দে তটিনী বিছানায় গিয়ে বসলেন। তার পর মেয়ে কে উদ্দেশ্য করে বললেন-
একটা গল্প শুনবি তটিনী ?
বাবার দিকে মাথা পাশ ফিরিয়ে তটিনী বলল
হু...... শুনবো
কাদের সাহেব খেয়াল করলেন তটিনী মাথাটা টেবিলে উপর রেখে তখনও শুয়ে আছে আর তার চুল গুলো মেঝের মধ্য গড়াগড়ি খাচ্ছে। তিনি রুমে ঢোকার পর থেকেই মেয়েটা ল্যাম্পটা বারবার অন-অফ করা বন্ধ করে দিয়েছিল।কিন্তু তিনি কথা না বলা পর্যন্ত মেয়েটা একটি কথা ও বলেনি আর তার দিকে ফিরে ও তাকায়নি।
- আজ চুল বাঁধিস নি কোন ? একটু পর তো চুল আঁচড়াতে গিয়ে চিল্লাচিল্লি শুরু করবি।
- তুমি গল্পটা বল।
- একদিন এক বিশাল পাহাড় আকাশ কে ডেকে বলল " হে নীলিময় আকাশ তোমার গায়ের রং এত নীল কিভাবে হল ?"। তখন আকাশ বলল- হে বিশাল পাহাড় তুমি কি কখনও খেয়াল করেছো সবাই যখন খুব বিষণ থাকে বা মন খারাপ হয় তখন তাঁরা আমার দিকে তাকিয়ে একটা করে দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেই ? পাহাড় বলল "হ্যাঁ, দেখেছি......"
আকাশ এবার বলে উঠলো- সবাই যখন আমার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নেই সেই সময় আমি তাদের সেই নিঃশ্বাস নিজের মধ্য নিয়ে নেই। পাহাড়, তুমি ভাবছো আমি শুধু নিঃশ্বাস নেই তাদের কাছ থেকে ; সেটা না আমি আর ও নেই, নিঃশ্বাসের সাথে মিশে থাকে তাদের কষ্টের কথা,না পাওয়া বেদনা, হতাশা সব কিছু। এরপর আমি সেই সব নিঃশ্বাস গুলো একটু একটু করে খুলে দেখি। সবার কষ্ট কে নিজের মধ্যে ধারণ করি। মাঝে মাঝে কিছু কষ্ট এতটাই বেশি থাকে যে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারি না তখন বৃষ্টি করে ঝরিয়ে দেই। তবে বেশির ভাগ কষ্ট গুলো নিজের মধ্যে আঁগলে রাখি। পাহাড় তুমি জানো না "বেদনার রং নীল"। আর নিঃশ্বাসের মধ্যে নিয়ে সবার এই কষ্ট নিতে নিতে, আমার এই নীলভ গায়ের রং হয়েছে। আমি নিয়ে আমার পাহাড় এই কথা শুনে বলে উঠলো "এত দিনে মনে হয় বুঝতে পারলাম আমার গায়ের রং কোন গাঢ সবুজ। ছেলে-বুড়ো যেই আমার কাছে আসুক না কোন সে হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত আর চঞ্চল। সবাই যেন নতুন করে তারণ্য ফিরে পায়। শুনেছি প্রাণবন্ত-তারণ্য কে বলা হয় চির সবুজ। আচ্ছা, নীলিময় আকাশ তুমি কি বলতে পারো সেই জন্য কি আমার রং গাঢ সবুজ?"
বিশাল পাহাড়ের এই কথা শুনে নীলিময় আকাশ কোন উত্তর করলো না শুধু মৃদু একটা হাসি দিল।
তটিনী এতখন খুব মন দিয়ে বাবার বলা গল্প শুনছিল। গল্প শেষ হবার পর ঠোঁট উল্টে বাবা কে বলে উঠলো
- যত সব ফালতু গল্প। কোথায় যে এই সব গল্প পাও তুমি বাবা !!
কাদের সাহেব মৃদু একটা হাসি দিলেন সেই নীলিময় আকাশের মত আর মেয়ের মাথায় হালকা একটা চাপড় মেয়ে বললেন
- নীলিময় আকাশের মত হয় মা। দুঃখ, কষ্ট, হতাশা কে গ্রাস করতে শিখো।
এই কথা বলে কাদের সাহেব মেয়েদের রুম থেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে গেলেন।
তটিনী তখন ও টেবিলে মাথা দিয়ে আছে। বুঝতে পারছে আজ রাতে আর তার ঘুম হবে না। সকালে স্কুলে যাওয়া কঠিন হবে তার জন্য। চোখ জোড়া বন্ধ করলেই শুধু নাকের ঠিক মাঝখানে তিল আছে সেই ছেলেটার কথায় মনে পড়ে যাচ্ছে। নাকের ঠিক মাঝে তিল আছে,তটিনী এই রকম ছেলে জীবনে একজন দেখেছে। সে আর কেউ নয় "ও"।
তারপর ও তটিনী বিছানায় গেল। খুব সাহস করে চোখ দুটো বন্ধ করলো। আর সেই সব দিন গুলোর ছবি স্পষ্ট হয়ে আসতে লাগলো তার দুচোখে। আস্তে আস্তে চোখের জল গড়িয়ে কখন যে বালিশ ভিজতে শুরু করেছে তটিনী সেটা খেয়াল করে উঠতে পারেনি।
তটিনী আজ নিজের মনের হাল ছেড়ে দিল। আজ আর নিজেকে বাঁধা দেবে না সে। মন যদি আজ ওকে নিয়ে ভাবতে চাই ভাবুক, তার কথা যদি মনে করতে চাই করুক কোন বাঁধা নেই আজ।
"উদ্দীপিত আমি জানি ও না তুমি আমাকে মনে রেখেছো কিনা। শুধু আমার মনে পড়ে তোমার মৃদু হাসির মুখটুকু, মনে পড়ে দূর থেকে আমাদের একে অপর কে দেখা আর পাশ দিয়ে হেঁটে যাবার সময় তোমার মাথা নিচু করে থাকা। মনে পড়ে আমার বাসার সামনে আসলে তোমার চোখ কিছু একটা খোঁজতো চাইতো। আরও মনে পড়ে যে দিন প্রথম তুমি আমাদের বাসায় এসেছিলে; তোমাদের নতুন বাড়ি কেনার মিষ্টি দিতে, তোমার মায়ের সাথে। তোমাকে আমি হারিয়ে ফেললাম কিভাবে আমি আজ ও জানি না। অবশ্য তোমায় পেয়ে ছিলাম বা কবে, যে নতুন করে হারাবো তোমাকে...... !"
N.B: [আড়ালের অনুভূতি (পর্ব- ৮)- পরের পোস্টে]
N.B: [ যদি কোন বানান ভুল করে থাকি তবে আশা করি বানান টা ধরিয়ে দেবেন। আমি সেটা আমি ঠিক করে নিবো ]
২৩ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:২৪
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য।
শুভেচ্ছা রইল
২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:০৪
তুষার কাব্য বলেছেন: ভালো লাগছে আপু অনুভূতির গল্প । চলুক ।
শুভকামনা জানবেন।
২৪ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৩০
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ তুষার কাব্য।
আশা করি পরের পর্ব গুলোতে আপনাকে পাবো।
৩| ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:২৯
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: এই পর্বে পরিবেশ ভারী করে দিয়েছ। আকাশ আর পাহাড়ের মিথটা ভালো লাগলো। উদ্দীপিতকে নিয়ে তটিনীর ভালোবাসার উপলব্ধিটাও হৃদয় ছোঁয়া। সব মিলিয়ে উপভোগ্য হয়েছে পর্বটা। শুভ কামনা অর্বাচীন। ভালো থেকো।
২৪ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৩৭
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: কি জানি, পরিবেশ ভারি করলাম কি ভাবে আমি জানি না।
আমার কাছে মনে হয়েছে এই পর্বটা একটা একটা বিশেষ পর্ব বাবা মেয়ের সম্পর্ক কে বোঝানের জন্য।
ভাল লেগেছে যেনে মন ভাল হয়ে গেল
৪| ২৪ শে মার্চ, ২০১৫ ভোর ৬:০৯
জাফরুল মবীন বলেছেন: আকাশ ও পাহাড়ের রঙের রূপকতায় চমৎকারভাবে কিছু বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়েছে।
বরাবরের মত গল্পে ভালোলাগা প্রবাহমান।
শুভকামনা জানবেন।
২৪ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৪০
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মবীন ভাই আমার অত্যাচার মুখ বুঝে সহ্য করার জন্য। সেই কবে থেকে এই টা নিয়ে আপনাদের অত্যাচার করছি।
"আকাশ ও পাহাড়ের রঙের রূপকতায় চমৎকারভাবে কিছু বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়েছে"
ভাল লেগেছে শুনে আত্না তৃপ্ত হল।
অনেক অনেক ধন্যবাদ মবীন ভাই
৫| ২৪ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩
আলম 1 বলেছেন: কষ্ট লাগল দেখে যে এত সুন্দর লেখা মাত্র ৩৫ বার পঠিত।
২৪ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: "কষ্ট লাগল দেখে যে এত সুন্দর লেখা মাত্র ৩৫ বার পঠিত"
কোন ব্যাপার না বস এই সব চলে
২য়বার আপনাকে পেলাম আমার পোস্টে ভাল লাগলো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে - আলম 1
৬| ২৪ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৩৮
আরজু পনি বলেছেন:
আগের গুলো পড়া হয়নি কিন্তু এটা পড়ে ভালো লেগেছে।
প্রথম লাইক বাটনটা চেপে দিলাম।
আমি সম্ভবত আপনার ব্লগে আগে আসিনি।
ছবি দেখে চিনতে পারলাম।
খুব ভালো লাগছে।
শুভব্লগিং পথিক ।
২৪ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৪৯
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপু
হু আপু আপনি আমার ব্লগে এর আগে আসেনি আর আমি ও আপনাকে আগে সামুতে খুঁজে পায়নি। আজ পেলাম সকালে।
অনেক ধন্যবাদ আপু সময় করে পড়ার জন্য।
৭| ২৫ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:০৭
প্রামানিক বলেছেন: এই পর্বও অনেক ভাল লাগল। ধন্যবাদ বোন অর্বাচীন পথিক। শুভেচ্ছা রইল।
২৫ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৪১
অর্বাচীন পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রামািনক ভাই
আপনাকে ও শুভেচ্ছা রইল
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৫৮
আলম 1 বলেছেন: আপনি অনেক সুন্দর করে লেখেন ।